শাহরিয়ার শরীফ
বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে এক অভূতপূর্ব অবদান (!) রেখে প্রায় শিক্ষাবিদ হয়ে ওঠা এম কে খায়রুল বাশার এখন পুলিশ হেফাজতে। মানি লন্ডারিং মামলায় বহুল আলোচিত ক্যামব্রিয়ান কলেজ ও বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান বাশারকে জালে আটকেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
লায়ন বাশার— একজন ‘স্বপ্ন বিক্রেতা’, যিনি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে কল্পনার ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে দিয়েছেন, অথচ ভিসা বা প্লেন টিকিট— কিছুই লাগেনি। টাকা দিলেই শিক্ষা, আর বিশ্বাস করলেই উন্নত দেশ— এ এক অভিনব উদ্যোগ, যার নাম বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম টিম সোমবার বাশারকে (৫৪) গ্রেফতার করেছে মানি লন্ডারিং মামলায়। এর আগেই অবশ্য ‘ভুক্তভোগী সহস্রাধিক শিক্ষার্থী’ ব্যানারে রাজু ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে জানিয়েছিলেন—খায়রুল বাশার ও তার প্রতিষ্ঠানের হাতে তারা হয়েছেন ‘আন্তর্জাতিক মানের’ প্রতারণার শিকার।
অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে গড়ে ২০ লাখ টাকা করে নিয়েছে বিএসবি। মোট টাকার পরিমাণ নিয়ে দুই রকম তথ্য আছে— একটি পক্ষ বলছে ২০০ কোটি, আরেক পক্ষ বলছে ৫০০ কোটি। সিআইডির তদন্তে নিশ্চয় প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে আসবে।
ভুয়া অফার লেটার? হ্যাঁ, সেগুলো এত নিখুঁত ছিল যে কেউ কেউ সন্দেহ করেছিল সেটাই আসল। সিল, স্বাক্ষর, কলেজ লোগো— সবকিছু এতটাই ‘স্মার্টলি ডিজাইনড’ যে সন্দেহ করাটাই ‘অশিক্ষার প্রমাণ’ বলে ধরে নেওয়া যেত। শিক্ষার্থীরা জানান, তালিকা অনুযায়ী ৮৫০ জন বিদেশে যেতে পারেননি। কিন্তু বাস্তবে সে সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
কখনো কানাডা, কখনো আমেরিকা—সবার জন্য ছিল একেকটা স্বপ্নপথ, যেটা শুরু হয় ডলার চিহ্ন দিয়ে, আর শেষ হয় ব্যাংক ফেরত চেক দিয়ে।
টাকা ফেরত চাইলে কী পাওয়া গেছে? কিছু ‘গুন্ডা আতিথেয়তা’, কিছু ‘ব্যাংকে ডিজঅনার্ড চেক’, আর কিছু ‘চুপ করে থাকো, নয়তো খবর আছে’ ধাঁচের হুমকি। তারপরও শিক্ষার্থীরা যখন হাল ছাড়েননি, বাশার তখন প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে নম্বর বন্ধ করে নিজেই গায়েব। ঠিক যেন পেছনে ধোঁয়া ফেলে উধাও হওয়া জাদুকর!
