রাজু আলীম
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে আমরা দেখেছি, বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক ছিল ভায়া ভারত। শেখ হাসিনার সঙ্গে আমেরকিার সম্পর্ক এতটাই খারাপ ছিল যে বাংলাদেশের যেকোনো বিষয়ে দূতিয়ালি করত ভারত। এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ১৫ থেকে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে এরই মধ্যে ড. ইউনূস চিঠি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। জানিয়েছেন, সরাসরি কথাও বলবেন তিনি। বাণিজ্য উপদেষ্টাও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর ইউএসটিআরকে আরেকটি চিঠি দিয়েছেন।
রপ্তানি পণ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পালটা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ও বাণিজ্যব্যবস্থায় বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। এর বাইরে নয় বাংলাদেশও। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে উচ্চ পর্যায়ের একাধিক বৈঠক হয়েছে। এ নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন। এসব বৈঠক থেকেই প্রধান উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টার চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা তার চিঠিতে লিখেছেন, নতুন শুল্কহার যেন তিন মাস পর কার্যকর করা হয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে যে দুটি চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশের নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ আরও বেশি বেশি পণ্য আমদানি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের আরও শতাধিক পণ্য বাংলাদেশে আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানানো হয়েছে। মার্কিন পণ্যের ক্ষেত্রে অশুল্ক যেসব বাধা রয়েছে সেগুলো দূর করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
তবে শুধু চিঠি দিলেই হবে না, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্যের পাশাপাশি সেবা আমদানিও বাড়াতে হবে। দূর করতে হবে দেশটির সঙ্গে সব ধরনের শুল্ক বাধা। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সক্ষমতা অন্য প্রতিযোগী দেশের তুলনায় এমনভাবে বাড়াতে হবে, যেন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ মনে করে বাংলাদেশের পণ্য অন্য দেশের তুলনায় ভালো। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিতে হবে।
শুল্ক আরোপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে পদক্ষেপ নিয়েছে, চীনসহ বড় অর্থনৈতিক শক্তির দেশগুলোও পালটা পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক যেন রক্ষা পায়, সেই চেষ্টা করতে হবে। পোশাক খাতে শ্রমিকের মজুরি সর্বনিম্ন জায়গায় আছে। এর থেকে কমানো যাবে না। শ্রমিকের দিক থেকে খরচ না কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। দূর করতে হবে অশুল্ক বাধা।
যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্ক আরোপের পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তাতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ে স্বস্তি এসেছে। বোঝা যাচ্ছে, সরকারের পরিকল্পনা আছে। তবে নির্ধারিত সময়ে পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে বাংলাদেশ আর কী কী জিনিস কিনতে পারে, সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশের জন্য পোশাক খাতের বাইরে নতুন অনেক দুনিয়া আছে। রপ্তানি বাড়াতে সেসব পণ্য খুঁজে বের করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাক শিল্প খাতের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ-ও। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়াও নতুন শুল্কহার তিন মাস স্থগিতের অনুরোধ জানিয়েছে। এই অনুরোধ যৌক্তিকও। কারণ যেসব পণ্যের জন্য আমাদের কারখানাগুলো কার্যাদেশ পেয়েছে বা আমাদের কারখানার যেসব পণ্য জাহাজীকরণ হয়েছে, সেসব পণ্যের ক্ষেত্রে কী হবে? তা ছাড়া যেসব পণ্য এখনো আমাদের হাতে রয়েছে, সেসব পণ্যের কী হবে— এসব নিয়েও ব্যবসায়ীদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে।
