ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
বর্তমানে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ এক গভীর স্বাস্থ্যসমস্যা। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বেই এই রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ডায়াবেটিস হলে রক্তে গ্লুকোজ বা চিনি মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়, যার কারণে হৃৎপিণ্ড, কিডনি, চোখ, স্নায়ু— এমনকি মস্তিষ্কও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি। ওষুধ ও ইনসুলিনের পাশাপাশি অনেক সময় খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখলে রক্তে চিনির মাত্রা অনেকটাই দ্রুত কমানো যায়। অনেকেই জানতে চান— কী খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আমরা চোখ রেখেছি বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রে ও পুষ্টিবিদদের মতামতে।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর পুষ্টিবিদ ড. ফ্রাঙ্ক হু বলেন, “ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রক্তে গ্লুকোজ ওঠানামা কমানো। এর জন্য এমন খাবার বেছে নিতে হবে যেগুলোতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম।” গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মানে, কোনো খাবার খাওয়ার পর তা কত দ্রুত রক্তে চিনি বাড়ায়— তার একটি পরিমাপক। কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার মানেই তা ধীরে ধীরে হজম হয় এবং রক্তে গ্লুকোজ ধীরে ধীরে ছাড়ে, ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
এই ধরণের খাবারের মধ্যে প্রথমেই আসে ওটসের নাম। ওটস হলো একটি উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার। এতে থাকা দ্রবণীয় আঁশ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়তে দেয় না। আমেরিকার ‘জার্নাল অব নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যেসব মানুষ নিয়মিত সকালে ব্রেকফাস্টে ওটস খান, তাঁদের রক্তে গ্লুকোজ ও ইনসুলিনের মাত্রা অন্যদের তুলনায় অনেক নিয়ন্ত্রিত থাকে।
এ ছাড়াও ডাল ও ছোলা জাতীয় খাবার, বিশেষ করে লাল মসুর ডাল এবং কাবুলি ছোলা রক্তে চিনি কমাতে খুব কার্যকর। এগুলোতে প্রচুর প্রোটিন ও আঁশ আছে, আবার শর্করা ধীরে হজম হয়। কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পুষ্টিবিজ্ঞানী ড. ডেভিড জেনকিন্স যিনি গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের ধারণা প্রবর্তন করেন, তিনি বলেন, “ছোলা, ডাল, রাজমা— এই সবজান্ত খাবারগুলো দিনে অন্তত একবার খেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।”
সবুজ শাকসবজি যেমন পালং শাক, মিষ্টি কুমড়োর ডাঁটা, কলমি শাক, কচুশাক ইত্যাদিও রক্তে গ্লুকোজ কমানোর দারুণ উপায়। এগুলোর আঁশ ও খনিজ উপাদান গ্লুকোজ শোষণে সহায়তা করে। ব্রিটেনের নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. রয় টেইলর এক গবেষণায় দেখান, যারা সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন শাকসবজি ভিত্তিক খাদ্য খান, তাঁদের মধ্যে অনেকেই ডায়াবেটিস ‘রেমিশন’-এ নিয়ে যেতে পেরেছেন। অর্থাৎ তাঁদের রক্তে গ্লুকোজ এতটাই স্বাভাবিক অবস্থায় এসেছে যে আর ইনসুলিন বা ওষুধের দরকার পড়েনি।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হলো দারচিনি। ছোট এই মসলা হলেও এর উপকারিতা অনেক বড়। দারচিনি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (NIH)-এর অর্থায়নে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ১-২ গ্রাম দারচিনি গুঁড়ো খাদ্যের সঙ্গে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
নিয়মিত বাদাম খাওয়াও ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে কাঠবাদাম, আখরোট ও চিনাবাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রক্তে ইনসুলিন কার্যক্ষমতা বাড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. রিচার্ড ম্যাথু বলেন, “বাদামের মধ্যে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটস ইনসুলিন প্রতিক্রিয়া উন্নত করে, ফলে রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে।”
