ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পর অস্ত্রবিরতি হয়েছে আরও প্রায় তিন সপ্তাহ আগে। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বাগযুদ্ধ থেমে নেই। দুই প্রতিবেশী দেশই প্রতিপক্ষের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পালটাপালটি মন্তব্য এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের দেশের অবস্থানের কথা তুলে ধরার চেষ্টাও জারি আছে।
ইরান সফরে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, পাকিস্তান শান্তির বিষয়ে কথা বলতে প্রস্তুত এবং তারা পানি, বাণিজ্য ও সন্ত্রাস মোকাবিলার বিষয়ে আলোচনায় বসতে পারে যদি ভারত গুরুত্ব দেয়।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এর মধ্যেই কাশ্মির ইস্যু নিয়ে আবার পালটাপালটি বিবৃতিতে জড়িয়েছে দুই দেশ। ভারত আরও একবার নিজেদের পক্ষ স্পষ্ট করে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হলে তা ‘সন্ত্রাসবাদ’ নির্মূল করা এবং পাকিস্তানশাসিত কাশ্মির ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়েই হবে। অন্যদিকে ইসলামাবাদের বক্তব্য, পাকিস্তান কখনোই কাশ্মির ছেড়ে যাবে না।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন, পাকিস্তানশাসিত কাশ্মিরের বাসিন্দাদের তিনি পরিবারের অংশ বলেই মনে করেন। তার দৃঢ় বিশ্বাস, পাকিস্তানশাসিত কাশ্মিরের বাসিন্দারা একসময় নিজেদের ইচ্ছায় ভারতে ফিরে আসবেন।
পরে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে কাশ্মির ইস্যুতে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হলে তা দ্বিপাক্ষিকভাবেই হবে এবং এ বিষয়ের ওপর হবে যে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মির তারা (পাকিস্তান) কবে খালি করবে।
এরপর ইসলামাবাদও পালটা জবাব দেয়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির জানিয়ে দেন, কাশ্মির নিয়ে কোনো সমঝোতা সম্ভব না। পাশাপাশি তার অভিযোগ ‘সন্ত্রাস’ নিয়ে। তার কথায়, সন্ত্রাস ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এর মূল কারণ দীর্ঘদিন ধরে দমিয়ে রাখা এবং সংখ্যালঘু, বিশেষত মুসলমানদের বিষয়ে তাদের বৈষম্যমূলক আচরণ। আর কাশ্মীর ইস্যুকে বৈশ্বিক বিষয় বলে অভিহিত করেন তিনি।
কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি বার্ষিক বিজনেস সামিট ২০২৫-এ উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। মঞ্চে ভাষণের সময় উঠে আসে পাকিস্তানের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ ও আলোচনা নিয়ে আমরা পুনর্মূল্যায়ন করেছি। যখনই আলোচনা হোক, তা হবে শুধু সন্ত্রাসবাদ ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মির নিয়ে।
পাকিস্তানশাসিত কাশ্মির নিয়ে রাজনাথ বলেন, আমি বিশ্বাস করি, পাক অধিকৃত কাশ্মিরের জনগণ আমাদের নিজেদের। তারা আমাদের পরিবারেরই অংশ। আমরা এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারতের সংকল্পের প্রতি দায়বদ্ধ। আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস, আমাদের ভাইয়েরা যারা ভৌগোলিক ও রাজনৈতিকভাবে আজ আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন, তারা একদিন অবশ্যই আত্মসম্মান নিয়ে, স্বাধীন ইচ্ছায় ভারতের মূলধারায় ফিরে আসবেন।
কিছু মানুষকে ‘ভুল বোঝানো হয়েছে’ অভিযোগ করে রাজনাথ সিং বলেন, আমি জানি, সেখানকার বেশির ভাগ মানুষই ভারতের সঙ্গে এক ধরনের সংযোগ অনুভব করেন। কিছু মুষ্টিমেয় মানুষ রয়েছে, যাদের ভুল বোঝানো যারা হয়েছে। ভারত সবসময় হৃদয়ের সংযোগে বিশ্বাস করে।
এর আগে পহেলগাম হামলার কয়েকদিন আগেও এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির বলেছিলেন, বিশ্বের কোনো শক্তি কাশ্মিরকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করতে পারবে না।
