অরুণাভ বিশ্বাস
একসময় যিনি শুধু প্রযুক্তির পরিধিতেই আলোচিত ছিলেন, এখন তিনিই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এলন মাস্ক—বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি, টেসলা, স্পেসএক্স, নিউরালিংক ও এক্স (সাবেক টুইটার)-এর মালিক—ধীরে ধীরে এমন এক রাজনৈতিক চরিত্রে পরিণত হয়েছেন, যিনি শুধুমাত্র প্রযুক্তি নয়, গণমাধ্যম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অভিবাসননীতি এবং এমনকি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েও সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন। মাস্ক কীভাবে প্রযুক্তিবিদ থেকে রাজনীতির প্রভাবশালী খেলোয়াড় হয়ে উঠলেন, সেটি এখন বিশ্বজুড়ে এক আলোচ্য বিষয়।
শুরুটা হয়েছিল মূলত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে মাস্কের উদ্বেগ দিয়ে। ২০২২ সালে যখন তিনি টুইটার কিনে নেন, তখন তার বক্তব্য ছিল, ‘মুক্ত মতপ্রকাশই গণতন্ত্রের ভিত্তি।’ তিনি অভিযোগ করেন, টুইটার একটি পক্ষপাতদুষ্ট মাধ্যম হয়ে পড়েছে এবং মতাদর্শগতভাবে ভিন্নমতাবলম্বীদের কণ্ঠরোধ করছে। তিনি প্রতিষ্ঠানটি কিনে নিলে ‘সত্য’ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মাস্কের মালিকানায় যাওয়ার পর থেকে টুইটারে উগ্র-ডানপন্থী কনটেন্টের পরিমাণ বেড়ে যায়, এবং বিজ্ঞান, জলবায়ু পরিবর্তন ও ভ্যাকসিন ইস্যুতে বিভ্রান্তিকর তথ্য ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এই প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রযুক্তি ও গণতন্ত্র বিশ্লেষক ড. নোরা ম্যাকডোনাল্ড বলেন, “এলন মাস্কের মতো একজন প্রভাবশালী প্রযুক্তিবিদের হাতে যখন একটি বৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চলে যায়, তখন সেটি আর শুধু প্রযুক্তি বিষয়ক ঘটনা থাকে না, সেটি হয়ে ওঠে রাজনৈতিক ক্ষমতার পুনর্বণ্টন। তার মতামত বা অ্যালগরিদম নিয়ন্ত্রণ লক্ষ-কোটি মানুষের চিন্তাকে প্রভাবিত করতে পারে।”
মাস্ক সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী না হলেও, তিনি প্রায়ই রিপাবলিকান দলঘেঁষা অবস্থান নেন। যেমন ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি প্রকাশ্যে বলেন, “আমি এখন থেকে রিপাবলিকানদের ভোট দেবো।” এ ছাড়া তিনি ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিসের প্রেসিডেন্সিয়াল সম্ভাব্যতা নিয়ে সরাসরি আলোচনা করেন এবং বিতর্ক অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় সহায়তা করেন। এসব ঘটনায় মাস্ক রাজনৈতিক পরিসরে একজন ‘কিংমেকার’ হিসেবে আবির্ভূত হন।
তার রাজনৈতিক আগ্রহ সীমাবদ্ধ নয় কেবল মার্কিন ভূখণ্ডে। ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন সময় তিনি এক টুইটে ইউক্রেনকে আলোচনার মাধ্যমে অঞ্চল ছাড়ার প্রস্তাব দেন, যা ইউক্রেনীয় জনগণ ও নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। আবার তিনি চীন নিয়েও বলেন, তাইওয়ান যদি চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে থাকে, তবে দ্বন্দ্ব এড়ানো সম্ভব। এমন বক্তব্যে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলে প্রশ্ন উঠে, একজন প্রযুক্তিবিদ কীভাবে এমন স্পর্শকাতর ভূরাজনৈতিক বিষয়ে অবস্থান নিতে পারেন।
