সব বিভাগে হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠায় ঐকমত্য: আলী রিয়াজ

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
বৃহস্পতিবার রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের নবম দিনের মতো বৈঠক করে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। ছবি: পিআইডি

বিচার বিভাগের বিকেন্দ্রীকরণ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত হয়েছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি জানিয়েছেন, এর ফলে বিভাগীয় শহরগুলোতেও হাইকোর্টের স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করা হবে।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের আরও এক দফা বৈঠক শেষে ঢাকার ফরেন সার্ভিস একাডেমির দোয়েল হলে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা জানান।

ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের নবম দিনের এই আলোচনায় ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। বৈঠকে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা সংক্রান্ত সংবিধানের ৪৯ নম্বর ধারা সংশোধন বিষয়েও দলগুলো একমত হয়েছে।

বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ সম্পর্কিত বিষয়ে অগ্রগতি তুলে ধরে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকবে। তবে রাষ্ট্রপতির অনুমোদন নিয়ে প্রধান বিচারপতি সময়ে সময়ে যে সার্কিট বেঞ্চ প্রতিষ্ঠা করতে পারতেন, তার বিধান আর থাকছে না।

ঐকমত্য কমিশনের এই সহসভাপতি বলেন, এর পরিবর্তে রাজধানীতে সুপ্রিম কোর্টের স্থায়ী আসন থাকবে এবং প্রধান বিচারপতি প্রতিটি বিভাগে এক বা একাধিক স্থায়ী বেঞ্চ গঠন করে দেবেন। বিভাগীয় পর্যায়ে হাইকোর্টের এসব স্থায়ী বেঞ্চ প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে ঐকমত্য তৈরি হয়েছে। এ বিষয়ে সুস্পষ্টভাবে সংবিধানের ১০০ নম্বর অনুচ্ছেদে পরিবর্তন আসবে।

রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শন সম্পর্কিত বিধান নিয়ে আলোচনার কথা তুলে ধরে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, বিগত সময়ে রাষ্ট্রপতির ক্ষমা প্রদর্শনের ক্ষমতার ব্যাপক অপব্যবহার হয়েছে। তাই রাজনৈতিক দলগুলো সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করেছে।

সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন বিষয়ে বৈঠকে যে ঐকমত্য হয়েছে তা হলো— কোনো আদালত, ট্রাইব্যুনাল বা অন্য কোনো কর্তৃপক্ষের দেওয়া যেকোনো দণ্ডের মার্জনা, বিলম্বন ও বিরাম মঞ্জুর করা এবং যেকোনো দণ্ড মওকুফ, স্থগিত বা কমানোর ক্ষমতা রাষ্ট্রপতির থাকবে এবং আইন দ্বারা নির্ধারিত মানদণ্ড, নীতি ও পদ্ধতি অনুসরণ করে ওই ক্ষমতা প্রয়োগ করা হবে।

অধ্যাপক আলী রীয়াজ আশা প্রকাশ করে বলেন, সংবিধানের ৪৯ নম্বর অনুচ্ছেদ সংশোধন বিষয়ে ঐকমত্য কমিশন থেকে দেওয়া প্রস্তাবের আলোকে যে রাজনৈতিক ঐকমত্য তৈরি হয়েছে তা ভবিষ্যতে সংবিধানে অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। এতদিন ধরে এই ক্ষমতার যে অপব্যবহার হয়েছে তা বন্ধ হবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন করে দেওয়া বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে ঐক্য গড়ে রাষ্ট্র সংস্কারের বিভিন্ন বিষয়ে একমত হয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ তৈরির লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।

এ পর্যন্ত সংবিধানের ৭০ নম্বর অনুচ্ছেদ, সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতিত্ব, নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণ, রাষ্ট্রপতির ক্ষমা-সম্পর্কিত বিধান এবং বিচার বিভাগ বিকেন্দ্রীকরণ নিয়ে আলোচনা নিষ্পত্তি হয়েছে বলে জানিয়েছে কমিশন।

বৃহস্পতিবার কমিশনের সঙ্গে আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধরা অংশ নেন।

কমিশন জানিয়েছে, পরবর্তী তথা দ্বিতীয় ধাপের ১০ম দিনের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠকের জন্য আগামী ৭ জুলাই (সোমবার) দিন নির্ধারণ করা হয়েছে।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কার

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত কোমো তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে মাহিন সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্রদের একটি প্যানেল 'ডিইউ ফার্স্টে'র হয়ে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হিসাবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন।

১৭ ঘণ্টা আগে

ডাকসুর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমার সময় বাড়ল

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীরা মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়ন ফরম জমা দিতে পারবেন বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

১৮ ঘণ্টা আগে

ডাকসু নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি : ছাত্রদল

তিনি বলেন, ‘আজকে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদ এবং কেন্দ্রীয় ডাকসুর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের শেষ দিন। তারই ধারাবাহিকতায় ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রদলের কিছু শিক্ষার্থী এবং কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে যায় বিকাল সাড়ে ৩টার পরে। ঠিক সেই সময় ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের একদল উগ্র শ

১৯ ঘণ্টা আগে

ডাকসু নির্বাচন— কোন প্যানেলে ভিপি-জিএস প্রার্থী কারা

এর বাইরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচিতমুখ উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে রয়েছে একটি স্বতন্ত্র প্যানেল। ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ স্লোগান নিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা লড়বেন আরেকটি প্যানেল নিয়ে। রয়েছে আরও কিছু স্বতন্ত্র প্যানেল, যেগুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

২১ ঘণ্টা আগে