
ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম

রাতের অন্ধকারে গ্রামের রাস্তা বা গাছপালার ফাঁকে হঠাৎ হঠাৎ ছোট ছোট আলো জ্বলে উঠতে দেখা যায়। এগুলো কোনো জাদুর খেলা নয়, বরং প্রকৃতির এক নিখুঁত পরিকল্পনা। এই আলো জ্বালানো পোকাগুলোর নাম জোনাকি। ছোট এই পোকাগুলো নিজেদের শরীরেই আলো জ্বালাতে পারে। এই আলো ঝলমলে দৃশ্য আমাদের চোখে যতটা রোমান্টিক মনে হয়, এর পেছনে রয়েছে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর ব্যাখ্যা। জোনাকি পোকা কেন আলো জ্বালে, কীভাবে এই আলো সৃষ্টি হয়, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই গবেষণা করছেন।
জোনাকি পোকা, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় "firefly" বা "lightning bug", আসলে বিটল বা গুবরে পোকাদের একটি প্রজাতি। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Lampyridae। পৃথিবীতে প্রায় দুই হাজারের বেশি প্রজাতির জোনাকি পাওয়া যায়, যাদের বেশিরভাগই আলো তৈরি করতে সক্ষম। তবে শুধু রাতে নয়, কিছু জোনাকি দিনের বেলাও জীবিত থাকে, যদিও তারা আলো ছাড়ে না।
জোনাকি পোকা কীভাবে আলো তৈরি করে, তা বোঝার জন্য আমাদের যেতে হবে তাদের শরীরের বিশেষ একটি অংশে, যাকে বলা হয় "ফটোরসাইট" (photocyte)। এটি জোনাকি পোকাদের পেটের নিচের দিকে অবস্থিত। এই অংশেই রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে আলো উৎপন্ন হয়। বিজ্ঞানীরা এই আলো উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে বলেন বায়োলুমিনেসেন্স (bioluminescence)।
এই প্রক্রিয়ায় মূলত তিনটি উপাদান কাজ করে: লুসিফেরিন, লুসিফেরেজ নামের ধরনের এনজাইম এবং অক্সিজেন। যখন লুসিফেরিন, লুসিফেরেজ এবং অক্সিজেন একসঙ্গে বিক্রিয়ায় অংশ নেয়, তখন জোনাকির দেহে আলো তৈরি হয়। এই আলো অত্যন্ত কার্যকর — ৯৮% পর্যন্ত শক্তি আলোতে রূপান্তরিত হয়, যা পৃথিবীর কোনো বৈদ্যুতিক বাতিও করতে পারে না। এই কারণে জোনাকির আলোকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে কার্যকর আলো।
জোনাকিরা এই আলো জ্বালায় মূলত পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য, বিশেষ করে জোড়া বাঁধার সময়। পুরুষ জোনাকিরা উড়ে উড়ে আলো জ্বালিয়ে স্ত্রী জোনাকির দৃষ্টি আকর্ষণ করে। স্ত্রী জোনাকি সাধারণত মাটিতে বা গাছের পাতায় বসে থাকে, এবং পুরুষদের আলো দেখে উত্তর দেয় নিজেও আলো জ্বালিয়ে। এই আলো আসলে একটি ভাষা, যার মাধ্যমে তারা জানায়—"আমি এখানে আছি।"
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যার অধ্যাপক ড. স্যারা লুইস, যিনি বহু বছর ধরে জোনাকি পোকা নিয়ে গবেষণা করছেন, বলেন, “জোনাকি পোকারা তাদের আলো ব্যবহার করে ঠিক যেমন আমরা শব্দ ব্যবহার করি। প্রতিটি প্রজাতির নিজস্ব ঝলকানির ধরন রয়েছে, এক ধরনের 'ব্লিঙ্কিং কোড'।”
