ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলে নির্বাচন হওয়া উচিত : শফিকুর রহমান

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম

দেশের আবহাওয়া ও অবস্থার দিকে তাকিয়ে ফেব্রুয়ারি কিংবা এপ্রিলে নির্বাচন হওয়া উচিত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।

শনিবার (৩ মে) সকালে ঢাকার মগবাজারে আল-ফালাহ মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর জেলা ও মহানগরী আমির সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াত আমির বলেন, ‘আমরা দুটি সময়কে উপযুক্ত মনে করি। একটি ফেব্রুয়ারিতে রোজার আগে। তবে যদি এ সময়ের মধ্যে সংস্কারগুলো এবং বিচারের দৃশ্যমান প্রক্রিয়া জনমনে আস্থা সৃষ্টির পর্যায়ে না আসে তাহলে সর্বোচ্চ এপ্রিল পার হওয়া উচিত না। এখানে আমাদের দেশের আবহাওয়া এবং পারিপার্শ্বিকতার বিষয় আছে। ফেব্রুয়ারি মাসের শেষ এবং মার্চ মাসের তিন ভাগের দুই ভাগ রোজা থাকবে। সে সময়ে নির্বাচন সম্ভব নয়।’

তিনি বলেন, সংস্কার কার্যক্রম যেটা হাতে নেওয়া হয়েছে তা যদি আক্ষরিকভাবেই গতিশীল করা হয় এবং অংশীজনরা সেরকম সহযোগিতা করেন তাহলে সরকারের ঘোষিত সময়ের মধ্যে সংস্কার করে নির্বাচন সম্ভব। ফ্যাসিবাদের পতন হলো নাকি ফ্যাসিবাদীদের পতন হলো তা নিয়েও আমাদের চিন্তা করতে হচ্ছে। আমাদের দুঃখের ইতিহাসে জাতি হিসেবে আমরা এখনো ইতি টানতে পারিনি।

জামায়াত আমির বলেন, ২০১১ সালের এপ্রিল মাসের পর এমন একটি সম্মেলন একত্রে বসে করার সুযোগ পাইনি। ২০০৯ থেকে শুরু করে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আওয়ামী লীগ ও তাদের সঙ্গীরা দেশকে শাসন এবং শোষন করেছে। তারা এ দেশের বিরোধী দল-মত বিশেষ করে ইসলামপন্থিদের ওপর বিভিন্নভাবে তাণ্ডব চালিয়েছে। কমপক্ষে তিনটি গণহত্যা তারা চালিয়েছে। প্রথমটি তৎকালীন বিডিয়ারদের হেডকোয়ার্টারে পিলখানায় ৫৭ জন চৌকস দেশপ্রেমিক সেনাদের হত্যা করে। এরপরের হত্যা হয়েছে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে। হেফাজতের আহ্বানে সমাবেশে রাতের বেলায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে ঘুটঘুটে অন্ধকারে মানুষগুলোকে হত্যা করা হয়েছে। আরেকটি গণহত্যা ২০২৪ এর জুলাই মাসের অর্ধেক ও আগস্টের ৫ তারিখ পর্যন্ত। এতে শহীদ হয়েছে অনেকে, পঙ্গু হয়ে আছে অনেকজন।

জামায়াত আমির বলেন, ৫ আগস্টের পর দেশে কার্যত কোনো সরকার ছিল না। আমরা আমদের দলীয় সহকর্মীদের অনুরোধ করেছিলাম, সবাই যেন ধৈর্য ধরে, শান্ত থাকে। এর পাশাপাশি আমরা সাধারণ মানুষকেও আহ্বান জানিয়েছি। অন্যান্য দলও সেই আহ্বান জানিয়েছে। অন্যান্য দেশে এ সময়ে যা ঘটেছে তার তুলনায় তেমন কিছুই ঘটেনি। যা ঘটেছে তাও আমরা সমর্থন করি না। সেদিনই আমরা বলেছিলাম, আমরা আইন হাতে তুলে নেবো না। প্রতিকার চাইতে হবে আইনি প্রক্রিয়ায়।