এই বিষয়ে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ক্লেয়ার গর্ডন বলেন, “এলন মাস্ক রাজনীতিতে এক নতুন চরিত্র এনেছেন—যিনি ধন-প্রযুক্তি ও জনমাধ্যমকে একসঙ্গে ব্যবহার করে কূটনৈতিক আলোচনাকেও প্রভাবিত করতে পারেন। এটি একটি আশঙ্কাজনক উদাহরণ, যেখানে নির্বাচিত নয়, বরং সম্পদ ও প্রযুক্তির অধিকারী কেউ বৈশ্বিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করছেন।”
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মাস্কের ভূমিকা ক্রমেই গভীরতর হচ্ছে। ‘বর্ডার সিকিউরিটি’ বা সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে তার অবস্থান কড়া। তিনি সরাসরি বাইডেন প্রশাসনের অভিবাসননীতিকে ‘ব্যর্থ’ বলে মন্তব্য করেন এবং সীমান্তে গিয়ে ছবি তুলে পোস্ট করেন, যাতে ইঙ্গিত থাকে যে দেশটি ‘নিয়ন্ত্রণহীনভাবে’ অভিবাসী প্রবেশে বাধ্য হচ্ছে। আবার তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, ইলেকট্রিক গাড়ি এবং শিল্প কার্বন নিঃসরণ—এসব বিষয়ে এক সময় সচেতন থাকলেও, ইদানীং কিছু বিষয়ে দ্বিধাজনক মন্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, যাতে তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আরও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্কের রাজনীতিতে জড়ানোর প্রধান পটভূমি হলো তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ। স্পেসএক্সের মতো প্রতিষ্ঠান সরকারের সহযোগিতা ছাড়া বড় পরিসরে কাজ করতে পারে না। টেসলার গাড়ির বিক্রিও নির্ভর করে নানা পরিবেশবান্ধব নীতিমালার ওপর। এ ছাড়া ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) যেন নিয়ন্ত্রিত না হয় বা সরকার যেন সোশ্যাল মিডিয়ায় হস্তক্ষেপ না করে, সে দিক থেকেও মাস্ক চান রাজনৈতিক মিত্রতা তৈরি করতে।
এই বিষয়ে ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো ড. ড্যারেল ওয়েস্ট বলেন, “এলন মাস্ক ব্যবসা ও রাজনীতির মধ্যকার সীমানা ভেঙে ফেলেছেন। তার রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ব্যবসার স্বার্থ রক্ষার প্রয়াস, আবার ব্যবসা ব্যবহার করছেন রাজনীতিতে অবস্থান জোরালো করার জন্য। এটি একধরনের পারস্পরিক পুষ্টি।”
তবে মাস্কের এই সক্রিয়তা শুধু ইতিবাচক নয়। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, তিনি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকেই হুমকির মুখে ফেলতে পারেন। টুইটারের নতুন মালিকানায় এসে মাস্ক সাংবাদিকদের অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে স্থগিত করেন এবং প্রতিষ্ঠানটির সংবাদ যাচাই দল ভেঙে দেন, যা সাংবাদিকতা ও তথ্যনির্ভর গণতন্ত্রের ওপর এক বড় আঘাত বলে মনে করা হয়।
তবে মাস্ক নিজের অবস্থানকে সবসময়ই যুক্তিসঙ্গত বলে ব্যাখ্যা দেন। তার মতে, “মিডিয়া এখন আর নিরপেক্ষ নেই। তাই জনগণকে সত্য জানাতে হলে একজন সাহসী উদ্যোক্তাকেই নেতৃত্ব নিতে হয়।” তিনি এক ধরনের ‘আউটসাইডার পলিটিশিয়ান’-এর মতো নিজেকে তুলে ধরেন, যিনি ‘সিস্টেম’ ভেঙে ফেলে নতুন নিয়ম তৈরি করতে চান।