তবে শুধু প্রেমের বার্তা আদান-প্রদান নয়, জোনাকির আলো শিকারি প্রাণীদের জন্য একটি সতর্কবার্তাও বটে। অনেক পাখি ও ব্যাঙ জোনাকি খেতে চায় না, কারণ এদের শরীরে থাকে তিক্ত স্বাদের এক ধরনের রাসায়নিক, যা বিষাক্তও হতে পারে। আলো দেখে সেই শিকারিরা জোনাকিকে চিনে ফেলে এবং তাদের এড়িয়ে চলে। এটি একটি প্রতিরক্ষা কৌশল হিসেবেও কাজ করে।
জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইউকি মাতসুই বলেন, “জোনাকির আলো কেবল রোমান্টিক নয়, এটি একটি সতর্ক সংকেত — প্রকৃতির তৈরি ‘খাওয়া নিষেধ’ চিহ্ন।”
এই আলো কখনো টানা জ্বলে, আবার কখনো ঝলক দেয়। এমনকি বিভিন্ন প্রজাতির জোনাকি ভিন্নভাবে আলো জ্বালায়। কেউ কেউ প্রতি দুই সেকেন্ডে একবার আলো দেয়, আবার কেউ একটু লম্বা সময় ধরে আলো জ্বালিয়ে রাখে। কিছু জোনাকি আবার একসাথে ঝাঁক বেঁধে আলো জ্বালায়, যেন পুরো গাছটা আলোয় ঝলমল করছে।
মজার বিষয় হলো, জোনাকির আলো কোনো তাপ সৃষ্টি করে না। আমাদের ঘরের বাল্ব বা আলো জ্বালালে কিছুটা তাপ বের হয়, কিন্তু জোনাকির আলো একেবারে ঠান্ডা। তাই এটাকে “কোল্ড লাইট” বলা হয়। বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরে চেষ্টা করছেন জোনাকির আলো অনুকরণ করে কৃত্রিম আলো তৈরি করতে, যাতে শক্তি সাশ্রয় হয় এবং পরিবেশবান্ধব হয়।
তবে দুঃখের বিষয় হলো, পরিবেশ দূষণ ও আলো দূষণের কারণে অনেক জায়গায় জোনাকি পোকা আজ হারিয়ে যাচ্ছে। শহরের কৃত্রিম আলো তাদের স্বাভাবিক আলো-ভাষাকে ব্যাহত করে। এতে তারা জোড়া বাঁধতে পারে না, ফলে প্রজনন কমে যায় এবং তাদের সংখ্যা হ্রাস পায়।
পরিবেশ বিজ্ঞানী ও কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. লিয়া জেমস বলেন, “আলো দূষণ জোনাকি পোকাদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর একটি। ওদের বাঁচাতে হলে আমাদের প্রকৃতির অন্ধকার রক্ষা করতে হবে।”
জোনাকি পোকা আমাদের শৈশবের স্মৃতির সঙ্গী। গ্রামের রাতে হঠাৎ হঠাৎ জোনাকির আলো দেখে আমরা যেমন মুগ্ধ হতাম, তেমনি বিস্ময়েও ভরতাম—এরা কীভাবে নিজের শরীরেই আলো জ্বালায়? এখন বিজ্ঞান আমাদের জানায়, এটি প্রকৃতির নিখুঁত এক কৌশল, যা ভালোবাসা, আত্মরক্ষা ও সৌন্দর্যের এক অসাধারণ মিশেল।
আমরা যদি প্রকৃতিকে ভালোবাসি, তাহলে জোনাকি পোকাকেও ভালোবাসা উচিত। আর তার মানে শুধু নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা নয়, বরং ওদের টিকে থাকার পরিবেশ রক্ষা করাও আমাদের দায়িত্ব। জোনাকির আলো নিছক একটি আলো নয়—এটি প্রকৃতির এক অনুপম ভাষা, যা অন্ধকারেও পথ দেখাতে জানে।

রাতের অন্ধকারে গ্রামের রাস্তা বা গাছপালার ফাঁকে হঠাৎ হঠাৎ ছোট ছোট আলো জ্বলে উঠতে দেখা যায়। এগুলো কোনো জাদুর খেলা নয়, বরং প্রকৃতির এক নিখুঁত পরিকল্পনা। এই আলো জ্বালানো পোকাগুলোর নাম জোনাকি। ছোট এই পোকাগুলো নিজেদের শরীরেই আলো জ্বালাতে পারে। এই আলো ঝলমলে দৃশ্য আমাদের চোখে যতটা রোমান্টিক মনে হয়, এর পেছনে রয়েছে বিজ্ঞানের বিস্ময়কর ব্যাখ্যা। জোনাকি পোকা কেন আলো জ্বালে, কীভাবে এই আলো সৃষ্টি হয়, তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই গবেষণা করছেন।
