অরুণাভ বিশ্বাস
বাংলার মাটি, গঙ্গার তীর, পাটলিপুত্র, নালন্দা—এসব জায়গার প্রাচীন ইতিহাস জানতে চাইলে আমাদের হাতছানি দেয় এক চীনা ভিক্ষুর লেখা। তাঁর নাম হিউয়েন সাং। সপ্তম শতাব্দীতে তিনি একা পায়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন চীন থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে। তাঁর সেই দীর্ঘ পথ চলা শুধু ধর্মীয় অনুসন্ধানের জন্য নয়, ইতিহাস, ভূগোল, রাজনীতি, ভাষা ও সমাজচিত্রের এক অসামান্য নথিতে রূপ নিয়েছিল। হিউয়েন সাংয়ের ভ্রমণকাহিনির সন্ধান পাওয়া যায় তাঁর নিজ হাতে লেখা এক অসাধারণ গ্রন্থের মাধ্যমে, যার নাম “দা তাং শি ইউ জি, বাংলায় এর অর্থ দাঁড়ায়—তাং সাম্রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল ভ্রমণবৃত্তান্ত।
এই গ্রন্থটি এটি সপ্তম শতকের ভারতবর্ষের একটি জীবন্ত দলিল। প্রায় ১৭ বছর ধরে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে, নিজ চোখে দেখা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে হিউয়েন সাং এই গ্রন্থ রচনা করেন। কিন্তু তাঁর এই লেখার সন্ধান প্রথমে কেবল চীনেই সীমাবদ্ধ ছিল। বহু শতাব্দী ধরে এটি সংরক্ষিত ছিল চীনের রাজদরবারের সংগ্রহে, বিশেষ করে তাং সাম্রাজ্যের পৃষ্ঠপোষকতায়।
হিউয়েন সাং তাঁর ভ্রমণ শুরু করেন ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে এবং ফিরে আসেন ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দে। ফিরে এসে তিনি চীনে বসেই তাঁর এই ভ্রমণকাহিনি রচনা করেন এবং এটি সম্পাদনা করেন তাঁর শিষ্য পিয়েনজি (Bianji)। তখনকার দিনে ভ্রমণবৃত্তান্ত রচনার এমন দৃষ্টান্ত বিরল। এই গ্রন্থে তিনি প্রায় ১৩৮টি রাজ্যের বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোর মধ্যে বর্তমান ভারতের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন নগরের বর্ণনাও রয়েছে—যেমন কাশী, কুশীনগর, পাটলিপুত্র, রাজগৃহ, অযোধ্যা, মথুরা এবং সর্বোপরি নালন্দা।
এই গ্রন্থের সন্ধান ভারতীয় উপমহাদেশে আসে অনেক পরে, মূলত ঔপনিবেশিক যুগে। ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং ইউরোপীয় গবেষকরা যখন ভারতের প্রাচীন ইতিহাস ও পুরাকীর্তি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন, তখন তাঁদের হাতে পৌঁছে যায় এই মূল্যবান দলিলের অনুবাদ। এর ফলে হিউয়েন সাংয়ের বর্ণনায় যেসব স্থান ও প্রতিষ্ঠান উঠে আসে, সেগুলোর বাস্তব অস্তিত্ব খুঁজতে শুরু করেন তাঁরা। এর মধ্যে অন্যতম হলেন স্যার আলেকজান্ডার কানিংহ্যাম, তিনি ভারতের প্রথম প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের (Archaeological Survey of India) প্রতিষ্ঠাতা। তিনি হিউয়েন সাংয়ের বিবরণ ধরে বহু প্রাচীন নগর ও স্থাপনার অবস্থান পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন।
