আজ বিজয়ের দিন

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
সোমবার দেশব্যাপী পালন করা হবে ৫৪তম মহান বিজয় দিবস। গ্রাফিক্স: রাজনীতি ডটকম

আজ ১৬ ডিসেম্বর। দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের রক্তস্নাত বাংলাদেশের বিজয়ের দিন। জনযুদ্ধে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে অন্যায়, অবিচার আর শোষণ থেকে মুক্তি ছিনিয়ে আনার দিন। যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত হওয়া ৫৬ হাজার বর্গমাইল ভূমির মুক্ত বাতাসে লাল-সবুজের পতাকা ওড়ানোর দিন। আজ স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৪তম বিজয় দিবস।

১৯৭১ সালের এই দিনে রাজধানী ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে (তৎকালীন রেসকোর্স ময়দান) বাংলাদেশের মুক্তিকামী মানুষের গড়ে তোলা মুক্তিবাহিনীসহ যৌথ বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে সূচিত হয় বিজয়ের উল্লাসে ভেসে যাওয়ার উপলক্ষ। ৯ মাস আগে ২৬ মার্চ যে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটেছিল বিশ্ব মানচিত্রে, এই দিনে পূর্ণতা পেয়েছিল সেই স্বাধীনতা। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া ছড়িয়ে পড়েছিল বিজয় নিশান।

বিজয়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বজন হারানোর গভীর বেদনাও ফিরে আসে এই দিনটিতে। ৯ মাসের যুদ্ধে ৩০ লাখ শহিদ নিজেদের বলিদান দিয়েছিলেন মুক্ত এক দেশের জন্য। ধর্ষণ আর পাশবিক যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন দুই লাখ মা-বোন।

স্বাধীনতার ৫৪ বছর পেরিয়ে এসে আজকের এই দিনে বিজয়ের আনন্দের সঙ্গে সঙ্গে আত্মোৎসর্গকারী সেসব মানুষকেও গভীর শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে জাতি। শ্রদ্ধাবনত হবে যুদ্ধাহতসহ লাখো মুক্তিযোদ্ধার স্মরণে। সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে নামবে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে মানুষের ঢল।

বাসসের খবরে বলা হয়, পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণ ও বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে একটি স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার মুহূর্তকে স্মরণ করে বিজয় দিবস উদ্‌যাপন শুরু হবে ৩১ বার তোপধ্বনির মধ্য দিয়ে। রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সকালে সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন।

এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোসহ সর্বসাধারণের জন্য শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনে স্মৃতিসৌধ উন্মুক্ত করা হবে।

সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানসহ সারা দেশে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। এরই মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনা সজ্জিত করা হয়েছে আলোকসজ্জায়।

বিজয় দিবস উপলক্ষে থাকছে সরকারি ছুটি। দিবসটি উপলক্ষে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক দল ও সংগঠন আলোচনা সভাসহ নানা আয়োজন রেখেছে।

বিজয় দিবসের প্রাক্কালে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা পৃথক বাণীতে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন তার বাণীতে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পরমতসহিষ্ণুতা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। তাই আসুন, ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি বৈষম্যমুক্ত দেশ গড়তে এবং মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য বাস্তাবায়ন ও শোষণমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠায় নিজ নিজ অবস্থান থেকে আরও বেশি অবদান রাখি। দেশ ও জাতিকে উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির পথে আরও এগিয়ে নিয়ে যাই। গড়ে তুলি উন্নত-সমৃদ্ধ এক নতুন বাংলাদেশ। মহান বিজয় দিবসে এই আমার প্রত্যাশা।’

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ বছর জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন ও দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার যে স্বপ্ন এ দেশের মানুষ দেখেছে, তা অচিরেই বাস্তবায়িত হবে বলে আমি মনে করি। বীরের দেশ বাংলাদেশ বিশ্বের বুকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।’

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস তার বাণীতে বলেন, ‘আজকের এই দিনে আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর শহীদদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি এবং তাদের আত্মত্যাগের প্রতি সম্মান জানাই। ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার একটি উন্নত, সমৃদ্ধ এবং সুশাসিত বাংলাদেশ গঠনে সবাই মিলে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করছে।’

বিজয় দিবসের প্রাক্কালে দেওয়া বাণীতে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘দেশকে আরও উন্নত ও শক্তিশালী করতে এবং স্বাধীনতার পূর্ণ সুফল ভোগ করতে আমরা বদ্ধপরিকর। বিজয় দিবস কেবল আমাদের গর্বের উৎস নয়, এটি আমাদের শপথের দিনও। শপথ আমাদের একতাবদ্ধ থাকার, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করার।’

বিজয় দিবসকে বাংলাদেশের ইতিহাসে অত্যন্ত গৌরবময় ও স্মরণীয় দিন হিসেবে উল্লেখ করে ড. ইউনূস বলেন, ‘১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের মাধ্যমে আমরা অর্জন করি স্বাধীনতার স্বাদ এবং জাতি হিসেবে নিজস্ব পরিচিতি। লাখ লাখ শহিদের রক্ত ও ত্যাগের বিনিময়ে আমরা পেয়েছি আমাদের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।’

বাণীতে রাষ্ট্রপতি ও প্রধান উপদেষ্টা ‘বিজয় দিবস ২০২৪’-এর সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করেন।

মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে ৩২ জন জুনিয়র কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে সম্মানসূচক কমিশন দিয়েছে বাংলাদেশ নৌ বাহিনী। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মাস্টার চিফ পেটি অফিসার (এমসিপিও) পদমর্যাদার জুনিয়র কমিশনড অফিসারদের অনারারি সাব-লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি দেওয়া হবে।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

পিআর পদ্ধতি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে: ফখরুল

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘হঠাৎ করে পিআর পদ্ধতির দাবি সামনে এনে আন্দোলন করার বিষয়টি পরিষ্কার নয়। বিষয়টি আগামী সংসদের ওপর ছেড়ে দিতে হবে। সেখানে সিদ্ধান্ত হবে পরবর্তী নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে হবে।’

১০ ঘণ্টা আগে

মামলা থেকে মির্জা আব্বাস দম্পতিকে অব্যাহতি

১১ ঘণ্টা আগে

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে ক্ষুব্ধ সারজিস, বললেন কলিজা ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব

সারজিস আলম বলেন, এক দিন হইত, দুই দিন হইত কিচ্ছু বলতাম না। তিন দিনের তিন দিনই এটা হইছে। যারা এটা করছে, তারা হচ্ছে রাজনৈতিক... (প্রকাশ অযোগ্য শব্দ)। এই রাজনৈতিক দেউলিয়াদের আমরা দেখে নেব তাদের কলিজা কত বড় হইছে। কলিজা ছিঁড়ে রাস্তায় ফেলে রাখব।

১ দিন আগে

৫ দাবিতে ৩য় দফায় কর্মসূচি ঘোষণা জামায়াতের

নতুন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, আগামী মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) মানববন্ধন হবে ঢাকাসহ দেশের সব বিভাগীয় শহরে। পরদিন বুধবার (১৫ অক্টোবর) একই কর্মসূচি পালন করা হবে দেশের সব জেলা সদরে।

১ দিন আগে