রৌমারীতে একটি সেতুর অভাবে ১৬ গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ

রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
বাঁশের এই সেতু দিয়েই ১৬ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চর শৌলমারী ইউনিয়নের কাজাইকাটা হলহলিয়া নদী পারাপার হন

কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার চর শৌলমারী ইউনিয়নের কাজাইকাটা গ্রাম সংলগ্ন হলহলিয়া নদীতে একটি সেতুর অভাবে ১৬ গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জীবনের প্রয়োজনে এলাকাবাসী নিজ খরচে নদীতে কোনো মতে বাঁশের সেতু তৈরি করলেও তা নড়বড়ে হওয়ায় ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছেন।

যুগযুগ ধরে একটি ব্রিজের দাবি জানিয়ে জনপ্রতিনিধি ও সরকারি দফতরের অফিসে ধর্না দিয়েও কোনো সুফল পাননি ভুক্তভোগীরা। ফলে আমবাড়ি, চর কাজাইকাটা, লাউবাড়ি, শান্তির চর, চর ইটালুকান্দা, কাজাইকাটা, খরানিরচর, তেলির মোড়, কাউনিয়ার চর ও গাছবাড়িসহ প্রায় ১৬টি গ্রামের মানুষ নিজ খরচেই বাশের সেতু বানিয়ে পারাপার হচ্ছেন। এই ঝুঁকিপূর্ণ এই সেতু দিয়ে এলাকার কোমলমতি শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ী, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবীসহ সর্বস্তরের মানুষ পারাপার হচ্ছে দিনের পর দিন। ঝুঁকিপূর্ণ বাঁসের এই সেতুই এলাকাবাসীর একমাত্র ভরসা হয়ে উঠেছে।

জানা যায়, বর্ষা মৌসুমে ব্যবসার উদ্দেশে স্থানীয় একটি চক্র মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের সাথে যোগসাজসে ওই বাঁশের সেতুও রাতের অন্ধকারে ভেঙে দিয়ে ছোট নৌকা বসায়। পরে ওই চক্রটি জনপ্রতি মানুষের কাছে ১০ টাকা, বাইসাইকেল প্রতি ১০ টাকা ও মোটরসাইকেল প্রতি ২০ টাকা করে ভাড়া আদায় করে। এনিয়ে নৌকার যাত্রী ও নৌকার মালিকদের সাথে বাকবিতণ্ডার সৃষ্টি হয়। মাঝে মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে। কিন্তু একটি সেতুর অভাবে উপজেলার চর শৌলমারী ইউনিয়নের কাজাইকাটা এলাকার ওই ১৬টি গ্রামের প্রায় ৩০ হাজার মানুষ ওই চক্রের কাছে জিম্মি হয়ে পড়েছেন। কবে এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে তাও জানেন না এলাকাবাসী। তবে শিগগিরই এই সমস্যার সমাধান দাবি করেন এলাকাবাসী।

তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে বর্তমান সরকারের প্রত্যাশিত উন্নয়ন হলেও, কাজাইকাটা, লাউবাড়ী, মোল্লাপাড়া, শান্তিরচর, গেন্দার আলগা ও গাছবাড়ী এলাকায় আজও লাগেনি উন্নয়নের ছোঁয়া। বাঁশের সাঁকো দিয়ে অস্থায়ীভাবে মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করা হলেও অন্যান্য যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ওই এলাকায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উচ্চ মাধ্যমিক, মাদ্রাসা, বেসরকারি স্কুল. হাই স্কুল ও হাফেজিয়া মাদ্রাসাসহ অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে।

স্থানীয় কৃষক মোমিন উদ্দিন বলেন, এই স্থানে একটি পাকা সেতু না থাকায় যানবাহন চলাচল একদম বন্ধ রয়েছে। আমাদের জমির ফসল অন্য এলাকা দিয়ে বিভিন্ন হাট-বাজারে নিয়ে যেতে হয়। এতে কৃষকের পরিবহন খরচ অনেক বেশি হচ্ছে। সেই সাথে বাঁশের সাঁকো দিয়ে পথচারীদেরও পারাপারে কষ্ট হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আকুল আবেদন এখানে একটি ব্রীজ দেওয়া হউক।

স্থানীয় প্রভাষক ফরিজ উদ্দিন জানান, কয়েক যুগ ধরে এখানে ব্রীজ না থাকায় এলাকার মানুষ অনেক কষ্টে পারাপার হয়। জনগণের দুর্ভোগ নিরসনে সরকারের কাছে একটি ব্রীজের দাবি করছি।

স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যবসায়ী রোকনুজ্জামান রোকন বলেন, একটি ব্রীজের জন্য এই এলাকার পক্ষ থেকে কয়েকবার জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয় প্রশাসনের কাছে আবেদন দেওয়া হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। বর্তমানে ভাঙ্গাচুড়া বাঁশের সেতু দিয়ে বিভিন্ন এলাকার মানুষ পারাপার হচ্ছেন। এই দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেতে অতি জরুরিভিত্তিতে একটি পাকা ব্রীজ নির্মাণ করা দরকার।

এ বিষয়ে উপজেলার উপ-সহকারী প্রকৌশলী গোলাম মোস্তাফা বলেন, কাজাইকাটা ব্রীজের জন্য প্রস্তাবনা পাঠানো হয়েছে। আশা রাখি দ্রুত বাজেট হবে।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান জানান, ওই এলাকায় একটি পাকা ব্রীজের খুবই দরকার। সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ad
ad

মাঠের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

সাপের কামড়ে প্রাণ গেল ইজিবাইকের চালকের

১ দিন আগে

হঠাৎ ঝড়ে ঘরবাড়ি-গাছপালা লণ্ডভণ্ড, পান বরজের ব্যাপক ক্ষতি

ঝড়ের কবলে পড়া এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঝড়ের পর গাছে চাপা পড়ে জাটিয়া ইউনিয়নের নিজতুলন্দর গ্রামের সুরুজ আলীর দুটি, নুরুল ইসলামের একটি, আব্দুর রহিমের দুটি, আবু সিদ্দিকের একটি ও ইদ্রিস আলীর দুটি এবং সোহাগী ইউনিয়নের মনোহরপুর গ্রামের রিপনের দুটি, শাহ্ নেওয়াজের একটি ও সিরাজুল ইসলামের একটি বসতঘর ভেঙে গেছে

১ দিন আগে

আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম এখন সিলেটের ডিসি

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বিসিএস (প্রশাসন) ক্যাডারের কর্মকর্তা সারোয়ার আলমকে সিলেট জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট পদে বদলি ও পদায়ন করা হলো। জনস্বার্থে জারিকৃত এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে।

১ দিন আগে

৩ দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি ৪৩তম নন-ক্যাডারদের

প্রার্থীরা জানান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যুব উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার ও প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরে বিপুলসংখ্যক শূন্য পদ রয়েছে। অথচ সরকারি উদাসীনতার কারণে ৪৩তম বিসিএস নন-ক্যাডার সুপারিশপ্রাপ্তরা নিয়োগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এর ফলে দেশের সামগ্রিক প্রশাসনিক কার্যক্রম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। একদিকে শূন্যপদ বাড়ছে, অন্যদি

২ দিন আগে