দাবি আদায়ে অনড়

টানা ২৮ ঘণ্টা ধরে অবস্থান কর্মসূচি জুলাই আন্দোলনে আহতদের

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম

টানা ২৮ ঘণ্টা ধরে এক দফা দাবিতে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মূল ফটকের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন জুলাই আন্দোলনে আহতরা। শুরুতে আহতদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের দাবি জানানো হলেও পরে তারা এক দফা দাবিতে অনড় রয়েছেন।

তাদের এক দফা দাবি হলো, তিনটি ক্যাটাগরির পরিবর্তে জুলাই আন্দোলনে আহতদের জন্য দুটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করতে হবে।

বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯টা থেকে উপদেষ্টার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান করছেন আন্দোলনরতরা। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের প্রধান ফটক ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ জন আন্দোলনকারী শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছেন। ফটকের সামনে অবস্থান নিয়ে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। এদিকে আজ সকালে পুলিশের ঊর্ধ্বতনরা এসে ঘুরে গেছেন। তারা আহতদের বুঝানোর চেষ্টা করছেন।

সেখানে অবস্থান নেওয়া আহত ইয়াকুব আলী বলেন, ‘বুধবার সকাল থেকে আমি এখানে অবস্থান করছি। এখান থেকে উঠে যাওয়ার জন্য নানা জায়গা থেকে চাপ আসছে। কিন্তু দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা উঠবো না।’

আন্দোলনকারীরা বলেন, রাতে আমরা খোলা আকাশের নিচে অবস্থান করেছি। আজও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে জুলাই আহতরা রওনা হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে থাকা জুলাই আহতদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ হচ্ছে। তারা ইতোমধ্যে রওনা হয়েছেন ঢাকার উদ্দেশে। আশা করছি, বিকালের মধ্যে সবাই উপস্থিত হবেন।

দাবির বিষয়ে অবস্থান কর্মসূচি থেকে একাধিক ব্যক্তি জানান, তাদের তিন ক্যাটাগরিতে ভাগ করে সরকার বৈষম্য করছে। অনেক গুলিবিদ্ধ আছেন, তাদের সি ক্যাটাগরিতে রাখা হয়েছে। যেটি স্পষ্ট বৈষম্য হিসেবে দেখছেন তারা। তাই তারা দুটি ক্যাটাগরি চান। তাদের এ দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।

জুলাই-আগস্টের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত প্রায় ১৩ হাজার ৮৪৮ জনের নাম তালিকাভুক্ত করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। তাদের মধ্যে সহায়তা, চিকিৎসা এবং পুনর্বাসনের ক্ষেত্রে তিনটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করা হয়েছে। গত ৯ ফেব্রুয়ারি প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে ক্যাটাগরিগুলো পুনরায় সংশোধন করা হয়। সংশোধিত ক্যাটাগরির ভিত্তিতে তালিকা প্রণয়ন করে চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ক্যাটেগরি-এ

অতি গুরুতর আহত- যাদের আজীবন সাহায্যের আওতায় নিয়ে আসতে হবে (নূন্যতম এক চোখ/হাত/পা ক্ষতিগ্রস্ত ও স্বাধীনভাবে জীবনযাপনের অনুপযোগী, সম্পূর্ণ দৃষ্টিহীন, সম্পূর্ণভাবে মানসিক বিকারগ্রস্ত এবং কাজ করতে অক্ষম বা অনুরূপ আহত ব্যক্তি)।

ক্যাটেগরি-বি

গুরুতর আহত- যাদের দীর্ঘদিন সাহায্য দিতে হবে (আংশিক দৃষ্টিহীন, মস্তিষ্কে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত বা অনুরূপ আহত ব্যক্তি)।

ক্যাটেগরি-সি

আহত যারা এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, চিকিৎসা শেষে স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে সক্ষম হবেন (শ্রবণশক্তি/দৃষ্টিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত, গুলিতে আহত বা অনুরূপ আহত ব্যক্তি। আহত যারা ইতোমধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেছেন এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে সক্ষম)।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক ই আজম জানিয়েছেন, প্রত্যেক শহীদ পরিবার ৩০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র পাবে। আহতরা পরিচয়পত্রের পাশাপাশি আজীবন ভাতা ও চিকিৎসা সুবিধা পাবেন।

গুরুতর আহতরা (এ ক্যাটাগরি) এককালীন ৫ লাখ টাকা এবং প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা পাবেন। আর যাদের এক অঙ্গহানি (বি ক্যাটাগরি) হয়েছে, তারা এককালীন ৩ লাখ টাকা এবং ১৫ হাজার টাকা করে মাসিক ভাতা পাবেন। যারা সি ক্যাটাগরিতে আছেন তাদের জন্য আর্থিক সহায়তা নেই। তবে তাদের পুনর্বাসন ও কর্মসংস্থানে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।

ad
ad

মাঠের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

ফেলানী হত্যার এক যুগ পর বিজিবিতে ছোট ভাইয়ের চাকরি

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রামের আনতপুর সীমান্তে বিএসএফ সদস্যদের গুলিতে নিহত হয়েছিলেন ১৫ বছর বয়সী কিশোরী ফেলানী। তাঁর মরদেহ দীর্ঘ ১২ ঘণ্টা কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে থাকার মর্মান্তিক দৃশ্য বিশ্বজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল।

২১ ঘণ্টা আগে

নরসিংদীতে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত ১

১ দিন আগে

নেত্রকোনায় ৫ আসনে দুই ডজন মনোনয়নপ্রত্যাশী বিএনপির

১ দিন আগে

নড়াইলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমিটি বাতিলের দাবি

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান আলেক বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে হবে। তা না করে কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরদের সমন্বয়ে কমিটি করে নড়াইলে পাঠিয়েছেন।

২ দিন আগে