সরকারকে তাই এসব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এর সঙ্গে অশুল্ক বাধা দূর করার উদ্যোগ দরকার। সরকারি দপ্তরে বিনিয়োগসংক্রান্ত সেবা পেতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সময় বেশি লাগে। এসব সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের পালটা শুল্ক আরোপের ঘটনা হাইপার ডাইনামিক স্টোরি। তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা নেই। এর বিপরীতে আমাদের মতো অর্থনীতির দেশ কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে, কী প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়— এগুলো নিয়ে নিবিড় বিচার-বিশ্লেষণ প্রয়োজন। যোগাযোগের পদ্ধতি, আকাঙ্ক্ষা, শুল্ক-অশুল্ক বাধাগুলো কী এবং ব্যবসা করতে যেসব জায়গায় সমস্যা হচ্ছে— সবকিছু বোঝার চেষ্টা করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি সহজ করতে বাংলাদেশে দেশটির রপ্তানিকারকদের জন্য সেন্ট্রাল ওয়্যারহাউজ সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। তা না হলে ব্যবসায়ী পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি বাড়বে না। বর্তমানে শূন্য শুল্কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি করা হয়। তা সত্ত্বেও দেশের তুলা আমদানির বড় অংশই আসে চীন ও ভারত থেকে। কারণ, এই দুটি দেশ থেকে ব্যবসায়ীদের তুলা আমদানি সহজ। তাই যুক্তরাষ্ট্রের তুলা আমদানি বাড়াতে হলে দেশটিকে সরবরাহ সুবিধা দিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত বছর বাংলাদেশে যত পণ্য আমদানি হয়েছে, তার গড় শুল্কহার ৬ শতাংশ। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০০ টাকার পণ্য আমদানিতে সরকার গড়ে শুল্ক-কর আদায় করেছে ৬ টাকা ১৫ পয়সা। অবশ্য আমদানি পর্যায়ে আদায় হওয়া মূল্য সংযোজন কর, অগ্রিম আয়কর ও অগ্রিম কর— এই তিনটি পরে সমন্বয় করে নেন ব্যবসায়ীরা। সমন্বয় করা হয়— এমন তিনটি কর বাদ দিলে কার্যত গড় শুল্কহার দাঁড়ায় ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
পালটা শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে ট্রাম্প বাণিজ্য-ঘাটতি ও যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির হিসাব বিবেচনায় নিয়েছেন। ট্রাম্পের সূত্র অনুযায়ী, পালটা শুল্ক কমাতে হলে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে হলে সহজপথ হলো মার্কিন পণ্যে শুল্কছাড়। যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্ক নিয়ে কী করা যায়, তা নিয়ে এনবিআর ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন কাজ শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের শুল্ক-কর কমানোর বিষয়ে এনবিআরের পক্ষ থেকে কী করা যেতে পারে, তা চিন্তা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত বছর বাংলাদেশ ২৯১ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য ছিল ৩৫ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। এসব পণ্য থেকে মোট শুল্ক-কর আদায় হয়েছে দুই হাজার ১৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গড়ে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ হারে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে মূলত দুই শ্রেণিতে পণ্য আমদানি হয়। একটি হলো বন্ডের আওতায় আনা রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল। আরেকটি দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য আমদানি করা পণ্য। গত বছর রপ্তানি কাঁচামাল আমদানি হয়েছে প্রায় ২৯ কোটি ডলারের, যেগুলোর জন্য শুল্ক-কর দিতে হয়নি। আবার অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য আমদানি করা ২৬১ কোটি ডলার পণ্যের মধ্যে শুল্ক-কর দিতে হয়নি, এমন পণ্যের আমদানি ছিল ৭৯ কোটি ডলারের।