

বিশেষ প্রতিনিধি, রাজনীতি ডটকম

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চার মাস ধরে দলের নির্বাচনি প্রতীক ‘শাপলা’ চেয়ে এলেও তা প্রতীকের হালনাগাদ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শেষ পর্যন্ত ইসি প্রতীকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে ‘শাপলা কলি’।
ইসি বলছে, কারও কোনো দাবি-দাওয়ার মুখে নয়, তারা নির্বাচনি প্রতীকের সংখ্যা বাড়ানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত করেছে। আগের তালিকার কিছু প্রতীক নিয়ে আপত্তি থাকায় সেগুলো সংশোধন করে নতুন প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে মাত্র।
এনসিপির পক্ষ থেকে অবশ্য এসেছে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া। দলটির নেতারা মনে করছেন, তাদের চাওয়া ‘শাপলা’ দিতে চাইছে না বলেই ‘শাপলা কলি’ প্রতীকের তালিকায় ঢোকানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ইসি ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে এনসিপি ‘ছোট দল’। তবে এনসিপি ‘শাপলা কলি’কে নিজেদের নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে মেনে নিতে রাজি নয়। তারা ‘শাপলা’কেই প্রতীক হিসেবে পেতে অনড় অবস্থানে রয়েছে।
গত ২২ জুন ইসিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করার সময়ই এনসিপি দলীয় নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে দাবি করে ‘শাপলা’। জাতীয় প্রতীকের অবিচ্ছেদ্য অংশ বিবেচনায় এ প্রতীককে সংরক্ষণ করে কোনো দলকেই বরাদ্দ না দেওয়ার কথা জানায় ইসি।
এনসিপির ওই আবেদনের পাঁচ দিন আগেই নির্বাচন কমিশনে নিজেদের প্রতীক ‘কেটলি’ পালটে ‘শাপলা’ প্রতীকের জন্য আবেদন করেছিল নাগরিক ঐক্য। তাদেরও ‘জাতীয় প্রতীক’ ইস্যু দেখিয়েই শাপলা বরাদ্দ দেয়নি বা প্রতীকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি ইসি।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচনি প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করেছে ইসি। গেজেটে দেখা গেছে, নির্বাচনি প্রতীকের তালিকায় নতুন করে যে কয়েকটি প্রতীক যুক্ত হয়েছে তার একটি ‘শাপলা কলি’। প্রশ্ন ওঠে, জুন থেকে ‘শাপলা’ প্রতীকের দাবি জানিয়ে আসা এনসিপির জন্য বিকল্প হিসেবে প্রতীকটি যুক্ত করা হয়েছে কি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘শাপলা’ আর ‘শাপলা কলি’র মধ্যে পার্থক্য আছে— এটি ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে না। নির্বাচন কমিশন মনে করেছে যে শাপলা কলিটা রাখা যেতে পারে। এটা কারও দাবির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়।
আখতার আহমেদ বলেন, আমাদের কিছু কিছু প্রতীক নিয়ে অনেকের মন্তব্য আমরা শুনেছি। যেমন— কেউ বলেছেন এটা রাখলেন কেন, না রাখলে ভালো হতো, রাখা যৌক্তিক হয়েছে কি না ইত্যাদি। এসব বিবেচনায় নিয়ে আমরা প্রতীকের তালিকা সংশোধন করেছি। আগে যে ১১৫টি প্রতীক ছিল, তার থেকে ১৬টি প্রতীক বাদ দিয়েছি। নতুন করে প্রতীক যুক্ত করেছি ২০টি। সব মিলিয়ে ১১৯টি প্রতীক নিয়ে তফসিল করেছি।
এর আগে এনসিপির ‘শাপলা’ প্রতীকের চাহিদার বিপরীতে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ প্রতীকটি কোনো দলকে না দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
