তৃতীয় প্রান্তিকে শাহজিবাজার পাওয়ারের আয়ে উল্লম্ফন

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
আপডেট : ০২ মে ২০২৪, ১৪: ২৬

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের কোম্পানি শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (এসপিসিএল) আয় ইতিবাচক ধারায় ফিরেছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকের ঘাটতি কাটিয়ে তৃতীয় প্রান্তিকে ভালো আয় করেছে। শাহজিবাজার পাওয়ারের সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান পেট্রোম্যাক্স রিফাইনারি লিমিটেড পূর্ণ ক্ষমতা দিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হওয়ায় মূলত এ আয় এসেছে। যদিও কোম্পানির পক্ষ থেকে এ আয়কে স্বাভাবিক আয়ই বলা হচ্ছে।

শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি চলতি (২০২৩-২৪) হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) শেয়ারপ্রতি আয় করেছে ২ টাকা ২২ পয়সা। এ আয় আগের হিসাব বছরের একই সময়ের চেয়ে ৮৩ পয়সা বা ৫৯ দশমিক ৭১ শতাংশ বেশি। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ১ টাকা ৩৯ পয়সা।

তথ্য অনুযায়ী, গত সোমবার অনুষ্ঠিত কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর তা প্রকাশ করা হয়। কোম্পানি সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

জানা যায়, চলতি হিসাব বছরের (২০২৩-২৪) প্রথম ৯ মাস বা তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ৩ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের অর্থবছরের একই সময়ে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৪৮ পয়সা।

আলোচিত তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ (এনওসিএফপিএস) হয়েছে ৯ টাকা ৩২ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নগদ প্রবাহ ছিল ২ টাকা ১৬ পয়সা। চলতি বছরের ৩১ মার্চ কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৯ টাকা ৩৮ পয়সা। যা গত বছরের ৩০ জুন ছিল ৩৬ টাকা ৭১ পয়সা।

এ ছাড়া ২০২১-২২ হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৫ টাকা ৪৮ পয়সা। যা আগের ২০২০-২১ হিসাব বছরের একই সময়ে ছিল ৪ টাকা ৫৩ পয়সা।

চলতি হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ১ টাকা ৭৭ পয়সা। আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ১ টাকা ৩৩ পয়সা। কোম্পানিটির চলতি হিসাব বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছে ২ টাকা ২৪ পয়সা। যা আগের হিসাব বছরের একই সময়ে শেয়ারপ্রতি আয় ছিল ৪২ পয়সা। এর থেকে দেখা যাচ্ছে কোম্পানিটি আগের সময়ের চেয়ে ধারাবাহিক মুনাফায় ফিরছে। ফলে এই কোম্পানিটির শেয়ারের প্রতিও বিনিয়োগকারীদের আলাদা নজর রয়েছে।

এ ব্যাপারে শাহজীবাজার পাওয়ারের কোম্পানি সচিব ইয়াসিন আহমেদ বলেন, ‘আমাদের যে সাবসিডিয়ারি রিফাইনারি প্রতিষ্ঠান আছে এটা তার স্বাভাবিক ইনকামে ফিরেছে। গত প্রান্তিকে আয় যেটা কমে গিয়েছিল এ প্রান্তিকে সেখানেই আবার ফিরেছে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের এটা তো ফিক্সড ক্যাপাসিটি বিজনেস। তাই খুব বেশি এদিক সেদিক হওয়ার সুযোগ থাকে না। মাঝেমধ্যে যখন পুরো ক্ষমতা দিয়ে পরিচালিত করা যায় না তখন এর প্রভাব আয়ের মধ্যে পড়ে। আয় ও মুনাফা কমে যায়। আবার যখন পুরো ক্ষমতা দিয়ে পরিচালিত হয় তখন আবার বাড়ে। তাই বলা যায় আগে যেটা কমে গিয়েছিল এখন সেখানেই আবার ফিরেছে।’

তথ্যে দেখা যায়, ২০২৩ হিসাব বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের জন্য ১১ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ সুপারিশ করে শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেডের পর্ষদ। এ সময়ে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি আয় হয়েছিল ১ টাকা ৫২ পয়সা। বছরটি শেষে কোম্পানিটির শেয়ার প্রতি সম্পদ (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৩৬ টাকা ৭১ পয়সা।

২০২২ হিসাব বছরের জন্য বিনিয়োগকারীদের মোট ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। এরমধ্যে বিনিয়োগকারীদের ১৬ শতাংশ দেয়া হয় নগদ লভ্যাংশ আর ৪ শতাংশ বোনাস। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ৪ টাকা ৩০ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়ায় ৩৮ টাকা ১৯ পয়সায়।

২০২১ হিসাব বছরের জন্য কোম্পানিটি বিনিয়োগকারীদের মোট ৩৪ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে শাহজিবাজার পাওয়ার। এরমধ্যে ২৮ শতাংশই ছিল নগদ লভ্যাংশ আর ৪ শতাংশ বোনাস। এসময় কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় হয়েছিল ৬ টাকা ৫৩ পয়সা। আর শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়ায় ৩৮ টাকা ৫ পয়সা। এর আগের ২০২০ হিসাব বছরে কোম্পানিটি তার বিনিয়োগকারীদের জন্য ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা করে। এরমধ্যে ২৮ শতাংশ ছিল নগদ লভ্যাংশ আর ২ শতাংশ বোনাস। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি সম্পদ মূল্য দাঁড়ায় ৩৪ টাকা ৯৪ পয়সায়।

শাহজিবাজার পাওয়ার কোম্পানি ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। ৫০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৮৬ কোটি ৬৩ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৪০৬ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১৮ কোটি ৬৬ লাখ ৩১ হাজার ৬২৯টি শেয়ার রয়েছে। কোম্পানিটির শেয়ারদর অবস্থান করছে ৬৫ টাকা ৫০ পয়সায়।

শাহজিবাজার পাওয়ারের মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৫৯ দশমিক ২১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ১৬ দশমিক ১৭ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ২৪ দশমিক ৬২ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।

ad
ad

অর্থের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত

সভায় এক্সিকিউটিভ কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খুরশীদ ওয়াহাব, অডিট কমিটির চেয়ারম্যান মোঃ আবদুস সালাম, এফসিএ, এফসিএস, রিস্ক ম্যানেজমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. এম মাসুদ রহমান ও স্বতন্ত্র পরিচালক

৫ দিন আগে

বাড়ল সয়াবিন তেলের দাম

দেশের বাজারে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৬ টাকা ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম প্রতি লিটারে ৩ টাকা বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া প্রতি লিটার পাম ওয়েলের দাম বাড়ানো হয়েছে ১৩ টাকা করে।

৫ দিন আগে

বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় সরকার এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি

পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেনি বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। বরং এটাকে সম্পূর্ণ গুজব ও ভিত্তিহীন ব‌লে সবাইকে সতর্ক থাকার অনুরোধ করা হ‌য়ে‌ছে।

৫ দিন আগে

পুঁজিবাজার— অসময়ে ডিজিটালাইজেশনের আওয়াজে আতঙ্ক

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে পুঁজিবাজারে প্রয়োজন ছিল সাহসী নেতৃত্ব— যিনি বা যারা সময়ের চাহিদা অনুযায়ী বাজারচিত্রে আমূল পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। বর্তমান নেতৃত্ব পুঁজিবাজারবান্ধব নয়। সরকারও পুঁজিবাজার বিষয়ে উদাসীন। অন্তর্বর্তী সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত বিএসইসি চেয়ারম্যানের ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ।

৭ দিন আগে