জোনাকি পোকা, যাকে ইংরেজিতে বলা হয় "firefly" বা "lightning bug", আসলে বিটল বা গুবরে পোকাদের একটি প্রজাতি। এদের বৈজ্ঞানিক নাম Lampyridae। পৃথিবীতে প্রায় দুই হাজারের বেশি প্রজাতির জোনাকি পাওয়া যায়, যাদের বেশিরভাগই আলো তৈরি করতে সক্ষম। তবে শুধু রাতে নয়, কিছু জোনাকি দিনের বেলাও জীবিত থাকে, যদিও তারা আলো ছাড়ে না।
জোনাকি পোকা কীভাবে আলো তৈরি করে, তা বোঝার জন্য আমাদের যেতে হবে তাদের শরীরের বিশেষ একটি অংশে, যাকে বলা হয় "ফটোরসাইট" (photocyte)। এটি জোনাকি পোকাদের পেটের নিচের দিকে অবস্থিত। এই অংশেই রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে আলো উৎপন্ন হয়। বিজ্ঞানীরা এই আলো উৎপাদনের প্রক্রিয়াকে বলেন বায়োলুমিনেসেন্স (bioluminescence)।
এই প্রক্রিয়ায় মূলত তিনটি উপাদান কাজ করে: লুসিফেরিন, লুসিফেরেজ নামের ধরনের এনজাইম এবং অক্সিজেন। যখন লুসিফেরিন, লুসিফেরেজ এবং অক্সিজেন একসঙ্গে বিক্রিয়ায় অংশ নেয়, তখন জোনাকির দেহে আলো তৈরি হয়। এই আলো অত্যন্ত কার্যকর — ৯৮% পর্যন্ত শক্তি আলোতে রূপান্তরিত হয়, যা পৃথিবীর কোনো বৈদ্যুতিক বাতিও করতে পারে না। এই কারণে জোনাকির আলোকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে কার্যকর আলো।
জোনাকিরা এই আলো জ্বালায় মূলত পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য, বিশেষ করে জোড়া বাঁধার সময়। পুরুষ জোনাকিরা উড়ে উড়ে আলো জ্বালিয়ে স্ত্রী জোনাকির দৃষ্টি আকর্ষণ করে। স্ত্রী জোনাকি সাধারণত মাটিতে বা গাছের পাতায় বসে থাকে, এবং পুরুষদের আলো দেখে উত্তর দেয় নিজেও আলো জ্বালিয়ে। এই আলো আসলে একটি ভাষা, যার মাধ্যমে তারা জানায়—"আমি এখানে আছি।"
যুক্তরাষ্ট্রের জর্জিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যার অধ্যাপক ড. স্যারা লুইস, যিনি বহু বছর ধরে জোনাকি পোকা নিয়ে গবেষণা করছেন, বলেন, “জোনাকি পোকারা তাদের আলো ব্যবহার করে ঠিক যেমন আমরা শব্দ ব্যবহার করি। প্রতিটি প্রজাতির নিজস্ব ঝলকানির ধরন রয়েছে, এক ধরনের 'ব্লিঙ্কিং কোড'।”
তবে শুধু প্রেমের বার্তা আদান-প্রদান নয়, জোনাকির আলো শিকারি প্রাণীদের জন্য একটি সতর্কবার্তাও বটে। অনেক পাখি ও ব্যাঙ জোনাকি খেতে চায় না, কারণ এদের শরীরে থাকে তিক্ত স্বাদের এক ধরনের রাসায়নিক, যা বিষাক্তও হতে পারে। আলো দেখে সেই শিকারিরা জোনাকিকে চিনে ফেলে এবং তাদের এড়িয়ে চলে। এটি একটি প্রতিরক্ষা কৌশল হিসেবেও কাজ করে।
জাপানের ওসাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইউকি মাতসুই বলেন, “জোনাকির আলো কেবল রোমান্টিক নয়, এটি একটি সতর্ক সংকেত — প্রকৃতির তৈরি ‘খাওয়া নিষেধ’ চিহ্ন।”