সেক্ষেত্রে চাপের মুখে ইসি ‘শাপলা কলি’ প্রতীক হিসেবে যুক্ত করেছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির এই সিনিয়র সচিব বলেন, ‘কেউ যদি বলে কমিশন চাপে পড়ে এটা করেছে, আমি বলব— না, কমিশন নিজের বিবেচনায় করেছে। এখানে নতুন কোনো বিতর্কের কিছু দেখছি না। বরং কমিশন আবার প্রমাণ করেছে যে তারা স্বাধীন প্রতিষ্ঠান।’
নতুন প্রতীকের গেজেট প্রকাশের পরপরই তা প্রতিক্রিয়া তৈরি করে এনসিপিতে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলের যুগ্ম সদস্য সচিব জহুরুল ইসলাম মুসা বলেন, ‘শাপলা কলি’ দেওয়া হলে তা আমরা মানব না। আমরা শাপলা প্রতীকই চাই। ‘শাপলা কলি’ প্রতীকের তালিকায় যুক্ত করায় আমরা সন্তুষ্ট নই।
এরপর একে একে এনসিপির অন্য নেতাদের কাছ থেকেও ‘শাপলা কলি’ নিয়ে প্রতিক্রিয়া এসেছে। তাদের মধ্যে যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, তারা (নির্বাচন কমিশন) যদি জাতীয় প্রতীক সংরক্ষণের যুক্তিতে ‘শাপলা’ প্রতীককে তালিকাভুক্ত না করেন, একই যুক্তি ‘ধানের শীষ’, ‘তারকা’ বা ‘পাটপাতা’র ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। আর যদি তারা জাতীয় প্রতীক সংরক্ষণকে নিজেদের দায়িত্ব না মনে করেন, তাহলে ‘শাপলা’ প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করতে বাধা কোথায়?
খালেদ আরও লিখেছেন, নির্বাচন কমিশনের কোনো এক কর্মকর্তার ইচ্ছায় আমাদের প্রতীক নির্ধারণ হবে না। আমাদের প্রতীক নির্ধারণ হবে আমাদের দলের সদস্যদের ইচ্ছায় এবং আইনের সীমার মধ্যে। আইন সবার জন্য সমান হতে হবে। আইন যদি বেছে বেছে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তা আর আইন থাকে না, অন্যায়ের হাতিয়ার হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলেই জাতীয় যুবশক্তির এক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। সেখানে ‘শাপলা’ ইস্যুতে দলের ‘আপসহীন’ অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশন নতুন গেজেটে আমাদের ‘শাপলা কলি’ প্রতীক দিয়েছে। কমিশন এটি কীসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করেছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে শাপলা প্রশ্নে আমরা আপসহীন।
শেষ পর্যন্ত ইসি ‘শাপলা’ প্রতীক দিতে না চাইলে এর জন্য রাজপথে লড়াই করার প্রত্যয়ও জানান নাসীর। বলেন, কমিশনকে শাপলা প্রতীক যুক্ত করে নতুন গেজেট দিতে হবে। তা না হলে কমিশন কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে আমরা তা আদায় করে নেব।
‘শাপলা কলি’ প্রতীকের তালিকায় যুক্ত করার মাধ্যমে এনসিপিকে ‘ছোট দল’ বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে বলে মনে করেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। এটি করে ইসি প্রতারণা করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ও জানিয়েছেন।
যুবশক্তির একই অনুষ্ঠানে সামান্তা বলেন, ‘শাপলা কলি’ যদি দেওয়া যায়, ‘শাপলা’ও প্রতীক হিসেবে দেওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু এর মাধ্যমে কমিশন বোঝাল, তোমরা (এনসিপি) যা চেয়েছ আমরা তা দিলাম না। এমন একটা পজিশন দাঁড় করানো হলো— তোমরা (এনসিপি) আসলে ফুটো (ফুল ফোটা) নাই, তোমরা এখনো বাচ্চা।
‘শাপলা’র জন্য লড়াইয়ের প্রত্যয় জানিয়ে সামান্তা বলেন, এ ধরনের ন্যারেটিভ বড় রাজনৈতিক দলগুলোর। যা এখনো মেনে চলছে ইসি। এটি এক ধরনের প্রতারণা, এটি এক ধরনের বৈষম্য, যেখানে কোনো ধরনের আইনি কারণ নেই। তবে ‘কলি’ যখন পেয়েছি, পূর্ণাঙ্গ ‘শাপলা’ও আদায় করে ছাড়ব।