তবে বাশার শুধু প্রতারক নন, তিনি একজন ব্র্যান্ড গড়ার কারিগর। তার প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কিংস কলেজ, উইনসাম স্কুল, এভিয়েশন কলেজ, কালচারাল একাডেমি, ট্রেনিং ইনস্টিটিউট— সব মিলিয়ে পুরো একটি ‘শিক্ষা সাম্রাজ্য’। আর সব শিক্ষার মূলে ছিল ‘সেলস পিচ’। তিনি চেয়েছিলেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও খুলতে, শেষ পর্যন্ত যা করে উঠতে পারেননি।
বাশারের বাণী শুনতে চান? তার ওয়েবসাইটের বক্তব্য— “আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, বিএসবি ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত ক্যামব্রিয়ান, মেট্রোপলিটন, কিংস, উইনসাম ও নর্থ সিটি কলেজ বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এনে দিয়েছে নতুন মাত্রা। পরিপাটি, আদর্শ ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে ইতোমধ্যেই দেশ-বিদেশের নানা পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে ক্যামব্রিয়ান কলেজ। দেশের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইএসও সনদপ্রাপ্ত এই কলেজের শিক্ষাপদ্ধতি বাংলাদেশের শিক্ষাপরিকল্পনায় এক যুগান্তকারী মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।”
রাজনৈতিক সুবুদ্ধি তার ছিল বিস্ময়কর। বিএনপি আমলে বিএনপি, আওয়ামী লীগ আমলে আওয়ামী লীগ— আর যখন কেউই কাজে আসছিল না, তখন ওয়েবসাইট থেকে নেতাদের ছবি সরিয়ে ‘নির্দলীয়’ হয়ে যান।
সাংবাদিকদের প্রীতি উপহার, বিদেশ সফর, কোটি কোটি টাকার চটকদার বিজ্ঞাপন— এই ছিল গণমাধ্যম কব্জায় রাখার সহজ কৌশল। তাই তার জন্মদিন মানেই ফুলেল শুভেচ্ছা, পত্রিকায় খবর। প্রতিষ্ঠানের নাম এলেই ‘দেশের সেরা’ ট্যাগ। কারণ বেশ কয়েকবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সেরা কুড়ি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তালিকায় ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম এসেছে, যদিও বিষয়টি ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। কোন কৌশলে, কাদের প্রশ্রয়ে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেরাদের সেরা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা দরকার।
বাংলাদেশে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ‘জিপিএ ফাইভ কেনার হোতা’ হিসেবে পরিচিত তিনি। বিদেশে শিক্ষার্থী পাঠানোর নামে আদম ব্যবসাও চালিয়ে এসেছেন বছরের পর বছর। তার খপ্পরে পড়ে অর্থ ও স্বপ্ন খোয়ানো শিক্ষার্থীদের আন্দোলনেও কোনো কাজ হয়নি। টাকা দিয়ে ‘ম্যানেজ’ করেছেন সব। প্রতারণা করে টাকা উপার্জন করেছেন, আর তা ছড়িয়েছেন গণমাধ্যম ও প্রচারে, ধরা খেয়েছেন পাচারের অভিযোগে।
ব্যক্তিজীবনে তিন কন্যার জনক বাশারের জন্ম ২২ মার্চ ১৯৭১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দরুইন গ্রামে। মা-বাবার নাম যথাক্রমে সালেহা খাতুন ও মোহাম্মদ শরিয়ত উল্লাহ ভূঁইয়া। পড়ালেখা করেছেন ঢাকা কমার্স কলেজ ও ঢাকা কলেজে। স্ত্রী লায়ন খন্দকার সেলিমা রওশন ক্যামব্রিয়ান গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান— অর্থাৎ পরিবার-পরিচালিত ব্র্যান্ড।
বাশার বিএসবি ট্রাভেলস, বিএসবি ইভেন্টস, বিএসবি ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবেরও কর্ণধার। লায়ন্স ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট, বর্তমান ভাইস গভর্নর, দেশি-বিদেশি অ্যাওয়ার্ডের মালিক। অর্থাৎ যার কৃতিত্বের তালিকা কাগজে শেষ হয় না, ঠিক যেভাবে অভিযোগের তালিকাও তদন্ত প্রতিবেদনে হয়তো জায়গা পাবে না।