যদিও রাজনীতিতে মাস্কের সরাসরি প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নেই, কিন্তু তার টুইট, অবস্থান, মিডিয়া ব্যবস্থাপনা ও বিশাল ফলোয়ার বেস তাকে এমন এক অবস্থানে এনেছে, যেখানে তিনি প্রচলিত রাজনৈতিক নেতাদের চেয়েও বেশি প্রভাব ফেলতে পারেন। তার একটি টুইট বাজার নড়বড়ে করতে পারে, কিংবা জনমতকে ঘুরিয়ে দিতে পারে।
সবশেষে বলা যায়, এলন মাস্কের রাজনীতিতে জড়ানো কোনো হঠাৎ ঘটনা নয়। এটি তার দীর্ঘদিনের সামাজিক, প্রযুক্তিগত ও ব্যবসায়িক সক্রিয়তার এক স্বাভাবিক পরিণতি। একসময় যিনি রকেট বা গাড়ির প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলতেন, এখন তিনি কথা বলেন সীমান্ত, সংবাদমাধ্যম কিংবা ভূরাজনীতি নিয়ে। তাঁর এই জড়ানো কেউ কেউ দেখছেন গণতন্ত্রের বিকল্প এক বাস্তবতা হিসেবে, আবার কেউ কেউ একে দেখছেন ধনিক শ্রেণির হাতে গণতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ার অশনি সংকেত হিসেবে। যেভাবেই হোক, এটা পরিষ্কার—এলন মাস্ক শুধু প্রযুক্তির মানুষ নন, তিনি এখন রাজনীতিরও এক প্রভাবশালী নাম।
একসময় যিনি শুধু প্রযুক্তির পরিধিতেই আলোচিত ছিলেন, এখন তিনিই যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। এলন মাস্ক—বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যক্তি, টেসলা, স্পেসএক্স, নিউরালিংক ও এক্স (সাবেক টুইটার)-এর মালিক—ধীরে ধীরে এমন এক রাজনৈতিক চরিত্রে পরিণত হয়েছেন, যিনি শুধুমাত্র প্রযুক্তি নয়, গণমাধ্যম, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, অভিবাসননীতি এবং এমনকি নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়েও সরাসরি হস্তক্ষেপ করছেন। মাস্ক কীভাবে প্রযুক্তিবিদ থেকে রাজনীতির প্রভাবশালী খেলোয়াড় হয়ে উঠলেন, সেটি এখন বিশ্বজুড়ে এক আলোচ্য বিষয়।
শুরুটা হয়েছিল মূলত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নিয়ে মাস্কের উদ্বেগ দিয়ে। ২০২২ সালে যখন তিনি টুইটার কিনে নেন, তখন তার বক্তব্য ছিল, ‘মুক্ত মতপ্রকাশই গণতন্ত্রের ভিত্তি।’ তিনি অভিযোগ করেন, টুইটার একটি পক্ষপাতদুষ্ট মাধ্যম হয়ে পড়েছে এবং মতাদর্শগতভাবে ভিন্নমতাবলম্বীদের কণ্ঠরোধ করছে। তিনি প্রতিষ্ঠানটি কিনে নিলে ‘সত্য’ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, মাস্কের মালিকানায় যাওয়ার পর থেকে টুইটারে উগ্র-ডানপন্থী কনটেন্টের পরিমাণ বেড়ে যায়, এবং বিজ্ঞান, জলবায়ু পরিবর্তন ও ভ্যাকসিন ইস্যুতে বিভ্রান্তিকর তথ্য ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এই প্রসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের হাভার্ড ইউনিভার্সিটির প্রযুক্তি ও গণতন্ত্র বিশ্লেষক ড. নোরা ম্যাকডোনাল্ড বলেন, “এলন মাস্কের মতো একজন প্রভাবশালী প্রযুক্তিবিদের হাতে যখন একটি বৃহৎ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম চলে যায়, তখন সেটি আর শুধু প্রযুক্তি বিষয়ক ঘটনা থাকে না, সেটি হয়ে ওঠে রাজনৈতিক ক্ষমতার পুনর্বণ্টন। তার মতামত বা অ্যালগরিদম নিয়ন্ত্রণ লক্ষ-কোটি মানুষের চিন্তাকে প্রভাবিত করতে পারে।”
