এবার উৎরায়নি সুপার ওভারে, পাকিস্তানের কাছে স্বপ্নভঙ্গ তরুণদেরও

ক্রীড়া ডেস্ক
সুপার ওভারে ফাইনাল হেরে এশিয়া কাপ রাইজিং স্টার্সে রানার-আপ হয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে বাংলাদেশকে। ছবি: সংগৃহীত

আগের ম্যাচে রিপন মন্ডলের দুর্দান্ত বোলিংয়ে সুপার ওভার উৎরে গিয়েছিল। এবারে আর হয়নি। ব্যাটাররা সুপার ওভারে সংগ্রহ করলেন মাত্র ১ রান। প্রতিপক্ষের দেওয়া ওয়াইড আর বাই থেকে ৫ রান আসায় সংগ্রহ দাঁড়াল ৬ রান। রিপন মন্ডল সেটাকে টেনে নিতে পারলেন ৪ বল পর্যন্ত। জয়টা আর মিলল না।

এর মধ্য দিয়ে তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে এশিয়া কাপ রাইজিং স্টারস টুর্নামেন্টে ফাইনাল ম্যাচে জয়টা অধরাই থেকে গেল। টাইগারদের সন্তুষ্ট থাকতে হলো রানার-আপ হয়েই। ছয় বছর আগে পাকিস্তানের সঙ্গে ফাইনাল হেরেই এশিয়া কাপের চ্যাম্পিয়নের স্বাদ থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন সাকিব-মুশফিকরা। সেই স্মৃতিই যেন ফিরে এলো কাতারের দোহাতে তরুণদের টুর্নামেন্টেও।

জয় না মিললেও রোববারের (২৩ নভেম্বর) ফাইনাল ম্যাচটা হয়েছে ফাইনালের মতোই। উত্তেজনা আর চরম নাটকীয়তায় লো স্কোরিং ম্যাচে শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে কোনো দলই নিরঙ্কুশ শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে পারেনি। শিরোপা চূড়ান্ত করতে হয়েছে সুপার ওভারে।

এ দিন দোহার ওয়েস্ট ইন্ড পার্ক আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টসে জিতে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় বাংলাদেশ ‘'এ’ দল। রিপন মন্ডল আর রাকিবুল হাসানের বোলিং তোপে পাকিস্তান শাহিনকে ১২৫ রানের বেশি করতে দেয়নি বাংলাদেশ।

প্রথম বলেই রান আউটের খাড়ায় পড়ে উইকেট হারানো পাকিস্তান শাহিনসের হয়ে সর্বোচ্চ ৩৮ রান আসে শান মাসুদের ব্যাট থেকে। আরাফাত মিনহাস ২৫ আর মাজ সাদাকাত করেন ২৩ রান। দুই অঙ্কে পৌঁছাতে পারেননি আর কোনো ব্যাটার।

বাংলাদেশের হয়ে রিপন ছিলেন দুর্দান্ত। ৪ ওভারে ২৫ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। রাকিবুলও কম যাননি। ৪ ওভার বল করে ২ উইকেট নিয়েছেন তিনিও, রান দিয়েছেন মাত্র ১৬। একটি করে উইকেট নিয়েছেন মেহরব হোসেন, জিসান আলম আর আব্দুল গাফফার সাকলাইন।

জবাব দিতে নেমে ২২ রানের উদ্বোধনী জুটির পর পথ হারায় বাংলাদেশ। পাকিস্তানি বোলারদের তোপে একের পর এক উইকেট যেতে থাকে। ৫৩ রান বোর্ডে তুলতেই প্যাভিলিয়নে ফেরেন সাতজন ব্যাটার।

বল হাতে দুর্দান্ত পারফর্ম করার পর বোলাররা ব্যাট হাতেও চমক দেখাতে শুরু করেন। রাকিবুলের ২১ বলে ২৪, সাকলাইনের ১২ বলে ১৬ আর রিপনের ৯ বলে ১১ রানের ওপর ভর করে একটা সময় জয়ও দেখতে পাচ্ছিল বাংলাদেশ। শেষ ওভারের ৭ রানের প্রয়োজনীয়তা শেষ পর্যন্ত মেটেনি, টাইগার ব্যাটাররা নিতে পেরেছে ৬ রান। তাতেই ম্যাচ টাই হয়ে গড়ায় সুপার ওভারে।

পাকিস্তানের বোলারদের মধ্যে শুরুতে দাপট দেখান সুফিয়ান মুকিম। ৪ ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে তুলে নেন ৩ উইকেট। ১৪তম ওভারে বল হাতে পেয়ে ২০ ওভার পর্যন্ত টানা চার ওভারের স্পেলে শেষ পর্যন্ত স্নায়ু ধরে রেখে দলকে সুপার ওভারে নিয়ে যান আহমেদ দানিয়েল। ৪ ওভারে ১১ রান দিয়ে তিনিও ২ উইকেট তুলে নেন।

