রমজানের প্রথম ১০ দিন: রহমত ও ইবাদতের গুরুত্ব

আ. ছালাম খান
আপডেট : ০৫ মার্চ ২০২৫, ১৫: ০২
আঃ ছালাম খান

রমজান হল আত্মশুদ্ধি, সংযম ও ইবাদতের মাস। এটি শুধু সিয়াম সাধনার মাস নয়, বরং আল্লাহর বিশেষ রহমত, মাগফিরাত এবং নাজাতের মাস। মহানবী (সা.) বলেছেন,

“রমজানের প্রথম দশ দিন হলো রহমতের, দ্বিতীয় দশ দিন মাগফিরাতের, আর শেষ দশ দিন জাহান্নাম থেকে মুক্তির।” (মুসনাদ আহমদ)

এই কারণে রমজানের প্রথম দশ দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি রহমতের সময়। যারা এ সময়ে আন্তরিকতার সঙ্গে ইবাদত করে, তারা আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ লাভ করে। এই সময়টিকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো উচিত, যাতে আমরা পরবর্তী দিনগুলোতে আরও বেশি অনুপ্রাণিত হতে পারি।

রমজানের প্রথম দশ দিনের রহমত

রমজানের প্রথম দশ দিন আল্লাহর অফুরন্ত দয়ার প্রতিচ্ছবি। এই সময় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের প্রতি বিশেষ অনুগ্রহ বর্ষণ করেন এবং তাঁদের জন্য জান্নাতের পথ প্রশস্ত করেন।

হাদিসে এসেছে, “যখন রমজান মাস শুরু হয়, তখন জান্নাতের দরজা খুলে দেওয়া হয়, জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং শয়তানদের শৃঙ্খলিত করা হয়।” (বুখারি, মুসলিম)

এটি আমাদের জন্য আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ যে, আমরা সহজেই নেক কাজ করতে পারি এবং পাপ থেকে দূরে থাকতে পারি। তাই আমাদের উচিত এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইবাদত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া।

রমজানের প্রথম দশ দিনের করণীয় ইবাদত

রমজানের প্রথম দশ দিনে বিশেষ কিছু ইবাদত করা আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিচে কিছু গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতের কথা তুলে ধরা হলো—

১. নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ

নামাজ ইসলামের মূল স্তম্ভগুলোর একটি। এই মাসে আমাদের উচিত সময়মতো এবং মনোযোগ সহকারে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করা।

২. তাহাজ্জুদ নামাজ

রমজানের প্রথম দশ দিনে রাতের শেষ ভাগে তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করা অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ। এটি আল্লাহর নৈকট্য লাভের অন্যতম উপায়।

৩. কুরআন তিলাওয়াত

রমজান কুরআন নাজিলের মাস। এই মাসে কুরআন তিলাওয়াত করা বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। প্রতিদিন অন্তত কয়েক পৃষ্ঠা কুরআন পড়ার চেষ্টা করা উচিত।

৪. জিকির ও দোয়া

রমজানের প্রথম দশ দিনে বেশি বেশি আল্লাহকে স্মরণ করা উচিত। বিশেষ কিছু দোয়া ও জিকির করা যেতে পারে, যেমন:

“رَبِّ اغْفِرْ وَارْحَمْ وَأَنْتَ خَيْرُ الرَّاحِمِينَ”

(উচ্চারণ: "রব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আনতা খাইরুর রাহিমিন।")

অর্থ: “হে আমার প্রতিপালক! আমাকে ক্ষমা কর, দয়া কর। তুমি সর্বশ্রেষ্ঠ দয়ালু।”

৫. সাদকা ও দান

সদকা ও দান-খয়রাত করা রমজানে বিশেষ ফজিলতপূর্ণ। আমাদের উচিত গরিব-দুঃখীদের সাহায্য করা, যাতে তারাও রমজানের আনন্দ উপভোগ করতে পারে।

৬. আস্তাগফার (ক্ষমা প্রার্থনা)

রমজানের প্রথম দশ দিনে আমাদের উচিত আল্লাহর কাছে তাওবা করা এবং পাপমুক্ত জীবনের জন্য তাঁর সাহায্য চাওয়া।

৭. সুন্নত আমল

সালামের প্রচলন বৃদ্ধি করা।

হাসিমুখে কথা বলা।

মানুষের উপকার করা।

মিসওয়াক ব্যবহার করা।

সব শেষে বলতে চাই, রমজানের প্রথম দশ দিন হলো রহমতের দিন। যারা এই দিনগুলোতে আন্তরিকতার সঙ্গে ইবাদত করে, তারা আল্লাহর অশেষ রহমত লাভ করে। আমাদের উচিত এই সময়কে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে ইবাদত-বন্দেগির মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা। আল্লাহ আমাদের সবাইকে এই পবিত্র মাসের রহমত অর্জনের তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক: মহাপরিচালক, ইসলামিক ফাউন্ডেশন, ঢাকা।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

বিএনপির সঙ্গে কাজ করার আশ্বাস চব্বিশের শহীদ পরিবারের

শনিবার সন্ধ্যায় (৮ নভেম্বর) এসব পরিবারের সদস্যরা রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এসে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সাক্ষাৎ করে এমন আশ্বাস দেন।

১৩ ঘণ্টা আগে

ইসির ২৩ কর্মকর্তাকে বদলি

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২১ নির্বাচন কর্মকর্তা ও দুজন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন উপজেলায় বদলি করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

১৪ ঘণ্টা আগে

কর্মবিরতি ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষকদের

আজ বিকেলে তিনদফা দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের শাহবাগ অভিমুখী পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

১৮ ঘণ্টা আগে

শাহবাগে শিক্ষকদের ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, আহত ও আটকের অভিযোগ

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাছুদ বলেন, “শাহবাগে পুলিশের হামলায় বহু শিক্ষক আহত হয়েছেন। কলম সমর্পণ কর্মসূচি শেষে আমাদের শহীদ মিনারে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।”

১৯ ঘণ্টা আগে