নিবন্ধনের আবেদনের সময় থেকেই ‘শাপলা’ প্রতীকের জন্য অনড় অবস্থানের কথা জানিয়ে আসছে এনসিপি। অন্যদিকে ইসির পক্ষ থেকেও এ প্রতীক না দেওয়ার বিষয়ে অনড় অবস্থানের কথা বারবার জানানো হয়েছে।
জুনে আবেদনের পর থেকেই এনসিপির শীর্ষ নেতারা যেকোনো অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে ‘শাপলা’ প্রতীকের দাবির কথা বারবার তুলে ধরেছেন। আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম থেকে শুরু করে সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং দুই মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের প্রায় সব প্রোগ্রামেই এ প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে।
এনসিপির শীর্ষ এসব নেতারা বারবারই বলেছেন, ‘শাপলা’ ছাড়া আর কোনো প্রতীক নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তারা যেকোনো মূল্যে এ প্রতীক আদায় করে ছাড়বেন। ইসি তাদের শেষ পর্যন্ত ‘শাপলা’ প্রতীক দেবে না, এটি বিশ্বাসযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য এসেছে তাদের কারও কারও কাছ থেকে।
কেবল মাঠে-ময়দানে বক্তব্য-বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ ছিল না এনসিপি। নিবন্ধনের আবেদনের পর গত প্রায় সাড়ে চার মাস সময়ে একাধিকবার তাদের প্রতিনিধি দল ইসিতে গিয়েছে। সেখানে ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও তারা তাদের ‘শাপলা’র পক্ষে দাবির কথা বারবারই বলেছেন।’
নির্বাচন কমিশনও তাদের অবস্থান থেকে এক চুলও সরেনি। যতবারই এনসিপির ‘শাপলা প্রতীকে’র দাবির প্রসঙ্গ উঠেছে, ততবারই ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন একই কথা— তারা এই প্রতীকটি কাউকেই বরাদ্দ দেবেন না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন পর্যন্ত একই কথা বলেছেন। তিনি উলটো এ বিষয়ে কোনো কারণ ব্যাখ্যা করতেও রাজি হননি।
সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক অনুষ্ঠোনে সিইসি বলেন, শাপলা প্রতীক কেন দেওয়া হবে না তার ব্যাখ্যা দেবে না ইসি। এটি কমিশনের সিদ্ধান্ত। কোনো দল কিংবা দেশের জনগণ চিঠি দিতেই পারে। কিন্তু এতে কোনো সমস্যা নেই। ইসি কারও কথায় চলে না নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে চায়।

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) চার মাস ধরে দলের নির্বাচনি প্রতীক ‘শাপলা’ চেয়ে এলেও তা প্রতীকের হালনাগাদ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেনি নির্বাচন কমিশন (ইসি)। শেষ পর্যন্ত ইসি প্রতীকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করেছে ‘শাপলা কলি’।
ইসি বলছে, কারও কোনো দাবি-দাওয়ার মুখে নয়, তারা নির্বাচনি প্রতীকের সংখ্যা বাড়ানোর প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই প্রতীকটি অন্তর্ভুক্ত করেছে। আগের তালিকার কিছু প্রতীক নিয়ে আপত্তি থাকায় সেগুলো সংশোধন করে নতুন প্রতীক যুক্ত করা হয়েছে মাত্র।
এনসিপির পক্ষ থেকে অবশ্য এসেছে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া। দলটির নেতারা মনে করছেন, তাদের চাওয়া ‘শাপলা’ দিতে চাইছে না বলেই ‘শাপলা কলি’ প্রতীকের তালিকায় ঢোকানো হয়েছে। এর মাধ্যমে ইসি ইঙ্গিতে বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে এনসিপি ‘ছোট দল’। তবে এনসিপি ‘শাপলা কলি’কে নিজেদের নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে মেনে নিতে রাজি নয়। তারা ‘শাপলা’কেই প্রতীক হিসেবে পেতে অনড় অবস্থানে রয়েছে।
