জেসমিন পাপড়ি
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টানা প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, আর পাকিস্তানের সঙ্গে শীতল সম্পর্কের বিষয়টি ছিল একেবারেই প্রকাশ্য। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পতনের পর শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর কূটনৈতিক সম্পর্কের সেই হিসাব পালটে যায়। বলা যায়, ভারত-পাকিস্তান ঘিরে বাংলাদেশের কূটনীতি অবস্থান নেয় সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী।
এমন অবস্থায় কাশ্মিরের পহেলগামে গত মঙ্গলবারের (২২ এপ্রিল) সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া উত্তেজনায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে নতুন করে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এই উত্তেজনার প্রভাব কী হবে বাংলাদেশে, কিংবা বাংলাদেশই বা এই উত্তেজনার মধ্যে কেমন ভূমিকা রাখবে— এসব নিয়ে আগ্রহ এখন সবার।
পহেলগামে হামলার পরদিন বুধবারই (২৩ এপ্রিল) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এক্স হ্যান্ডেলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শোকবার্তা পাঠান। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘কাশ্মিরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। আমরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমি বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছি।’
কাশ্মিরে হামলা জের যে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশের তিন দিনের মাথায় হামলার জেরে ‘অনুপ্রবেশকারী’দের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে গুজরাট সরকার সহস্রাধিক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে। ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাঙ্ঘাভিকে উদ্ধৃত করে বলেছে, তিনি এই গ্রেপ্তারকে ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে মনে করছেন।
এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মেদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সফরে রয়েছেন। ফলে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে এ মুহূর্তে তাদের কোনো বক্তব্য নেই।’ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশের কূটনীতি এখন অনেকটাই পাকিস্তানপন্থি। এ সময়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়তে থাকলে তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে। আশঙ্কা আছে, মৃতপ্রায় সার্ককে জাগিয়ে তোলার যে চেষ্টা চলছিল, সেটিও আর এগোবে না।
সাবেক কূটনীতিক মুন্সি ফয়েজ আহমেদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব বা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি চলছে, তাতে শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো অঞ্চলেই নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’
মৃতপ্রায় সার্ককে পুনরুজ্জীবন দেওয়ার যে চেষ্টা ছিল, তাও থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মুন্সি ফয়েজ। তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ইতিবাচক অবস্থায় নেই। আমরা চেষ্টা করছিলাম সম্পর্ক এগিয়ে নিতে। তবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তানই ভারতের জন্য মুখ্য হয়ে উঠবে। একইভাবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকার পাবে ভারত। কারণ ঘণ্টায় ঘণ্টায় তাদের নিত্যনতুন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রনি বসাক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় পক্ষ হলেও দুই পরমাণু শক্তিধরের বিরোধের প্রভাবে পড়বে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন লক্ষ করা যাচ্ছিল। আবার রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানপন্থি নীতিতে রয়েছে। এই নীতি আরও জোরালো হতে পারে।
অধ্যাপক বসাকও মনে করছেন, দুই দেশের দ্বন্দ্বে মৃতপ্রায় সার্ককে জাগিয়ে তোলা আরও কঠিন হবে।
পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত। ছবি: এপি
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে সেই সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়তে থাকে। শেখ হাসিনার ভারত ও নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সম্পর্ক ‘নতুন উচ্চতায়’ উন্নীতও হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সে চিত্র বদলে যেতে সময় লাগেনি।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বতী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ধারাবাহিক অভিযোগ তোলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ তার সরকারের প্রতিনিধি, দেশটির সংবাদমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীরাও। সনাতন জাগরনী জোটের অন্যতম নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভু গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে গোলযোগ ও বাংলাদেশে একজন আইনজীবীর খুন হওয়াকে কেন্দ্র করে দুই দেশে বাগ্যুদ্ধ চরমে পৌঁছায়। দুই দেশের সরকারই সে সময় পালটাপালটি বিবৃতি দেয়, কূটনৈতিককে তলব করে।
