দুই মাসে ২৩২টি বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ, ৭৮২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সেনাবাহিনী

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম নিয়ে প্রেস ব্রিফিং করেন কর্নেল শফিকুল ইসলাম। ছবি: আইএসপিআর

সবশেষ দুই মাস সময়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২৩২টি বিভিন্ন ধরনের বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে বলে জানিয়েছেন সেনা সদরের মিলিটারি অপারেশন ডিরেরেক্টরেটের কর্নেল স্টাফ কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম।

তিনি বলেন, একই সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিভিন্ন অপরাধে দুই হাজার ৪৫৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। পাশাপাশি সারা দেশে এ পর্যন্ত মোট গ্রেপ্তার করা হয়েছে সাত হাজার ৮২২ জনকে।

বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) ঢাকা সেনানিবাসের অফিসার্স মেসে দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীর কার্যক্রম সম্পর্কে ধারণা প্রদান সংক্রান্ত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি এসব তথ্য তুলে ধরেন।

কর্নেল মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে কিশোর গ্যাং, তালিকাভুক্ত অপরাধী, মাদক ব্যবসায়ী, অপহরণকারী, চোরাচালানকারী, প্রতারক ও দালাল চক্র, চাঁদাবাজ, ডাকাত ও ছিনতাইকারীরা। অভিযানে সেনাবাহিনী দুই মাসে ৩২০টি অবৈধ অস্ত্র ও ৫৬৪ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করেছে। এ পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ৩৭০টি অবৈধ অস্ত্র ও দুই লাখ ৮৫ হাজার ৫২ রাউন্ড গোলাবারুদ উদ্ধার করা হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায়ে যারা আহত হয়েছেন, তাদের সুচিকিৎসার জন্য সেনাবাহিনী এ পর্যন্ত চার হাজার ৩৪০ জনকে দেশের বিভিন্ন সিএমএইচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। তাদের মধ্যে ৪৩ জন এখনো চিকিৎসাধীন।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহতদের সম্মানে সেনাবাহিনী গত ২৩ মার্চ সেনামালঞ্চে ইফতার ও দোয়া মাহফিল আয়োজন করে। একদিন পর ২৫ মার্চ আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে আহত ও শহিদ পরিবারের সম্মানে সংবর্ধনা আয়োজন করা হয়। কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাবাহিনী প্রধান উপস্থিত থেকে সবার খোঁজখবর নেন। চিকিৎসাসহ সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা আরও বলেন, বিগত সময়ে শিল্পাঞ্চলগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতে সেনাবাহিনী ১৩৭টি ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। পাশাপাশি ৩১ বার বিভিন্ন মূল সড়ককে অবরোধ থেকে অবমুক্ত করেছে। শিল্পাঞ্চলে জাতীয় নিরাপত্তা বিধানের সময় গত ৯ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের এক ঘটনায় ২৪ জন সেনাসদস্য আহতও হন। তাদের মধ্যে ২০ জনকে সিএমএইচ এ ভর্তি হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে চিকিৎসা নিতে হয়েছে।

ঈদের আগে গার্মেন্টসে অস্থিরতা মোকাবিলায় সেনাবাহিনী মালিকপক্ষ, শ্রমিকপক্ষ, মন্ত্রণালয়, শিল্পাঞ্চল পুলিশ ও বিজিএমইএসহ সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে সমন্বয় করে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধে বিশেষ ব্যবস্থা করে বলেও জানান কর্নেল শফিকুল।

তিনি জানান, এসব কাজের পাশাপাশি সেনাবাহিনী দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখাসহ বিদেশি কূটনীতিক ব্যক্তি ও দূতাবাসগুলোর সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। এ ছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং কক্সবাজার জেলায় এফডিএমএন ক্যাম্প এলাকার নিরাপত্তা বিধান করার দায়িত্বও সুষ্ঠুভাবে পালন করে যাচ্ছে।

কর্নেল শফিকুল ইসলাম বলেন, সেনাপ্রধানের নির্দেশনা অনুযায়ী দেশের চরাঞ্চলসহ ৬২ জেলায় সেনাসদস্যরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, স্থানীয় প্রশাসন, বিভিন্ন সংস্থা, গণমাধ্যম ও জনসাধারণের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে সমন্বিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক সক্রিয়ভাবে দায়িত্ব পালন করছে। এ সমন্বয় ও পারস্পরিক সহযোগিতা আরও বাড়িয়ে চলমান কর্মধারা অব্যাহত রাখতে সেনাবাহিনী অঙ্গীকারাবদ্ধ।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

সব সরকারি কলেজে শিক্ষকদের কর্মবিরতি আজ

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঐতিহ্যবাহী ঢাকা কলেজে শিক্ষক, কর্মকর্তা ও শিক্ষার্থীদের ওপর দুষ্কৃতকারীদের হামলা এবং টিচার্স লাউঞ্জ ভাঙচুরের ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছে সংগঠনটি। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও জানানো হয়।

৪ ঘণ্টা আগে

বিশ বছর পর বাংলাদেশ-পাকিস্তান জেইসি বৈঠক

বিশ বছর পর যৌথ অর্থনৈতিক কমিশনের (জেইসি) নবম বৈঠকে বসতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। আগামী ২৭ অক্টোবর ঢাকায় বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এ উদ্দেশ্যে ঢাকা আসছেন পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রী আহাদ খান চিমা।

৫ ঘণ্টা আগে

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ, বাংলাদেশ সফরের আগ্রহ ব্রাজিল প্রেসিডেন্টের

ওয়ার্ল্ড ফুড ফোরামে দুই নেতা মূল বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন এবং পরে এফএও সদর দপ্তরে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে ছিল সামাজিক ব্যবসা, সর্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি ও দারিদ্র্য মোকাবিলার কৌশল।

৬ ঘণ্টা আগে

‘তিন-শূন্য বিশ্ব’ই পৃথিবীকে বাঁচানোর একমাত্র পথ— বিশ্বনেতাদের প্রধান উপদেষ্টা

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য হলো একটি ‘তিন-শূন্য বিশ্ব’ গঠন করা, যেখানে সম্পদ কেন্দ্রীকরণ শূন্য হবে (অর্থাৎ দারিদ্র্যমুক্ত বিশ্ব), বেকারত্ব শূন্য হবে (প্রত্যেকে উদ্যোক্তা হবে) এবং কার্বন নিঃসরণ থাকবে শূন্য। এটি কোনো কল্পনা নয়, এটি বাস্তব প্রয়োজন, পৃথিবী বাঁচানোর একমাত্র উপায়।

১৫ ঘণ্টা আগে