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুই হাজার ৫১৫টি এইচএস কোডের পণ্য আমদানি হয়েছে বাংলাদেশে। আমদানি হওয়া পণ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্ক-করের হার ছিল ৬১১ শতাংশ। সর্বনিম্ন হার ছিল শূন্য শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া সর্বোচ্চ শুল্ক-কর থাকা পণ্যের মধ্যে রয়েছে হুইস্কি। এতে শুল্ক-কর ৬১১ শতাংশ। তবে আমদানি খুবই কম। গত বছর ২২৮ বোতল জ্যাক ড্যানিয়েলস হুইস্কি আমদানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এর বিপরীতে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ৩১ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শুল্ক-করযুক্ত পণ্য হলো মার্সিডিজ বেঞ্জ। এ গাড়িতে শুল্ক-কর ৪৪৩ শতাংশ। গত আমদানি হওয়া চারটি মার্সিডিজ বেঞ্জ থেকে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ শুল্ক-করযুক্ত পণ্যের মধ্যে রয়েছে ভ্যাপ ও ই-সিগারেটে। এসব পণ্যে শুল্ক-কর ২৮৯ শতাংশ। গত বছর মাত্র ৭৩ হাজার ডলারের ভ্যাপ ও ই-সিগারেট আমদানি হয়েছে। এর বিপরীতে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে তিন কোটি টাকা।
চতুর্থ সর্বোচ্চ শুল্ক-করযুক্ত পণ্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ও গাড়ি (১৬০০ থেকে ২০০০ হাজার সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি)। এ ধরনের পণ্য আমদানি থেকে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয় পুরনো লোহার টুকরা থেকে। রড তৈরির কাঁচামাল হিসেবে এসব লোহার টুকরা আমদানি করা হয়। প্রতি মেট্রিক টনে নির্ধারিত শুল্ক আদায় হয়। তাতে শুল্কহার ৪ শতাংশ পড়ে। গত বছর ৪৫০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে এই খাত থেকে।
শুল্ক-করের হার সব দেশেই প্রায় একই। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় (যেমন— দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা সাফটা) নির্ধারিত পণ্যে শুল্ক সুবিধা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সরকার কোন কোন পণ্যে শুল্কহার পর্যালোচনা করবে, তা এখনো স্পষ্ট হয়নি। শুল্ক-কর কমাতে হলে গাড়ির মতো বিলাসপণ্য বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ, বিলাসপণ্যে সবচেয়ে বেশি শুল্ক-কর রয়েছে।
দূরত্বের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে খরচ বেশি। এ কারণে কম দূরত্বের দেশ ভারত ও চীন থেকে পণ্য আমদানি বেশি হয়। এরপরও পণ্যের মান ও সহজলভ্যতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক পণ্য আমদানি করা হয়। এ সকল বিষয় মাথায় রেখেই কাজ করছে ইউনুস সরকার।
পাশাপাশি চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টার চমক ছিল তিস্তা নদী প্রকল্প, যা বাস্তবায়নে চীনের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। প্রকল্পটিতে চীনের সহায়তার আশ্বাসও মিলেছে। তবে শুধু তিস্তা প্রকল্প নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেননি অধ্যাপক ইউনুস, নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য চীনের কাছে ৫০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান চেয়েছেন। তাই এখন ভারতের নদী শাসনের অবসানের ইঙ্গিতে দেশটির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনে কোটা ও শুল্ক সুবিধার ঘোষণা এসেছে ড. ইউনূসের সফরের মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া চীনা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে নড়েচড়ে বসেছে ভারত। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উদ্বিগ্ন ভারত।