পুরস্কার আর পদকের ভারে যেন নুয়ে পড়ছেন এই শিক্ষা ব্যবসায়ী। বাশার অর্জন করেছেন অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং কন্ট্রিবিউশন ইন এডুকেশন, ইনোভেশন লার্নিং, এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন ইউথ বেস্ট একাডেমিক অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি ইন্টারফেস, আউটস্ট্যান্ডিং কন্ট্রিবিউশন ইন ডিজিটাল লার্নিং, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ স্বর্ণপদক, অতীশ দীপংকর অগ্রসর শান্তি স্বর্ণপদক-২০১৫, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ কালচারাল ফাউন্ডেশনের সম্মাননা পদক-২০১১, শেরেবাংলা মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড, অর্থকণ্ঠ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড-২০১৩, ফিন্যান্সিয়াল মিরর বিজনেসম্যান অ্যাওয়ার্ড, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ‘দ্য ম্যাজিস্টিক ফাইভ কনটিনেন্টস অ্যাওয়ার্ড ফর কোয়ালিটি এক্সিলেন্স- ২০১৩’, ভারতের মুম্বাইয়ের এডুপ্রেণার অ্যাওয়ার্ড, ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেস-২০১২, সিঙ্গাপুরের এডুকেশন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, বেস্ট বি স্কুল- ২০১২, স্পেনের বার্সোলোর ওয়ার্ল্ড বিজ অ্যাওয়ার্ড- ২০১২, স্বামী বিবেকানন্দ ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড-২০১১, ইন্টারন্যাশনাল স্টার ফর লিডারশিপ ইন কোয়ালিটি অ্যাওয়ার্ড-২০১২, প্যারিস থেকে দ্য নিউ এরা অ্যাওয়ার্ড-২০১০ ইত্যদি।
বাশারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ইউনিফর্ম ছিল কালো। অনেকটা র্যাবের মতো। তিনি নিজেও কালো পোশাক পরতেন। ধবধবে ফর্সা চেহারার এই সুদর্শন যুবক কালো পোশাকের আড়ালে অভিনয় করে গেছেন বছরের পর বছর। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার শিক্ষা সাম্রাজ্য কেঁপে উঠেছে। বাশারের সুবিধাভোগী মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ অনেকেই এখন ভীতসন্ত্রস্ত, কারণ বেরিয়ে আসতে পারে থলের বিড়াল।
বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে এক অভূতপূর্ব অবদান (!) রেখে প্রায় শিক্ষাবিদ হয়ে ওঠা এম কে খায়রুল বাশার এখন পুলিশ হেফাজতে। মানি লন্ডারিং মামলায় বহুল আলোচিত ক্যামব্রিয়ান কলেজ ও বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান বাশারকে জালে আটকেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
লায়ন বাশার— একজন ‘স্বপ্ন বিক্রেতা’, যিনি শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎকে কল্পনার ক্যাম্পাসে পাঠিয়ে দিয়েছেন, অথচ ভিসা বা প্লেন টিকিট— কিছুই লাগেনি। টাকা দিলেই শিক্ষা, আর বিশ্বাস করলেই উন্নত দেশ— এ এক অভিনব উদ্যোগ, যার নাম বিএসবি গ্লোবাল নেটওয়ার্ক।
সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম টিম সোমবার বাশারকে (৫৪) গ্রেফতার করেছে মানি লন্ডারিং মামলায়। এর আগেই অবশ্য ‘ভুক্তভোগী সহস্রাধিক শিক্ষার্থী’ ব্যানারে রাজু ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে জানিয়েছিলেন—খায়রুল বাশার ও তার প্রতিষ্ঠানের হাতে তারা হয়েছেন ‘আন্তর্জাতিক মানের’ প্রতারণার শিকার।
অভিযোগ অনুযায়ী, প্রতি শিক্ষার্থীর কাছ থেকে গড়ে ২০ লাখ টাকা করে নিয়েছে বিএসবি। মোট টাকার পরিমাণ নিয়ে দুই রকম তথ্য আছে— একটি পক্ষ বলছে ২০০ কোটি, আরেক পক্ষ বলছে ৫০০ কোটি। সিআইডির তদন্তে নিশ্চয় প্রকৃত চিত্র বেরিয়ে আসবে।
ভুয়া অফার লেটার? হ্যাঁ, সেগুলো এত নিখুঁত ছিল যে কেউ কেউ সন্দেহ করেছিল সেটাই আসল। সিল, স্বাক্ষর, কলেজ লোগো— সবকিছু এতটাই ‘স্মার্টলি ডিজাইনড’ যে সন্দেহ করাটাই ‘অশিক্ষার প্রমাণ’ বলে ধরে নেওয়া যেত। শিক্ষার্থীরা জানান, তালিকা অনুযায়ী ৮৫০ জন বিদেশে যেতে পারেননি। কিন্তু বাস্তবে সে সংখ্যা দুই হাজার ছাড়িয়ে গেছে।
কখনো কানাডা, কখনো আমেরিকা—সবার জন্য ছিল একেকটা স্বপ্নপথ, যেটা শুরু হয় ডলার চিহ্ন দিয়ে, আর শেষ হয় ব্যাংক ফেরত চেক দিয়ে।
টাকা ফেরত চাইলে কী পাওয়া গেছে? কিছু ‘গুন্ডা আতিথেয়তা’, কিছু ‘ব্যাংকে ডিজঅনার্ড চেক’, আর কিছু ‘চুপ করে থাকো, নয়তো খবর আছে’ ধাঁচের হুমকি। তারপরও শিক্ষার্থীরা যখন হাল ছাড়েননি, বাশার তখন প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করে নম্বর বন্ধ করে নিজেই গায়েব। ঠিক যেন পেছনে ধোঁয়া ফেলে উধাও হওয়া জাদুকর!