এর মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্র বাংলাদেশ সফর করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে থাইল্যান্ডে বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপরও বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করে দেয় ভারত। বাংলাদেশও স্থলপথে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত নভেম্বরে পাকিস্তানের করাচি থেকে জাহাজ এসে ভেড়ে চট্টগ্রাম বন্দরে। স্বাধীনতার পর সরাসরি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের বন্দরে জাহাজ ভেড়ার ঘটনা এটিই প্রথম। এর মধ্যে পাকিস্তানি শিল্পীরা বাংলাদেশে এসে কনসার্ট করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিকের সফরের খবর বেরোয়। বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি দলও এ সময় পাকিস্তান সফর করে।
এই কদিন আগেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ ঢাকা সফর করে গেছেন। তার সফরের মধ্যে দীর্ঘ দেড় দশক পর ঢাকায় প্রথমবারের মতো ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠক হয়। বৈঠকে দুই দেশ নিজেদের মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারেরও বাংলাদেশের সফরের কথা ছিল এ মাসেই, ওই দুই দেশের মধ্যে কিছু চুক্তি সই হওয়ার কথাও ছিল। পহেলগাম হামলার জের ধরে ছড়িয়ে পড়া উত্তেজনার কারণে ২৭-২৮ এপ্রিলের বাংলাদেশ সফরটি বাতিল করেছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের অভিমত, চলমান এই উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশের জন্য চুপচাপ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করাই ভালো হবে।
ড. ইমতিয়াজ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বদলে গেছে, এটা সত্যি। তবে প্রধান উপদেষ্টা কিন্তু হামলার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এটি সুবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ হয়েছে। এর বাইরে বাংলাদেশের কোনো পক্ষ না নিয়ে বা আগ বাড়িয়ে কথা না বলে চুপচাপ থাকাই শ্রেয়।’
‘কারণ বাংলাদেশ কী করে, তার ওপর ভারত কিন্তু নজর রাখবে। ফলে সরকারে যারা রয়েছেন, তাদের প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যগুলো তেমন সচেতন হতে হবে। ভারতের গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশকে নিয়ে বাড়তি মনোযোগী। তাই সরকার বা দায়িত্বশীল সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে,’ বলেন ড. ইমতিয়াজ।
পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। ছবি: এপি
বাংলাদেশের করণীয় প্রসঙ্গে প্রায় একই ধরনের অবস্থান সাবেক কূটনীতিক মুন্সি ফয়েজ আহমেদেরও। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উচিত ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা। তবে সুযোগ থাকলে বাংলাদেশ দুপক্ষকেই শান্ত হওয়ার পরামর্শ দিতে পারে।’
এর আগেও দেশ দুটি যখন বিরোধে জড়িয়েছে, তখনো বাংলাদেশ একই ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান সাবেক এই কূটনীতিক। পাশাপাশি তারও পরামর্শ, বাংলাদেশের কথাবার্তা বলায় সুবিবেচনার পরিচয় দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী অবশ্য মনে করছেন, বাংলাদেশের সামনে সুযোগ রয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখার। অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল ও কূটনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দিতে তৎপরতা দেখাচ্ছে, তাতে বাংলাদেশ এই ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
ড. সাজ্জাদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্ষুদ্র রাষ্ট্র। সেটি মাথায় রেখে এই উত্তেজনায় কারও পক্ষে থাকার বাস্তবতা বাংলাদেশের নেই। কোনো দেশেরই তো যুদ্ধে জড়ানো উচিত না। বাংলাদেশেরও যুদ্ধের বিরুদ্ধে যে অবস্থান, সেটি ধরে রাখতে হবে। দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা যত বাড়বে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা তত হুমকির মুখে পড়বে। সেই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বাংলাদেশ দুপক্ষের মধ্যেই সূক্ষ্ণভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যেতে পারে।’
সম্ভব হলে দুপক্ষের মধ্যস্ততায় বাংলাদেশও এগিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন ড. সাজ্জাদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সুযোগ রয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখার। সরকার যদি সূক্ষ্ণভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যেতে পারে, মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা এই সরকারের ভাবমূর্তিকে যেমন বাড়িয়ে তুলবে, তেমনি পরবর্তী যেকোনো সরকারের জন্যও কূটনৈতিক দিক থেকে শক্তিশালী একটি অবস্থান গড়ে দিয়ে যেতে পারবে।’