এদিকে বিমসটেক সম্মেলনে ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হ্যান্ডশেক এবং তাদের বৈঠকে গণহত্যায় বিচারের মুখোমুখি করতে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে। ড. ইউনূসকে সম্মান দেননি শেখ হাসিনা, কিন্তু ভারত তা দেবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয় ভারতের পক্ষ থেকে। এই বৈঠকের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাজিমাতের পাশাপাশি রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছে ইউনূস সরকার। এ ছাড়া রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ বিলিয়ন ডলারে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। পাশাপাশি মানুষের ঈদযাত্রা স্বাচ্ছন্দ্য হয়েছে। সব মিলিয়ে মানুষের বাহবা পাচ্ছেন মোহাম্মদ ইউনুস।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা সরকারের সময়ে আমরা দেখেছি, বাংলাদেশ-মার্কিন সম্পর্ক ছিল ভায়া ভারত। শেখ হাসিনার সঙ্গে আমেরকিার সম্পর্ক এতটাই খারাপ ছিল যে বাংলাদেশের যেকোনো বিষয়ে দূতিয়ালি করত ভারত। এখন সে অবস্থার পরিবর্তন হতে শুরু করেছে। বাংলাদেশি পণ্যের শুল্ক ১৫ থেকে ৩৭ শতাংশ করা হয়েছে। বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে এরই মধ্যে ড. ইউনূস চিঠি দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে। জানিয়েছেন, সরাসরি কথাও বলবেন তিনি। বাণিজ্য উপদেষ্টাও যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য দপ্তর ইউএসটিআরকে আরেকটি চিঠি দিয়েছেন।
রপ্তানি পণ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের পালটা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তে গোটা বিশ্বের অর্থনীতি ও বাণিজ্যব্যবস্থায় বড় ধরনের ধাক্কা লেগেছে। এর বাইরে নয় বাংলাদেশও। এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণে উচ্চ পর্যায়ের একাধিক বৈঠক হয়েছে। এ নিয়ে পর্যালোচনা বৈঠক হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ে। প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসও এ বিষয়ে জরুরি বৈঠক ডেকেছিলেন। এসব বৈঠক থেকেই প্রধান উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টার চিঠি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
প্রধান উপদেষ্টা তার চিঠিতে লিখেছেন, নতুন শুল্কহার যেন তিন মাস পর কার্যকর করা হয়। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রকে যে দুটি চিঠি দেওয়া হয়েছে তাতে বাংলাদেশের নেওয়া বিভিন্ন পরিকল্পনার কথা তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশ আরও বেশি বেশি পণ্য আমদানি করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের আরও শতাধিক পণ্য বাংলাদেশে আমদানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কথা জানানো হয়েছে। মার্কিন পণ্যের ক্ষেত্রে অশুল্ক যেসব বাধা রয়েছে সেগুলো দূর করার প্রতিশ্রুতিও দেওয়া হয়েছে চিঠিতে।
তবে শুধু চিঠি দিলেই হবে না, যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্যের পাশাপাশি সেবা আমদানিও বাড়াতে হবে। দূর করতে হবে দেশটির সঙ্গে সব ধরনের শুল্ক বাধা। বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের সক্ষমতা অন্য প্রতিযোগী দেশের তুলনায় এমনভাবে বাড়াতে হবে, যেন যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ মনে করে বাংলাদেশের পণ্য অন্য দেশের তুলনায় ভালো। এ ছাড়া দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিতে হবে।
শুল্ক আরোপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র যে পদক্ষেপ নিয়েছে, চীনসহ বড় অর্থনৈতিক শক্তির দেশগুলোও পালটা পদক্ষেপ নিচ্ছে। বাংলাদেশের প্রধান রপ্তানি খাত তৈরি পোশাক যেন রক্ষা পায়, সেই চেষ্টা করতে হবে। পোশাক খাতে শ্রমিকের মজুরি সর্বনিম্ন জায়গায় আছে। এর থেকে কমানো যাবে না। শ্রমিকের দিক থেকে খরচ না কমিয়ে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে হবে। দূর করতে হবে অশুল্ক বাধা।
যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্ক আরোপের পর অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তাতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ে স্বস্তি এসেছে। বোঝা যাচ্ছে, সরকারের পরিকল্পনা আছে। তবে নির্ধারিত সময়ে পদক্ষেপ না নিলে বাংলাদেশ পিছিয়ে পড়বে। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কাছে বাংলাদেশ আর কী কী জিনিস কিনতে পারে, সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। বাংলাদেশের জন্য পোশাক খাতের বাইরে নতুন অনেক দুনিয়া আছে। রপ্তানি বাড়াতে সেসব পণ্য খুঁজে বের করতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত তিন মাস স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়েছে পোশাক শিল্প খাতের মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ-ও। ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়াও নতুন শুল্কহার তিন মাস স্থগিতের অনুরোধ জানিয়েছে। এই অনুরোধ যৌক্তিকও। কারণ যেসব পণ্যের জন্য আমাদের কারখানাগুলো কার্যাদেশ পেয়েছে বা আমাদের কারখানার যেসব পণ্য জাহাজীকরণ হয়েছে, সেসব পণ্যের ক্ষেত্রে কী হবে? তা ছাড়া যেসব পণ্য এখনো আমাদের হাতে রয়েছে, সেসব পণ্যের কী হবে— এসব নিয়েও ব্যবসায়ীদের মধ্যে শঙ্কা রয়েছে।
সরকারকে তাই এসব বিষয়ে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। এর সঙ্গে অশুল্ক বাধা দূর করার উদ্যোগ দরকার। সরকারি দপ্তরে বিনিয়োগসংক্রান্ত সেবা পেতে আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় সময় বেশি লাগে। এসব সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে।
ট্রাম্প প্রশাসনের পালটা শুল্ক আরোপের ঘটনা হাইপার ডাইনামিক স্টোরি। তারা যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা স্থগিত হওয়ার সম্ভাবনা খুব একটা নেই। এর বিপরীতে আমাদের মতো অর্থনীতির দেশ কী কী পদক্ষেপ নিতে পারে, কী প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত হওয়া যায়— এগুলো নিয়ে নিবিড় বিচার-বিশ্লেষণ প্রয়োজন। যোগাযোগের পদ্ধতি, আকাঙ্ক্ষা, শুল্ক-অশুল্ক বাধাগুলো কী এবং ব্যবসা করতে যেসব জায়গায় সমস্যা হচ্ছে— সবকিছু বোঝার চেষ্টা করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানির বিষয়টি আরও গুরুত্ব দিয়ে দেখতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি সহজ করতে বাংলাদেশে দেশটির রপ্তানিকারকদের জন্য সেন্ট্রাল ওয়্যারহাউজ সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে। তা না হলে ব্যবসায়ী পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি বাড়বে না। বর্তমানে শূন্য শুল্কে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি করা হয়। তা সত্ত্বেও দেশের তুলা আমদানির বড় অংশই আসে চীন ও ভারত থেকে। কারণ, এই দুটি দেশ থেকে ব্যবসায়ীদের তুলা আমদানি সহজ। তাই যুক্তরাষ্ট্রের তুলা আমদানি বাড়াতে হলে দেশটিকে সরবরাহ সুবিধা দিতে হবে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত বছর বাংলাদেশে যত পণ্য আমদানি হয়েছে, তার গড় শুল্কহার ৬ শতাংশ। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ১০০ টাকার পণ্য আমদানিতে সরকার গড়ে শুল্ক-কর আদায় করেছে ৬ টাকা ১৫ পয়সা। অবশ্য আমদানি পর্যায়ে আদায় হওয়া মূল্য সংযোজন কর, অগ্রিম আয়কর ও অগ্রিম কর— এই তিনটি পরে সমন্বয় করে নেন ব্যবসায়ীরা। সমন্বয় করা হয়— এমন তিনটি কর বাদ দিলে কার্যত গড় শুল্কহার দাঁড়ায় ২ দশমিক ২০ শতাংশ।
