ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
ঢাকার ইতিহাস বহু রঙে রাঙানো। তবে এ শহরের ধর্মীয় সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে তাজিয়া মিছিল। মোহররম মাসে এই মিছিল শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং এক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং নান্দনিক ঐতিহ্যও বটে। বহু শতাব্দী ধরে ঢাকায় চলে আসছে এই শোকের মিছিল, যার শিকড় জড়িয়ে আছে ইরাকের কারবালার প্রান্তরে ঘটে যাওয়া সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার সঙ্গে—যেখানে নবী মুহাম্মদের (স.) প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (আ.) ও তাঁর অনুসারীরা শহীদ হয়েছিলেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঢাকার তাজিয়া মিছিলের সূচনা ঘটে মুঘল আমলে, ষোড়শ শতাব্দীর শেষদিকে। সেই সময় ঢাকায় শাসন করতেন সুবাদারদের প্রতিনিধি হিসেবে আগত মুঘল আমলারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন এমন অনেকেই, যারা শিয়া মতাবলম্বী ছিলেন। তাঁরা মোহররম মাসে কারবালার শহীদদের স্মরণে তাজিয়া তৈরি করতেন এবং শোকমিছিলের আয়োজন করতেন। ঢাকা শহরে সেই সময়ে গড়ে ওঠে ইমামবাড়া, হোসেনি দালান, শোকঘর ও মাজার—যেখানে ধর্মীয় আবেগ আর কারবালার বেদনা একাকার হয়ে যেত।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল পুরান ঢাকার হোসেনি দালান। এটি নির্মিত হয় ১৬৪২ সালের দিকে মুঘল সুবাদার শাহ শুজার আমলে। হোসেনি দালানের আঙিনায়ই প্রতি বছর জমে উঠত মোহররমের নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, যার চূড়ান্ত রূপ ছিল ১০ মহররমে বের হওয়া তাজিয়া মিছিল। এই দালানের কেন্দ্র থেকেই ঢাকার তাজিয়া মিছিল যাত্রা শুরু করত, আর ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ত গোটা নগরে।
তাজিয়া শব্দটি এসেছে ‘আল-তাজিয়া’ থেকে, যার অর্থ ‘সান্ত্বনা’ বা ‘শোক প্রকাশ’। এটি সাধারণত কারবালার শহীদদের প্রতীক হিসেবে বানানো এক ধরনের শোকস্মারক। কাঠ, বাঁশ, রঙিন কাপড়, পালকি ও রূপালী অলংকরণে তৈরি এই কাঠামো দেখতে অনেকটা মাজার বা মিনারের মতো। শোকের বহিঃপ্রকাশের এক নান্দনিক মাধ্যম হিসেবে তাজিয়া মিছিল দীর্ঘকাল ধরে রচিত করে এসেছে কারবালার বেদনার শিল্পিত অনুবাদ।
মিছিলের সময় অংশগ্রহণকারীরা মাথায় কফনের কাপড় বেঁধে, বুক চাপড়ে, ‘হায় হোসেন’, ‘হায় আব্বাস’ ধ্বনি তুলে মিছিল করে। অনেকে হাতে থাকে তরবারির প্রতীক, কেউবা নগ্ন পায়ে হেঁটে শহীদদের প্রতি শোক প্রকাশ করে। এ যেন এক চলমান নাটকীয় শোকানুষ্ঠান, যার প্রতিটি পদক্ষেপে মিশে থাকে ইতিহাস, আবেগ ও ধর্মীয় শ্রদ্ধা।
এই মিছিল নিয়ে গবেষণা করেছেন কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মাইকেল নাইট। তিনি বলেন, “ঢাকার তাজিয়া মিছিল হচ্ছে দক্ষিণ এশীয় শোকপ্রকাশের এক অনন্য নিদর্শন, যেখানে ধর্মীয় বিশ্বাস, লোকজ সংস্কৃতি ও রাজনীতির মিলন ঘটে। এটি কেবল ধর্ম নয়, বরং এক ধরনের সাংস্কৃতিক মঞ্চায়ন, যার মাধ্যমে মানুষ অতীতের বেদনার সঙ্গে বর্তমানের পরিচয় ঘটায়।”
