
ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম

চুল আমাদের সৌন্দর্যের অন্যতম বড় পরিচায়ক। কিন্তু আজকের দিনে দূষণ, মানসিক চাপ, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, নানা রাসায়নিক প্রসাধন ব্যবহারে চুল পড়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, খুশকি—এসব সমস্যা যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় অনেকে ফিরে যাচ্ছেন প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপাদানের দিকে, যেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। পেয়ারা পাতা এমনই এক উপাদান, যা হাজার বছর ধরে লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে, আর এখন তা আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও মিলছে স্বীকৃতি।
পেয়ারা গাছ শুধু তার ফলের জন্যই নয়, পাতার জন্যও সমান মূল্যবান। আয়ুর্বেদ ও প্রাচীন চীনা চিকিৎসাশাস্ত্রে পেয়ারা পাতাকে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধি উপাদান হিসেবে ধরা হয়। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান আমাদের মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ার নানা সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে।
আধুনিক গবেষকরা বলছেন, পেয়ারা পাতায় থাকে ‘ফ্ল্যাভোনয়েডস’ ও ‘ট্যানিন’ নামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা চুলের গোঁড়া মজবুত করতে সাহায্য করে এবং চুলের ক্ষয় রোধ করে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থিত হার্বাল মেডিসিন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. ক্যাথলিন স্যান্ডার্স বলেন, “পেয়ারা পাতায় যে ধরনের প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, তা মাথার ত্বকের রক্তসঞ্চালন বাড়াতে পারে। এর ফলে নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনাও তৈরি হয়।”
ড. স্যান্ডার্স আরও বলেন, “আমরা ২০২2 সালে একদল নারীর ওপর ক্লিনিক্যাল স্টাডি চালিয়েছিলাম, যেখানে নিয়মিত পেয়ারা পাতার পানি দিয়ে মাথা ধোয়ার ফলাফল বিশ্লেষণ করা হয়। দেখা যায়, ৮ সপ্তাহের ব্যবহারে ৬৫ শতাংশ ব্যবহারকারীর চুল পড়া হ্রাস পায় এবং নতুন চুল গজানোর লক্ষণ দেখা দেয়।”
বাংলাদেশে কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার নানা অঞ্চলে লোকজ পদ্ধতিতে বহুদিন ধরেই পেয়ারা পাতা চুলের যত্নে ব্যবহার হয়ে আসছে। গ্রামাঞ্চলে অনেকেই পেয়ারা পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে থাকেন। অনেকে আবার পেয়ারা পাতা বেটে সরাসরি মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখেন ৩০-৪০ মিনিট, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলেন। এতে খুশকি দূর হয় এবং মাথার চুল অনেকটাই ঝলমলে ও স্বাস্থ্যবান দেখায়।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিং-এর এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, পেয়ারা পাতায় থাকা ভিটামিন বি ও সি চুলের শিকড় পুষ্টি জোগায়। একইসঙ্গে, এতে থাকা ‘অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট’ উপাদান ত্বকের ছিদ্র ছোট করে দেয়, যার ফলে ধুলাবালি বা তেলের কারণে মাথায় ইনফেকশনের আশঙ্কা কমে যায়।
গবেষক ড. টমাস হেনরি, যিনি ব্রাজিলের এক হার্বাল প্রজেক্টে কাজ করেছেন, জানান, “পেয়ারা পাতায় থাকা ক্যারোটিন ও লাইকোপিন উপাদান মাথার চুল সাদা হওয়া কমিয়ে দিতে পারে। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনো দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা দরকার, তবে প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষণায় আমরা ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছি।”
পেয়ারা পাতা ব্যবহারের পদ্ধতিও বেশ সহজ। কয়েকটি তাজা পেয়ারা পাতা নিয়ে তা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ২০-৩০ মিনিট পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি ঠান্ডা হলে তা দিয়ে মাথার ত্বকে মালিশ করা যায় বা গোসলের সময় চুল ধোয়া যায়। অনেকে সেই পানি একটি স্প্রে বোতলে রেখে প্রতিদিন ব্যবহার করেন। এ ছাড়া পাতাগুলো বেটে পেস্ট বানিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে চুল মসৃণ হয় এবং চুল পড়া কমে।
