বিশ্বব্যাংকের সালিশ আদালতে এস আলম, শত কোটি ডলার ক্ষতির অভিযোগ

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল ইসলাম। ছবি: এস আলম গ্রুপের ওয়েবসাইট থেকে

অন্তর্বর্তী সরকারের ‘অবৈধভাবে বিদেশে পাচার করা হওয়া’ সম্পদ উদ্ধারের প্রচেষ্টায় পারিবারিক ব্যবসায় ‘শত শত কোটি ডলারের ক্ষতি’র অভিযোগ তুলেছে এস আলম গ্রুপ। বিশ্বব্যাংকের সালিশি আদালতে এমন অভিযোগ করেছে দেশের অন্যতম এই শীর্ষ শিল্পগোষ্ঠী।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের পক্ষে বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর ইনভেস্টমেন্ট ডিসপিউটে (আইসিএসআইডি) অভিযোগ করেছে আইনি পরামর্শক সংস্থা কুইন ইম্যানুয়েল আর্কহার্ট অ্যান্ড সুলিভান নাম।

সালিশি মামলাটির আবেদনে বলা হয়েছে, সরকার তাদের ব্যাংক হিসাব জব্দের পাশাপাশি সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে। সেই সঙ্গে ব্যবসায়িক লেনদেন নিয়ে যে তদন্ত করেছে, তা ‘ভিত্তিহীন’। এস আলম পরিবারের বিরুদ্ধে ‘প্ররোচণামূলক মিডিয়া অভিযান’ চালানো হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।

এস আলমের পক্ষে আইনজীবীরা দাবি করেছেন, এসব কারণে এস আলম পরিবারের শত শত কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে। তবে ক্ষতিপূরণের সঠিক পরিমাণ উল্লেখ করা হয়নি।

এস আলম পরিবারের আইনজীবীরা এর আগে গত ডিসেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করে বলেন, ছয় মাসের মধ্যে এই বিরোধ নিষ্পত্তি না হলে তারা সালিশি মামলা করবেন।

এ মামলার বিষয়ে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসের প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘যখনই আবেদন আমাদের হাতে আসবে, তখনই আমরা যথাযথভাবে উত্তর দেবো।’ প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় এ বিষয়ের মন্তব্যের আবেদনে সাড়া দেয়নি বলেও জানিয়েছে ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস।

এস আলম পরিবার বর্তমানে সিঙ্গাপুরে বসবাস করছে। দেশটির সঙ্গে বাংলাদেশের ২০০৪ সালে সই করা দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির আওতায় এই সালিশি মামলা করা হয়েছে। ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বলছে, এই পরিবার ২০২০ সালে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব ত্যাগ করার পর ২০২১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুরের নাগরিকত্ব গ্রহণ করে।

এস আলম পরিবার আগে বলেছে, সিঙ্গাপুরের নাগরিক হিসেবে তাদের কিছু সুরক্ষা প্রাপ্য। বাংলাদেশে যে ১৯৮০ সালের বিদেশি ব্যক্তিগত বিনিয়োগ আইন আছে, সে আইন অনুযায়ী তাদের সুরক্ষা পাওয়া উচিত।

এর আগে গত ডিসেম্বরে অন্তর্বর্তী সরকার একটি অর্থনৈতিক শ্বেতপত্র প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে আনুমানিক ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার করা হয়েছে বিভিন্ন দেশে। এসব অর্থ উদ্ধারে গঠিত টাস্কফোর্সের প্রধান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর অভিযোগ করেছেন, এর মধ্যে প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার বিদেশে পাচার করেছে এস আলম পরিবার।

আইএমএফের সাবেক কর্মকর্তা আহসান এইচ মনসুর এর আগে অভিযোগ করেছিলেন, এস আলম পরিবার ও তাদের সহযোগীরা সামরিক বাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় জোর করে ব্যাংক দখল করে ব্যাংকিং খাত থেকে অর্থ পাচার করেছে।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, এস আলম ও তাদের সহযোগীরা কোম্পানির নিয়ন্ত্রণাধীন ছয়টি ব্যাংকে ঋণ ও অতিমূল্যায়িত আমদানি চালানের মাধ্যমে অর্থ পাচার করেছে। তারা কী পরিমাণ সম্পদ পাচার করেছে, আমরা তার অসংখ্য প্রমাণ পেয়েছি। এখন আমরা তাদের ব্যাংকগুলোর সঙ্গে কাজ করছি, যেগুলোর নিট সম্পদের পরিমাণ ঋণাত্মক এবং সরকারকেই সেগুলো উদ্ধার করতে হচ্ছে।

ad
ad

অর্থের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

অক্টোবরে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৫.৪১ শতাংশ

রপ্তানিতে তৈরি পোশাক খাত তার শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে, যা অক্টোবর ২০২৫-এ ৩,০১৯.৯৪ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এই খাতে নিটওয়্যার এবং ওভেন পোশাক এখনো প্রধান রপ্তানি আয়কারী পণ্য হিসেবে রয়েছে।

৬ দিন আগে

জুলাই অভ্যুত্থানের পর ১ বছরে এফডিআইয়ে রেকর্ড প্রবৃদ্ধি

সম্প্রতি প্রকাশিত অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানে এফডিআইয়ে প্রবৃদ্ধির এ হিসাব উঠে এসেছে অনুযায়ী। বিডা বলছে, সাধারণত বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর বিদেশি বিনিয়োগ হ্রাস পায়। কিন্তু বাংলাদেশ এ ধারায় ব্যতিক্রম হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

৬ দিন আগে

অক্টোবরে রেমিট্যান্স ৩১ হাজার ২৭৩ কোটি টাকা, ৭% প্রবৃদ্ধি

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, অক্টোবরের পুরো সময়ে ২৫৬ কোটি ৩৪ লাখ ৮০ হাজার ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ১৬ কোটি ৮৪ লাখ ডলার বেশি। গত বছরের একই সময়ে (অক্টোবর-২০২৪) রেমিট্যান্স এসেছিল ২৩৯ কোটি ৫০ লাখ ডলার।

৭ দিন আগে

এলপি গ্যাসের দাম কমলো আরও ২৬ টাকা

ভোক্তা পর্যায়ে আরেক দফা কমানো হয়েছে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাসের (এলপিজি) দাম। নভেম্বর মাসের জন্য ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম ২৬ টাকা কমিয়ে ১ হাজার ২১৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

৭ দিন আগে