মধ্যস্ততাকারী হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে ভিন্নমতও রয়েছে, সেটি অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণেই। ড. ইমতিয়াজ এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘যে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আছে, তাদের ম্যান্ডেট দেশের অভ্যন্তরীণ নানা খাতের সংস্কার করা, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার উপহার দেওয়া। অন্য দেশের বিরোধ মেটানো এই সরকারের ম্যান্ডেট না। ফলে সরকারের এ বিষয়টি দূরত্ব রেখে পর্যবেক্ষণ করাই ভালো। পাশাপাশি তাদের কথাবার্তাতেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।’
এদিকে শুক্রবার ভারতীয় দৈনিক হিন্দুতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ এসেছে পাকিস্তানের দিক থেকে শিমলা চুক্তি স্থগিতের প্রেক্ষাপটে। পত্রিকাটি বলছে, ১৯৭২ সালের ২ জুলাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভু্ট্টোর মধ্যে সিমলা চুক্তি সই হয়েছিল পারস্পরিক বিদ্বেষ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে। মূলত এই চুক্তি সইয়ের পথ ধরেই পাকিস্তান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টানা প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলে ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা, আর পাকিস্তানের সঙ্গে শীতল সম্পর্কের বিষয়টি ছিল একেবারেই প্রকাশ্য। গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পতনের পর শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর কূটনৈতিক সম্পর্কের সেই হিসাব পালটে যায়। বলা যায়, ভারত-পাকিস্তান ঘিরে বাংলাদেশের কূটনীতি অবস্থান নেয় সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী।
এমন অবস্থায় কাশ্মিরের পহেলগামে গত মঙ্গলবারের (২২ এপ্রিল) সন্ত্রাসী হামলার প্রেক্ষাপটে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া উত্তেজনায় বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কোন পথে এগোবে, তা নিয়ে নতুন করে কৌতূহল তৈরি হয়েছে। এই উত্তেজনার প্রভাব কী হবে বাংলাদেশে, কিংবা বাংলাদেশই বা এই উত্তেজনার মধ্যে কেমন ভূমিকা রাখবে— এসব নিয়ে আগ্রহ এখন সবার।
পহেলগামে হামলার পরদিন বুধবারই (২৩ এপ্রিল) অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস এক্স হ্যান্ডেলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে শোকবার্তা পাঠান। সেখানে তিনি লিখেছেন, ‘কাশ্মিরের পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণহানির ঘটনায় আমি গভীর শোক প্রকাশ করছি। আমরা এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানাই। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমি বাংলাদেশের দৃঢ় অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করছি।’
কাশ্মিরে হামলা জের যে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, তার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। প্রধান উপদেষ্টার শোক প্রকাশের তিন দিনের মাথায় হামলার জেরে ‘অনুপ্রবেশকারী’দের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে গুজরাট সরকার সহস্রাধিক বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে। ভারতীয় গণমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস গুজরাটের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্ষ সাঙ্ঘাভিকে উদ্ধৃত করে বলেছে, তিনি এই গ্রেপ্তারকে ‘ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে মনে করছেন।
এ নিয়ে বাংলাদেশ সরকারের বক্তব্য এখনো পাওয়া যায়নি। জ্যেষ্ঠ সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মেদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা সফরে রয়েছেন। ফলে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতি নিয়ে এ মুহূর্তে তাদের কোনো বক্তব্য নেই।’ বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও শনিবার (২৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক বক্তব্য দেয়নি।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাংলাদেশের কূটনীতি এখন অনেকটাই পাকিস্তানপন্থি। এ সময়ে ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা বাড়তে থাকলে তার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বাংলাদেশের ওপর পড়বে। আশঙ্কা আছে, মৃতপ্রায় সার্ককে জাগিয়ে তোলার যে চেষ্টা চলছিল, সেটিও আর এগোবে না।
সাবেক কূটনীতিক মুন্সি ফয়েজ আহমেদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যে যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব বা উত্তেজনাকর পরিস্থিতি চলছে, তাতে শুধু বাংলাদেশ নয় পুরো অঞ্চলেই নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।’
