ডিজিটাল সেবা

সরকারি সেবায় তথ্যপ্রযুক্তির দুই যুগ, কোথায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ?

শানজীদা শারমিন

আমরা আধুনিক রাষ্ট্র পরিচালনায় তথ্যপ্রযুক্তির গুরুত্ব এবং ডিজিটাল রূপান্তরের বিষয়টি যখন আলোচনা করি, আমাদের মনে তখন প্রশ্ন জাগে, আমরা কি উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে নিজেদের তুলনা করতে পারি? অনেকের দৃষ্টিতে এটি অমূলক মনে হলেও বাস্তবতার নিরিখে যদি দেখা যায়, তবে সেই তুলনাটি আদতে কেমন? তুলনামূলক নাকি অমূলক, তা বোঝা যায় কিছু নির্দিষ্ট উদাহরণ বিশ্লেষণের মাধ্যমে। বিশেষ করে এস্তোনিয়া ও সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলোর ই-গভর্নেন্স কার্যক্রম এবং বাংলাদেশ সরকারের চলমান কার্যক্রমের মাঝে কিছু সাদৃশ্য ও পার্থক্য বিশ্লেষণ করলে এই প্রশ্নের জবাব পাওয়া যেতে পারে।

এস্তোনিয়া, ইউরোপের এক ক্ষুদ্র রাষ্ট্র, নব্বইয়ের দশকে স্বাধীন হওয়ার পর ছিল পিছিয়ে পড়া একটি দেশ। তবে ১৯৯৭ সালে অনলাইনে সরকারি সেবা দেওয়ার মাধ্যমে তারা প্রযুক্তিনির্ভর সমাজ গঠনের পথে হাঁটা শুরু করে। প্রযুক্তিকে নাগরিক অধিকার হিসেবে বিবেচনা করে ২০০২ সালের মধ্যেই এস্তোনিয়া দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ইন্টারনেট সেবা নিশ্চিত করে। এই পদক্ষেপ শুধু ইন্টারনেটের বিস্তারে নয়, বরং নাগরিক সেবার ডিজিটাল রূপান্তরের একটি ভিত্তি তৈরি করে দেয়। দশ বছর পর, ২০১২ সালের মধ্যেই সরকারি কার্যক্রমের প্রায় ৯০ শতাংশ অনলাইনে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়। এর ফলে প্রশাসনিক দীর্ঘসূত্রতা কমে, এবং নাগরিকেরা সহজেই সরকারি সেবা পেতে শুরু করে।

এর চেয়েও চমকপ্রদ হচ্ছে ‘এক্স রোড’ নামক একটি ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্মের ব্যবহার, যা সরকারি ও বেসরকারি সংস্থাগুলোর মধ্যে নিরাপদ তথ্য বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। এর মাধ্যমে নাগরিকরা তাদের ডিজিটাল পরিচয়, কর প্রদান, ব্যাংকিং কার্যক্রম ও অন্যান্য সেবাগুলো নিরাপদে নিতে পারেন। এমনকি, ২০১২ সালে বিশ্বে প্রথমবারের মতো উৎপাদন ব্যবস্থায় ব্লকচেইন প্রযুক্তি ব্যবহার করে এস্তোনিয়া, যা ডাটা নিরাপত্তা ও স্বচ্ছতার এক অনন্য উদাহরণ হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। পরে তারা ‘ডাটা দূতাবাস’ ধারণা ও ‘ই-রেসিডেন্সি’ চালু করে, যা বিশ্বব্যাপী যে কারও জন্য তাদের ডিজিটাল নাগরিক হওয়া সম্ভব করে তোলে।

অন্যদিকে সিঙ্গাপুরের অভিজ্ঞতাও এক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। ১৯৬৫ সালে স্বাধীন হওয়ার পর, তারা যখন অর্থনৈতিকভাবে টালমাটাল, তখন আশির দশকে একটি আধুনিকীকরণ কর্মসূচির সূচনা করে এবং প্রযুক্তিকে এর কৌশল হিসেবে গ্রহণ করে। ’৯০ দশকের মাঝামাঝিতে ‘সিঙ্গাপুর ওয়ান’ নামে একটি সমন্বিত ব্রডব্যান্ড অবকাঠামো তৈরি হয়, যার আওতায় পড়ে পুরো দেশ। সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের ওয়েবসাইট চালু হলেও, সেগুলোর মধ্যে আন্তঃসংযোগের অভাব ছিল। এই চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে ১৯৯৯ সালে ‘ওয়ানস্টপ ই-সিটিজেন’ চালু করে সিঙ্গাপুর সরকার, যার মাধ্যমে সব সরকারি সেবা একটি প্ল্যাটফর্মেই নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত হয়।

ad
ad

ফিচার থেকে আরও পড়ুন

রাতে ঘুমানোর আগে এলাচ খেলে মিলবে যে উপকার

এলাচ যে কেবল খাবারে সুগন্ধ যোগ করে সেটা নয়। নিয়মিত এলাচ খাওয়ার রয়েছে অনেক উপকার। কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন ও ডায়েটারি ফাইবার, নিয়াসিন, পাইরিডক্সিন, রিবোফ্লোভিন, থিয়ামাইন, ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, সোডিয়াম, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, কপার, আয়রন, ম্যাঙ্গানিজ, ম্যাগনেসিয়াম, ফসফরাস ও জিঙ্কের চমৎকার উৎস এই মসলা। প

৯ দিন আগে

ডাক্তার না হয়ে যেভাবে গীতিকার হয়ে ওঠেন 'গাজী মাজহারুল'

পাঁচবার পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার। বিবিসির জরিপে সর্বকালের সেরা ২০ বাংলা গানের মধ্যে তিনটি গানের রচয়িতা গুণী এই গীতিকবি। গানগুলো হচ্ছে ‘জয় বাংলা বাংলার জয়’, ‘একতারা তুই দেশের কথা বল’ ও ‘একবার যেতে দে না’।

৯ দিন আগে

'এআই চ্যাটবট' ছদ্মবেশে শিশু-কিশোরদের সঙ্গে অনুপযুক্ত আলাপ করছে

টিমোথি শালামে, চ্যাপেল রোন ও প্যাট্রিক মাহোমসের নামে তৈরি এআইভিত্তিক চ্যাটবট শিশু-কিশোরদের সঙ্গে যৌন, মাদক ও আত্মহত্যাসংক্রান্ত অনুপযুক্ত আলাপ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এই চ্যাটবটগুলো টেক্সটের মাধ্যমে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা তৈরি কণ্ঠ ব্যবহার করে, যেগুলো তারকাদের মতো শোনানোর জন্য প্রশিক্ষিত ছিল

১০ দিন আগে

উত্তম কুমার— বাংলা চলচ্চিত্রের মহানায়নকের জন্মদিন

চলচ্চিত্র ছেড়ে দেবো করতে করতেই পাহাড়ি সান্যালের হাত ধরে অভিনয় করেন ‘বসু পরিবার’ ছবিতে। ১৯৫২ সালের সে ছবিটি বেশ নজর কাড়ে অনেকের। ১৯৫৩ সালে মুক্তি পায় ‘সাড়ে চুয়াত্তর’। সুচিত্রা সেনের বিপরীতে উত্তমের এই ছবিটি বক্স অফিসে ব্লকবাস্টার! উত্তম কুমারের চলচ্চিত্র জগতে প্রতিষ্ঠারও সূচনা তার সঙ্গে।

১১ দিন আগে