তবে যাদের মাথার ত্বক খুব সংবেদনশীল, তারা প্রথমবার ব্যবহার করার আগে হাতের কোনো জায়গায় বা মাথার পেছনের অংশে সামান্য পরীক্ষা করে নিতে পারেন। যদিও পেয়ারা পাতার তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা গবেষণায় উঠে আসেনি, তারপরও সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো।
ভারতের প্রখ্যাত আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ড. সীমা জোশি বলেন, “প্রতিদিন চুলে কেমিক্যাল শ্যাম্পু ব্যবহার না করে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন পেয়ারা পাতার পানি ব্যবহার করলে মাথার ত্বক বিশ্রাম পায়। এর ফলে খুশকি, চুল পড়া ও চুলের অকালপক্কতা অনেকটাই কমে যেতে পারে।”
আসলে আধুনিক বিজ্ঞান যেসব গবেষণায় উঠে আসছে, তা যেন ফিরে দেখছে আমাদের প্রাচীন ঘরোয়া ঐতিহ্যগুলোর দিকে। একসময় যা কেবল দাদির টোটকা বলে উড়িয়ে দেওয়া হতো, এখন তাই বৈজ্ঞানিক প্রমাণের আলোয় ফিরে আসছে আমাদের দৈনন্দিন যত্নে।
পেয়ারা পাতা চুলের যত্নে একটি সাশ্রয়ী, সহজলভ্য ও কার্যকর উপায় হতে পারে। শহর কিংবা গ্রাম—যেখানেই থাকি না কেন, সামান্য চেষ্টা করলেই এই প্রাকৃতিক উপাদানটি আমাদের হাতের নাগালেই পাওয়া যায়।
চুলের যত্নে নতুন দামি প্রসাধনের পেছনে না ছুটে হয়তো এখনই সময় ফিরে দেখার, আমাদের আশপাশেই প্রকৃতি কত কিছু রেখে দিয়েছে, যা যুগ যুগ ধরে আমাদের সৌন্দর্যের রক্ষাকবচ হয়ে রয়েছে। আর পেয়ারা পাতা তারই একটি নীরব অথচ শক্তিশালী উপহার।

চুল আমাদের সৌন্দর্যের অন্যতম বড় পরিচায়ক। কিন্তু আজকের দিনে দূষণ, মানসিক চাপ, অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস, নানা রাসায়নিক প্রসাধন ব্যবহারে চুল পড়া, চুল পাতলা হয়ে যাওয়া, খুশকি—এসব সমস্যা যেন নিত্যসঙ্গী হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় অনেকে ফিরে যাচ্ছেন প্রাকৃতিক বা ঘরোয়া উপাদানের দিকে, যেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই বললেই চলে। পেয়ারা পাতা এমনই এক উপাদান, যা হাজার বছর ধরে লোকজ চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়ে আসছে, আর এখন তা আধুনিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও মিলছে স্বীকৃতি।
পেয়ারা গাছ শুধু তার ফলের জন্যই নয়, পাতার জন্যও সমান মূল্যবান। আয়ুর্বেদ ও প্রাচীন চীনা চিকিৎসাশাস্ত্রে পেয়ারা পাতাকে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধি উপাদান হিসেবে ধরা হয়। এর মধ্যে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ও অ্যান্টিফাঙ্গাল উপাদান আমাদের মাথার ত্বক ও চুলের গোড়ার নানা সমস্যার সঙ্গে লড়াই করতে সাহায্য করে।
আধুনিক গবেষকরা বলছেন, পেয়ারা পাতায় থাকে ‘ফ্ল্যাভোনয়েডস’ ও ‘ট্যানিন’ নামের দুটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান, যা চুলের গোঁড়া মজবুত করতে সাহায্য করে এবং চুলের ক্ষয় রোধ করে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসে অবস্থিত হার্বাল মেডিসিন রিসার্চ ইনস্টিটিউটের গবেষক ড. ক্যাথলিন স্যান্ডার্স বলেন, “পেয়ারা পাতায় যে ধরনের প্রাকৃতিক অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান থাকে, তা মাথার ত্বকের রক্তসঞ্চালন বাড়াতে পারে। এর ফলে নতুন চুল গজানোর সম্ভাবনাও তৈরি হয়।”
ড. স্যান্ডার্স আরও বলেন, “আমরা ২০২2 সালে একদল নারীর ওপর ক্লিনিক্যাল স্টাডি চালিয়েছিলাম, যেখানে নিয়মিত পেয়ারা পাতার পানি দিয়ে মাথা ধোয়ার ফলাফল বিশ্লেষণ করা হয়। দেখা যায়, ৮ সপ্তাহের ব্যবহারে ৬৫ শতাংশ ব্যবহারকারীর চুল পড়া হ্রাস পায় এবং নতুন চুল গজানোর লক্ষণ দেখা দেয়।”