আধুনিক প্রত্নতত্ত্ববিদ ও গবেষক ড. চার্লস এলেন ভারতীয় ইতিহাস নিয়ে বহু বই লিখেছেন। তিনি বলেন, “হিউয়েন সাং-এর লেখা যদি না থাকত, তাহলে আমরা নালন্দার অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছুই জানতে পারতাম না। তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী প্রত্নতত্ত্ববিদরা যে জায়গায় খনন করেছিলেন, সেখান থেকেই উন্মোচিত হয় এক বিস্ময়কর বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষ।”
শুধু নালন্দা নয়, হিউয়েন সাংয়ের বিবরণ ধরে ভারতবর্ষের বহু বৌদ্ধ বিহার, স্তূপ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ধর্মীয় কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া যায়, যা প্রাচীন ভারতের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের অন্যতম অধ্যায়।
তাঁর ভ্রমণকাহিনিতে শুধু ভৌগোলিক বিবরণ নয়, রয়েছে রাজাদের চরিত্র, শাসনব্যবস্থা, আইন, অর্থনীতি, জনজীবন, এমনকি আবহাওয়া ও স্থানীয় উৎপন্ন ফসলেরও বর্ণনা। তিনি তৎকালীন রাজা হর্ষবর্ধনের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন, এবং হর্ষের দানশীলতা ও প্রজাহিতৈষী মনোভাবের প্রশংসাও করেছিলেন।
তাঁর লেখার মাধ্যমে জানা যায়, কিভাবে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার ছাত্র অধ্যয়ন করত, এবং সেখানে কী ধরনের পাঠদান পদ্ধতি চালু ছিল। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা গম্ভীরভাবে পাঠে রত থাকত এবং কঠোর অনুশাসনের মাধ্যমে দিনযাপন করত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই চিত্র সম্পর্কে ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ-এর ইতিহাসবিদ ড. ম্যাথিউ গ্রে বলেন, “হিউয়েন সাংয়ের এক ধরনের নৃবৈজ্ঞানিক রেকর্ড, যা আমাদের প্রাচীন ভারতের জ্ঞানতাত্ত্বিক কাঠামো ও সমাজব্যবস্থা বোঝার চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তবে প্রশ্ন আসে—এই বিশাল তথ্যভাণ্ডার গ্রন্থটি কীভাবে আবার নতুন করে আলোচনায় এলো? এর উত্তরে বলা যায়, হিউয়েন সাং-এর লেখা চীনা ভাষায় রচিত হলেও পরবর্তীকালে তা জাপানি, কোরিয়ান, তিব্বতীয় ও ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়। বিশ শতকের গোড়ার দিকে এই লেখার ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয় স্যামুয়েল বিল নামের এক ব্রিটিশ পণ্ডিতের মাধ্যমে, যার নাম ছিল “Si-Yu-Ki: Buddhist Records of the Western World।” এই অনুবাদ বইয়ের মাধ্যমে হিউয়েন সাং-এর লেখালেখি পাশ্চাত্য জগতে পরিচিতি পায়।
ড. সামুয়েল বিলের অনুবাদ নিয়ে জার্মান গবেষক ড. হেলমুট হ্যামার এক প্রবন্ধে বলেন, “হিউয়েন সাং-এর ভ্রমণকাহিনির অনুবাদ ভাষাবিজ্ঞান ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিল।”
এই লেখার মাধ্যমে যেমন ভারতবর্ষের অতীত জানা গেছে, তেমনি চীনের ইতিহাসও আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। কারণ হিউয়েন সাং-এর যাত্রা ছিল এক তরফা নয়, তিনি ভারত থেকে বহু বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ ও মূর্তি সঙ্গে করে চীনে নিয়ে যান এবং সেখানে অনুবাদ করেন। ফলে ভারত-চীন সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে এই ভিক্ষু এক ঐতিহাসিক সেতুবন্ধন তৈরি করেন।