গত ২২ জুন ইসিতে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধনের আবেদন করার সময়ই এনসিপি দলীয় নির্বাচনি প্রতীক হিসেবে দাবি করে ‘শাপলা’। জাতীয় প্রতীকের অবিচ্ছেদ্য অংশ বিবেচনায় এ প্রতীককে সংরক্ষণ করে কোনো দলকেই বরাদ্দ না দেওয়ার কথা জানায় ইসি।
এনসিপির ওই আবেদনের পাঁচ দিন আগেই নির্বাচন কমিশনে নিজেদের প্রতীক ‘কেটলি’ পালটে ‘শাপলা’ প্রতীকের জন্য আবেদন করেছিল নাগরিক ঐক্য। তাদেরও ‘জাতীয় প্রতীক’ ইস্যু দেখিয়েই শাপলা বরাদ্দ দেয়নি বা প্রতীকের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার কোনো উদ্যোগ নেয়নি ইসি।
বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) নির্বাচনি প্রতীকের তালিকা সংশোধন করে গেজেট প্রকাশ করেছে ইসি। গেজেটে দেখা গেছে, নির্বাচনি প্রতীকের তালিকায় নতুন করে যে কয়েকটি প্রতীক যুক্ত হয়েছে তার একটি ‘শাপলা কলি’। প্রশ্ন ওঠে, জুন থেকে ‘শাপলা’ প্রতীকের দাবি জানিয়ে আসা এনসিপির জন্য বিকল্প হিসেবে প্রতীকটি যুক্ত করা হয়েছে কি না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ বলেন, ‘শাপলা’ আর ‘শাপলা কলি’র মধ্যে পার্থক্য আছে— এটি ব্যাখ্যার অবকাশ রাখে না। নির্বাচন কমিশন মনে করেছে যে শাপলা কলিটা রাখা যেতে পারে। এটা কারও দাবির সঙ্গে প্রাসঙ্গিক নয়।
আখতার আহমেদ বলেন, আমাদের কিছু কিছু প্রতীক নিয়ে অনেকের মন্তব্য আমরা শুনেছি। যেমন— কেউ বলেছেন এটা রাখলেন কেন, না রাখলে ভালো হতো, রাখা যৌক্তিক হয়েছে কি না ইত্যাদি। এসব বিবেচনায় নিয়ে আমরা প্রতীকের তালিকা সংশোধন করেছি। আগে যে ১১৫টি প্রতীক ছিল, তার থেকে ১৬টি প্রতীক বাদ দিয়েছি। নতুন করে প্রতীক যুক্ত করেছি ২০টি। সব মিলিয়ে ১১৯টি প্রতীক নিয়ে তফসিল করেছি।
এর আগে এনসিপির ‘শাপলা’ প্রতীকের চাহিদার বিপরীতে ইসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এ প্রতীকটি কোনো দলকে না দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসি।
সেক্ষেত্রে চাপের মুখে ইসি ‘শাপলা কলি’ প্রতীক হিসেবে যুক্ত করেছে কি না— এমন প্রশ্নের জবাবে ইসির এই সিনিয়র সচিব বলেন, ‘কেউ যদি বলে কমিশন চাপে পড়ে এটা করেছে, আমি বলব— না, কমিশন নিজের বিবেচনায় করেছে। এখানে নতুন কোনো বিতর্কের কিছু দেখছি না। বরং কমিশন আবার প্রমাণ করেছে যে তারা স্বাধীন প্রতিষ্ঠান।’
নতুন প্রতীকের গেজেট প্রকাশের পরপরই তা প্রতিক্রিয়া তৈরি করে এনসিপিতে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় দলের যুগ্ম সদস্য সচিব জহুরুল ইসলাম মুসা বলেন, ‘শাপলা কলি’ দেওয়া হলে তা আমরা মানব না। আমরা শাপলা প্রতীকই চাই। ‘শাপলা কলি’ প্রতীকের তালিকায় যুক্ত করায় আমরা সন্তুষ্ট নই।
এরপর একে একে এনসিপির অন্য নেতাদের কাছ থেকেও ‘শাপলা কলি’ নিয়ে প্রতিক্রিয়া এসেছে। তাদের মধ্যে যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ ফেসবুক পোস্টে লিখেছেন, তারা (নির্বাচন কমিশন) যদি জাতীয় প্রতীক সংরক্ষণের যুক্তিতে ‘শাপলা’ প্রতীককে তালিকাভুক্ত না করেন, একই যুক্তি ‘ধানের শীষ’, ‘তারকা’ বা ‘পাটপাতা’র ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। আর যদি তারা জাতীয় প্রতীক সংরক্ষণকে নিজেদের দায়িত্ব না মনে করেন, তাহলে ‘শাপলা’ প্রতীক অন্তর্ভুক্ত করতে বাধা কোথায়?