ডায়াবেটিস রোগীরা অনেক সময় ভয়ে ফল খেতে চান না। কিন্তু সব ফল ক্ষতিকর নয়। আপেল, নাশপাতি, জাম, বেরি জাতীয় ফল যেমন স্ট্রবেরি বা ব্লুবেরি কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের হওয়ায় নিরাপদ। এগুলোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা কোষের ক্ষয় রোধ করে। ২০১৩ সালে 'বিএমজে' (BMJ)-তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়, যারা সপ্তাহে তিনবার বা তার বেশি ব্লুবেরি খায়, তাঁদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২৬% পর্যন্ত কমে।
যারা রুটি খান, তাঁদের জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে আটার পরিবর্তে বার্লি বা জোয়ার রুটি। এই জাতীয় শস্যে বেশি আঁশ ও কম শর্করা থাকে। সুইডেনের লান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. রিকার্ড ল্যান্ডবার্গ জানান, বার্লি রুটি খাওয়ার পর অন্তত ১৪ ঘণ্টা রক্তে গ্লুকোজ ও ইনসুলিন নিয়ন্ত্রিত থাকে, যা সাধারণ গমের রুটি থেকে অনেক ভালো।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আরেকটি আশ্চর্যজনক খাদ্য হলো ‘অ্যাভোকাডো’। এটি কিছুটা দামী ফল হলেও এতে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, পটাশিয়াম ও আঁশ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ কাজ করে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক ড. লোরেন ক্যাপল্যান্ড বলেন, “অ্যাভোকাডো ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া বাড়ায় এবং পেট ভরা রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।”
এছাড়া নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করাও ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। পানির মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। চিনি বা কৃত্রিম মিষ্টি দেওয়া পানীয় না খেয়ে সাদা পানি খাওয়াই সবচেয়ে ভালো।
তবে একা খাবারের উপর নির্ভর করলেই চলবে না। শারীরিক পরিশ্রমেরও দরকার আছে। দৈনিক অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, হালকা ব্যায়াম বা সাইক্লিং করলে ইনসুলিন ভালো কাজ করে, ফলে রক্তে গ্লুকোজ কমে।
সতর্ক থাকতে হবে এমন কিছু খাবার থেকেও— যেমন চিনি, মিষ্টি, সফট ড্রিংকস, বেশি চাল বা ময়দা জাতীয় খাবার, ভাজাভুজি ও ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার। এইসব খাবার রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত বাড়িয়ে তোলে এবং ইনসুলিনকে প্রতিহত করে।
সবশেষে বলা যায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত ওষুধ ও চিকিৎসকের পরামর্শ যেমন জরুরি, তেমনি খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারাতেও বড় পরিবর্তন আনতে হবে। সঠিক খাবার বাছাই করলে রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত কমতে পারে এবং ডায়াবেটিসের জটিলতাও অনেকটাই ঠেকানো যায়।
বিশ্বখ্যাত মার্কিন চিকিৎসক ও লেখক ড. মার্ক হাইমান একবার বলেছিলেন, "খাবার শুধু জ্বালানি নয়, এটি আসলে একধরনের বার্তা— যা আমাদের শরীরের জিনকে বলে দেয় কী করতে হবে।" অর্থাৎ ঠিক খাবার খেলে শরীরকে বলা যায়— ‘গ্লুকোজ কমাও।’
তাই ডায়াবেটিসে আতঙ্কিত না হয়ে নিজের খাবার তালিকাটাকে একটু বুঝে শুনে সাজানোই হতে পারে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, রোজকার প্লেটেই লুকিয়ে আছে রক্তের চিনি কমিয়ে দেওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ওষুধ।
সূত্র: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ, যুক্তরাষ্ট্র
বর্তমানে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র রোগ এক গভীর স্বাস্থ্যসমস্যা। শুধু বাংলাদেশেই নয়, সারা বিশ্বেই এই রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। ডায়াবেটিস হলে রক্তে গ্লুকোজ বা চিনি মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে যায়, যার কারণে হৃৎপিণ্ড, কিডনি, চোখ, স্নায়ু— এমনকি মস্তিষ্কও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখা খুবই জরুরি। ওষুধ ও ইনসুলিনের পাশাপাশি অনেক সময় খাদ্যাভ্যাস ঠিক রাখলে রক্তে চিনির মাত্রা অনেকটাই দ্রুত কমানো যায়। অনেকেই জানতে চান— কী খেলে ডায়াবেটিস দ্রুত কমবে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই আমরা চোখ রেখেছি বিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্রে ও পুষ্টিবিদদের মতামতে।
যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড স্কুল অব পাবলিক হেলথ-এর পুষ্টিবিদ ড. ফ্রাঙ্ক হু বলেন, “ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো রক্তে গ্লুকোজ ওঠানামা কমানো। এর জন্য এমন খাবার বেছে নিতে হবে যেগুলোতে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম।” গ্লাইসেমিক ইনডেক্স মানে, কোনো খাবার খাওয়ার পর তা কত দ্রুত রক্তে চিনি বাড়ায়— তার একটি পরিমাপক। কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সযুক্ত খাবার মানেই তা ধীরে ধীরে হজম হয় এবং রক্তে গ্লুকোজ ধীরে ধীরে ছাড়ে, ফলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকে।
এই ধরণের খাবারের মধ্যে প্রথমেই আসে ওটসের নাম। ওটস হলো একটি উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার। এতে থাকা দ্রবণীয় আঁশ রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা দ্রুত বাড়তে দেয় না। আমেরিকার ‘জার্নাল অব নিউট্রিশন’-এ প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে, যেসব মানুষ নিয়মিত সকালে ব্রেকফাস্টে ওটস খান, তাঁদের রক্তে গ্লুকোজ ও ইনসুলিনের মাত্রা অন্যদের তুলনায় অনেক নিয়ন্ত্রিত থাকে।
এ ছাড়াও ডাল ও ছোলা জাতীয় খাবার, বিশেষ করে লাল মসুর ডাল এবং কাবুলি ছোলা রক্তে চিনি কমাতে খুব কার্যকর। এগুলোতে প্রচুর প্রোটিন ও আঁশ আছে, আবার শর্করা ধীরে হজম হয়। কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন পুষ্টিবিজ্ঞানী ড. ডেভিড জেনকিন্স যিনি গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের ধারণা প্রবর্তন করেন, তিনি বলেন, “ছোলা, ডাল, রাজমা— এই সবজান্ত খাবারগুলো দিনে অন্তত একবার খেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক কমে যায়।”
সবুজ শাকসবজি যেমন পালং শাক, মিষ্টি কুমড়োর ডাঁটা, কলমি শাক, কচুশাক ইত্যাদিও রক্তে গ্লুকোজ কমানোর দারুণ উপায়। এগুলোর আঁশ ও খনিজ উপাদান গ্লুকোজ শোষণে সহায়তা করে। ব্রিটেনের নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. রয় টেইলর এক গবেষণায় দেখান, যারা সপ্তাহে অন্তত পাঁচদিন শাকসবজি ভিত্তিক খাদ্য খান, তাঁদের মধ্যে অনেকেই ডায়াবেটিস ‘রেমিশন’-এ নিয়ে যেতে পেরেছেন। অর্থাৎ তাঁদের রক্তে গ্লুকোজ এতটাই স্বাভাবিক অবস্থায় এসেছে যে আর ইনসুলিন বা ওষুধের দরকার পড়েনি।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার হলো দারচিনি। ছোট এই মসলা হলেও এর উপকারিতা অনেক বড়। দারচিনি ইনসুলিন সংবেদনশীলতা বাড়াতে সাহায্য করে। যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ (NIH)-এর অর্থায়নে পরিচালিত একটি গবেষণায় দেখা গেছে, দৈনিক ১-২ গ্রাম দারচিনি গুঁড়ো খাদ্যের সঙ্গে খেলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়।
নিয়মিত বাদাম খাওয়াও ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে কাঠবাদাম, আখরোট ও চিনাবাদামে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট রক্তে ইনসুলিন কার্যক্ষমতা বাড়ায়। যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটির গবেষক ড. রিচার্ড ম্যাথু বলেন, “বাদামের মধ্যে থাকা মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাটস ইনসুলিন প্রতিক্রিয়া উন্নত করে, ফলে রক্তে গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে থাকে।”
ডায়াবেটিস রোগীরা অনেক সময় ভয়ে ফল খেতে চান না। কিন্তু সব ফল ক্ষতিকর নয়। আপেল, নাশপাতি, জাম, বেরি জাতীয় ফল যেমন স্ট্রবেরি বা ব্লুবেরি কম গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের হওয়ায় নিরাপদ। এগুলোতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা কোষের ক্ষয় রোধ করে। ২০১৩ সালে 'বিএমজে' (BMJ)-তে প্রকাশিত একটি গবেষণায় বলা হয়, যারা সপ্তাহে তিনবার বা তার বেশি ব্লুবেরি খায়, তাঁদের টাইপ ২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি ২৬% পর্যন্ত কমে।
