জুলাইয়ের ছাত্র-জনতা ‘মব’ নয়: উপদেষ্টা মাহফুজ আলম

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ০৪ জুলাই ২০২৫, ০১: ০০
মাহফুজ আলম। ফাইল ছবি

জুলাইয়ের ছাত্র-জনতা কোনো ‘মব’ নয় বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। বলেছেন, ১৬ বছরের গণতন্ত্রহীনতা এবং আইনের শাসনের অবক্ষয় যে মব মানসিকতার জননী। মব ভায়োলেন্স প্রতিরোধে প্রয়োজন ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ, আইনের শাসন এবং কার্যকর ও জবাবদিহিমূলক গণতন্ত্র।

বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাহফুজ পোস্টে লিখেছেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম ‘মব ভায়োলেন্স’ শুরু হয়েছিল বিহারি জনগোষ্ঠীর ওপর হামলার মধ্য দিয়ে। এরপর মব টার্গেট হয়েছে ছাত্র ও তরুণ মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যেকার মুজিববাদবিরোধীরা তাদের ওপর। গত ৫৩ বছরে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর মব ভায়োলেন্স হয়েছে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যক্ষ ইন্ধনে।

‘জনতার আদালত’, ‘জনতার মঞ্চ ৯৬’, ‘২৮ অক্টোবর’ ও ‘শাহবাগ আন্দোলন’ ‘সংজ্ঞা অনুযায়ী’ মব জাস্টিস বা মব ভায়োলেন্সের আওতায় পড়ে বলে লিখেছেন মাহফুজ। বর্তমান সামাজিক ফ্যাসিবাদকে গত ১৬ বছরের রাজনৈতিক ফ্যাসিবাদের প্রতিক্রিয়া ও বিকার হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। বলেছেন, এটি না বুঝে সামাজিক ফ্যাসিবাদ ও মব মানসিকতা মোকাবিলা করা অসম্ভব।

মাহফুজ লিখেছেন, ইসলামোফ্যাসিস্ট বলেই এ সমস্যার সমাধান হবে না। বরং জুলাই যে ক্রস-ইডিওলজি ডায়ালগের সুযোগ তৈরি করেছে, সেটাকে কাজে লাগিয়ে এ সামাজিক ফ্যাসিবাদ দূর করতে হবে। এ ছাড়া গত ১৬ বছরের গণতন্ত্রহীনতা এবং আইনের শাসনের অবক্ষয় যে মব মানসিকতার জননী, সে নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হবে।

গত কয়েক মাসে রাজনৈতিক ও সামাজিক ফ্যাসিবাদের অংশীদার না হয়েও মব ভায়োলেন্সের দায় জুলাইয়ের বিপ্লবী ছাত্র-জনতাকে নিতে হচ্ছে বলে আফসোস করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। লিখেছেন, যদি জুলাইয়ের পর সত্যিকার অর্থেই মব সভায়োলেন্স সংঘটিত হতো, তাহলে এত ‘সুশীলতা’ ও ‘অ্যাপলজেটিক’ ভাষা ব্যবহার করা হতো না।

মাজার বা বইমেলায় হামলার মতো মব-সংক্রান্ত ঘটনায় আগেও কথা বলেছেন, ভবিষ্যতেও বলবেন বলে জানান মাহফুজ। একই সঙ্গে অভিযোগ করেন, বর্তমানে অনেকেই আওয়ামী লীগের মতো করে জুলাই আন্দোলনকে মবের সঙ্গে তুলনা করছেন।

মাহফুজ লিখেছের, উদ্বেগের বিষয় হলো— জুলাই বিপ্লবকে এখন মুজিববাদী বাম এবং লীগের কালচারাল গুন্ডারা জুলাই পরবর্তী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির সঙ্গে মিলিয়ে এমনভাবে পোর্ট্রে করছে, যেন জুলাই বিপ্লব শেখ মুজিবের নাতি জয়ের কথামতো মবোক্রেসি ছিল। মবোক্রেসি হইলে জুলাইয়ের বিপ্লবী ছাত্র-জনতা পুলিশ-আনসার বিহীন দেশকে এক-দেড় মাস নিরাপদ রাখত না।

‘সাজানো স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী ওবায়দুল কাদেরকেও ছাত্র-জনতা বাঁচিয়ে দিয়েছিল। এ স্ক্রিপ্ট বিশ্বাসযোগ্য হবে বলে স্ক্রিপ্টরাইটাররা ভেবেছেন এ জন্যই যে বিপ্লবী ছাত্র-জনতা প্রতিশোধপরায়ণ ছিল না,’— পোস্টে লিখেছেন মাহফুজ।

জুলাইয়ে ছাত্র-জনতাকে মব বলে বিষোদ্গার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে জুলাই আন্দোলনের অন্যতম এই নেতা লিখেছেন, আইনের ব্যত্যয় ঘটলে, সাম্প্রদায়িক কিংবা রাজনৈতিক সহিংসতা ঘটলে আইনের আশ্র‍য় নিন। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় জুলাই বিপ্লবের পক্ষের ছাত্র-জনতাকে দায়িত্বশীল আচরণ করতে হবে। কিন্তু মুজিববাদ ও আধিপত্যবাদ মোকাবিলায় প্রতিরোধ গড়ে তুলতে আপনাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন।

‘জুলাই’ ও ‘লড়াই’ শব্দ দুটিকে সমার্থক অভিহিত করে মাহফুজ লিখেছেন, আমরা কারবালা পার হইতে পারি নাই, এটাই সত্য।

ad
ad

ঘরের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

তিন দফা দাবিতে বৃষ্টিতে ভিজেই রুয়েট শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারদের প্রতি বৈষম্য নিরসন ও চাকরিতে সমান সুযোগ নিশ্চিত করাসহ তিন দফা দাবিতে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে টানা বৃষ্টির মধ্যেই রাজশাহী নগরের তালাইমাড়ি মোড় অবরোধ করে এ কর্মসূচি পালন করেন তারা।

১ দিন আগে

‘জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া এনসিপি নির্বাচনে যাবে না’

জুলাই সনদ শুধু একটি ঘোষণাপত্র নয় উল্লেখ করে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, এটি হলো রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিবর্তনের রূপরেখা। এই সনদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত আমরা কোনো নির্বাচনে অংশ নেব না।

১ দিন আগে

পিআর পদ্ধতি দেশের রাজনীতিতে গ্রহণযোগ্য নয়: এ্যানি

শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, পিআর পদ্ধতি সম্পর্কে তারেক রহমান স্পষ্টভাবে বলেছেন, পৃথিবীর অনেক দেশেই পিআর পদ্ধতি আছে। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এটা সম্ভব না। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এই মুহুর্তে আমরা যদি সেই পিআর পদ্ধতিতে যাই তাহলে নিজেদের মধ্যে একটি বড় ধরনের বিভেদ-বিভাজন তৈরি হবে। ফ্যাসিস্ট এখা

১ দিন আগে

আনুপাতিক ভোটে নেতা তৈরি হবে না: রিজভী

রিজভী আরও বলেন, একজন মানুষ দীর্ঘদিন এলাকায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করতে করতে নেতা হন। অথচ আনুপাতিক ভোটে তাকে নয়, দলকে ভোট দিতে হবে। এরপর দল থেকে বাছাই করে এমপি ঘোষণা করা হবে। তাহলে তো আরও বেশি স্বৈরশাসনের দিকে ঠেলে দেওয়া হবে। স্থানীয় পর্যায়ে আর কোনো নেতৃত্ব থাকবে না, স্থানীয় পর্যায়ে আর কেউ নিজেকে

১ দিন আগে