ইউনূস-তারেক বৈঠকে বিচার-সংস্কার প্রাধান্য না পাওয়ায় ‘হতাশ’ হাসনাত

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ১৪ জুন ২০২৫, ০০: ৪১
হাসনাত আব্দুল্লাহ। ফাইল ছবি

লন্ডনে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যেকার বৈঠককে ইতিবাচক হিসেবেই দেখছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তবে এ বৈঠকে বিচার ও সংস্কার প্রাধান্য পায়নি অভিযোগ করে হতাশাও জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার (১৩ জুন) বাংলাদেশ সময় দুপুর ২টার দিকে লন্ডনের পার্ক লেনের হোটেল ডোরচেস্টারে বহুল আলোচিত এ বৈঠক শুরু হয়। পরে রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এ বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান হাসনাত।

অধ্যাপক ইউনূস ও তারেক রহমানের ওই বৈঠকের পর সরকার ও বিএনপির যৌথ এক বিবৃতিতে জানানো হয়, বৈঠকে তারেক রহমান আগামী বছরের রমজানের আগেই তথা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রস্তাব দেন। জবাবে প্রধান উপদেষ্টা জানান, বিচার ও সংস্কার কার্যক্রমের পর্যাপ্ত অগ্রগতি হলে ও প্রস্তুতি শেষ করা গেলে এ সময়ে নির্বাচন আয়োজন করা যেতে পারে।

এ বৈঠক নিয়ে প্রতিক্রিয়ায় হাসনাত আব্দুল্লাহ লিখেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে আমরা ইতিবাচকভাবে দেখি। জাতীয় ঐক্যমত্যের প্রশ্নে, দেশের স্বার্থে সরকারের সঙ্গে সব রাজনৈতিক দলের এমন সুসম্পর্কই কাম্য।

তবে বৈঠক নিয়ে হতাশার কথাও জানিয়েছেন হাসনাত। লিখেছেন, হতাশার বিষয়— বৈঠকে নির্বাচনের মাস ও তারিখ যেভাবে গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ আকাঙ্ক্ষা বিচার ও সংস্কার সেভাবে প্রাধান্য পায়নি। এ সরকার শুধু নির্বাচন দেওয়ার জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কোনো রূপ নয়, বরং একটি অভ্যুত্থানের ওপর দাঁড়িয়ে, দেশের মানুষের অসংখ্য ত্যাগের ওপর দাঁড়িয়ে জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কাছে দায়বদ্ধ একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।

জাতীয় নির্বাচনের জন্য কিছু পূর্বশর্ত রয়েছে উল্লেখ করে হাসনাত বলেন, জুলাই মাসের মধ্যে জুলাই ঘোষণাপত্র ও জুলাই সনদ, মৌলিক সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং নির্বাচনকেন্দ্রিক প্রয়োজনীয় সংস্কার সাধন নির্বাচনের পূর্বশর্ত। জুলাই সনদের আগে নির্বাচনের মাস আর তারিখ নিয়ে কথা বলা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়বদ্ধতা ভুলে যাওয়ার নামান্তর। সনদ রচনার পরেই নির্বাচন বিষয়ক আলোচনা চূড়ান্ত হওয়া উচিত।

নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের গুরুত্বও তুলে ধরেছেন হাসনাত। তিনি লিখেছেন, দেশের স্থানীয় পর্যায়ে এরই মধ্যে চাঁদাবাজি, দখলদারিত্ব, প্রশাসনকে প্রভাবিত করা, পেশী শক্তির প্রদর্শনসহ ক্ষমতার অপব্যবহারের নানা দৃষ্টান্ত প্রতিনিয়ত দৃশ্যমান হচ্ছে‌। এ অবস্থায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ নির্বাচনের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করা। এটি নির্বাচনের অন্যতম আরেকটি পূর্বশর্ত।

বিচার ও সংস্কারে গুরুত্ব দিয়ে হাসনাত লিখেছেন, নির্বাচনের মাস এপ্রিল কিংবা ফেব্রুয়ারি যেটাই হোক না কেন, তার চেয়ে মুখ্য বিষয় হচ্ছে নির্বাচনের আগে জুলাই সনদ, দৃশ্যমান বিচার ও মৌলিক সংস্কার গুলো হচ্ছে কি না।

ad
ad

ঘরের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

লন্ডন থেকে ঢাকার পথে প্রধান উপদেষ্টা

চার দিনের সরকারি সফর শেষে দেশের উদ্দেশে লন্ডন ত্যাগ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার (১৩ জুন) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে তিনি হিথ্রো আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হন। তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার উপ-প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদা

১৬ ঘণ্টা আগে

নির্বাচন প্রশ্নে সরকার একটি দলকে প্রাধান্য দিচ্ছে: এনসিপি

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বৈঠকে নির্বাচনের তারিখ সংক্রান্ত আলোচনা যতটুকু গুরুত্ব পেয়েছে, অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে নাগরিকদের প্রধান দাবি তথা বিচার ও সংস্কার ততটুকু গুরুত্ব পায়নি। এটি অত্যন্ত হতাশাজনক বলে মনে করে এনসিপি। তার ওপর নির্বাচন প্রশ্নে সরকার কেবল একটি রাজনৈতিক দলের অবস্থান ও দাবিকেই বেশি প্রাধ

১ দিন আগে

যে বৈঠকে বিজয়ী বাংলাদেশ

তিনি বলেন, পুরো বাংলাদেশের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তির সংযোগ ঘটিয়ে, এপ্রিলের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত সময় থেকে সরে এসে নির্বাচনের জন্য একটি যৌক্তিক সময়সীমা নির্ধারণের জন্য প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনুসকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। তিনি জনগণের প্রত্যাশা উপলব্ধি করে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য।

১ দিন আগে

স্থিতিশীল পরিবেশ বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি : জোনায়েদ সাকি

তিনি আরো বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সম্প্রতি যে আলোচনাগুলো হচ্ছে, আজ লন্ডনে যে বৈঠক হলো তা ইতিবাচক, আমরা এই আলোচনার উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। ঈদের আগে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের পর আমরা বলেছি, বিভিন্ন বিষয় বিবেচনায় এপ্রিলের শুরুতে নির্বাচনের সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

১ দিন আগে