পোশাক নিয়ে ছাত্রীকে হেনস্তা করা সেই তরুণের জামিন, ফুল দিয়ে বরণ

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
জামিন মঞ্জুরের পর মোস্তফা আসিফ অর্ণবকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় ‘তৌহিদি জনতা’। ছবি: ফেসবুক থেকে

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ক্যাম্পাস এলাকায় পোশাক নিয়ে ছাত্রীকে হেনস্তার অভিযোগে গ্রেপ্তার মোস্তফা আসিফ অর্ণবের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ সময় ‘তৌহিদি জনতা’ তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়। এর আগে তার মুক্তির দাবিতে শাহবাগ থানায় অন্তত আট ঘণ্টা অবস্থান করে ‘তৌহিদি জনতা’।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকা মহানগর হাকিম মেহেরা মাহবুবের আদালত এ আদেশ দেন। এ দিন তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. তৌফিক হাসান অভিযুক্তকে ফরোয়ার্ডিং রিপোর্টসহ আদালতে হাজির করেন।

আদালত সূত্র জানায়, অভিযোগকারীও তার মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করেন। এ সংক্রান্ত আবেদন আদালতে উপস্থাপন করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন মঞ্জুর করেন।

অভিযুক্ত মোস্তফা আসিফ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সহকারী বাইন্ডার। ভুক্তভোগীর অভিযোগ পাওয়ার পর বুধবার সন্ধ্যায় তাকে আটক করে শাহবাগ থানা পুলিশ।

মধ্যরাতে আসিফের মুক্তির দাবিতে ‘তৌহিদি জনতা’ নামে একদল ব্যক্তি শাহবাগ থানায় অবস্থান নেন। তারা প্রায় আট ঘণ্টা সেখানে অবস্থান করেন। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, মোস্তফা আসিফের বাবা ও কয়েকজন ছাত্রনেতার মধ্যস্ততায় তারা থানা ত্যাগ করেন।

পরে বৃহস্পতিবার দুপুরে আসিফকে আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে শুনানি শেষে জামিন মঞ্জুর হলে তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেয় ‘তৌহিদি জনতা’ পরিচয় দেওয়া সেই গোষ্ঠী।

এ ঘটনার সূত্রপাত বুধবার দুপুরে। ভুক্তভোগী ছাত্রী অভিযুক্তের ছবি যুক্ত করে শিক্ষার্থীদের এক ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট দিয়ে জানান, তাকে পোশাক নিয়ে হেনস্তা করা হয়েছে। পরে শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত মোস্তফা আসিফকে খুঁজে বের করে প্রক্টর অফিসে নিয়ে যান এবং সেখানে অভিযোগ করেন। ভুক্তভোগীর মামলার পরিপ্রেক্ষিতে প্রক্টর অফিস থেকে আসিফকে শাহবাগ থানায় পাঠানো হয়।

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়ানো হয়, অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের পাশাপাশি চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এরপর ফেসবুকে ঘোষণা দিয়ে তার পক্ষে জনমত তৈরি করে একদল ব্যক্তি শাহবাগ থানায় গিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। তারা উলটো অভিযোগকারী ছাত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করার জন্য চাপ দিতে থাকেন। মধ্যরাত থেকে শুরু করে সকাল প্রায় সাড়ে ৯টা পর্যন্ত এই ‘তৌহিদি জনতা’ থানায় অবস্থান করেন।

সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর রফিকুল ইসলাম, ঢাবি শিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় মুখ্যসংগঠক তাহমিদ আল মুদাসসির চৌধুরী ও অভিযুক্তের বাবাসহ ‘তৌহিদি জনতা’র মধ্যে দফায় দফায় আলোচনা হয়। একপর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয়, গোটা বিষয়টিই আইনি প্রক্রিয়ায় এগিয়ে যাবে। এরপরই ‘তৌহিদি জনতা’ শাহবাগ থানার সামনে থেকে অবস্থান ছেড়ে দেয়।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন