ওসমান হাদি ছিলেন পরাজিত শক্তি ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের শত্রু: প্রধান উপদেষ্টা

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম

ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান হাদি পরাজিত শক্তি ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের শত্রু ছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। ধৈর্য ও সংযম প্রদর্শনের মাধ্যমে তার আদর্শ বাস্তবায়নে সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত ১১টা ২০ মিনিটে ওসমান হাদির স্মরণে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা বলেন। এ দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওসমান হাদির।

হাদির মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ওসমান হাদি ছিলেন পরাজিত শক্তি ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসীদের শত্রু। তার কণ্ঠ স্তব্ধ করে বিপ্লবীদের ভয় দেখানোর অপচেষ্টা সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ করে দিন। ভয়, সন্ত্রাস কিংবা রক্তপাতের মাধ্যমে এ দেশের গণতান্ত্রিক অগ্রাযাত্রা কেউ থামাতে পারবে না।

দেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রক্রিয়ায় ওসমান হাদি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিলেন উল্লেখ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘তার একান্ত ইচ্ছা ছিল আসন্ন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের পরবর্তী ধাপে সক্রিয় ভূমিকা রাখার। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, তার এ অন্তিম ইচ্ছা অপূর্ণ থেকে গেল। তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের দায় আজ সমগ্র জাতির কাঁধে ন্যস্ত।’

আগামী দিনগুলোতে সবাইকে ধৈর্য, সংযম, সাহস ও দূরদর্শিতার সঙ্গে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। বলেন, যেন নির্বাচন ও গণতন্ত্রের শত্রু ফ্যাসিস্ট সন্ত্রাসী অপশক্তিকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করা যায়। এ শোকের মুহূর্তে আসুন, আমরা শহিদ শরিফ ওসমান হাদির আদর্শ ও ত্যাগকে শক্তিতে পরিণত করি। ধৈর্য ধারণ করি, অপপ্রচার ও গুজবে কান না দিই এবং যেকোনো হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থাকি।

যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে চান, তাদের ফাঁদে পা না দিয়ে সবাইকে ঐকবদ্ধভাবে গণতন্ত্র, ন্যায় বিচার ও গণমানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পথে অবিচলভাবে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। বলেন, এটাই হবে শহিদ হাদির প্রতি আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধা।

গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরের কালভার্ট রোড এলাকায় গুলিবিদ্ধ হয়েছিলেন ওসমান হাদি। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে চেয়েছিলেন তিনি। এ জন্য জনসংযোগও চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তেমনই এক জনসংযোগে গিয়ে গুলিবিদ্ধ হন তিনি।

মাথায় গুলিবিদ্ধ ওসমান হাদিকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অস্ত্রোপচার শেষে তাকে পোস্ট-অপারেটিভ তথা অস্ত্রোপচার-পরবর্তী পরিচর্যার জন্য স্থানান্তর করা হয় এভারকেয়ার হাসপাতালে। সেখানে একটি মেডিকেল বোর্ডের অধীনে তার চিকিৎসা চলছিল।

গত রোববার সরকারের উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে হাদিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুরে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। পরদিন সোমবার বিকেলে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়।

সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ওসমান হাদিকে। বিশেষ মেডিকেল বোর্ডের অধীনে চিকিৎসা চলছিল তার। তবে শারীরিক অবস্থার তেমন উন্নতি হয়নি। সিঙ্গাপুরে নেওয়ার চার দিনের মাথায়ই না ফেরার দেশে পাড়ি জমালেন ওসমান হাদি।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

ওসমান হাদির স্ত্রী-সন্তানের দায়িত্ব নেবে সরকার

ওসমান হাদির রুহের মাগফিরাত কামনা করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, তার শোকসন্তপ্ত স্ত্রী, পরিবারের সদস্য, স্বজন ও সহকর্মীদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শহিদ ওসমান হাদির স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানের দায়িত্ব সরকার গ্রহণ করবে।

৩ ঘণ্টা আগে

ওসমান হাদির মৃত্যুতে শুক্রবার দোয়া, শনিবার রাষ্ট্রীয় শোক

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শহিদ শরিফ ওসমান হাদির অকালমৃত্যুতে আগামী শনিবার (২০ ডিসেম্বর) একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করছি। এ উপলক্ষ্যে শনিবার দেশের সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি ভবন ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকবে।

৩ ঘণ্টা আগে

ইসির সঙ্গে ডিসি-এসপিদের বৈঠক ২৪ ডিসেম্বর

তিনি জানান, ভোটের সার্বিক প্রস্তুতি, আচরণবিধি প্রতিপালন এবং আইনশৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণসহ নির্বাচন সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিতে আগামী বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় দেশের সব জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারদের নিয়ে নির্বাচন প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে একটি দিকনির্দেশনামূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত হ

৮ ঘণ্টা আগে

হতাশা থেকে আত্মহত্যা করতে পারেন এনসিপি নেত্রী জান্নাত: পুলিশ

তিনি বলেন, জান্নাত আরা রুমি পারিবারিক কলহ কিংবা পারিবারিক কিছু বিষয় নিয়ে কিছুদিন ধরে হতাশাগ্রস্ত ছিলেন। হতাশা থেকে আত্মহত্যার মতো ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি।

৮ ঘণ্টা আগে