ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক না ফেরার দেশে

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
আপডেট : ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৮: ২৫
আহমদ রফিক [১২ সেপ্টেম্বর ১৯২৯ - ২ অক্টোবর ২০২৫]

ভাষাসৈনিক, কবি, প্রাবন্ধিক আহমদ রফিক মারা গেছেন। তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। কিডনি জটিলতা ও ডায়াবেটিস ছাড়াও উচ্চ রক্তচাপ, আলঝেইমার্স, পারকিনসন্স রোগ, ইলেকট্রোলাইটস ইমব্যালেন্স, ফুসফুসের সংক্রমণসহ বার্ধক্যজনিত নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) রাত সোয়া ১০টার দিকে রাজধানীর বারডেম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। সেখানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল তাকে।

আহমদ রফিকের বিশেষ সহকারী মো. রাসেল এ তথ্য গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। চিকিৎসকদের বরাতে তিনি জানান, মৃত ঘোষণার ৭ মিনিট আগেও আহমদ রফিকের কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল।

নানা শারীরিক জটিলতায় আক্রান্ত আহমদ রফিককে প্রায়ই হাসপাতালে ভর্তি করতে হতো। দীর্ঘ দিন ধরে তিনি রাজধানীর হেলথ অ্যান্ড হোপ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর মধ্যে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে ১১ সেপ্টেম্বর তাকে বারডেম হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।

হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, কিডনি জটিলতার পাশাপাশি সম্প্রতি কয়েকবার মাইল্ড স্ট্রোকে আক্রান্ত হলে আহমদ রফিকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। এর মধ্যে বুধবার (১ অক্টোবর) বিকেলে শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে লাইফ সাপোর্টে নিতে হয়।

জানা গেছে, মৃত্যুর আগে তিনি তার মরদেহ ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল মেডিকেল কলেজে দান করে গেছেন।

১৯২৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শাহবাজপুরে জন্মগ্রহণ করেন ভাষাসৈনিক আহমদ রফিক। ২০০৬ সালে স্ত্রীকে হারান তিনি। ছিলেন নিঃসন্তান। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি নিউ ইস্কাটনের গাউসনগরের ভাড়া বাসায় একাই বসবাস করতেন।

মুন্সীগঞ্জের হরগঙ্গা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন বিভাগে ভর্তি হন আহমদ রফিক। তবে আবাসিক সুবিধা না পাওয়ায় ভর্তি হন ঢাকা মেডিকেল কলেজে। চিকিৎসাশাস্ত্রে ডিগ্রি নিয়েও অবশ্য পরে আর চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত হননি তিনি। লেখালেখিকেই ব্রত হিসেবে বেছে নেন।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন চলাকালে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন আহমদ রফিক। ওই সময় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন তিনি। ফজলুল হক হল, ঢাকা হল ও মিটফোর্ডের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংযোগ ও সমন্বয় করেছেন।

১৯৫৪ সালে ঢাকা মেডিকেল কলেজের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মধ্যে একমাত্র তার নামেই গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছিল। এ সময় তিনি আত্মগোপন করেন। ১৯৫৫ সালের শেষ দিকে প্রকাশ্যে আসেন তিনি। পড়ালেখাও শেষ করেন।

১৯৫৮ সালে আহমেদ রফিকের প্রথম প্রবন্ধের বই ‘শিল্প সংস্কৃতি জীবন’ প্রকাশ হয়। এরপর লেখালেখি ও গবেষণা নিয়েই জীবন কাটিয়ে দিয়েছেন।

কবিতা, প্রবন্ধ, ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস ও গবেষণা মিলিয়ে আহমদ রফিকের লেখা ও সম্পাদিত গ্রন্থের সংখ্যা শতাধিক। একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ বহু সম্মাননা পেয়েছেন তিনি। দুই বাংলার রবীন্দ্রচর্চায় তার অবদান অনন্য। কলকাতার টেগোর রিসার্চ ইনস্টিটিউট থেকে তাকে দেওয়া হয়েছে ‘রবীন্দ্রতত্ত্বাচার্য’ উপাধি।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

বিএনপির সঙ্গে কাজ করার আশ্বাস চব্বিশের শহীদ পরিবারের

শনিবার সন্ধ্যায় (৮ নভেম্বর) এসব পরিবারের সদস্যরা রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে এসে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি সাক্ষাৎ করে এমন আশ্বাস দেন।

১৩ ঘণ্টা আগে

ইসির ২৩ কর্মকর্তাকে বদলি

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, ২১ নির্বাচন কর্মকর্তা ও দুজন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন উপজেলায় বদলি করা হলো। জনস্বার্থে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

১৫ ঘণ্টা আগে

কর্মবিরতি ঘোষণা প্রাথমিক শিক্ষকদের

আজ বিকেলে তিনদফা দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের শাহবাগ অভিমুখী পদযাত্রায় বাধা দেয় পুলিশ। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে জলকামান, সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

১৮ ঘণ্টা আগে

শাহবাগে শিক্ষকদের ‘কলম সমর্পণ’ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা, আহত ও আটকের অভিযোগ

প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাছুদ বলেন, “শাহবাগে পুলিশের হামলায় বহু শিক্ষক আহত হয়েছেন। কলম সমর্পণ কর্মসূচি শেষে আমাদের শহীদ মিনারে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।”

১৯ ঘণ্টা আগে