সুপার ওভারে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে বল করেন শেষের দিকে চমক দেখানো দানিয়েল। হাবিবুর রহমান সোহান প্রথম বলে এক রান নেন। দ্বিতীয় বলে স্ট্রাইক পেয়ে সাকলাইন বোলারের হাতে ক্যাচ দিয়েই প্যাভিলিয়নে ফিরে যান।

পরের বলটি ওয়াইড হয়ে বাউন্ডারি স্পর্শ করে। ২ বলে তখন রান ৬। স্ট্রাইকে জিসান আলম। মোটামুটি সংগ্রহের আশা তখন দর্শকদের। কিন্তু ‍তৃতীয় বলটিতে সোজা বোল্ড হয়ে যান জিসান।

৬ রান ডিফেন্ড করতে নেমে রিপনের প্রথম বলে লেগ বাই থেকে আসে ১ রান। দ্বিতীয় বলে মাজ সাদাকাত নেন ১ রান। তৃতীয় বলটি ছিল লো ফুলটস। ফ্লিক করে ডিপ ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে বলটি বাউন্ডারিতে পাঠাতে ভুল করেননি সাদ মাসুদ। চতুর্থ বলটি ছিল লেন্থ বল, ইনসাইডেজও হয়েছিল। কিন্তু তা স্টাম্প পেছনে ফেলে এগিয়ে যায়। দ্রুতগতিতে সিংগেল নিয়ে দলের জয় নিশ্চিত করেন মাসুদ-সাদাকাত।

দুর্দান্ত বোলিংয়ের স্বীকৃতিস্বরূপ ম্যাচসেরা নির্বাচিত হয়েছেন পাকিস্তানের ডান হাতি পেসার আহমেদ দানিয়েল। টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ২৫৮ রানের পাশাপাশি বল হাতে ৭ উইকেট নিয়ে প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্ট হয়েছেন পাকিস্তানেরই মাজ সাদাকাত।

এ টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২২৮ রান করেছেন হাবিবুর রহমান সোহান, যিনি টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক। অন্যদিকে রিপন মন্ডল নিয়েছেন ১১ উইকেট, যা টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ। এ ছাড়া রাকিবুল ৮ উইকেট নিয়েছেন, যা যৌথভাবে টুর্নামেন্টের তৃতীয় সর্বোচ্চ।

ad
ad

খেলা থেকে আরও পড়ুন

মুশফিক-লিটনের সেঞ্চুরিতে ৪৭৬ রানে থামল বাংলাদেশ

আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাসের দুর্দান্ত সেঞ্চুরিতে ভর করে প্রথম ইনিংসে ৪৭৬ রানের বড় সংগ্রহ পেয়েছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় দিনের দ্বিতীয় সেশনে আইরিশ অফ স্পিনার অ্যান্ডি ম্যাকব্রিনের ঘূর্ণিতে অলআউট হওয়ার আগে বড় স্কোরের শক্ত ভিত পায় স্বাগতিকরা।

৫ দিন আগে

শততম টেস্টে সেঞ্চুরি করে ইতিহাস গড়লেন মুশফিক

বাংলাদেশের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে শততম টেস্ট খেলা, এই অর্জনের পাশেই এবার যুক্ত হলো আরও এক স্মরণীয় মাইলফলক। টেস্টে বিশ্বের মাত্র ১১ জন ক্রিকেটারের কাতারে জায়গা করে নিলেন তিনি, যারা নিজেদের ১০০তম টেস্টে সেঞ্চুরি করেন।

৬ দিন আগে

ভারতকে হারিয়ে ২০১৬ সালের পর সেরা র‍্যাংকিং

র‍্যাংকিংয়ের তথ্য বলছে, ২০১৬ সালের মার্চে বাংলাদেশের অবস্থান ছিল ১৭৭তম। তবে পারফরম্যান্সের সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থানও নামতে থাকে। ২০১৬ সাল শেষ হতে হতে বাংলাদেশ নেমে আসে ১৮৮তম স্থানে। এরপর এক-দুই ধাপ করে ওঠানামা চললেও ১৮০-তে ফিরে আসতে সময় লাগল ৯ বছর।

৬ দিন আগে

শততম টেস্টে সেঞ্চুরির ছোঁয়া পেতে মুশফিকের অপেক্ষা

৯০ ওভার শেষে আম্পায়ার যখন দিনের খেলা শেষ করলেন, তখন মুশফিক থমকে দাঁড়িয়ে। আয়ারল্যান্ড অধিনায়কের সঙ্গে এক ওভার বাড়ানোর আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত দিনটার ইতি টানা হয়। ফলে ৩৮ বছর বয়সী এই অভিজ্ঞ ব্যাটারকে শততম টেস্টে সেঞ্চুরির ঐতিহাসিক ছোঁয়া পেতে অপেক্ষা করতে হবে আজকের রাত।

৬ দিন আগে