যারা রুটি খান, তাঁদের জন্য ভালো বিকল্প হতে পারে আটার পরিবর্তে বার্লি বা জোয়ার রুটি। এই জাতীয় শস্যে বেশি আঁশ ও কম শর্করা থাকে। সুইডেনের লান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. রিকার্ড ল্যান্ডবার্গ জানান, বার্লি রুটি খাওয়ার পর অন্তত ১৪ ঘণ্টা রক্তে গ্লুকোজ ও ইনসুলিন নিয়ন্ত্রিত থাকে, যা সাধারণ গমের রুটি থেকে অনেক ভালো।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য আরেকটি আশ্চর্যজনক খাদ্য হলো ‘অ্যাভোকাডো’। এটি কিছুটা দামী ফল হলেও এতে থাকা স্বাস্থ্যকর ফ্যাট, পটাশিয়াম ও আঁশ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে অসাধারণ কাজ করে। ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষক ড. লোরেন ক্যাপল্যান্ড বলেন, “অ্যাভোকাডো ইনসুলিনের প্রতিক্রিয়া বাড়ায় এবং পেট ভরা রাখে, ফলে অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে।”
এছাড়া নিয়মিত পর্যাপ্ত পানি পান করাও ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে। পানির মাধ্যমে শরীর থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রস্রাবের মাধ্যমে বের হয়ে যায়। চিনি বা কৃত্রিম মিষ্টি দেওয়া পানীয় না খেয়ে সাদা পানি খাওয়াই সবচেয়ে ভালো।
তবে একা খাবারের উপর নির্ভর করলেই চলবে না। শারীরিক পরিশ্রমেরও দরকার আছে। দৈনিক অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, হালকা ব্যায়াম বা সাইক্লিং করলে ইনসুলিন ভালো কাজ করে, ফলে রক্তে গ্লুকোজ কমে।
সতর্ক থাকতে হবে এমন কিছু খাবার থেকেও— যেমন চিনি, মিষ্টি, সফট ড্রিংকস, বেশি চাল বা ময়দা জাতীয় খাবার, ভাজাভুজি ও ট্রান্স ফ্যাটযুক্ত খাবার। এইসব খাবার রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত বাড়িয়ে তোলে এবং ইনসুলিনকে প্রতিহত করে।
সবশেষে বলা যায়, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত ওষুধ ও চিকিৎসকের পরামর্শ যেমন জরুরি, তেমনি খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারাতেও বড় পরিবর্তন আনতে হবে। সঠিক খাবার বাছাই করলে রক্তে গ্লুকোজ দ্রুত কমতে পারে এবং ডায়াবেটিসের জটিলতাও অনেকটাই ঠেকানো যায়।
বিশ্বখ্যাত মার্কিন চিকিৎসক ও লেখক ড. মার্ক হাইমান একবার বলেছিলেন, "খাবার শুধু জ্বালানি নয়, এটি আসলে একধরনের বার্তা— যা আমাদের শরীরের জিনকে বলে দেয় কী করতে হবে।" অর্থাৎ ঠিক খাবার খেলে শরীরকে বলা যায়— ‘গ্লুকোজ কমাও।’
তাই ডায়াবেটিসে আতঙ্কিত না হয়ে নিজের খাবার তালিকাটাকে একটু বুঝে শুনে সাজানোই হতে পারে সুস্থ জীবনের চাবিকাঠি। গবেষকেরা জানাচ্ছেন, রোজকার প্লেটেই লুকিয়ে আছে রক্তের চিনি কমিয়ে দেওয়ার সবচেয়ে শক্তিশালী ওষুধ।
সূত্র: ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ, যুক্তরাষ্ট্র
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি অব্যাহত নির্যাতনের প্রতিবাদে বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও অধিকার কর্মী শহিদুল আলমের পক্ষে সংহতি জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের শিকার গাজার প্রতিও সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।
১৩ ঘণ্টা আগেচীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন এবং বাংলাদেশ পারস্পরিক আস্থা সুসংহত করে চলেছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারিক সহযোগিতা প্রসারিত করেছে এবং তাদের ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব আরও গভীর করেছে।
১৭ ঘণ্টা আগেঅভিনন্দন বার্তায় ড. ইউনূস তার বক্তব্যে বলেন, ৫০ বছর আগে দ্বিপাক্ষিক কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুই দেশের জনগণের মধ্যে বন্ধুত্ব আরও দৃঢ় হয়েছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমশ বিকশিত হয়েছে এবং সহযোগিতা ফলপ্রসূ ফলাফল এনেছে, যা উদযাপনের যোগ্য।
১৮ ঘণ্টা আগেপ্রতিবেদনে বলা হয়, শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে আজ শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগে আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকা মহানগরের হাসপাতালগুলোতে ৯৪ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০২ জন, ঢাকা বিভাগে ৬৭ জন, বরিশাল বিভাগে ৬৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩৭ জন ও রাজশাহী বিভাগে ১১ জন ভর্তি হয়েছেন।
১৮ ঘণ্টা আগে