কাশ্মিরকে পাকিস্তানের ‘জাগুলার ভেইন’ (যা মস্তিষ্ক, ঘাড়, মুখের একাংশ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে দেয়) অভিহিত করেছিলেন আসিম। বলেছিলেন, কাশ্মিরের বিষয়ে আমাদের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট, এটা আমাদের জাগুলার ভেইন ছিল এবং থাকবে। আমরা একে ভুলব না। আমরা আমাদের কাশ্মিরি ভাইদের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামকে ত্যাগ করব না।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তিদের উদ্দেশে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেছিলেন, আপনাদের সন্তানদের পাকিস্তানের কথা বলতে হবে, যেন তারা আমাদের পূর্বপুরুষদের চিন্তা-ভাবনাকে ভুলে না যায়, ভুলে না যায় যে আমরা হিন্দুদের থেকে আলাদা। আমাদের ধর্ম, রীতিনীতি, ঐতিহ্য, চিন্তা-ভাবনা, উদ্দেশ্য সবই আলাদা।
পহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সেই মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়। তার বক্তব্যে বিভাজনমূলক বিষয় রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী’ তৎপরতা চালানোর অভিযোগ আরও একবার তুলেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, সন্ত্রাসের ব্যবসা চালানোটা ব্যয়সাশ্রয়ী বিষয় নয়। পাকিস্তান আজ বুঝতে পেরেছে যে এর জন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে। আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের কৌশল ও প্রতিক্রিয়া উভয়কেই নতুন করে ডিজাইন ও নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছি।
পরে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে পাকিস্তানের বিষয়ে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে একাধিক প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট ও ধারাবাহিক। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যেকোনো আলোচনা শুধু দুই দেশের মধ্যে, অর্থাৎ দ্বিপাক্ষিকই হতে হবে।
জয়সওয়াল আরও বলেন, একই সঙ্গে আমরা এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছি যে আলোচনা ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে আলোচনা হলে যে বিষয়ে হবে তা হলো— যেসব সন্ত্রাসবাদীদের নামের তালিকা পাকিস্তানকে দেওয়া হয়েছে, তাদের ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হোক।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার আবহে সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা হয়েছিল। সেই চুক্তি এখনো স্থগিত রয়েছে। এ বিষয়ে জয়সওয়াল বলেন, যতক্ষণ না পাকিস্তান বিশ্বাসযোগ্যভাবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা বন্ধ করছে, ততদিন এ নিয়ে কোনো কথা হবে না।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র আরও বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর (নরেন্দ্র মোদি) কথাগুলোই আবার বলতে চাই— সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস আর বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না। পানি ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।