পালটা শুল্ক আরোপের ক্ষেত্রে ট্রাম্প বাণিজ্য-ঘাটতি ও যুক্তরাষ্ট্রের আমদানির হিসাব বিবেচনায় নিয়েছেন। ট্রাম্পের সূত্র অনুযায়ী, পালটা শুল্ক কমাতে হলে বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে হবে। বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে হলে সহজপথ হলো মার্কিন পণ্যে শুল্কছাড়। যুক্তরাষ্ট্রের পালটা শুল্ক নিয়ে কী করা যায়, তা নিয়ে এনবিআর ও বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন কাজ শুরু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের শুল্ক-কর কমানোর বিষয়ে এনবিআরের পক্ষ থেকে কী করা যেতে পারে, তা চিন্তা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত বছর বাংলাদেশ ২৯১ কোটি মার্কিন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে। আমদানি পণ্যের শুল্কায়ন মূল্য ছিল ৩৫ হাজার ১৮৯ কোটি টাকা। এসব পণ্য থেকে মোট শুল্ক-কর আদায় হয়েছে দুই হাজার ১৬৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ গড়ে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ৬ দশমিক ১৫ শতাংশ হারে।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে মূলত দুই শ্রেণিতে পণ্য আমদানি হয়। একটি হলো বন্ডের আওতায় আনা রপ্তানি পণ্যের কাঁচামাল। আরেকটি দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য আমদানি করা পণ্য। গত বছর রপ্তানি কাঁচামাল আমদানি হয়েছে প্রায় ২৯ কোটি ডলারের, যেগুলোর জন্য শুল্ক-কর দিতে হয়নি। আবার অভ্যন্তরীণ ব্যবহারের জন্য আমদানি করা ২৬১ কোটি ডলার পণ্যের মধ্যে শুল্ক-কর দিতে হয়নি, এমন পণ্যের আমদানি ছিল ৭৯ কোটি ডলারের।
গত বছর যুক্তরাষ্ট্র থেকে দুই হাজার ৫১৫টি এইচএস কোডের পণ্য আমদানি হয়েছে বাংলাদেশে। আমদানি হওয়া পণ্যের মধ্যে সর্বোচ্চ শুল্ক-করের হার ছিল ৬১১ শতাংশ। সর্বনিম্ন হার ছিল শূন্য শতাংশ।
যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি হওয়া সর্বোচ্চ শুল্ক-কর থাকা পণ্যের মধ্যে রয়েছে হুইস্কি। এতে শুল্ক-কর ৬১১ শতাংশ। তবে আমদানি খুবই কম। গত বছর ২২৮ বোতল জ্যাক ড্যানিয়েলস হুইস্কি আমদানি হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে। এর বিপরীতে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ৩১ লাখ টাকা। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শুল্ক-করযুক্ত পণ্য হলো মার্সিডিজ বেঞ্জ। এ গাড়িতে শুল্ক-কর ৪৪৩ শতাংশ। গত আমদানি হওয়া চারটি মার্সিডিজ বেঞ্জ থেকে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে ১৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। তৃতীয় সর্বোচ্চ শুল্ক-করযুক্ত পণ্যের মধ্যে রয়েছে ভ্যাপ ও ই-সিগারেটে। এসব পণ্যে শুল্ক-কর ২৮৯ শতাংশ। গত বছর মাত্র ৭৩ হাজার ডলারের ভ্যাপ ও ই-সিগারেট আমদানি হয়েছে। এর বিপরীতে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে তিন কোটি টাকা।
চতুর্থ সর্বোচ্চ শুল্ক-করযুক্ত পণ্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র ও গাড়ি (১৬০০ থেকে ২০০০ হাজার সিলিন্ডার ক্যাপাসিটি)। এ ধরনের পণ্য আমদানি থেকে শুল্ক-কর আদায় হয়েছে পাঁচ কোটি ১৫ লাখ টাকা। যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয় পুরনো লোহার টুকরা থেকে। রড তৈরির কাঁচামাল হিসেবে এসব লোহার টুকরা আমদানি করা হয়। প্রতি মেট্রিক টনে নির্ধারিত শুল্ক আদায় হয়। তাতে শুল্কহার ৪ শতাংশ পড়ে। গত বছর ৪৫০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে এই খাত থেকে।
শুল্ক-করের হার সব দেশেই প্রায় একই। মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির আওতায় (যেমন— দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বা সাফটা) নির্ধারিত পণ্যে শুল্ক সুবিধা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সরকার কোন কোন পণ্যে শুল্কহার পর্যালোচনা করবে, তা এখনো স্পষ্ট হয়নি। শুল্ক-কর কমাতে হলে গাড়ির মতো বিলাসপণ্য বিবেচনায় নিতে হবে। কারণ, বিলাসপণ্যে সবচেয়ে বেশি শুল্ক-কর রয়েছে।