মৃতপ্রায় সার্ককে পুনরুজ্জীবন দেওয়ার যে চেষ্টা ছিল, তাও থমকে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন মুন্সি ফয়েজ। তিনি বলেন, ‘ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ইতিবাচক অবস্থায় নেই। আমরা চেষ্টা করছিলাম সম্পর্ক এগিয়ে নিতে। তবে এই মুহূর্তে বাংলাদেশ নয়, পাকিস্তানই ভারতের জন্য মুখ্য হয়ে উঠবে। একইভাবে পাকিস্তানের ক্ষেত্রেও অগ্রাধিকার পাবে ভারত। কারণ ঘণ্টায় ঘণ্টায় তাদের নিত্যনতুন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।’
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক রনি বসাক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ভারত-পাকিস্তান দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় পক্ষ হলেও দুই পরমাণু শক্তিধরের বিরোধের প্রভাবে পড়বে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন লক্ষ করা যাচ্ছিল। আবার রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এখন পাকিস্তানপন্থি নীতিতে রয়েছে। এই নীতি আরও জোরালো হতে পারে।
অধ্যাপক বসাকও মনে করছেন, দুই দেশের দ্বন্দ্বে মৃতপ্রায় সার্ককে জাগিয়ে তোলা আরও কঠিন হবে।
পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর নিরাপত্তা জোরদার করেছে ভারত। ছবি: এপি
ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠতার কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে সেই সম্পর্কের ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়তে থাকে। শেখ হাসিনার ভারত ও নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সম্পর্ক ‘নতুন উচ্চতায়’ উন্নীতও হয়। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সে চিত্র বদলে যেতে সময় লাগেনি।
অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বতী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ধারাবাহিক অভিযোগ তোলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ তার সরকারের প্রতিনিধি, দেশটির সংবাদমাধ্যম ও বুদ্ধিজীবীরাও। সনাতন জাগরনী জোটের অন্যতম নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ প্রভু গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে গোলযোগ ও বাংলাদেশে একজন আইনজীবীর খুন হওয়াকে কেন্দ্র করে দুই দেশে বাগ্যুদ্ধ চরমে পৌঁছায়। দুই দেশের সরকারই সে সময় পালটাপালটি বিবৃতি দেয়, কূটনৈতিককে তলব করে।
এর মধ্যে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্র বাংলাদেশ সফর করেছেন। বাংলাদেশ সরকারের অনুরোধে সাড়া দিয়ে থাইল্যান্ডে বিমসটেক সম্মেলনের সাইডলাইনে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এরপরও বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট বন্ধ করে দেয় ভারত। বাংলাদেশও স্থলপথে ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে।
অন্যদিকে শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গত নভেম্বরে পাকিস্তানের করাচি থেকে জাহাজ এসে ভেড়ে চট্টগ্রাম বন্দরে। স্বাধীনতার পর সরাসরি পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশের বন্দরে জাহাজ ভেড়ার ঘটনা এটিই প্রথম। এর মধ্যে পাকিস্তানি শিল্পীরা বাংলাদেশে এসে কনসার্ট করেছেন। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আসিম মালিকের সফরের খবর বেরোয়। বাংলাদেশি সেনাবাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের একটি দলও এ সময় পাকিস্তান সফর করে।
এই কদিন আগেই পাকিস্তানের পররাষ্ট্র সচিব আমনা বালুচ ঢাকা সফর করে গেছেন। তার সফরের মধ্যে দীর্ঘ দেড় দশক পর ঢাকায় প্রথমবারের মতো ফরেন অফিস কনসালটেশন (এফওসি) বৈঠক হয়। বৈঠকে দুই দেশ নিজেদের মধ্যকার দূরত্ব কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়। পাকিস্তানের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসহাক দারেরও বাংলাদেশের সফরের কথা ছিল এ মাসেই, ওই দুই দেশের মধ্যে কিছু চুক্তি সই হওয়ার কথাও ছিল। পহেলগাম হামলার জের ধরে ছড়িয়ে পড়া উত্তেজনার কারণে ২৭-২৮ এপ্রিলের বাংলাদেশ সফরটি বাতিল করেছেন তিনি।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদের অভিমত, চলমান এই উত্তেজনার মধ্যে বাংলাদেশের জন্য চুপচাপ থেকে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করাই ভালো হবে।
ড. ইমতিয়াজ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক বদলে গেছে, এটা সত্যি। তবে প্রধান উপদেষ্টা কিন্তু হামলার পর দ্রুততম সময়ের মধ্যেই প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। এটি সুবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপ হয়েছে। এর বাইরে বাংলাদেশের কোনো পক্ষ না নিয়ে বা আগ বাড়িয়ে কথা না বলে চুপচাপ থাকাই শ্রেয়।’
‘কারণ বাংলাদেশ কী করে, তার ওপর ভারত কিন্তু নজর রাখবে। ফলে সরকারে যারা রয়েছেন, তাদের প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যগুলো তেমন সচেতন হতে হবে। ভারতের গণমাধ্যমগুলো বাংলাদেশকে নিয়ে বাড়তি মনোযোগী। তাই সরকার বা দায়িত্বশীল সবাইকেই সতর্ক থাকতে হবে,’ বলেন ড. ইমতিয়াজ।
পহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রতিবাদ জানান স্থানীয়রা। ছবি: এপি
বাংলাদেশের করণীয় প্রসঙ্গে প্রায় একই ধরনের অবস্থান সাবেক কূটনীতিক মুন্সি ফয়েজ আহমেদেরও। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের উচিত ধৈর্য ধরে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা। তবে সুযোগ থাকলে বাংলাদেশ দুপক্ষকেই শান্ত হওয়ার পরামর্শ দিতে পারে।’
এর আগেও দেশ দুটি যখন বিরোধে জড়িয়েছে, তখনো বাংলাদেশ একই ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান সাবেক এই কূটনীতিক। পাশাপাশি তারও পরামর্শ, বাংলাদেশের কথাবার্তা বলায় সুবিবেচনার পরিচয় দিতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান সহযোগী অধ্যাপক ড. সাজ্জাদ সিদ্দিকী অবশ্য মনে করছেন, বাংলাদেশের সামনে সুযোগ রয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখার। অন্তর্বর্তী সরকার যেভাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল ও কূটনৈতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে নতুনভাবে পরিচয় করিয়ে দিতে তৎপরতা দেখাচ্ছে, তাতে বাংলাদেশ এই ভূমিকা নিতে পারে বলে মনে করছেন তিনি।
ড. সাজ্জাদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘বাংলাদেশ ক্ষুদ্র রাষ্ট্র। সেটি মাথায় রেখে এই উত্তেজনায় কারও পক্ষে থাকার বাস্তবতা বাংলাদেশের নেই। কোনো দেশেরই তো যুদ্ধে জড়ানো উচিত না। বাংলাদেশেরও যুদ্ধের বিরুদ্ধে যে অবস্থান, সেটি ধরে রাখতে হবে। দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা যত বাড়বে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা তত হুমকির মুখে পড়বে। সেই আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার স্বার্থে বাংলাদেশ দুপক্ষের মধ্যেই সূক্ষ্ণভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যেতে পারে।’
সম্ভব হলে দুপক্ষের মধ্যস্ততায় বাংলাদেশও এগিয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন ড. সাজ্জাদ। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের জন্য সুযোগ রয়েছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে মধ্যস্ততাকারী হিসেবে ভূমিকা রাখার। সরকার যদি সূক্ষ্ণভাবে কূটনৈতিক তৎপরতা চালিয়ে যেতে পারে, মধ্যস্ততাকারীর ভূমিকা এই সরকারের ভাবমূর্তিকে যেমন বাড়িয়ে তুলবে, তেমনি পরবর্তী যেকোনো সরকারের জন্যও কূটনৈতিক দিক থেকে শক্তিশালী একটি অবস্থান গড়ে দিয়ে যেতে পারবে।’
মধ্যস্ততাকারী হিসেবে বাংলাদেশের ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে ভিন্নমতও রয়েছে, সেটি অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় থাকার কারণেই। ড. ইমতিয়াজ এ বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘যে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আছে, তাদের ম্যান্ডেট দেশের অভ্যন্তরীণ নানা খাতের সংস্কার করা, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি নির্বাচিত সরকার উপহার দেওয়া। অন্য দেশের বিরোধ মেটানো এই সরকারের ম্যান্ডেট না। ফলে সরকারের এ বিষয়টি দূরত্ব রেখে পর্যবেক্ষণ করাই ভালো। পাশাপাশি তাদের কথাবার্তাতেও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।’
এদিকে শুক্রবার ভারতীয় দৈনিক হিন্দুতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রসঙ্গ এসেছে পাকিস্তানের দিক থেকে শিমলা চুক্তি স্থগিতের প্রেক্ষাপটে। পত্রিকাটি বলছে, ১৯৭২ সালের ২ জুলাই ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভু্ট্টোর মধ্যে সিমলা চুক্তি সই হয়েছিল পারস্পরিক বিদ্বেষ কমিয়ে আনার লক্ষ্যে। মূলত এই চুক্তি সইয়ের পথ ধরেই পাকিস্তান ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
প্রধান উপদেষ্টা নিজে ঐকমত্য কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তিনি খুব খুশি যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তুলতে এই সংলাপে অংশগ্রহণ করেছেন।
১৫ ঘণ্টা আগেপ্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ধারাবাহিকতা রয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী। তিনি জানান, আগামী ৪ জুন সকাল ১১টায় বিএনপির পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাজেট প্রতিক্রিয়া জানানো হবে। আজকের মন্তব্য তার ব্যক্তিগত প্রতিক্রিয়া।
১৬ ঘণ্টা আগেবিএনপি, জামায়াত, এনসিপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সংস্কার প্রস্তাব নিয়ে দ্বিতীয় দফা বৈঠকে বসেছে ঐকমত্য কমিশন। এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করছেন ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ডা. মুহাম্মদ ইউনূস। আজ সোমবার বিকেল সাড়ে তিনটা থেকে বৈঠকে অংশ নিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প
১৭ ঘণ্টা আগেহামিদুর রহমান আযাদ বলেন, আদালত ২০১৩ সালের রায় বাতিল করেছেন এবং পূর্বের অবস্থায় নিবন্ধন এবং প্রতীক ফিরে পেতে কোনো বাধা নেই। এখন যা আছে তা হচ্ছে আনুষ্ঠানিকতা।
১৯ ঘণ্টা আগে