আভ্যন্তরীণ কোন্দল ঠেকাতে এমপি-মন্ত্রীদের বিষয়ে কঠোর আ. লীগ

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
আওয়ামী লীগের দলীয় পতাকা

বিএনপিসহ সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর বর্জনের মুখে ষষ্ঠ উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে দলীয় প্রতীক দিচ্ছে না ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ‌‌‌। এমনকি দলের এমপি মন্ত্রীদের পরিবারকেও নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর কঠোর বার্তা দিয়েছে দলটির হাইকমাণ্ড।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, বিরোধী দলবিহীন জাতীয় নির্বাচনে নিজ দলের স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে যে সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছিল, তা সামাল দিতেই তৎপর আওয়ামী লীগ। আভ্যন্তরীণ কোন্দল ঠেকাতে উপজেলা নির্বাচনে দলীয় প্রতীক প্রত্যাহারের পর এবার এমপি ও মন্ত্রীদের পরিবারের সদস্যদের সরে দাঁড়ানোর নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার এ নির্দেশনা দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। সে অনুযায়ী নিজ নিজ বিভাগের মন্ত্রী-এমপিদের বিষয়টি জানাতে শুরু করেছেন তারা।

মন্ত্রী-এমপিদের আওয়ামী লীগের হাইকমাণ্ডের নির্দেশনা দলের দপ্তর থেকে চিঠি পাঠিয়ে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে সূত্র।

সূত্রমতে, চিঠিতে দলীয় মন্ত্রী-এমপিদের আত্মীয়দের উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী না হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে নির্দেশনার কথা সাংগঠনিক সম্পাদকদের মাধ্যমেও পুনরায় জানানো হচ্ছে।

দলটির চট্টগ্রাম বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, এরই মধ্যে দলের নির্দেশনা এমপি-মন্ত্রীদের জানানো শুরু হয়েছে। নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে ফোন করে তার ছেলেকে ভোট থেকে সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শামসুল আলম বলেন, দলীয় কোন্দলে খুনোখুনি নিয়ন্ত্রণ করতেই এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।‌ কে শোনে কার নির্দেশনা? সংঘাত ও সংঘর্ষ শুরু হয়ে গেছে নিজেদের মধ্যেই।

নির্বাচনে আরো বেশি সংঘাতের আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের নিয়ে অনানুষ্ঠানিক বৈঠক করেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। এতে দপ্তর সম্পাদক ও উপদপ্তর সম্পাদকও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদক ও দপ্তরকে উপজেলা নির্বাচনে আত্মীয়দের প্রার্থী হওয়া মন্ত্রী–সংসদ সদস্যদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেন ওবায়দুল কাদের। তাদের দলীয় প্রধানের নির্দেশনা জানিয়ে চিঠি দেওয়া এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদের কথা বলার নির্দেশনা দেন তিনি।

এ ছাড়া বৈঠকে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও মাদারীপুর সদরের সংসদ সদস্য শাজাহান খান এবং নোয়াখালী-৪ আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীকে ফোন করেন সংশ্লিষ্ট সাংগঠনিক সম্পাদকরা। তাদের ছেলেরা উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন এবং তাদের পক্ষে কাজ করছেন।

সূত্র মতে, আগামী ২ মে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হবে। ওই অধিবেশন সংসদীয় দলের বৈঠকে মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যদের উপজেলা নির্বাচন বিষয়ে প্রয়োজনীয় চূড়ান্ত নির্দেশনা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ ছাড়া শিগগিরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যানির্বাহী সংসদেরও বৈঠক হতে পারে। সেখানেও বিষয়টি আলোচিত হবে।

আওয়ামী লীগ সূত্র বলছে, এমপি-মন্ত্রীরা যাতে উপজেলা নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশকেও নানাভাবে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। আওয়ামী লীগের নেতারাও বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করার পরামর্শ দিচ্ছেন।

আওয়ামী লীগের বরিশাল বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন বলেন, আগেরও দলের পক্ষ থেকে মন্ত্রী-এমপিদের বারবার সতর্ক করা হয়েছে। এবার দলীয়, সাংগঠনিকভাবে জানানো হচ্ছে। সকল মন্ত্রী-এমপিকে এ নির্দেশনা জানানো হচ্ছে। আমরা অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ উপজেলা নির্বাচন চাই।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

মামলা থেকে মির্জা আব্বাস দম্পতিকে অব্যাহতি

৮ ঘণ্টা আগে

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ক্ষুব্ধ সারজিস, বললেন কলিজা ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব

সারজিস আলম বলেন, এক দিন হইত, দুই দিন হইত কিচ্ছু বলতাম না। তিন দিনের তিন দিনই এটা হইছে। যারা এটা করছে, তারা হচ্ছে রাজনৈতিক... (প্রকাশ অযোগ্য শব্দ)। এই রাজনৈতিক দেউলিয়াদের আমরা দেখে নেব তাদের কলিজা কত বড় হইছে। কলিজা ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব।

১ দিন আগে

৫ দাবিতে ৩য় দফায় কর্মসূচি ঘোষণা জামায়াতের

নতুন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) মানববন্ধন হবে ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগীয় শহরে। পরদিন বুধবার (১৫ অক্টোবর) একই কর্মসূচি পালন করা হবে দেশের সব জেলা সদরে।

১ দিন আগে

পিআর পদ্ধতি দেশের মানুষ গ্রহণ করবে না: মির্জা ফখরুল

১ দিন আগে