আজকের দিনে, হিউয়েন সাং-এর লেখা শুধু ইতিহাসের দলিল নয়, একটি জীবন্ত ঐতিহ্য। ভারত ও চীন উভয় দেশেই তাঁকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়। ভারতে বুদ্ধগয়ায় তাঁর একটি ভাস্কর্য রয়েছে, এবং নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর অবদান স্মরণে স্থাপন করা হয়েছে স্মারক ফলক।
সবশেষে বলা যায়, হিউয়েন সাং-এর ভ্রমণকাহিনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল তাঁর নিখুঁত পর্যবেক্ষণ, প্রামাণ্য লেখনী এবং পরবর্তীকালে বিদেশি গবেষকদের অধ্যবসায়ের ফলে। এটি শুধু ইতিহাসের একটি পৃষ্ঠা নয়, বরং একটি কালজয়ী দলিল, যা প্রাচীন ভারতবর্ষকে জানার জানালা খুলে দিয়েছে। তাঁর মতো একজন ভিক্ষু-গবেষক আমাদের জন্য রেখে গেছেন এমন একটি ঐতিহ্য, যার মূল্য আজও অপরিসীম।
বাংলার মাটি, গঙ্গার তীর, পাটলিপুত্র, নালন্দা—এসব জায়গার প্রাচীন ইতিহাস জানতে চাইলে আমাদের হাতছানি দেয় এক চীনা ভিক্ষুর লেখা। তাঁর নাম হিউয়েন সাং। সপ্তম শতাব্দীতে তিনি একা পায়ে যাত্রা শুরু করেছিলেন চীন থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে। তাঁর সেই দীর্ঘ পথ চলা শুধু ধর্মীয় অনুসন্ধানের জন্য নয়, ইতিহাস, ভূগোল, রাজনীতি, ভাষা ও সমাজচিত্রের এক অসামান্য নথিতে রূপ নিয়েছিল। হিউয়েন সাংয়ের ভ্রমণকাহিনির সন্ধান পাওয়া যায় তাঁর নিজ হাতে লেখা এক অসাধারণ গ্রন্থের মাধ্যমে, যার নাম “দা তাং শি ইউ জি, বাংলায় এর অর্থ দাঁড়ায়—তাং সাম্রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চল ভ্রমণবৃত্তান্ত।
এই গ্রন্থটি এটি সপ্তম শতকের ভারতবর্ষের একটি জীবন্ত দলিল। প্রায় ১৭ বছর ধরে ভারত ও দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল ঘুরে, নিজ চোখে দেখা ও অভিজ্ঞতা অর্জন করে হিউয়েন সাং এই গ্রন্থ রচনা করেন। কিন্তু তাঁর এই লেখার সন্ধান প্রথমে কেবল চীনেই সীমাবদ্ধ ছিল। বহু শতাব্দী ধরে এটি সংরক্ষিত ছিল চীনের রাজদরবারের সংগ্রহে, বিশেষ করে তাং সাম্রাজ্যের পৃষ্ঠপোষকতায়।
হিউয়েন সাং তাঁর ভ্রমণ শুরু করেন ৬২৯ খ্রিস্টাব্দে এবং ফিরে আসেন ৬৪৫ খ্রিস্টাব্দে। ফিরে এসে তিনি চীনে বসেই তাঁর এই ভ্রমণকাহিনি রচনা করেন এবং এটি সম্পাদনা করেন তাঁর শিষ্য পিয়েনজি (Bianji)। তখনকার দিনে ভ্রমণবৃত্তান্ত রচনার এমন দৃষ্টান্ত বিরল। এই গ্রন্থে তিনি প্রায় ১৩৮টি রাজ্যের বিবরণ দিয়েছেন, যেগুলোর মধ্যে বর্তমান ভারতের বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রাচীন নগরের বর্ণনাও রয়েছে—যেমন কাশী, কুশীনগর, পাটলিপুত্র, রাজগৃহ, অযোধ্যা, মথুরা এবং সর্বোপরি নালন্দা।
