স্বাধীনতার পতাকা নিয়ে কথা বলায় সাম্যকে হত্যা করা হয়: রিজভী

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ১৫ মে ২০২৫, ১৮: ৫১

স্বাধীনতার পতাকা নিয়ে কথা বলায় সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের রাজনৈতিক কারণ আছে।

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের উদ্যোগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শাহরিয়ার আলম সাম্যকে হত্যার বিচারের দাবিতে মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘মঙ্গলবার রাতে ছাত্রদল নেতা সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। কি অন্যায় করেছিল সে? আমার তো মনে হয় এখানে রাজনৈতিক কারণ আছে। তিনজন ভবঘুরে সাম্যকে কেন হত্যা করবে? কয়েকদিন আগে সে ফেসবুকে শাহবাগে জাতীয় সংগীত বন্ধের জন্য একটা আন্দোলন চলছিল। তার বিরুদ্ধে এবং জাতীয় সংগীতের পক্ষে একটা পোস্ট করেছে। এটাই কি সেই কারণ।’

রিজভী বলেন, ‘আমরা দেখেছি ফ্যাসিবাদী আমলে পার্শ্ববর্তী দেশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে আবরারকে হত্যা করা হয়েছিল। আজকে জাতীয় সংগীত, জাতীয় পতাকা, ৭১ এবং স্বাধীনতার পক্ষে কথা বললে তার জীবন চলে যায়। অর্থাৎ দেশ ও স্বাধীনতার পক্ষে যারা, আগ্রাসনের বিরুদ্ধে যারা, জাতীয় সংগীতের পক্ষে যারা তাদের জীবন চলে যায়। এজন্যই বলছি, নিশ্চয়ই এর পেছনে কোনো রাজনৈতিক কারণ আছে।’

পুলিশের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ভবঘুরেদেরকে গ্রেপ্তার করেছেন, মানুষ এসব বিষয় সহজভাবে নেয় না। সবসময় সত্য এবং ন্যায় অনুসন্ধান করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। আজকে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হাসিনা নেই, দোসররা নেই, রক্তপাত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু তারপরও এই বিশ্ববিদ্যালয়ে হত্যাকাণ্ড হচ্ছে। জানুয়ারি মাসে তফাজ্জল নামে একজনকেও হত্যা করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে থাকবে শান্তির পতাকা। সেখানে কেন রক্তপাত হবে। এটা তো হওয়ার কথা নয়।’

রিজভী আরও বলেন, ‘৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা সবাই একটু স্বস্তিতে থাকতে চেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের শিক্ষক ছাত্ররা নির্বিঘ্নে ক্লাসে যাবে ও ক্লাস থেকে বের হবে। এখন কেন বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অরাজক পরিস্থিতি, ক্যাম্পাসের মধ্যে চলছে তরুণ ছাত্রের লাশ পড়ছে, রক্ত ঝরছে। এখন তো আর আওয়ামী দোসররা নেই। তাহলে এখন কেন লাশ পড়বে? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরের উচিত ছিল প্রথমেই সাম্যর লাশ দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া। কিন্তু তিনি তা করেননি।’

অন্তর্বর্তী সরকারকে উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, ‘আপনাদেরকে আমরা সমর্থন করেছি, এখনো করে যাচ্ছি। কিন্তু এনসিপি যখন যমুনার দিকে যায়, তখন তাদেরকে সাদরে বরণ কর হয়। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছেলেরা তাদের আবাসনের জন্য গেলো, তখন আপনারা তাদেরকে উপহার দিলেন লাঠিচার্জ, টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড। আপনারা তো সুশীল সমাজের লোক। কিন্তু আপনাদের আচরণের মধ্যে এই দ্বিচারিতা-বিভাজন কেন?’

বিএনপির মুখপাত্র বলেন, ‘পুরোদেশ অশান্তিতে ভরে উঠেছে। অনেক ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত চলছে। ফ্যাসিবাদের পতন হয়ে পালিয়ে গেছে, তাদেরকে মদদ দেওয়ার অনেক শক্তি রয়েছে এবং যারা দিচ্ছে। সুতরাং ডানে বামে সবদিকে তাকিয়ে যথাযথভাবে দেশ শাসন করুন। না হলে কেউ রক্ষা পাবেন না। কোনো বিশেষ রাজনৈতিক দল বা কোনো আদর্শকে প্রতিষ্ঠিত করতে গেলে আপনাদেরকে কিন্তু জনগণ ধরে ফেলবে।’

মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুম্মন, ছাত্রদলের সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান আওয়ালসহ উত্তরবঙ্গ ছাত্র ফোরামের বিভিন্ন পর্যায়ে নেতারা।’

ad
Ad

ঘরের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

পরিস্থিতির ঘোলাটে না করে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করুন: তারেক রহমান

তারেক রহমান বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আবারও আহ্বান জানিয়ে বলব— পরিস্থিতি অযথা ঘোলাটে না করে জাতীয় নির্বাচনের সুস্পষ্ট তারিখ ঘোষণা করুন। জনগণের ভোটে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা না করা গেলে পতিত স্বৈরাচারকে মোকাবিলা করা সহজ হবে না।

১৭ ঘণ্টা আগে

জনগণের রোষানলে পড়ার আগেই নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন: ফারুক

সরকার নির্বাচন দিতে একটু পিছপা হচ্ছে উল্লেখ করে বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, সাধারণ জনগণের রোষানলে পড়ার আগে নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। আপনার (প্রধান উপদেষ্টা) মধ্য দিয়েই দেশের মানুষ একটি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। আমরা আপনাকে নিয়ে অহংকার করি, সেই অহংকারকে চূর্ণ-বিচূর্ণ করবেন না।

১ দিন আগে

ইশরাক সমর্থকদের লংমার্চ কর্মসূচিতে পুলিশের বাধা

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসি) মেয়র হিসেবে ইশরাক হোসেনকে শপথ ও দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে সচিবালয় অভিমুখে লংমার্চ কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছে পুলিশ। ব্যারিকেডের কারণে সচিবালয়ের দিকে যেতে পারেননি ইশরাক অনুসারীরা।

১ দিন আগে

বাংলাদেশ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে: আখতার

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগকে আর পুনর্বাসিত করতে চায় না। জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং জাতীয় যুবশক্তিসহ দেশের সব ফ্যাসিবাদবিরোধী পক্ষকে আমি বলতে চাই-মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, ফ্যাসিবাদ, জুলুম ও স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই চালিয়ে যেতে হবে।

২ দিন আগে