জুনে প্রতিদিন সড়কে ২৩ প্রাণহানি, মানবসম্পদের ক্ষতি ২৪৬৩ কোটি টাকা

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
ঈদযাত্রায় গত ৩ জুন টাঙ্গাইলে দুর্ঘটনার শিকার হয় মাইক্রোবাসটি। এতে বাবা ও দুই ছেলে প্রাণ হারান। রাজনীতি ডটকম ফাইল ছবি

সদ্য শেষ হওয়া জুন মাসে দেশে ৬৮৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৯৬ জন নিহত হয়েছেন বলে জনিয়েছে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন। এসব সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও এক হাজার ৮৬৭ জন। সে হিসাবে জুন মাসে গড়ে প্রতিদিন সড়কে প্রাণ হারিয়েছেন ২৩ জনেরও বেশি। একই সময়ে ১৮টি নৌ দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছেন। ৫৩টি রেল ট্র্যাক দুর্ঘটনায় ৪৪ জন নিহত ও ২৫ জন আহত হয়েছেন।

এসব সড়ক দুর্ঘটনায় যে পরিমাণ মানবসম্পদের ক্ষতি হয়েছে তার আর্থিক মূল্য প্রায় দুই হাজার ৪৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকা। রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার অনেক তথ্য অপ্রকাশিত থাকায় ক্ষতির পরিমাণ এর চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি হবে। তবে তথ্য না পাওয়ার কারণে সম্পদের ক্ষতির পরিমাপ করতে পারেনি সংস্থাটি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতি মাসের সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে, যা বুধবার (২ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো হয়েছে। ৯টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া ও নিজস্ব তথ্যের ভিত্তিতে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে।

এদিকে এর আগে মে মাসে সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৮৭ জন নিহত হয়েছিলেন। প্রতিদিন গড়ে নিহত হয়েছিলেন ১৮ দশমিক ৯৩ জন। সে হিসাবে মে মাসের তুলনায় জুনে ১০৯ জন বেশি নিহত হয়েছেন সড়কে, যা শতাংশের হারে ২২ দশমিক ৫৫ শতাংশ বেশি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, নিহতের মধ্যে নারী ১০৪ জন (১৫ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ), শিশু ১০৯ জন (১৫ দশমিক ৮২ দশমিক)। দুর্ঘটনায় ১২০ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহতের ১৭ দশমিক ২৪ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ১০৬ জন, অর্থাৎ ১৫ দশমিক ২২ শতাংশ।

এ ছাড়া ২৫৬টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ২২৮ জন, যা মোট নিহতের ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৭ দশমিক ১৫ শতাংশ।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৯৬টি (৪২ দশমিক ৯৬ শতাংশ) ঘটেছে জাতীয় মহাসড়কে। এ ছাড়া ২৪৩টি (৩৫ দশমিক ২৬ শতাংশ) ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কে।

অন্যদিকে সবচেয়ে বেশি ৩০৬টি (৪৪ দশমিক ৪১ শতাংশ) দুর্ঘটনা ঘটেছে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৬৭টি (২৪ দশমিক ২৩ শতাংশ) দুর্ঘটনা ঘটেছে মুখোমুখি সংঘর্ষে। এ ছাড়া ১২৪টি (১৮ শতাংশ) দুর্ঘটনায় পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় জড়িত মোট এক হাজার ২৪৩টি যানবাহনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৭১টি মোটরসাইকেল, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১৯টি থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান), তৃতীয় সর্বোচ্চ ২১৩টি বাস। এ ছাড়া ১৮০টি ট্রাক এ মাসে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, অধিকাংশ দুর্ঘটনা ঘটছে অতিরিক্ত গতির কারণে যানবাহন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে। এই গতি নিয়ন্ত্রণে প্রযুক্তির মাধ্যমে নজরদারি এবং চালকদের মোটিভেশনাল প্রশিক্ষণ দরকার। যানবাহনের বেপরোয়া গতি ও পথচারীদের অসচেতনতার কারণে পথচারী নিহতের ঘটনা বাড়ছে। এ জন্য সরকারি উদ্যোগে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপকভাবে জীবনমুখী সচেতনতামূলক প্রচার চালাতে হবে।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

কুরআন অবমাননার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র গ্রেপ্তার

৫ ঘণ্টা আগে

মানবপাচার মোকাবিলায় বাংলাদেশের অগ্রগতি: মার্কিন টিআইপি রিপোর্ট

বাংলাদেশ সরকার মানবপাচার নির্মূলের সর্বনিম্ন মান সম্পূর্ণরূপে পূরণ না করলেও আগের তুলনায় এখন উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমান সরকার পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের সময়ের তুলনায় সামগ্রিকভাবে ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা প্রদর্শন করেছে। সে কারণে বাংলাদেশের অবস্থান এই তালিকায় দ্বিতীয় স্তরে।

৭ ঘণ্টা আগে

সরকার গঠন করতে পারলে শিক্ষায় সব বৈষম্য দূর করা হবে: মিলন

এহছানুল হক মিলন বলেন, আদর্শ শিক্ষকরা সমাজের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাই তাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের সমর্থনে যদি সরকার গঠন করা যায়, তাহলে শিক্ষা ক্ষেত্রে সব ধরনের বৈষম্য ও অব্যবস্থা দূর করা হবে।

১৫ ঘণ্টা আগে

শহিদুল আলম ও গাজার সঙ্গে আছি: প্রধান উপদেষ্টা

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি অব্যাহত নির্যাতনের প্রতিবাদে বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও অধিকার কর্মী শহিদুল আলমের পক্ষে সংহতি জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের শিকার গাজার প্রতিও সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।

১৫ ঘণ্টা আগে