এই আলো কখনো টানা জ্বলে, আবার কখনো ঝলক দেয়। এমনকি বিভিন্ন প্রজাতির জোনাকি ভিন্নভাবে আলো জ্বালায়। কেউ কেউ প্রতি দুই সেকেন্ডে একবার আলো দেয়, আবার কেউ একটু লম্বা সময় ধরে আলো জ্বালিয়ে রাখে। কিছু জোনাকি আবার একসাথে ঝাঁক বেঁধে আলো জ্বালায়, যেন পুরো গাছটা আলোয় ঝলমল করছে।
মজার বিষয় হলো, জোনাকির আলো কোনো তাপ সৃষ্টি করে না। আমাদের ঘরের বাল্ব বা আলো জ্বালালে কিছুটা তাপ বের হয়, কিন্তু জোনাকির আলো একেবারে ঠান্ডা। তাই এটাকে “কোল্ড লাইট” বলা হয়। বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরে চেষ্টা করছেন জোনাকির আলো অনুকরণ করে কৃত্রিম আলো তৈরি করতে, যাতে শক্তি সাশ্রয় হয় এবং পরিবেশবান্ধব হয়।
তবে দুঃখের বিষয় হলো, পরিবেশ দূষণ ও আলো দূষণের কারণে অনেক জায়গায় জোনাকি পোকা আজ হারিয়ে যাচ্ছে। শহরের কৃত্রিম আলো তাদের স্বাভাবিক আলো-ভাষাকে ব্যাহত করে। এতে তারা জোড়া বাঁধতে পারে না, ফলে প্রজনন কমে যায় এবং তাদের সংখ্যা হ্রাস পায়।
পরিবেশ বিজ্ঞানী ও কানাডার টরন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. লিয়া জেমস বলেন, “আলো দূষণ জোনাকি পোকাদের জন্য সবচেয়ে বড় হুমকিগুলোর একটি। ওদের বাঁচাতে হলে আমাদের প্রকৃতির অন্ধকার রক্ষা করতে হবে।”
জোনাকি পোকা আমাদের শৈশবের স্মৃতির সঙ্গী। গ্রামের রাতে হঠাৎ হঠাৎ জোনাকির আলো দেখে আমরা যেমন মুগ্ধ হতাম, তেমনি বিস্ময়েও ভরতাম—এরা কীভাবে নিজের শরীরেই আলো জ্বালায়? এখন বিজ্ঞান আমাদের জানায়, এটি প্রকৃতির নিখুঁত এক কৌশল, যা ভালোবাসা, আত্মরক্ষা ও সৌন্দর্যের এক অসাধারণ মিশেল।
আমরা যদি প্রকৃতিকে ভালোবাসি, তাহলে জোনাকি পোকাকেও ভালোবাসা উচিত। আর তার মানে শুধু নয়নাভিরাম দৃশ্য দেখা নয়, বরং ওদের টিকে থাকার পরিবেশ রক্ষা করাও আমাদের দায়িত্ব। জোনাকির আলো নিছক একটি আলো নয়—এটি প্রকৃতির এক অনুপম ভাষা, যা অন্ধকারেও পথ দেখাতে জানে।

বিমান থেকে নেমে তারেক রহমান ভিআইপি লাউঞ্জে প্রবেশ করলে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। সেখানে তাকে গোলাপ ফুলের মালা পরিয়ে অভ্যর্থনা জানান তার শাশুড়ি সৈয়দা ইকবাল মান্দ বানু। দীর্ঘ সময় পর পরিবারের সদস্যদের কাছে পেয়ে উপস্থিত সকলের চোখে আনন্দের অশ্রু দেখা যায়। এ সময় পাশে ছিলেন ডা. জুবাইদা রহমান ও জাইমা রহ
৯ ঘণ্টা আগে
পুলিশ জানায়, সুরভীর বিরুদ্ধে কালিয়াকৈর থানায় নাইমুর রহমান দুর্জয় নামে এক যুবকের দায়ের করা মামলায় গ্রেফতারি পরোয়ানা ছিল। মামলায় চাঁদাবাজি, অপহরণ করে অর্থ আদায় ও ব্ল্যাকমেইলিংয়ের মতো অভিযোগ আনা হয়েছে। এছাড়া তিনি সেনাবাহিনী প্রধানকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতেন বলেও দাব
১০ ঘণ্টা আগে
তার জন্মক্ষণ স্মরণ করতেই ২৫ ডিসেম্বর দিনটিকে সারা বিশ্বে তার অনুসারীরা বড়দিন হিসেবে পালন করে থাকেন। তার স্মরণে গির্জা গির্জায় প্রার্থনার আহ্বান জানিয়ে বাজানো হয় ঘণ্টাধ্বনি, যা মানুষের কাছে শুভ সংবাদের বার্তা বয়ে নিয়ে যায় বলে বিশ্বাস করেন খ্রিষ্টান ধর্মের অনুসারীরা।
২০ ঘণ্টা আগে