খালেদ আরও লিখেছেন, নির্বাচন কমিশনের কোনো এক কর্মকর্তার ইচ্ছায় আমাদের প্রতীক নির্ধারণ হবে না। আমাদের প্রতীক নির্ধারণ হবে আমাদের দলের সদস্যদের ইচ্ছায় এবং আইনের সীমার মধ্যে। আইন সবার জন্য সমান হতে হবে। আইন যদি বেছে বেছে প্রয়োগ করা হয়, তাহলে তা আর আইন থাকে না, অন্যায়ের হাতিয়ার হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার বিকেলেই জাতীয় যুবশক্তির এক সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। সেখানে ‘শাপলা’ ইস্যুতে দলের ‘আপসহীন’ অবস্থানের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, নির্বাচন কমিশন নতুন গেজেটে আমাদের ‘শাপলা কলি’ প্রতীক দিয়েছে। কমিশন এটি কীসের ভিত্তিতে নির্ধারণ করেছে, তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে শাপলা প্রশ্নে আমরা আপসহীন।
শেষ পর্যন্ত ইসি ‘শাপলা’ প্রতীক দিতে না চাইলে এর জন্য রাজপথে লড়াই করার প্রত্যয়ও জানান নাসীর। বলেন, কমিশনকে শাপলা প্রতীক যুক্ত করে নতুন গেজেট দিতে হবে। তা না হলে কমিশন কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করে আমরা তা আদায় করে নেব।
‘শাপলা কলি’ প্রতীকের তালিকায় যুক্ত করার মাধ্যমে এনসিপিকে ‘ছোট দল’ বলে ইঙ্গিত করা হয়েছে বলে মনে করেন এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন। এটি করে ইসি প্রতারণা করেছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি। লড়াই চালিয়ে যাওয়ার প্রত্যয়ও জানিয়েছেন।
যুবশক্তির একই অনুষ্ঠানে সামান্তা বলেন, ‘শাপলা কলি’ যদি দেওয়া যায়, ‘শাপলা’ও প্রতীক হিসেবে দেওয়া সম্ভব ছিল। কিন্তু এর মাধ্যমে কমিশন বোঝাল, তোমরা (এনসিপি) যা চেয়েছ আমরা তা দিলাম না। এমন একটা পজিশন দাঁড় করানো হলো— তোমরা (এনসিপি) আসলে ফুটো (ফুল ফোটা) নাই, তোমরা এখনো বাচ্চা।
‘শাপলা’র জন্য লড়াইয়ের প্রত্যয় জানিয়ে সামান্তা বলেন, এ ধরনের ন্যারেটিভ বড় রাজনৈতিক দলগুলোর। যা এখনো মেনে চলছে ইসি। এটি এক ধরনের প্রতারণা, এটি এক ধরনের বৈষম্য, যেখানে কোনো ধরনের আইনি কারণ নেই। তবে ‘কলি’ যখন পেয়েছি, পূর্ণাঙ্গ ‘শাপলা’ও আদায় করে ছাড়ব।
নিবন্ধনের আবেদনের সময় থেকেই ‘শাপলা’ প্রতীকের জন্য অনড় অবস্থানের কথা জানিয়ে আসছে এনসিপি। অন্যদিকে ইসির পক্ষ থেকেও এ প্রতীক না দেওয়ার বিষয়ে অনড় অবস্থানের কথা বারবার জানানো হয়েছে।
জুনে আবেদনের পর থেকেই এনসিপির শীর্ষ নেতারা যেকোনো অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিতে গিয়ে ‘শাপলা’ প্রতীকের দাবির কথা বারবার তুলে ধরেছেন। আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম থেকে শুরু করে সদস্য সচিব আখতার হোসেন এবং দুই মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সারজিস আলমের প্রায় সব প্রোগ্রামেই এ প্রসঙ্গটি উঠে এসেছে।