মাস্ক সরাসরি কোনো রাজনৈতিক দলের প্রার্থী না হলেও, তিনি প্রায়ই রিপাবলিকান দলঘেঁষা অবস্থান নেন। যেমন ২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে তিনি প্রকাশ্যে বলেন, “আমি এখন থেকে রিপাবলিকানদের ভোট দেবো।” এ ছাড়া তিনি ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডিসান্টিসের প্রেসিডেন্সিয়াল সম্ভাব্যতা নিয়ে সরাসরি আলোচনা করেন এবং বিতর্ক অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় সহায়তা করেন। এসব ঘটনায় মাস্ক রাজনৈতিক পরিসরে একজন ‘কিংমেকার’ হিসেবে আবির্ভূত হন।
তার রাজনৈতিক আগ্রহ সীমাবদ্ধ নয় কেবল মার্কিন ভূখণ্ডে। ইউক্রেন যুদ্ধ চলাকালীন সময় তিনি এক টুইটে ইউক্রেনকে আলোচনার মাধ্যমে অঞ্চল ছাড়ার প্রস্তাব দেন, যা ইউক্রেনীয় জনগণ ও নেতৃত্বের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে। আবার তিনি চীন নিয়েও বলেন, তাইওয়ান যদি চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে থাকে, তবে দ্বন্দ্ব এড়ানো সম্ভব। এমন বক্তব্যে আন্তর্জাতিক কূটনীতিক মহলে প্রশ্ন উঠে, একজন প্রযুক্তিবিদ কীভাবে এমন স্পর্শকাতর ভূরাজনৈতিক বিষয়ে অবস্থান নিতে পারেন।
এই বিষয়ে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ড. ক্লেয়ার গর্ডন বলেন, “এলন মাস্ক রাজনীতিতে এক নতুন চরিত্র এনেছেন—যিনি ধন-প্রযুক্তি ও জনমাধ্যমকে একসঙ্গে ব্যবহার করে কূটনৈতিক আলোচনাকেও প্রভাবিত করতে পারেন। এটি একটি আশঙ্কাজনক উদাহরণ, যেখানে নির্বাচিত নয়, বরং সম্পদ ও প্রযুক্তির অধিকারী কেউ বৈশ্বিক সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ করছেন।”
যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে মাস্কের ভূমিকা ক্রমেই গভীরতর হচ্ছে। ‘বর্ডার সিকিউরিটি’ বা সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে তার অবস্থান কড়া। তিনি সরাসরি বাইডেন প্রশাসনের অভিবাসননীতিকে ‘ব্যর্থ’ বলে মন্তব্য করেন এবং সীমান্তে গিয়ে ছবি তুলে পোস্ট করেন, যাতে ইঙ্গিত থাকে যে দেশটি ‘নিয়ন্ত্রণহীনভাবে’ অভিবাসী প্রবেশে বাধ্য হচ্ছে। আবার তিনি জলবায়ু পরিবর্তন, ইলেকট্রিক গাড়ি এবং শিল্প কার্বন নিঃসরণ—এসব বিষয়ে এক সময় সচেতন থাকলেও, ইদানীং কিছু বিষয়ে দ্বিধাজনক মন্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন, যাতে তার রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে আরও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্কের রাজনীতিতে জড়ানোর প্রধান পটভূমি হলো তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানগুলোর ভবিষ্যৎ। স্পেসএক্সের মতো প্রতিষ্ঠান সরকারের সহযোগিতা ছাড়া বড় পরিসরে কাজ করতে পারে না। টেসলার গাড়ির বিক্রিও নির্ভর করে নানা পরিবেশবান্ধব নীতিমালার ওপর। এ ছাড়া ‘এক্স’ (সাবেক টুইটার) যেন নিয়ন্ত্রিত না হয় বা সরকার যেন সোশ্যাল মিডিয়ায় হস্তক্ষেপ না করে, সে দিক থেকেও মাস্ক চান রাজনৈতিক মিত্রতা তৈরি করতে।
এই বিষয়ে ব্রুকিংস ইনস্টিটিউশনের সিনিয়র ফেলো ড. ড্যারেল ওয়েস্ট বলেন, “এলন মাস্ক ব্যবসা ও রাজনীতির মধ্যকার সীমানা ভেঙে ফেলেছেন। তার রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ ব্যবসার স্বার্থ রক্ষার প্রয়াস, আবার ব্যবসা ব্যবহার করছেন রাজনীতিতে অবস্থান জোরালো করার জন্য। এটি একধরনের পারস্পরিক পুষ্টি।”