দূরত্বের কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে পণ্য আমদানিতে খরচ বেশি। এ কারণে কম দূরত্বের দেশ ভারত ও চীন থেকে পণ্য আমদানি বেশি হয়। এরপরও পণ্যের মান ও সহজলভ্যতার কারণে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনেক পণ্য আমদানি করা হয়। এ সকল বিষয় মাথায় রেখেই কাজ করছে ইউনুস সরকার।
পাশাপাশি চীন সফরে প্রধান উপদেষ্টার চমক ছিল তিস্তা নদী প্রকল্প, যা বাস্তবায়নে চীনের সহায়তা চেয়েছে বাংলাদেশ। প্রকল্পটিতে চীনের সহায়তার আশ্বাসও মিলেছে। তবে শুধু তিস্তা প্রকল্প নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকেননি অধ্যাপক ইউনুস, নদী ও পানি ব্যবস্থাপনা পরিচালনার জন্য চীনের কাছে ৫০ বছরের মাস্টারপ্ল্যান চেয়েছেন। তাই এখন ভারতের নদী শাসনের অবসানের ইঙ্গিতে দেশটির কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে।
২০২৮ সাল পর্যন্ত চীনে কোটা ও শুল্ক সুবিধার ঘোষণা এসেছে ড. ইউনূসের সফরের মধ্য দিয়ে। এ ছাড়া চীনা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ২১০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ, ঋণ ও অনুদানের প্রতিশ্রুতি পেয়েছে বাংলাদেশ। এতে নড়েচড়ে বসেছে ভারত। বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন মাত্রায় উদ্বিগ্ন ভারত।
এদিকে বিমসটেক সম্মেলনে ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হ্যান্ডশেক এবং তাদের বৈঠকে গণহত্যায় বিচারের মুখোমুখি করতে শেখ হাসিনাকে ফেরত চাওয়া হয়েছে। ড. ইউনূসকে সম্মান দেননি শেখ হাসিনা, কিন্তু ভারত তা দেবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয় ভারতের পক্ষ থেকে। এই বৈঠকের মাধ্যমে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের বরফ গলতে শুরু করবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাজিমাতের পাশাপাশি রোজায় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মূল্যস্ফীতি ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে পেরেছে ইউনূস সরকার। এ ছাড়া রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫ বিলিয়ন ডলারে। অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। পাশাপাশি মানুষের ঈদযাত্রা স্বাচ্ছন্দ্য হয়েছে। সব মিলিয়ে মানুষের বাহবা পাচ্ছেন মোহাম্মদ ইউনুস।
লেখক: কবি ও সাংবাদিক
স্লোগান বাঙালির ইতিহাস, ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির এক অবিছ্ছেদ্য অংশ। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে স্লোগানের ব্যবহার ছিল। “ব্রিটিশ হটাও, দেশ বাঁচাও”; “বিদেশি পণ্য বর্জন করো, দেশি পণ্য ব্যবহার করো”; “তুমি আমি স্বদেশি, স্বদেশি স্বদেশি” “আমরা লড়ব, আমরা জিতব” ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে এরূপ অনেক স্লোগানই রাজনৈতিক সচেতন
৪ দিন আগে২২ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এ নিয়ে একটি প্রস্তাবনা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে । তাতে প্রধান শিক্ষকরা আগে কত টাকা বেতন ও ভাতা পেতেন, আর দশম গ্রেড বাস্তবায়ন হলে কত পাবেন—তা নিয়ে পরিপূর্ণ হিসাব রয়েছে ।
৫ দিন আগেভিওজিএসএস হলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর উদ্বেগ, স্বার্থ ও অগ্রাধিকারসমূহের বিষয়ে আলোচনা করা, ধারণা ও সমাধান বিনিময় করা, এবং উন্নয়ন সমাধান বিনির্মাণে কণ্ঠ ও উদ্দেশ্যে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার জন্য একটি অভিন্ন মঞ্চ প্রদানের লক্ষ্যে ভারতের প্রচেষ্টা।
৫ দিন আগেবিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকেই খাজা সলিমুল্লাহ, মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, আল্লামা ইকবাল, শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ অনুধাবন করেন যে, ভারতবর্ষ স্বাধীন হলে মুসলমানদের জন্য পৃথক আবাসভূমির প্রয়োজন হবে। অন্যথায় ভারতবর্ষের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির মধ্যে গৃহযুদ্ধ লেগেই থাকবে। রা
৯ দিন আগে