আবু হেনা তিমু
বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে বিভুরঞ্জন সরকার এক অনন্য নাম। তাঁর জীবনের সমাপ্তি আমাদের মনে যে শূন্যতার রেখা টেনে দিয়েছে, তা সহজে মুছে যাওয়ার নয়। তিনি ছিলেন কলম যোদ্ধা, ছাত্ররাজনীতির সংগঠক, আর সর্বোপরি একজন নির্ভেজাল মানুষ।
১৯৫৪ সালে জন্ম নেওয়া বিভুরঞ্জন স্কুলজীবনেই সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি পান। দৈনিক আজাদে সংবাদদাতা হিসেবে তাঁর প্রথম লেখালিখি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে পূর্ণকালীন সাংবাদিকতায় প্রবেশ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন, এমনকি ডাকসু নির্বাচনে হোল সংসদ থেকেও প্রার্থী হন। আশির দশকের গোড়ার দিকে ছাত্র ইউনিয়নের সংকটময় সময়ে তাঁর এবং তাঁর সমসাময়িক ছাত্রনেতাদের অবদানেই সংগঠনটি পুনর্জাগরণের পথে এগোয়।
তবে সাংবাদিকতার ভুবনেই বিভুরঞ্জন সরকার হয়ে ওঠেন সর্বাধিক পরিচিত। যদিও সাধারণভাবে তাঁকে আমরা কলামিস্ট হিসেবে জানি, তাঁর ভূমিকা এর চেয়ে অনেক বিস্তৃত। তিনি শুধু কলাম লিখতেন না—তিনি ছিলেন সংবাদপত্র সংগঠনের অন্যতম কারিগর। আজকের পত্রিকা প্রতিষ্ঠার সময় তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ২০০০ সালের পর থেকে তাঁর সাথে কাজে, না কাজে আমার মাত্র কয়েকবার কথা হয়। সেই কথাবার্তায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল—লেখালিখি তাঁর কাছে পেশা নয়, বরং এক ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা।
যতদূর মনে পড়ে, শান্তিনগর থেকে তিনি সম্পাদনা করতেন সাপ্তাহিক চলতিপত্র নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। সেই পত্রিকার কয়েকটি বিশেষ সংখ্যার কভার ডিজাইন করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। প্রতিবারই তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতায় আমি পেয়েছি একজন সহজ-সরল অথচ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মানুষকে। আমার বিশ্বাস, বিভুদার সঙ্গে কারো ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব সংঘাত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
বিভুরঞ্জন সরকার সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাহিত্যচর্চায়ও রেখেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর। তাঁর প্রকাশিত প্রবন্ধগ্রন্থের সংখ্যা দশের অধিক, সম্পাদিত গ্রন্থ চারটি। সাম্প্রতিক প্রকাশিত "শেখ হাসিনা: স্বপ্নপূরণের সফল কারিগর" কিংবা "মোনায়েম সরকার যখন নির্বাসনে" গ্রন্থ তাঁকে সমকালীন রাজনীতি ও ইতিহাসের একজন মননশীল ব্যাখ্যাকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