এনসিপির শীর্ষ এসব নেতারা বারবারই বলেছেন, ‘শাপলা’ ছাড়া আর কোনো প্রতীক নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। তারা যেকোনো মূল্যে এ প্রতীক আদায় করে ছাড়বেন। ইসি তাদের শেষ পর্যন্ত ‘শাপলা’ প্রতীক দেবে না, এটি বিশ্বাসযোগ্য নয় বলেও মন্তব্য এসেছে তাদের কারও কারও কাছ থেকে।
কেবল মাঠে-ময়দানে বক্তব্য-বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ ছিল না এনসিপি। নিবন্ধনের আবেদনের পর গত প্রায় সাড়ে চার মাস সময়ে একাধিকবার তাদের প্রতিনিধি দল ইসিতে গিয়েছে। সেখানে ইসির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেও তারা তাদের ‘শাপলা’র পক্ষে দাবির কথা বারবারই বলেছেন।’
নির্বাচন কমিশনও তাদের অবস্থান থেকে এক চুলও সরেনি। যতবারই এনসিপির ‘শাপলা প্রতীকে’র দাবির প্রসঙ্গ উঠেছে, ততবারই ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন একই কথা— তারা এই প্রতীকটি কাউকেই বরাদ্দ দেবেন না। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন পর্যন্ত একই কথা বলেছেন। তিনি উলটো এ বিষয়ে কোনো কারণ ব্যাখ্যা করতেও রাজি হননি।
সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে এক অনুষ্ঠোনে সিইসি বলেন, শাপলা প্রতীক কেন দেওয়া হবে না তার ব্যাখ্যা দেবে না ইসি। এটি কমিশনের সিদ্ধান্ত। কোনো দল কিংবা দেশের জনগণ চিঠি দিতেই পারে। কিন্তু এতে কোনো সমস্যা নেই। ইসি কারও কথায় চলে না নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে চায়।

বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশনের কাজ হলো ঐক্য সৃষ্টি করা, বিভক্তি তৈরি করা নয়। কিন্তু সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডে দেখা যাচ্ছে, কমিশন জাতিকে বিভ্রান্ত করছে এবং রাজনৈতিক বিভক্তি তৈরি করছে।
১৭ ঘণ্টা আগে
নির্বাচনের আগে গণভোট না হলে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে জানিয়ে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আব্দুল হালিম বলেন, জুলাই জাতীয় সনদ অনুযায়ী আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোটের আয়োজন করতে হবে।
১৭ ঘণ্টা আগে
অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তেজগাঁওয়ে তার কার্যালয়ে এ বৈঠক হয়।
১৭ ঘণ্টা আগে
মির্জা ফখরুল বলেন, জুলাই সনদে থাকা ‘নোট অব ডিসেন্ট’গুলোও উপেক্ষা করা হয়েছে, যা গ্রহণযোগ্য নয়। কমিশনের আলোচনায় ঐকমত্যের ভিত্তিতে সম্মত কয়েকটি দফা তাদের অগোচরেই পুনরায় সংশোধন করা হয়েছে। ঐকমত্য কমিশন জাতির ওপর এই সুপারিশ জোরজবরদস্তি চাপিয়ে দিয়েছে।
১৭ ঘণ্টা আগে