একদিকে দিল্লি যেমন নিজেদের অবস্থান আবার স্পষ্ট করেছে, পাকিস্তানও করেছে। ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির বলেন, ভারতের জানা উচিত যে পাকিস্তান কখনোই কাশ্মির ছেড়ে যাবে না। সন্ত্রাসবাদ ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। সংখ্যালঘু, বিশেষত মুসলমানদের ওপর ক্রমবর্ধমান নৃশংসতা ও বৈষম্যের কারণে তৈরি হয়েছে। আর কাশ্মির একটি বৈশ্বিক ইস্যু।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আরও বলেন, কাশ্মির নিয়ে কোনো সমঝোতা হওয়া সম্ভব নয়। ভারত কয়েক দশক ধরে কাশ্মির ইস্যুকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। এখন আর সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তির প্রসঙ্গও আসিম মুনিরের বক্তব্যে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ২৪ কোটি পাকিস্তানির মৌলিক অধিকারের সঙ্গে আপস করতে দেওয়া হবে না। পাকিস্তান কখনোই ভারতের একচেটিয়া আধিপত্য মেনে নেবে না।
বালুচিস্তানের সশস্ত্র আন্দোলনকে ‘ফিতনা-উল-হিন্দুস্তান’ বা ভারতের তৈরি সমস্যা ও আন্দোলনকারীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে অভিহিত করেন ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। বলেন, তাদের সঙ্গে বালুচের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা রাষ্ট্রকে দুর্বল করার জন্য বয়ান তৈরির চেষ্টা করে, রাষ্ট্রের উচিত তা প্রত্যাখ্যান করা।
বালুচিস্তানের প্রসঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এমন অভিযোগ অবশ্য দিল্লি অনেক আগেই নাকচ করেছে।
ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পর অস্ত্রবিরতি হয়েছে আরও প্রায় তিন সপ্তাহ আগে। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে বাগযুদ্ধ থেমে নেই। দুই প্রতিবেশী দেশই প্রতিপক্ষের ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে পালটাপালটি মন্তব্য এবং একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ অব্যাহত রেখেছে। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের দেশের অবস্থানের কথা তুলে ধরার চেষ্টাও জারি আছে।
ইরান সফরে গিয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ জানিয়েছেন, পাকিস্তান শান্তির বিষয়ে কথা বলতে প্রস্তুত এবং তারা পানি, বাণিজ্য ও সন্ত্রাস মোকাবিলার বিষয়ে আলোচনায় বসতে পারে যদি ভারত গুরুত্ব দেয়।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, এর মধ্যেই কাশ্মির ইস্যু নিয়ে আবার পালটাপালটি বিবৃতিতে জড়িয়েছে দুই দেশ। ভারত আরও একবার নিজেদের পক্ষ স্পষ্ট করে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, পাকিস্তানের সঙ্গে আলোচনা হলে তা ‘সন্ত্রাসবাদ’ নির্মূল করা এবং পাকিস্তানশাসিত কাশ্মির ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়েই হবে। অন্যদিকে ইসলামাবাদের বক্তব্য, পাকিস্তান কখনোই কাশ্মির ছেড়ে যাবে না।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছেন, পাকিস্তানশাসিত কাশ্মিরের বাসিন্দাদের তিনি পরিবারের অংশ বলেই মনে করেন। তার দৃঢ় বিশ্বাস, পাকিস্তানশাসিত কাশ্মিরের বাসিন্দারা একসময় নিজেদের ইচ্ছায় ভারতে ফিরে আসবেন।
পরে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে কাশ্মির ইস্যুতে প্রশ্ন করা হলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, দুই দেশের মধ্যে আলোচনা হলে তা দ্বিপাক্ষিকভাবেই হবে এবং এ বিষয়ের ওপর হবে যে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মির তারা (পাকিস্তান) কবে খালি করবে।
এরপর ইসলামাবাদও পালটা জবাব দেয়। পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর প্রধান ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির জানিয়ে দেন, কাশ্মির নিয়ে কোনো সমঝোতা সম্ভব না। পাশাপাশি তার অভিযোগ ‘সন্ত্রাস’ নিয়ে। তার কথায়, সন্ত্রাস ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং এর মূল কারণ দীর্ঘদিন ধরে দমিয়ে রাখা এবং সংখ্যালঘু, বিশেষত মুসলমানদের বিষয়ে তাদের বৈষম্যমূলক আচরণ। আর কাশ্মীর ইস্যুকে বৈশ্বিক বিষয় বলে অভিহিত করেন তিনি।
কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রি বার্ষিক বিজনেস সামিট ২০২৫-এ উপস্থিত ছিলেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। মঞ্চে ভাষণের সময় উঠে আসে পাকিস্তানের প্রসঙ্গ। তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ ও আলোচনা নিয়ে আমরা পুনর্মূল্যায়ন করেছি। যখনই আলোচনা হোক, তা হবে শুধু সন্ত্রাসবাদ ও পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মির নিয়ে।
পাকিস্তানশাসিত কাশ্মির নিয়ে রাজনাথ বলেন, আমি বিশ্বাস করি, পাক অধিকৃত কাশ্মিরের জনগণ আমাদের নিজেদের। তারা আমাদের পরিবারেরই অংশ। আমরা এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারতের সংকল্পের প্রতি দায়বদ্ধ। আমাদের পূর্ণ বিশ্বাস, আমাদের ভাইয়েরা যারা ভৌগোলিক ও রাজনৈতিকভাবে আজ আমাদের থেকে বিচ্ছিন্ন, তারা একদিন অবশ্যই আত্মসম্মান নিয়ে, স্বাধীন ইচ্ছায় ভারতের মূলধারায় ফিরে আসবেন।
কিছু মানুষকে ‘ভুল বোঝানো হয়েছে’ অভিযোগ করে রাজনাথ সিং বলেন, আমি জানি, সেখানকার বেশির ভাগ মানুষই ভারতের সঙ্গে এক ধরনের সংযোগ অনুভব করেন। কিছু মুষ্টিমেয় মানুষ রয়েছে, যাদের ভুল বোঝানো যারা হয়েছে। ভারত সবসময় হৃদয়ের সংযোগে বিশ্বাস করে।
এর আগে পহেলগাম হামলার কয়েকদিন আগেও এক অনুষ্ঠানে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আসিম মুনির বলেছিলেন, বিশ্বের কোনো শক্তি কাশ্মিরকে পাকিস্তান থেকে আলাদা করতে পারবে না।
কাশ্মিরকে পাকিস্তানের ‘জাগুলার ভেইন’ (যা মস্তিষ্ক, ঘাড়, মুখের একাংশ থেকে রক্ত সংগ্রহ করে হৃৎপিণ্ডে পৌঁছে দেয়) অভিহিত করেছিলেন আসিম। বলেছিলেন, কাশ্মিরের বিষয়ে আমাদের অবস্থান একেবারে স্পষ্ট, এটা আমাদের জাগুলার ভেইন ছিল এবং থাকবে। আমরা একে ভুলব না। আমরা আমাদের কাশ্মিরি ভাইদের বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামকে ত্যাগ করব না।
ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ব্যক্তিদের উদ্দেশে পাকিস্তানের সেনাপ্রধান বলেছিলেন, আপনাদের সন্তানদের পাকিস্তানের কথা বলতে হবে, যেন তারা আমাদের পূর্বপুরুষদের চিন্তা-ভাবনাকে ভুলে না যায়, ভুলে না যায় যে আমরা হিন্দুদের থেকে আলাদা। আমাদের ধর্ম, রীতিনীতি, ঐতিহ্য, চিন্তা-ভাবনা, উদ্দেশ্য সবই আলাদা।
পহেলগাম হামলার পর পাকিস্তানের সেনাপ্রধানের সেই মন্তব্য ঘিরে ব্যাপক বিতর্ক দেখা দেয়। তার বক্তব্যে বিভাজনমূলক বিষয় রয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে।
এদিকে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসী’ তৎপরতা চালানোর অভিযোগ আরও একবার তুলেছেন ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, সন্ত্রাসের ব্যবসা চালানোটা ব্যয়সাশ্রয়ী বিষয় নয়। পাকিস্তান আজ বুঝতে পেরেছে যে এর জন্য তাদের চড়া মূল্য দিতে হবে। আমরা সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের কৌশল ও প্রতিক্রিয়া উভয়কেই নতুন করে ডিজাইন ও নতুন করে সংজ্ঞায়িত করেছি।
পরে সাপ্তাহিক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়ালকে পাকিস্তানের বিষয়ে ভারতের অবস্থান সম্পর্কে একাধিক প্রশ্ন করা হয়। জবাবে তিনি বলেন, পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের ব্যাপারে আমাদের অবস্থান স্পষ্ট ও ধারাবাহিক। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যেকোনো আলোচনা শুধু দুই দেশের মধ্যে, অর্থাৎ দ্বিপাক্ষিকই হতে হবে।