কিন্তু জীবনের অন্তিম সময়টা তিনি কাটিয়েছেন নানা দুঃখ-কষ্টে। নিজের শারীরিক অসুস্থতা, ছেলের অসুস্থতা, আর্থিক সংকট—সব মিলিয়ে তিনি এক গভীর অবসাদে ডুবে গিয়েছিলেন। ২০২৫ সালের ২১ আগস্ট তিনি একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন, যেখানে লিখে যান—এটা জীবনের শেষ লেখা হিসেবে ছাপতে পারেন। সেই লেখায় তাঁর যন্ত্রণা, বেদনা আর অসহায়তার কথা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছিল। পরের দিনই (২২ আগস্ট ২০২৫) মেঘনা নদী থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়—সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক বেদনাবিধুর অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে।
বিভুরঞ্জন সরকার আজ নেই, কিন্তু তাঁর কলম, তাঁর সততা আর তাঁর মানবিকতা আমাদের প্রেরণা হয়ে থাকবে। তিনি দেখিয়েছেন, একজন সাংবাদিকের জীবন কেবল সংবাদ সংগ্রহ বা কলাম লেখা নয়—এটি সমাজ, সত্য এবং মানুষের প্রতি এক অবিচল দায়বদ্ধতা।
তাঁকে স্মরণ করে আমরা শুধু একজন সাংবাদিককে নয়, একজন সহৃদয় মানুষকেও স্মরণ করি। বিভুরঞ্জন সরকার ছিলেন এমন এক মানুষ, যিনি জীবনকে কঠিনতম পরিস্থিতিতেও মানবিকতার আলো দিয়ে উজ্জ্বল করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর প্রস্থান আমাদের জন্য বেদনার হলেও, তাঁর আদর্শ আমাদের পথ দেখাতে থাকবে চিরদিন।
বাংলাদেশের সাংবাদিকতার ইতিহাসে বিভুরঞ্জন সরকার এক অনন্য নাম। তাঁর জীবনের সমাপ্তি আমাদের মনে যে শূন্যতার রেখা টেনে দিয়েছে, তা সহজে মুছে যাওয়ার নয়। তিনি ছিলেন কলম যোদ্ধা, ছাত্ররাজনীতির সংগঠক, আর সর্বোপরি একজন নির্ভেজাল মানুষ।
১৯৫৪ সালে জন্ম নেওয়া বিভুরঞ্জন স্কুলজীবনেই সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি পান। দৈনিক আজাদে সংবাদদাতা হিসেবে তাঁর প্রথম লেখালিখি। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে পড়াশোনা শেষ করে পূর্ণকালীন সাংবাদিকতায় প্রবেশ করেন। ছাত্রজীবনে তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন, এমনকি ডাকসু নির্বাচনে হোল সংসদ থেকেও প্রার্থী হন। আশির দশকের গোড়ার দিকে ছাত্র ইউনিয়নের সংকটময় সময়ে তাঁর এবং তাঁর সমসাময়িক ছাত্রনেতাদের অবদানেই সংগঠনটি পুনর্জাগরণের পথে এগোয়।
তবে সাংবাদিকতার ভুবনেই বিভুরঞ্জন সরকার হয়ে ওঠেন সর্বাধিক পরিচিত। যদিও সাধারণভাবে তাঁকে আমরা কলামিস্ট হিসেবে জানি, তাঁর ভূমিকা এর চেয়ে অনেক বিস্তৃত। তিনি শুধু কলাম লিখতেন না—তিনি ছিলেন সংবাদপত্র সংগঠনের অন্যতম কারিগর। আজকের পত্রিকা প্রতিষ্ঠার সময় তাঁর সক্রিয় ভূমিকা ছিল। ২০০০ সালের পর থেকে তাঁর সাথে কাজে, না কাজে আমার মাত্র কয়েকবার কথা হয়। সেই কথাবার্তায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছিল—লেখালিখি তাঁর কাছে পেশা নয়, বরং এক ধরনের সামাজিক দায়বদ্ধতা।
যতদূর মনে পড়ে, শান্তিনগর থেকে তিনি সম্পাদনা করতেন সাপ্তাহিক চলতিপত্র নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা। সেই পত্রিকার কয়েকটি বিশেষ সংখ্যার কভার ডিজাইন করার সৌভাগ্য হয়েছিল আমার। প্রতিবারই তাঁর সঙ্গে আলাপচারিতায় আমি পেয়েছি একজন সহজ-সরল অথচ দৃঢ়প্রতিজ্ঞ মানুষকে। আমার বিশ্বাস, বিভুদার সঙ্গে কারো ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব সংঘাত থাকার প্রশ্নই ওঠে না।
