টাঙ্গাইলে স্বেচ্ছাশ্রমে ৬টি কাঠের সেতু তৈরি

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি

টাঙ্গাইলে সরকারি সহায়তার আশায় না থেকে সদর উপজেলার হুগড়া ইউনিয়নে ৬টি কাঠের সেতু স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি করে তাক লাগিয়ে দিয়েছে সামাজিক সংগঠন ‘এসি আকরাম ফাউন্ডেশন’ এর যুবকরা। ফলে আসন্ন বর্ষায় ওই ইউনিয়নের প্রায় ২৫টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের ভোগান্তি লাঘব হবে।

কাঠের সেতুগুলো হচ্ছে- দক্ষিণ হুগড়া, গায়েনপাড়া, হুগড়া পুরাতন জামে মসজিদ, উত্তর হুগড়া ডাক্তারবাড়ি, মন্ডল মোড়ের উত্তরে রহিমের বাড়িসংলগ্ন এবং পূর্ব চিনাখালির গেদা গায়েনের বাড়িসংলগ্ন কাঠের সেতু। এসব সেতু দিয়ে অনায়াসে একটি ভ্যান মালামাল বা যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করতে পারবে। সেতু তৈরিতে ইট-সিমেন্ট-রডের পিলার বা খুঁটি, লোহার অ্যাঙ্গেল এবং কাঠের ফালি বা মোটা তক্তা ব্যবহার করা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, এলাকার ছোট-বড় খালে সাঁকো বা সেতু না থাকায় প্রতি বর্ষায় মানুষের চরম ভোগান্তি হচ্ছিল। এ জন্য প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও কোনো সুফল হয়নি। বাধ্য হয়ে এলাকার যুবকরা জনভোগান্তি লাঘবে স্বেচ্ছাশ্রমে সেতু তৈরির উদ্যোগ নেয়। ঘটনাটি যুব সমাজের জন্য একটি দৃষ্টান্ত। যদিও সেতু তৈরিতে কাঠ-লোহা, পিলার বা খুঁটি, লোহার অ্যাঙ্গেলসহ যাবতীয় অবকাঠামো স্থানীয় সামাজিক সেবামূলক ‘এসি আকরাম ফাউন্ডেশন’ এর অর্থায়নে সরবরাহ করা হয়েছে।

স্থানীয় যুবকরা উৎসাহী হয়ে হুগড়া ইউনিয়নের গণমানুষের ভোগান্তি লাঘবে স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করেছে। এটি দেখে আশপাশের বিভিন্ন এলাকার যুবসমাজ স্বেচ্ছাশ্রমে আগ্রহী হচ্ছে।

জানা যায়, সেতুগুলোর মধ্যে দক্ষিণ হুগড়া কাঠের সেতু তৈরিতে দক্ষিণ হুগড়া মন্ডল পাড়া, বারালিপাড়া ও খানপাড়াসহ কয়েকটি এলাকার মানুষের যাতায়াতে সুফল আসবে। গায়েনপাড়া কাঠের সেতু তৈরির ফলে আনুহুলা চিনাখালী ও ধুপলাপাড়াসহ কয়েকটি এলাকার যোগাযোগের পথ সুগম হয়েছে। হুগড়া পুরাতন জামে মসজিদের কাঠের সেতু তৈরি করায় মন্ডলপাড়া, মোল্লাপাড়াসহ কয়েকটি এলাকার দীর্ঘদিনের ভোগান্তি লাঘব হয়েছে।

উত্তর হুগড়া ডাক্তার বাড়িসংলগ্ন কাঠের সেতু তৈরিতে চরহুগড়া, উত্তর হুগড়া ও ধুলবাড়িসহ কয়েকটি গ্রামের যাতায়াত ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়েছে। মন্ডল মোড়ের উত্তরে রহিমের বাড়ির সংলগ্ন কাঠের সেতু তৈরি করায় চরহুগড়া ও কায়েম হুগড়ার মানুষ চলাচলের পথ সুগম হয়েছে এবং পূর্ব চিনাখালির গেদা গায়েনের বাড়িসংলগ্ন কাঠের সেতু তৈরি করায় পূর্ব চিনাখালী ও উত্তর আনুহলার মানুষের চলাচলে ভোগান্তির লাঘব হয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা মুকুল মন্ডল বলেন, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মধ্যে চরাঞ্চলের এই হুগড়া ইউনিয়ন সবচেয়ে অবহেলিত। প্রতি বছর বর্ষা এলেই চরাঞ্চলের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। বর্ষার আগেই চরাঞ্চলের হুগড়া ইউনিয়নের যেসব এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ার আশঙ্কায় থাকে সেসব এলাকায় তারা স্বেচ্ছাশ্রমে কাঠের সেতু তৈরি করছেন। এরমধ্যে ছাত্র ও দিনমজুর শ্রমিকও রয়েছেন।