জয়সওয়াল আরও বলেন, একই সঙ্গে আমরা এটাও স্পষ্ট করে দিয়েছি যে আলোচনা ও সন্ত্রাস একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাসবাদের বিষয়ে আলোচনা হলে যে বিষয়ে হবে তা হলো— যেসব সন্ত্রাসবাদীদের নামের তালিকা পাকিস্তানকে দেওয়া হয়েছে, তাদের ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হোক।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার আবহে সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করা হয়েছিল। সেই চুক্তি এখনো স্থগিত রয়েছে। এ বিষয়ে জয়সওয়াল বলেন, যতক্ষণ না পাকিস্তান বিশ্বাসযোগ্যভাবে আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা বন্ধ করছে, ততদিন এ নিয়ে কোনো কথা হবে না।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এই মুখপাত্র আরও বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীর (নরেন্দ্র মোদি) কথাগুলোই আবার বলতে চাই— সন্ত্রাস ও আলোচনা একসঙ্গে চলতে পারে না। সন্ত্রাস আর বাণিজ্য একসঙ্গে চলতে পারে না। পানি ও রক্ত একসঙ্গে প্রবাহিত হতে পারে না।
একদিকে দিল্লি যেমন নিজেদের অবস্থান আবার স্পষ্ট করেছে, পাকিস্তানও করেছে। ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির বলেন, ভারতের জানা উচিত যে পাকিস্তান কখনোই কাশ্মির ছেড়ে যাবে না। সন্ত্রাসবাদ ভারতের অভ্যন্তরীণ সমস্যা। সংখ্যালঘু, বিশেষত মুসলমানদের ওপর ক্রমবর্ধমান নৃশংসতা ও বৈষম্যের কারণে তৈরি হয়েছে। আর কাশ্মির একটি বৈশ্বিক ইস্যু।
পাকিস্তানের সেনাপ্রধান আরও বলেন, কাশ্মির নিয়ে কোনো সমঝোতা হওয়া সম্ভব নয়। ভারত কয়েক দশক ধরে কাশ্মির ইস্যুকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে, কিন্তু ব্যর্থ হয়েছে। এখন আর সেটা সম্ভব হচ্ছে না।
সিন্ধু নদীর পানিবণ্টন চুক্তির প্রসঙ্গও আসিম মুনিরের বক্তব্যে উঠে এসেছে। তিনি বলেন, ২৪ কোটি পাকিস্তানির মৌলিক অধিকারের সঙ্গে আপস করতে দেওয়া হবে না। পাকিস্তান কখনোই ভারতের একচেটিয়া আধিপত্য মেনে নেবে না।
বালুচিস্তানের সশস্ত্র আন্দোলনকে ‘ফিতনা-উল-হিন্দুস্তান’ বা ভারতের তৈরি সমস্যা ও আন্দোলনকারীদের ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে অভিহিত করেন ফিল্ড মার্শাল আসিম মুনির। বলেন, তাদের সঙ্গে বালুচের কোনো সম্পর্ক নেই। যারা রাষ্ট্রকে দুর্বল করার জন্য বয়ান তৈরির চেষ্টা করে, রাষ্ট্রের উচিত তা প্রত্যাখ্যান করা।
বালুচিস্তানের প্রসঙ্গে ভারতের বিরুদ্ধে পাকিস্তানের এমন অভিযোগ অবশ্য দিল্লি অনেক আগেই নাকচ করেছে।
বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ভিসা অ্যাপয়েন্টমেন্ট সাময়িকভাবে বন্ধ রাখার পরিকল্পনা করেছে ট্রাম্প প্রশাসন। তবে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, এ স্থগিতাদেশ দীর্ঘস্থায়ী হবে না। এতে বিশ্বজুড়ে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে ব্যাপক উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।
১ দিন আগেইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীর (আইডিএফ) বিমান অভিযানে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নিহত হয়েছেন ৭২ জন ফিলিস্তিনি। সেই সঙ্গে আহত হয়েছেন আরও ২৭৮ জন। মোট নিহতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৪ হাজার ৩২১ জনে।
১ দিন আগেট্রাম্প এই শুল্ক আরোপের মাধ্যমে তার ক্ষমতা লঙ্ঘন করেছেন বলে রায় দেওয়া হয়েছিল। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের কোর্ট অব ইন্টারন্যাশনাল ট্রেডের ওই রায় ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ক্ষুব্ধ করে। তারা একে বিচারিক সীমা লঙ্ঘনের উদাহরণ বলে অভিহিত করে।
২ দিন আগেবাংলাদেশে অস্থিরতার জন্য ‘ভারতীয় আধিপত্যবাদ’ দায়ী বলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার মন্তব্য নিয়ে অবশেষে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত। দেশটি বলছে, নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতেই বাংলাদেশের সরকারপ্রধান তার বক্তব্যের মাধ্যমে ভারতের ওপর দায় চাপানোর চেষ্টা করেছেন।
২ দিন আগে