বাংলাদেশে কিংবা দক্ষিণ এশিয়ার নানা অঞ্চলে লোকজ পদ্ধতিতে বহুদিন ধরেই পেয়ারা পাতা চুলের যত্নে ব্যবহার হয়ে আসছে। গ্রামাঞ্চলে অনেকেই পেয়ারা পাতা সেদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে মাথা ধুয়ে থাকেন। অনেকে আবার পেয়ারা পাতা বেটে সরাসরি মাথার ত্বকে লাগিয়ে রাখেন ৩০-৪০ মিনিট, তারপর ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলেন। এতে খুশকি দূর হয় এবং মাথার চুল অনেকটাই ঝলমলে ও স্বাস্থ্যবান দেখায়।
যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব রিডিং-এর এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, পেয়ারা পাতায় থাকা ভিটামিন বি ও সি চুলের শিকড় পুষ্টি জোগায়। একইসঙ্গে, এতে থাকা ‘অ্যাস্ট্রিঞ্জেন্ট’ উপাদান ত্বকের ছিদ্র ছোট করে দেয়, যার ফলে ধুলাবালি বা তেলের কারণে মাথায় ইনফেকশনের আশঙ্কা কমে যায়।
গবেষক ড. টমাস হেনরি, যিনি ব্রাজিলের এক হার্বাল প্রজেক্টে কাজ করেছেন, জানান, “পেয়ারা পাতায় থাকা ক্যারোটিন ও লাইকোপিন উপাদান মাথার চুল সাদা হওয়া কমিয়ে দিতে পারে। যদিও বিষয়টি নিয়ে এখনো দীর্ঘমেয়াদি গবেষণা দরকার, তবে প্রাথমিক পর্যায়ের গবেষণায় আমরা ইতিবাচক ফলাফল পেয়েছি।”
পেয়ারা পাতা ব্যবহারের পদ্ধতিও বেশ সহজ। কয়েকটি তাজা পেয়ারা পাতা নিয়ে তা ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। এরপর ২০-৩০ মিনিট পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে সেই পানি ঠান্ডা হলে তা দিয়ে মাথার ত্বকে মালিশ করা যায় বা গোসলের সময় চুল ধোয়া যায়। অনেকে সেই পানি একটি স্প্রে বোতলে রেখে প্রতিদিন ব্যবহার করেন। এ ছাড়া পাতাগুলো বেটে পেস্ট বানিয়ে চুলের গোড়ায় লাগিয়ে কিছুক্ষণ রেখে দিলে চুল মসৃণ হয় এবং চুল পড়া কমে।
তবে যাদের মাথার ত্বক খুব সংবেদনশীল, তারা প্রথমবার ব্যবহার করার আগে হাতের কোনো জায়গায় বা মাথার পেছনের অংশে সামান্য পরীক্ষা করে নিতে পারেন। যদিও পেয়ারা পাতার তেমন কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা গবেষণায় উঠে আসেনি, তারপরও সাবধানতা অবলম্বন করা ভালো।
ভারতের প্রখ্যাত আয়ুর্বেদ বিশেষজ্ঞ ড. সীমা জোশি বলেন, “প্রতিদিন চুলে কেমিক্যাল শ্যাম্পু ব্যবহার না করে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন পেয়ারা পাতার পানি ব্যবহার করলে মাথার ত্বক বিশ্রাম পায়। এর ফলে খুশকি, চুল পড়া ও চুলের অকালপক্কতা অনেকটাই কমে যেতে পারে।”
আসলে আধুনিক বিজ্ঞান যেসব গবেষণায় উঠে আসছে, তা যেন ফিরে দেখছে আমাদের প্রাচীন ঘরোয়া ঐতিহ্যগুলোর দিকে। একসময় যা কেবল দাদির টোটকা বলে উড়িয়ে দেওয়া হতো, এখন তাই বৈজ্ঞানিক প্রমাণের আলোয় ফিরে আসছে আমাদের দৈনন্দিন যত্নে।
পেয়ারা পাতা চুলের যত্নে একটি সাশ্রয়ী, সহজলভ্য ও কার্যকর উপায় হতে পারে। শহর কিংবা গ্রাম—যেখানেই থাকি না কেন, সামান্য চেষ্টা করলেই এই প্রাকৃতিক উপাদানটি আমাদের হাতের নাগালেই পাওয়া যায়।
চুলের যত্নে নতুন দামি প্রসাধনের পেছনে না ছুটে হয়তো এখনই সময় ফিরে দেখার, আমাদের আশপাশেই প্রকৃতি কত কিছু রেখে দিয়েছে, যা যুগ যুগ ধরে আমাদের সৌন্দর্যের রক্ষাকবচ হয়ে রয়েছে। আর পেয়ারা পাতা তারই একটি নীরব অথচ শক্তিশালী উপহার।

নির্বাচন আয়োজনের জন্য উৎসবমুখর পরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করবে সরকার। রাজনৈতিক দলগুলো একে অপরের ওপর চাপ সৃষ্টি, আবার কখনো উপদেষ্টাদের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে বিভিন্ন কথা বলে। তাদের কথায় মনে হয় নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে, কিন্তু বাস্তবে তা নেই।
৭ ঘণ্টা আগে
গণবিজ্ঞপ্তিতে পর্যবেক্ষক সংস্থাগুলোর নিবন্ধনের বিষয়ে দাবী-আপত্তি থাকলে ১৫ দিনের মধ্যে জানাতে বলা হয়েছে।
৮ ঘণ্টা আগে
এই কঠোর কর্মসূচির প্রভাবে সারা দেশের প্রায় ৬৫ হাজারেরও বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষকরা ঘোষণা দিয়েছেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাদের অবস্থান কর্মসূচিও অব্যাহত থাকবে।
৯ ঘণ্টা আগে
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রশাসনিক ধারাবাহিকতা ও মাঠপর্যায়ে কার্যক্রম ত্বরান্বিত করতে এই বদলি ও নিয়োগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
৯ ঘণ্টা আগে