এই গ্রন্থের সন্ধান ভারতীয় উপমহাদেশে আসে অনেক পরে, মূলত ঔপনিবেশিক যুগে। ব্রিটিশ প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং ইউরোপীয় গবেষকরা যখন ভারতের প্রাচীন ইতিহাস ও পুরাকীর্তি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন, তখন তাঁদের হাতে পৌঁছে যায় এই মূল্যবান দলিলের অনুবাদ। এর ফলে হিউয়েন সাংয়ের বর্ণনায় যেসব স্থান ও প্রতিষ্ঠান উঠে আসে, সেগুলোর বাস্তব অস্তিত্ব খুঁজতে শুরু করেন তাঁরা। এর মধ্যে অন্যতম হলেন স্যার আলেকজান্ডার কানিংহ্যাম, তিনি ভারতের প্রথম প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের (Archaeological Survey of India) প্রতিষ্ঠাতা। তিনি হিউয়েন সাংয়ের বিবরণ ধরে বহু প্রাচীন নগর ও স্থাপনার অবস্থান পুনরুদ্ধার করতে সক্ষম হন।
আধুনিক প্রত্নতত্ত্ববিদ ও গবেষক ড. চার্লস এলেন ভারতীয় ইতিহাস নিয়ে বহু বই লিখেছেন। তিনি বলেন, “হিউয়েন সাং-এর লেখা যদি না থাকত, তাহলে আমরা নালন্দার অস্তিত্ব সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে কিছুই জানতে পারতাম না। তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী প্রত্নতত্ত্ববিদরা যে জায়গায় খনন করেছিলেন, সেখান থেকেই উন্মোচিত হয় এক বিস্ময়কর বিশ্ববিদ্যালয়ের ধ্বংসাবশেষ।”
শুধু নালন্দা নয়, হিউয়েন সাংয়ের বিবরণ ধরে ভারতবর্ষের বহু বৌদ্ধ বিহার, স্তূপ, বিশ্ববিদ্যালয় ও ধর্মীয় কেন্দ্রের সন্ধান পাওয়া যায়, যা প্রাচীন ভারতের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের অন্যতম অধ্যায়।
তাঁর ভ্রমণকাহিনিতে শুধু ভৌগোলিক বিবরণ নয়, রয়েছে রাজাদের চরিত্র, শাসনব্যবস্থা, আইন, অর্থনীতি, জনজীবন, এমনকি আবহাওয়া ও স্থানীয় উৎপন্ন ফসলেরও বর্ণনা। তিনি তৎকালীন রাজা হর্ষবর্ধনের সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন, এবং হর্ষের দানশীলতা ও প্রজাহিতৈষী মনোভাবের প্রশংসাও করেছিলেন।
তাঁর লেখার মাধ্যমে জানা যায়, কিভাবে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে হাজার হাজার ছাত্র অধ্যয়ন করত, এবং সেখানে কী ধরনের পাঠদান পদ্ধতি চালু ছিল। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীরা গম্ভীরভাবে পাঠে রত থাকত এবং কঠোর অনুশাসনের মাধ্যমে দিনযাপন করত।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এই চিত্র সম্পর্কে ইউনিভার্সিটি অব কেমব্রিজ-এর ইতিহাসবিদ ড. ম্যাথিউ গ্রে বলেন, “হিউয়েন সাংয়ের এক ধরনের নৃবৈজ্ঞানিক রেকর্ড, যা আমাদের প্রাচীন ভারতের জ্ঞানতাত্ত্বিক কাঠামো ও সমাজব্যবস্থা বোঝার চাবিকাঠি হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তবে প্রশ্ন আসে—এই বিশাল তথ্যভাণ্ডার গ্রন্থটি কীভাবে আবার নতুন করে আলোচনায় এলো? এর উত্তরে বলা যায়, হিউয়েন সাং-এর লেখা চীনা ভাষায় রচিত হলেও পরবর্তীকালে তা জাপানি, কোরিয়ান, তিব্বতীয় ও ইংরেজি ভাষায় অনূদিত হয়। বিশ শতকের গোড়ার দিকে এই লেখার ইংরেজি অনুবাদ প্রকাশিত হয় স্যামুয়েল বিল নামের এক ব্রিটিশ পণ্ডিতের মাধ্যমে, যার নাম ছিল “Si-Yu-Ki: Buddhist Records of the Western World।” এই অনুবাদ বইয়ের মাধ্যমে হিউয়েন সাং-এর লেখালেখি পাশ্চাত্য জগতে পরিচিতি পায়।