তবে বাশার শুধু প্রতারক নন, তিনি একজন ব্র্যান্ড গড়ার কারিগর। তার প্রতিষ্ঠান ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কিংস কলেজ, উইনসাম স্কুল, এভিয়েশন কলেজ, কালচারাল একাডেমি, ট্রেনিং ইনস্টিটিউট— সব মিলিয়ে পুরো একটি ‘শিক্ষা সাম্রাজ্য’। আর সব শিক্ষার মূলে ছিল ‘সেলস পিচ’। তিনি চেয়েছিলেন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ও খুলতে, শেষ পর্যন্ত যা করে উঠতে পারেননি।
বাশারের বাণী শুনতে চান? তার ওয়েবসাইটের বক্তব্য— “আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, বিএসবি ফাউন্ডেশন কর্তৃক পরিচালিত ক্যামব্রিয়ান, মেট্রোপলিটন, কিংস, উইনসাম ও নর্থ সিটি কলেজ বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থায় এনে দিয়েছে নতুন মাত্রা। পরিপাটি, আদর্শ ও আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষা ব্যবস্থার কারণে ইতোমধ্যেই দেশ-বিদেশের নানা পর্যায়ে প্রশংসিত হয়েছে ক্যামব্রিয়ান কলেজ। দেশের প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে আইএসও সনদপ্রাপ্ত এই কলেজের শিক্ষাপদ্ধতি বাংলাদেশের শিক্ষাপরিকল্পনায় এক যুগান্তকারী মডেল হিসেবে পরিগণিত হয়েছে।”
রাজনৈতিক সুবুদ্ধি তার ছিল বিস্ময়কর। বিএনপি আমলে বিএনপি, আওয়ামী লীগ আমলে আওয়ামী লীগ— আর যখন কেউই কাজে আসছিল না, তখন ওয়েবসাইট থেকে নেতাদের ছবি সরিয়ে ‘নির্দলীয়’ হয়ে যান।
সাংবাদিকদের প্রীতি উপহার, বিদেশ সফর, কোটি কোটি টাকার চটকদার বিজ্ঞাপন— এই ছিল গণমাধ্যম কব্জায় রাখার সহজ কৌশল। তাই তার জন্মদিন মানেই ফুলেল শুভেচ্ছা, পত্রিকায় খবর। প্রতিষ্ঠানের নাম এলেই ‘দেশের সেরা’ ট্যাগ। কারণ বেশ কয়েকবার ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সেরা কুড়ি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তালিকায় ক্যামব্রিয়ান স্কুল অ্যান্ড কলেজের নাম এসেছে, যদিও বিষয়টি ছিল প্রশ্নবিদ্ধ। কোন কৌশলে, কাদের প্রশ্রয়ে তার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সেরাদের সেরা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখা দরকার।
বাংলাদেশে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় ‘জিপিএ ফাইভ কেনার হোতা’ হিসেবে পরিচিত তিনি। বিদেশে শিক্ষার্থী পাঠানোর নামে আদম ব্যবসাও চালিয়ে এসেছেন বছরের পর বছর। তার খপ্পরে পড়ে অর্থ ও স্বপ্ন খোয়ানো শিক্ষার্থীদের আন্দোলনেও কোনো কাজ হয়নি। টাকা দিয়ে ‘ম্যানেজ’ করেছেন সব। প্রতারণা করে টাকা উপার্জন করেছেন, আর তা ছড়িয়েছেন গণমাধ্যম ও প্রচারে, ধরা খেয়েছেন পাচারের অভিযোগে।
ব্যক্তিজীবনে তিন কন্যার জনক বাশারের জন্ম ২২ মার্চ ১৯৭১, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দরুইন গ্রামে। মা-বাবার নাম যথাক্রমে সালেহা খাতুন ও মোহাম্মদ শরিয়ত উল্লাহ ভূঁইয়া। পড়ালেখা করেছেন ঢাকা কমার্স কলেজ ও ঢাকা কলেজে। স্ত্রী লায়ন খন্দকার সেলিমা রওশন ক্যামব্রিয়ান গ্রুপের ভাইস চেয়ারম্যান— অর্থাৎ পরিবার-পরিচালিত ব্র্যান্ড।
বাশার বিএসবি ট্রাভেলস, বিএসবি ইভেন্টস, বিএসবি ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাবেরও কর্ণধার। লায়ন্স ক্লাবের সাবেক প্রেসিডেন্ট, বর্তমান ভাইস গভর্নর, দেশি-বিদেশি অ্যাওয়ার্ডের মালিক। অর্থাৎ যার কৃতিত্বের তালিকা কাগজে শেষ হয় না, ঠিক যেভাবে অভিযোগের তালিকাও তদন্ত প্রতিবেদনে হয়তো জায়গা পাবে না।