এছাড়া যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ ড. লুসি ক্যারোল তাঁর এক গবেষণাপত্রে লেখেন, “বাংলাদেশে তাজিয়া মিছিল শুধু কারবালার শোক নয়, বরং এটি এক সামাজিক অনুষঙ্গ, যেখানে শ্রেণি, সম্প্রদায় ও ইতিহাস মিলেমিশে এক নতুন পরিচিতি তৈরি করে।”
ঢাকায় তাজিয়া মিছিল ঘিরে বহু বছর ধরে গড়ে উঠেছে একধরনের লোকজ ধর্মচর্চা। হোসেনি দালানে মহররমের প্রথম দশ দিন চলে মজলিস, যেখানে বক্তারা কারবালার ঘটনা বর্ণনা করেন। এসব বয়ানে উঠে আসে সাহস, আত্মত্যাগ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বার্তা।
তাজিয়া মিছিলের পথও একধরনের ঐতিহাসিক চিহ্ন বহন করে। এটি সাধারণত পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে শুরু হয়ে চকবাজার, নবাবপুর, বংশাল হয়ে চলে যায় নির্ধারিত কোনো কবরস্থানে বা নির্দিষ্ট জায়গায়। অনেক সময় তাজিয়া বিসর্জন দেওয়া হয়, আবার কখনো তা সংরক্ষণ করাও হয় পরবর্তী বছরগুলোতে ব্যবহারের জন্য।
ঢাকার ইতিহাস বহু রঙে রাঙানো। তবে এ শহরের ধর্মীয় সংস্কৃতির এক গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হচ্ছে তাজিয়া মিছিল। মোহররম মাসে এই মিছিল শুধু একটি ধর্মীয় আচার নয়, বরং এক ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক এবং নান্দনিক ঐতিহ্যও বটে। বহু শতাব্দী ধরে ঢাকায় চলে আসছে এই শোকের মিছিল, যার শিকড় জড়িয়ে আছে ইরাকের কারবালার প্রান্তরে ঘটে যাওয়া সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার সঙ্গে—যেখানে নবী মুহাম্মদের (স.) প্রিয় দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (আ.) ও তাঁর অনুসারীরা শহীদ হয়েছিলেন।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ঢাকার তাজিয়া মিছিলের সূচনা ঘটে মুঘল আমলে, ষোড়শ শতাব্দীর শেষদিকে। সেই সময় ঢাকায় শাসন করতেন সুবাদারদের প্রতিনিধি হিসেবে আগত মুঘল আমলারা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন এমন অনেকেই, যারা শিয়া মতাবলম্বী ছিলেন। তাঁরা মোহররম মাসে কারবালার শহীদদের স্মরণে তাজিয়া তৈরি করতেন এবং শোকমিছিলের আয়োজন করতেন। ঢাকা শহরে সেই সময়ে গড়ে ওঠে ইমামবাড়া, হোসেনি দালান, শোকঘর ও মাজার—যেখানে ধর্মীয় আবেগ আর কারবালার বেদনা একাকার হয়ে যেত।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল পুরান ঢাকার হোসেনি দালান। এটি নির্মিত হয় ১৬৪২ সালের দিকে মুঘল সুবাদার শাহ শুজার আমলে। হোসেনি দালানের আঙিনায়ই প্রতি বছর জমে উঠত মোহররমের নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠান, যার চূড়ান্ত রূপ ছিল ১০ মহররমে বের হওয়া তাজিয়া মিছিল। এই দালানের কেন্দ্র থেকেই ঢাকার তাজিয়া মিছিল যাত্রা শুরু করত, আর ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ত গোটা নগরে।
তাজিয়া শব্দটি এসেছে ‘আল-তাজিয়া’ থেকে, যার অর্থ ‘সান্ত্বনা’ বা ‘শোক প্রকাশ’। এটি সাধারণত কারবালার শহীদদের প্রতীক হিসেবে বানানো এক ধরনের শোকস্মারক। কাঠ, বাঁশ, রঙিন কাপড়, পালকি ও রূপালী অলংকরণে তৈরি এই কাঠামো দেখতে অনেকটা মাজার বা মিনারের মতো। শোকের বহিঃপ্রকাশের এক নান্দনিক মাধ্যম হিসেবে তাজিয়া মিছিল দীর্ঘকাল ধরে রচিত করে এসেছে কারবালার বেদনার শিল্পিত অনুবাদ।
