সংবিধান পরিবর্তন করতে পারে শুধু নির্বাচিত প্রতিনিধিরা: হাফিজ উদ্দিন

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
আপডেট : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ২১: ৫৮
জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ। ছবি: ফোকাস বাংলা

নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি ছাড়া আর কারও সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, ‘সংবিধান পরিবর্তনের অধিকার শুধু নির্বাচিত প্রতিনিধিদের। কোনো অনির্বাচিত ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর পক্ষে সংবিধানের ওপর প্রভাব বিস্তার করা গ্রহণযোগ্য নয়।’

বৃহস্পতিবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে ঢাকায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের ৩৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, সরকার একটি ‘জুলাই সনদ’ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠিয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক দলের ঐকমত্যে যে সনদ গৃহীত হবে, সেটি নাকি সংবিধানের ওপরে স্থান পাবে। এটি তো কখনো হতে পারে না। সারা পৃথিবীতে সংবিধান প্রণয়ন করে নির্বাচিত প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশেও তাই হয়েছে, ভবিষ্যতেও ইনশাআল্লাহ তাই হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই নেতা বলেন, দেশবাসী একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশায় আছে। অন্তর্বর্তী সরকারের অধীনে সেই নির্বাচন হলে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরাই ভবিষ্যতের সংবিধান নির্ধারণ করবেন।

একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে রণাঙ্গনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে মেজর হাফিজ বলেন, আমি ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটি ব্যাটালিয়নের কমান্ডার ছিলাম। আমার অধীনে ৮০০ সৈনিক ছিল, যাদের অনেকেই ছাত্র। দেড় মাসের প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। তাদের মধ্যে ১০০ জন শহিদ হয়েছে। আজও তাদের মুখ আমার চোখের সামনে ভেসে ওঠে। অথচ এ আত্মত্যাগের যথাযথ মূল্যায়ন এই রাষ্ট্রে হয়নি।

আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে— এমন অভিযোগ তুলে বিএনপির কেন্দ্রীয় এই নেতা বলেন, শেখ হাসিনা তার ফ্যাসিবাদী শাসন দিয়ে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছেন, প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করেছেন। আমরা নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই।

আলোচনা সভায় জামায়াতে ইসলামী ও নতুন গড়ে ওঠা কয়েকটি দলের সমালোচনা করে হাফিজ উদ্দিন বলেন, একটি দল স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, আরেকটি ১৯৪৭-এর বিরোধিতা করেছে। এরা আজ জনগণের মালিক সাজতে চায়। তারা জানে নির্বাচনে তাদের কোনো সুযোগ নেই, তাই শুধু বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখতেই ব্যস্ত।

জামায়াতকে একসময় জোটে নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে এই বিএনপি নেতা বলেন, আমরা এত বছর জামায়াতকে আশ্রয় দিয়েছি। আমাদের প্রতীকে তারা নির্বাচন করেছে। এমনকি তাদের মন্ত্রী বানিয়েছি। অথচ এখন তারাই বিএনপিকে আক্রমণ করছে। তারা আমাদের প্রতি কী বলছে— ‘দুই সাপের একই বিষ, নৌকা আর ধানের শীষ।’ এ জন্য এদের মন্ত্রী বানিয়েছিলাম?

হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, পিআর পদ্ধতি বাংলাদেশের মানুষ চেনেই না। বিদেশি কনসেপ্ট। পাকিস্তানে নাই, ভারতে নাই, যুক্তরাজ্যে নাই, যুক্তরাষ্ট্রে নাই, কোথাও নাই। অনেক দেশে থাকতে পারে, যেখানে গণতন্ত্র অন্যরকম, শিক্ষাব্যবস্থা অন্যরকম, কালচার অন্যরকম। ইসরায়েলে আছে এ ধরনের নির্বাচনব্যবস্থা।

জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান জয়নুল আবেদীন ফারুক, মজিবুর রহমান সরোয়ার, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালসহ অন্যরা।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

তারেকের অনশনের ১২৫ ঘণ্টা পার, ‘কিছু করার নেই’ ইসির

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিবন্ধনের দাবিতে অনশন করছেন আমজনতার দলের সদস্য সচিব মো. তারেক রহমান। আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনের সামনে তার অনশন পেরিয়ে গেছে ১২৫ ঘণ্টা, তথা টানা পাঁচ দিন। তার শারীরিক অবস্থারও অবনতি ঘটেছে। কিন্তু নির্বাচন কমিশন বলছে, ৫০০ ঘণ্টা অনশন করলেও তাদের কিছু করার নেই।

৬ ঘণ্টা আগে

নির্বাচন করবই, পদত্যাগের সিদ্ধান্ত পরে: আসিফ

উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘এখন নিশ্চিতভাবেই বলছি, আমি নির্বাচন করব।’ পদত্যাগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কবে নাগাদ পদত্যাগ করব, এটা এখনো ঠিক হয়নি। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে।’

৭ ঘণ্টা আগে

সমঝোতার গুঞ্জন, ঢাকা-১০ আসনের ভোটার হচ্ছেন আসিফ মাহমুদ

সম্প্রতি গুঞ্জন উঠছে, বিএনপির সঙ্গে আসন সমঝোতা হলে সরকার থেকে পদত্যাগ করে ঢাকা-১০ আসনে নির্বাচন করতে পারেন আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। এখন আসিফ মাহমুদের এই আসনের ভোটার হতে যাওয়ার মধ্য দিয়ে গুঞ্জনটি আরও পাকাপোক্ত হচ্ছে।

১০ ঘণ্টা আগে

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে তরুণদের অপরাধীকরণ আদালত পর্যন্ত গড়াবে

জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কাঠামো এখনো পুরনো ক্ষমতাকেন্দ্রিক গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তিনি সতর্ক করে বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়িত না হলে তরুণদের ‘ক্রিমিনালাইজেশন’ কেবল বক্তব্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না, তা আদালত পর্যন্ত গড়াব

১ দিন আগে