আইন করে বৈষম্য টিকিয়ে রাখার ধারাই অব্যাহত থাকবে?

রুহিন হোসেন প্রিন্স

১.

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নতুন পে-স্কেলের খবর সামনে আসছে। শোনা যাচ্ছে, বেতন প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানো হচ্ছে। দেশের সাধারণ মানুষের দুরবস্থার সময় সবার কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা, জাতীয় ন্যূনতম মজুরি নিশ্চিত করে আয় ও বেতন বৈষম্য কমিয়ে আনাই সময়ের দাবি। এ দাবি থেকেই যাচ্ছে অনুচ্চারিত।

দিন দিন দারিদ্র্য বাড়ছে। কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। নতুন কর্মসংস্থান নেই। এ পরিস্থিতিতে বেতন বাড়ার খবর মুদ্রাস্ফীতি আরেকবার বাড়িয়ে দেবে কি না, সেটা সময় বলে দেবে।

২.

কথায় কথায় গণঅভ্যুত্থানের কথা বলা হয়। এই গণঅভ্যুত্থানের অন্যতম আকাঙ্ক্ষা তো ছিল বৈষম্যহীন সমাজ গড়া। স্লোগানও উঠেছিল।

নতুন পে-স্কেলে সরকার বৈষম্য দূর না করে আইনিভাবে বৈষম্যকেই বজায় রাখছে। আর জাতীয় ন্যূনতম মজুরির তো কোনো খবর নেই।

৩.

বাজারে গেলে তো সবাইকে একই দামে চাল, ডাল, আলু, পটল কিনতে হয়।

দেখুন, প্রস্তাবিত বেতনে প্রথম গ্রেড ও ২০তম গ্রেডের বেতন বৈষম্য কেমন। মূল বেতনে যে ধারায় বৈষম্য দেখবেন, অন্যান্য প্রাপ্তিতেও কিন্তু একই রকম বৈষম্য থাকে। সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও গাড়িতে চলা আর পায়ে হেঁটে চলার এই ধারাই থেকে যাচ্ছে।

জানা গেছে, প্রস্তাবিত গ্রেড-১ কর্মকর্তাদের মূল বেতন এক লাখ ৫০ হাজার ৫৯৪ টাকা, আর গ্রেড-২০-এর কর্মকর্তাদের ১৫ হাজার ৯২৮ টাকা। অর্থাৎ ওপরের বেতন দেড় লাখ টাকা, আর নিচের বেতন ১৬ হাজার টাকা।

৪.

মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের পর থেকেই আমরা দাবি করে আসছিলাম— বেতনের অনুপাত ১:৫-এর বেশি হবে না। ধীরে ধীরে এটা আরও কমিয়ে আনতে হবে।

এখন জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ৩০ হাজার টাকা প্রায় সবাই দাবি করে আসছেন।

তাই নিচের গ্রেডের বেতন অন্তত ৩০ হাজার টাকা প্রস্তাব করাই ছিল ন্যায্য।

৫.

এসব কথা কাকেই বা বলব! সাধারণ মানুষের স্বার্থ রক্ষাকারী সরকার ক্ষমতায় না আসা পর্যন্ত হয়তো এসব কথা মূল্যহীন। তারপরও এসব দাবিতে আমাদের সবার কণ্ঠ সোচ্চার করা দরকার।

লেখক: সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)

ad
ad

মতামত থেকে আরও পড়ুন

প্রাথমিক শিক্ষকদের আন্দোলনে অনৈক্য, শিক্ষার্থীরা জিম্মি

১০ দিন আগে

তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে ব্যাখ্যার দায় সরকারের

এখানে সরকারের ব্যাখ্যা দেওয়ার দায়িত্ব আছে। তার মন্তব্যের কারণ কী, সেটি সরকার জানতে চাইতে পারে এবং পরিষ্কার করতে পারে। কারণ এর বাইরে অন্য কোনো বিশেষ জটিলতা আছে বলে আমার মনে হয় না।

১৪ দিন আগে

তারেক রহমানের দেশে না ফেরা হতে পারে হিসেবি রাজনৈতিক কৌশল

দীর্ঘ সময় ধরে তারেক রহমান দেশের বাইরে। এটি এখন বিএনপির জন্য নতুন কিছু নয়। তৃণমূলের বহু নেতাকর্মী বাস্তবতার সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছেন। সত্যি বলতে, তিনি দেশে ফিরলে দল অবশ্যই নতুন উদ্দীপনা পাবে। কিন্তু তার অনুপস্থিতিতেও দলের সাংগঠনিক কাজ থেমে নেই— এটাই গুরুত্বপূর্ণ ইঙ্গিত।

১৪ দিন আগে

তারেক রহমানের ফিরতে বাধা পুরনো শক্তির অমীমাংসিত হিসাব

ওয়ান-ইলেভেনের সময় যেসব শক্তি তাকে গ্রেপ্তার করেছিল এবং নির্যাতন করেছিল, তাদের সঙ্গে সেই পুরনো বিরোধ এখনো পুরোপুরি মিটেনি। সেই সময়ের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যারা এতে জড়িত ছিলেন, তাদের একটি অংশ আজও ‘সম্মতি’ দিচ্ছেন না— এমন ধারণা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। তাদের হয়তো নিজেদের কিছু স্বার্থ বা অবস্থান রয়ে

১৪ দিন আগে