সিয়াম চাকলাদার বলেন, সরকারি প্রকল্পের দীর্ঘসূত্রতার অপেক্ষা না করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান এসি আকরাম ফাউন্ডেশনের অর্থায়নে এবং যুবকদের স্বেচ্ছাশ্রমে ইউনিয়নের ছোট- খাটো কাঠের সেতু তৈরি করে দিচ্ছেন। তারা সরকারের কাছে অবহেলিত হুগড়া ইউনিয়নের কাজগুলোর স্থায়ী রূপ দেওয়ার দাবি জানান।

হুগড়া ইউপি চেয়ারম্যান নুরী-ই-আলম তুহিন বলেন, তার ইউনিয়নটি যমুনা নদীতীর ঘেঁষা। এ ইউনিয়নে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বসবাস। এর আগে ইউনিয়নের সবচেয়ে বড় দুর্ভোগ ছিল নদী ভাঙন। বর্তমানে ভাঙন প্রতিরোধ করা হয়েছে। এরপরও যমুনা নদীতীর ঘেঁষা হওয়ায় প্রতি বছর বর্ষার পানিতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। তাদের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য দীর্ঘদিন ধরে ছোট-খাটো কাঠের সেতু তৈরি করে যাচ্ছেন। এছাড়া বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য টিউবওয়েল স্থাপন ও সেনেটারিসহ বেশ কিছু কাজ করার জন্য ‘এসি আকরাম ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, এসি আকরাম ফাউন্ডেশনকে সহযোগিতা করে থাকেন এলাকার ছাত্র-দিনমজুররা। তারা খুব সহজেই মানুষের ভোগান্তি লাঘবে পাশে দাঁড়ায। স্বেচ্ছায় যারা এসব কাজে শ্রম দিচ্ছেন তাদের কখনোই ডাকতে হয়নি। তারা নিজেরাই এসি আকরাম ফাউন্ডেশনের সহায়তায় চরাঞ্চলের মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন।

ad
ad

মাঠের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

নড়াইলে মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কমিটি বাতিলের দাবি

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান আলেক বলেন, তৃণমূল পর্যায়ের তালিকাভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বয়ে সম্মেলনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করতে হবে। তা না করে কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিল ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের দোসরদের সমন্বয়ে কমিটি করে নড়াইলে পাঠিয়েছেন।

১ দিন আগে

‘ভুয়া জুলাই শহিদ’ প্রতিবেদনের প্রতিবাদ নড়াইলের শহিদ রবিউলের পরিবারের

সংবাদ সম্মেলনে জুলাই শহিদ রবিউল ইসলামের স্ত্রী সাবরিনা আক্তার বলেন, আমার স্বামী মিথ্যা অপবাদ নিয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। এখন তার মৃত্যুর পরও একই অপবাদ পরিবারের ওপর মানসিক যন্ত্রণা হয়ে ফিরে আসছে। আমরা এর ন্যায় বিচার চাই।

১ দিন আগে

‘শেখ হাসিনা সংবিধান নিয়ে পালিয়েছেন’

মনিরা শারমিন বলেন, সংবিধানের প্রথমেই লেখা আছে, সংবিধানের মালিক জনগণ। এ কথা বলে আপনাদের সঙ্গে ধোঁকাবাজি করা হয়েছে। কারণ সংবিধানে আপনার মালিকানা আপনি বুঝে পাননি। এই সংবিধান নাগরিক অধিকার রক্ষা করে না। চব্বিশের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পালিয়েছে, সংবিধান নিয়েই পালিয়েছে। এখন বাংলাদেশে কোনো সংবিধান নাই।

১ দিন আগে

ন্যায়ভিত্তিক দেশ গড়তে বিএনপির বিকল্প নেই: সেলিমা রহমান

সেলিমা রহমান বলেন, ১৬ বছর ধরে একটি শকুনি লুটপাট ও গুম-খুন করে বাংলদেশটাকে ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। তাই ন্যায়ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়তে বিএনপির কোনো বিকল্প নেই।

১ দিন আগে