তবে মাস্কের এই সক্রিয়তা শুধু ইতিবাচক নয়। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, তিনি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকেই হুমকির মুখে ফেলতে পারেন। টুইটারের নতুন মালিকানায় এসে মাস্ক সাংবাদিকদের অ্যাকাউন্ট সাময়িকভাবে স্থগিত করেন এবং প্রতিষ্ঠানটির সংবাদ যাচাই দল ভেঙে দেন, যা সাংবাদিকতা ও তথ্যনির্ভর গণতন্ত্রের ওপর এক বড় আঘাত বলে মনে করা হয়।
তবে মাস্ক নিজের অবস্থানকে সবসময়ই যুক্তিসঙ্গত বলে ব্যাখ্যা দেন। তার মতে, “মিডিয়া এখন আর নিরপেক্ষ নেই। তাই জনগণকে সত্য জানাতে হলে একজন সাহসী উদ্যোক্তাকেই নেতৃত্ব নিতে হয়।” তিনি এক ধরনের ‘আউটসাইডার পলিটিশিয়ান’-এর মতো নিজেকে তুলে ধরেন, যিনি ‘সিস্টেম’ ভেঙে ফেলে নতুন নিয়ম তৈরি করতে চান।
যদিও রাজনীতিতে মাস্কের সরাসরি প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা নেই, কিন্তু তার টুইট, অবস্থান, মিডিয়া ব্যবস্থাপনা ও বিশাল ফলোয়ার বেস তাকে এমন এক অবস্থানে এনেছে, যেখানে তিনি প্রচলিত রাজনৈতিক নেতাদের চেয়েও বেশি প্রভাব ফেলতে পারেন। তার একটি টুইট বাজার নড়বড়ে করতে পারে, কিংবা জনমতকে ঘুরিয়ে দিতে পারে।
সবশেষে বলা যায়, এলন মাস্কের রাজনীতিতে জড়ানো কোনো হঠাৎ ঘটনা নয়। এটি তার দীর্ঘদিনের সামাজিক, প্রযুক্তিগত ও ব্যবসায়িক সক্রিয়তার এক স্বাভাবিক পরিণতি। একসময় যিনি রকেট বা গাড়ির প্রযুক্তি নিয়ে কথা বলতেন, এখন তিনি কথা বলেন সীমান্ত, সংবাদমাধ্যম কিংবা ভূরাজনীতি নিয়ে। তাঁর এই জড়ানো কেউ কেউ দেখছেন গণতন্ত্রের বিকল্প এক বাস্তবতা হিসেবে, আবার কেউ কেউ একে দেখছেন ধনিক শ্রেণির হাতে গণতন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ চলে যাওয়ার অশনি সংকেত হিসেবে। যেভাবেই হোক, এটা পরিষ্কার—এলন মাস্ক শুধু প্রযুক্তির মানুষ নন, তিনি এখন রাজনীতিরও এক প্রভাবশালী নাম।
গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সর্বশেষ প্রস্তাব নিয়ে হামাসের সঙ্গে আলোচনা করতে কাতারে প্রতিনিধিদল পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল।
১০ ঘণ্টা আগেডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বিরোধের কয়েক সপ্তাহ পরই দল গঠনের ঘোষণা দিলেন মাস্ক। তবে মাস্কের এই ঘোষণার পর প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা হোয়াইট হাউজের পক্ষ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানা যায়নি।
১১ ঘণ্টা আগেরনির পিতা মাহমুদ সরদার জানান, আড়াই বছর আগে পরিবারে স্বচ্ছলতা ফেরাতে প্রবাস জীবন শুরু করেন রনি। শুরু থেকে সে কনস্ট্রাশনের কাজ করতো। ঘটনার দিন সকালে নির্ধারিত ভবনে কাজের সময় একটি ক্রেনের চেইন ছিড়ে রনি চাপা পড়লে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তার এক সহযোগী শ্রমিক মোবাইল ফোনে মৃত্যুর সংবাদটি আমাদের জানায়।
১ দিন আগেপ্রাইভেট গাড়িটিতে ১০ জন যাত্রী ছিলেন। তারা সবাই একই পরিবারের সদস্য। বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে কনের বাড়িতে যাচ্ছিল। গাড়িটির বেপরোয়া গতিতে চলছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন। ঘটনাস্থলেই বর সুরজ নিহত হন।
১ দিন আগে