পুরস্কার আর পদকের ভারে যেন নুয়ে পড়ছেন এই শিক্ষা ব্যবসায়ী। বাশার অর্জন করেছেন অ্যাওয়ার্ড ফর আউটস্ট্যান্ডিং কন্ট্রিবিউশন ইন এডুকেশন, ইনোভেশন লার্নিং, এডুকেশনাল ইনস্টিটিউশন ইউথ বেস্ট একাডেমিক অ্যান্ড ইন্ড্রাস্ট্রি ইন্টারফেস, আউটস্ট্যান্ডিং কন্ট্রিবিউশন ইন ডিজিটাল লার্নিং, বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ স্বর্ণপদক, অতীশ দীপংকর অগ্রসর শান্তি স্বর্ণপদক-২০১৫, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ কালচারাল ফাউন্ডেশনের সম্মাননা পদক-২০১১, শেরেবাংলা মেমোরিয়াল অ্যাওয়ার্ড, অর্থকণ্ঠ বিজনেস অ্যাওয়ার্ড-২০১৩, ফিন্যান্সিয়াল মিরর বিজনেসম্যান অ্যাওয়ার্ড, সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় ‘দ্য ম্যাজিস্টিক ফাইভ কনটিনেন্টস অ্যাওয়ার্ড ফর কোয়ালিটি এক্সিলেন্স- ২০১৩’, ভারতের মুম্বাইয়ের এডুপ্রেণার অ্যাওয়ার্ড, ওয়ার্ল্ড এডুকেশন কংগ্রেস-২০১২, সিঙ্গাপুরের এডুকেশন লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, বেস্ট বি স্কুল- ২০১২, স্পেনের বার্সোলোর ওয়ার্ল্ড বিজ অ্যাওয়ার্ড- ২০১২, স্বামী বিবেকানন্দ ন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড-২০১১, ইন্টারন্যাশনাল স্টার ফর লিডারশিপ ইন কোয়ালিটি অ্যাওয়ার্ড-২০১২, প্যারিস থেকে দ্য নিউ এরা অ্যাওয়ার্ড-২০১০ ইত্যদি।
বাশারের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর ইউনিফর্ম ছিল কালো। অনেকটা র্যাবের মতো। তিনি নিজেও কালো পোশাক পরতেন। ধবধবে ফর্সা চেহারার এই সুদর্শন যুবক কালো পোশাকের আড়ালে অভিনয় করে গেছেন বছরের পর বছর। গ্রেপ্তার হওয়ার পর তার শিক্ষা সাম্রাজ্য কেঁপে উঠেছে। বাশারের সুবিধাভোগী মন্ত্রী, রাজনীতিবিদ, সাংবাদিকসহ অনেকেই এখন ভীতসন্ত্রস্ত, কারণ বেরিয়ে আসতে পারে থলের বিড়াল।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) ছাত্র সংসদ নির্বাচন এখন রাষ্ট্রপতির প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায় রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য অধ্যাপক ড. শওকাত আলী। তিনি বলেন, প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেই বেরোবিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শুরু করে দেওয়া হবে।
৫ ঘণ্টা আগেবাংলা একাডেমির একজন কর্মকর্তা বলেন, জাতীয় নির্বাচনের কারণে ফেব্রুয়ারি তো বটেই, জানুয়ারি মাসেও বইমেলা আয়োজনের অনুমতি পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। আবার রমজান শেষ হতে হতে মার্চের শেষভাগ চলে আসবে। তখন মেলা নিয়ে যেতে হবে এপ্রিলে, যখন আবার থাকবে গ্রীষ্মের তীব্র খরতাপ।
৫ ঘণ্টা আগেদেশে প্রথমবারের মতো সম্পূর্ণভাবে আলাদা করে দেওয়া হয়েছে দেওয়ানি ও ফৌজদারি আদালতকে। এ দুই ধরনের আদালত এখন থেকে সম্পূর্ণ আলাদাভাবে কাজ করবে। এর ফলে মামলার সময় বাঁচবে এবং নিষ্পত্তি হওয়া দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলার সংখ্যাও বাড়বে বলে মনে করছে সরকার।
৬ ঘণ্টা আগেসারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে আরও ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ৬৪৭ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডেঙ্গুবিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।
৭ ঘণ্টা আগে