মিছিলের সময় অংশগ্রহণকারীরা মাথায় কফনের কাপড় বেঁধে, বুক চাপড়ে, ‘হায় হোসেন’, ‘হায় আব্বাস’ ধ্বনি তুলে মিছিল করে। অনেকে হাতে থাকে তরবারির প্রতীক, কেউবা নগ্ন পায়ে হেঁটে শহীদদের প্রতি শোক প্রকাশ করে। এ যেন এক চলমান নাটকীয় শোকানুষ্ঠান, যার প্রতিটি পদক্ষেপে মিশে থাকে ইতিহাস, আবেগ ও ধর্মীয় শ্রদ্ধা।
এই মিছিল নিয়ে গবেষণা করেছেন কানাডার ম্যাকগিল ইউনিভার্সিটির ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মাইকেল নাইট। তিনি বলেন, “ঢাকার তাজিয়া মিছিল হচ্ছে দক্ষিণ এশীয় শোকপ্রকাশের এক অনন্য নিদর্শন, যেখানে ধর্মীয় বিশ্বাস, লোকজ সংস্কৃতি ও রাজনীতির মিলন ঘটে। এটি কেবল ধর্ম নয়, বরং এক ধরনের সাংস্কৃতিক মঞ্চায়ন, যার মাধ্যমে মানুষ অতীতের বেদনার সঙ্গে বর্তমানের পরিচয় ঘটায়।”
এছাড়া যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসবিদ ড. লুসি ক্যারোল তাঁর এক গবেষণাপত্রে লেখেন, “বাংলাদেশে তাজিয়া মিছিল শুধু কারবালার শোক নয়, বরং এটি এক সামাজিক অনুষঙ্গ, যেখানে শ্রেণি, সম্প্রদায় ও ইতিহাস মিলেমিশে এক নতুন পরিচিতি তৈরি করে।”
ঢাকায় তাজিয়া মিছিল ঘিরে বহু বছর ধরে গড়ে উঠেছে একধরনের লোকজ ধর্মচর্চা। হোসেনি দালানে মহররমের প্রথম দশ দিন চলে মজলিস, যেখানে বক্তারা কারবালার ঘটনা বর্ণনা করেন। এসব বয়ানে উঠে আসে সাহস, আত্মত্যাগ, অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের বার্তা।
তাজিয়া মিছিলের পথও একধরনের ঐতিহাসিক চিহ্ন বহন করে। এটি সাধারণত পুরান ঢাকার হোসেনি দালান থেকে শুরু হয়ে চকবাজার, নবাবপুর, বংশাল হয়ে চলে যায় নির্ধারিত কোনো কবরস্থানে বা নির্দিষ্ট জায়গায়। অনেক সময় তাজিয়া বিসর্জন দেওয়া হয়, আবার কখনো তা সংরক্ষণ করাও হয় পরবর্তী বছরগুলোতে ব্যবহারের জন্য।
ভিডিও বার্তায় হানিয়া বলেছিলেন, তিনি বাংলাদেশে আসছেন একটি ছোট্ট সারপ্রাইজ নিয়ে। সেই ‘সারপ্রাইজ’ ঠিক কী, তা হয়তো করপোরেট ইভেন্টের সীমায় আটকে থাকবে। কিন্তু ভক্তদের কাছে সবচেয়ে বড় চমক তো তিনি নিজেই— ঢাকায় এসে, এই শহরের মাটিতে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের প্রতি সমর্থন জানানো।
২২ দিন আগেকবি রেজাউদ্দিন স্টালিনকে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। রবিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
২২ দিন আগেঅনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন লেখক ও গবেষক রেহনুমা আহমেদ, সংগীতশিল্পী কফিল আহমেদ, বিশ্বসূফি সংস্থার সদস্য হাসান শাহ সুরেশ্বরী দীপু নূরী, সায়ান, অরূপ রাহী, কাজী কৃষ্ণকলি ইসলাম, সহজিয়া ব্যান্ডের রাজুসহ বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী, সাংবাদিক ও সংস্কৃতিকর্মীরা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সমগীতের সভাপ্রধ
২৩ দিন আগেপ্রভাবশালী ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান তাদের বৃহস্পতিবার প্রথম পাতা সাজিয়েছে ট্রাম্পের সফর নিয়েই। সেখানে মূল সংবাদের পাশেই স্থান পেয়েছে ব্রিটিশ ‘পোয়েট লরিয়েট’ তথা রাষ্ট্রীয়ভাবে নিযুক্ত কবি ক্যারল অ্যান ডাফির কবিতা STATE/BANQUET। বিশ্বব্যবস্থা যে রাজনৈতিক বাস্তবতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তারই এক মূর্ত
২৪ দিন আগে