ড. সামুয়েল বিলের অনুবাদ নিয়ে জার্মান গবেষক ড. হেলমুট হ্যামার এক প্রবন্ধে বলেন, “হিউয়েন সাং-এর ভ্রমণকাহিনির অনুবাদ ভাষাবিজ্ঞান ও তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের গবেষণায় এক নতুন দিগন্ত খুলে দিয়েছিল।”
এই লেখার মাধ্যমে যেমন ভারতবর্ষের অতীত জানা গেছে, তেমনি চীনের ইতিহাসও আরও সমৃদ্ধ হয়েছে। কারণ হিউয়েন সাং-এর যাত্রা ছিল এক তরফা নয়, তিনি ভারত থেকে বহু বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ ও মূর্তি সঙ্গে করে চীনে নিয়ে যান এবং সেখানে অনুবাদ করেন। ফলে ভারত-চীন সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে এই ভিক্ষু এক ঐতিহাসিক সেতুবন্ধন তৈরি করেন।
আজকের দিনে, হিউয়েন সাং-এর লেখা শুধু ইতিহাসের দলিল নয়, একটি জীবন্ত ঐতিহ্য। ভারত ও চীন উভয় দেশেই তাঁকে গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করা হয়। ভারতে বুদ্ধগয়ায় তাঁর একটি ভাস্কর্য রয়েছে, এবং নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর অবদান স্মরণে স্থাপন করা হয়েছে স্মারক ফলক।
সবশেষে বলা যায়, হিউয়েন সাং-এর ভ্রমণকাহিনির সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল তাঁর নিখুঁত পর্যবেক্ষণ, প্রামাণ্য লেখনী এবং পরবর্তীকালে বিদেশি গবেষকদের অধ্যবসায়ের ফলে। এটি শুধু ইতিহাসের একটি পৃষ্ঠা নয়, বরং একটি কালজয়ী দলিল, যা প্রাচীন ভারতবর্ষকে জানার জানালা খুলে দিয়েছে। তাঁর মতো একজন ভিক্ষু-গবেষক আমাদের জন্য রেখে গেছেন এমন একটি ঐতিহ্য, যার মূল্য আজও অপরিসীম।
কক্সবাজার সফরে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। পরে রাতে তাকে একটি হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়। গতকাল রোববার (১৭ আগস্ট) এই উপদেষ্টার অ্যাপেনডিক্সের অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার স্ত্রী অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা।
১৯ ঘণ্টা আগেএক গ্লাস হালকা গরম পানি খেলে বদহজমের সমস্যা অনেকটাই কমে যায়। পানি খাবার হজমে সাহায্য করে এবং পেটের ভেতরে জমে থাকা অতিরিক্ত এসিডকে পাতলা করে দেয়।
২০ ঘণ্টা আগেসাপের মেরুদণ্ডে অসংখ্য হাড় আর পেশী আছে। এই হাড় ও পেশীর সাহায্যে তারা শরীর বাঁকায়, সঙ্কুচিত করে আবার প্রসারিত করে। একেকটা অংশ মাটিতে ধাক্কা দেয়, আর নিউটনের তৃতীয় সূত্র অনুযায়ী মাটিও পাল্টা চাপ দিয়ে সাপকে সামনে এগিয়ে দেয়।
২ দিন আগেগণতন্ত্রের মূলমন্ত্র জনগণই ক্ষমতার উৎস। সেটা আজকাল কেউ মানে বলে মনে হয় না। সে বাংলাদেশেই হোক বা যুক্তরাষ্ট্র—ক্ষমতাসীন নেতাদের সবাই নিজেদের সর্বেসর্বা মনে করে। গণতন্ত্রের অন্যতম পুরোধা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় বলেছিলেন, ‘গভর্নমেন্ট অব দ্য পিপল, বাই দ্য পিপল, ফর দ্য
২ দিন আগে