বিভুরঞ্জন সরকার সাংবাদিকতার পাশাপাশি সাহিত্যচর্চায়ও রেখেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর। তাঁর প্রকাশিত প্রবন্ধগ্রন্থের সংখ্যা দশের অধিক, সম্পাদিত গ্রন্থ চারটি। সাম্প্রতিক প্রকাশিত "শেখ হাসিনা: স্বপ্নপূরণের সফল কারিগর" কিংবা "মোনায়েম সরকার যখন নির্বাসনে" গ্রন্থ তাঁকে সমকালীন রাজনীতি ও ইতিহাসের একজন মননশীল ব্যাখ্যাকার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
কিন্তু জীবনের অন্তিম সময়টা তিনি কাটিয়েছেন নানা দুঃখ-কষ্টে। নিজের শারীরিক অসুস্থতা, ছেলের অসুস্থতা, আর্থিক সংকট—সব মিলিয়ে তিনি এক গভীর অবসাদে ডুবে গিয়েছিলেন। ২০২৫ সালের ২১ আগস্ট তিনি একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন, যেখানে লিখে যান—এটা জীবনের শেষ লেখা হিসেবে ছাপতে পারেন। সেই লেখায় তাঁর যন্ত্রণা, বেদনা আর অসহায়তার কথা স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছিল। পরের দিনই (২২ আগস্ট ২০২৫) মেঘনা নদী থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়—সাংবাদিকতার ইতিহাসে এক বেদনাবিধুর অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে।
বিভুরঞ্জন সরকার আজ নেই, কিন্তু তাঁর কলম, তাঁর সততা আর তাঁর মানবিকতা আমাদের প্রেরণা হয়ে থাকবে। তিনি দেখিয়েছেন, একজন সাংবাদিকের জীবন কেবল সংবাদ সংগ্রহ বা কলাম লেখা নয়—এটি সমাজ, সত্য এবং মানুষের প্রতি এক অবিচল দায়বদ্ধতা।
তাঁকে স্মরণ করে আমরা শুধু একজন সাংবাদিককে নয়, একজন সহৃদয় মানুষকেও স্মরণ করি। বিভুরঞ্জন সরকার ছিলেন এমন এক মানুষ, যিনি জীবনকে কঠিনতম পরিস্থিতিতেও মানবিকতার আলো দিয়ে উজ্জ্বল করার চেষ্টা করেছেন। তাঁর প্রস্থান আমাদের জন্য বেদনার হলেও, তাঁর আদর্শ আমাদের পথ দেখাতে থাকবে চিরদিন।
নুসরাত বলেন, ‘মানুষ ভাবে, নুসরাত মানেই বিতর্ক। কিন্তু আমি তার চেয়েও অনেক বেশি কিছু। যারা সমালোচনা করে, তারা জানেই না আমার ভিতরে কী চলছিল। অনেকে যা বলে, তার অনেকটাই সত্যি নয়, অর্ধসত্য।’
১ দিন আগেঅ্যালি পড়ালেখার পাশাপাশি স্থানীয় এক সুইমিং পুলে রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করতেন। তার সঙ্গে ছোট ভাইও একই কাজ করত। বাসা থেকে হাঁটতে হাঁটতে তিন-চার মিনিটেই পৌঁছে যাওয়া যায় সেখানে। ২০০২ সালের ১৮ জুনও প্রতিদিনের মতো কাজে গিয়েছিলেন অ্যালি। সেদিন আবহাওয়া ভালো ছিল না, তাই খুব বেশি লোক সাঁতার কাটতে আসেননি। ফলে কাজও
১ দিন আগেকলকাতার মাটিতে জন্ম হলেও, তার হৃদয় ও আত্মা ছিল বাংলাদেশের মাটির সঙ্গে নিবিড়ভাবে জড়িত। শৈশব থেকেই জ্ঞানের প্রতি অদম্য তৃষ্ণা ও সমাজের প্রতি গভীর দায়বদ্ধতা তাঁকে এক অনন্য ব্যক্তিত্বে পরিণত করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের ছাত্রী হয়েও তিনি কেবল বিজ্ঞানেই সীমাবদ্ধ থাকেন নি; জ্ঞানের প্রতিটি শাখা
১ দিন আগেসাধারণভাবে মাথা ব্যথাকে কয়েকটি ভাগে ফেলা হয়। যেমন টেনশন হেডেক, মাইগ্রেন, সাইনাসজনিত ব্যথা, কিংবা ক্লাস্টার হেডেক। তবে এর বাইরেও রয়েছে নানা ভৌতিক ও মানসিক কারণ, যা মানুষের মাথা ব্যথাকে অতিরিক্ত বাড়িয়ে দেয়।
১ দিন আগে