আমাদের সহকর্মীরা এই ডাকে সাড়া দিয়েছে। কিছু জায়গায় এমন ঘটলেও সে জায়গায় আমরা চেহারার দিকে না দেখে ব্যবস্থা নিয়েছি। এরপর আমাদের শহীদ পরিবার ও আহতদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। আহতদের জন্য অনেক বেশি করতে পারিনি। তবে তাদের জন্য যতটুকু পেরেছি তা করেছি, এর বাইরে সরকারকে চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রেখেছি। এরপর থেকে ফেনীতে যে বন্যা হয়েছে সেখানে আমরা শুরু থেকে অবস্থানের চেষ্টা করেছি। আমাদের চেষ্টায় যদি কিছুটা হলেও তাদের সান্ত্বনার কারণ হয় তার জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া।

বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামী একটি কল্যাণ রাষ্ট্র গঠন করতে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ জন্য যেখানে জনগণের ভোগান্তি সেখানে সবার আগে সাড়া দেওয়া হয়তো সবসময় সম্ভব হয় না।

আওয়ামী লীগের পতনের পর দেশে আইনশৃঙ্খলা যাতে বিঘ্ন না ঘটে এবং যে ধরনের ভয়াবহতা বন্ধে জামায়াত ইসলাম কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের ভলান্টিয়ার ভাইয়েরা সে সময় যারা মাঠে ছিল তারা টানা ১৫ দিন অমুসলিমদের বাড়িঘর, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, যে চেয়েছে তার ব্যবসা আমরা রক্ষা করেছি। এর পাশাপাশি মাদরাসার ছাত্র ও শিক্ষকরা এগিয়ে এসেছেন। অন্যান্য কিছু সংগঠনের লোকদেরও আমরা দেখেছি।

এ সময় যারা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করেছে তাদের শাস্তির আওতায় আনার কথা বলেছি। এছাড়া সাড়ে ১৫ বছরের সময় ধরে যারা হত্যা, গণহত্যা গুম, খুন, ধর্ষণ করেছে, দেশের মানুষের অর্থ বিদেশে পাচার করেছে তাদের যাতে আইনের আওতায় আনা হয় তার দাবি আমরা পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কাজ করে যাবো। তাদের প্রাপ্য শাস্তি অবশ্যই ভোগ করতে হবে। এই সরকার জন-আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে গঠিত হয়েছে। তাদের সহযোগিতা করছি৷ তবে এর মাঝে সরকারের কিছু উপদেষ্টা অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করছেন। যা থেকে তাদের দূরে থাকার আহ্বান জানাই।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

এনসিপির যুগ্ম সদস্য সচিব মাহিন সরকারকে বহিষ্কার

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বিস্তারিত কোমো তথ্য দেওয়া হয়নি। তবে মাহিন সোমবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের জন্য স্বতন্ত্রদের একটি প্যানেল 'ডিইউ ফার্স্টে'র হয়ে সাধারণ সম্পাদক (জিএস) হিসাবে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন।

১৭ ঘণ্টা আগে

ডাকসুর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ ও জমার সময় বাড়ল

বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, এই নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহীরা মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) বিকেল ৫টা পর্যন্ত মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে পারবেন। মনোনয়ন ফরম জমা দিতে পারবেন বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

১৮ ঘণ্টা আগে

ডাকসু নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত হয়নি : ছাত্রদল

তিনি বলেন, ‘আজকে ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সংসদ এবং কেন্দ্রীয় ডাকসুর মনোনয়ন ফরম সংগ্রহের শেষ দিন। তারই ধারাবাহিকতায় ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের ছাত্রদলের কিছু শিক্ষার্থী এবং কিছু সাধারণ শিক্ষার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করতে যায় বিকাল সাড়ে ৩টার পরে। ঠিক সেই সময় ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের একদল উগ্র শ

১৯ ঘণ্টা আগে

ডাকসু নির্বাচন— কোন প্যানেলে ভিপি-জিএস প্রার্থী কারা

এর বাইরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পরিচিতমুখ উমামা ফাতেমার নেতৃত্বে রয়েছে একটি স্বতন্ত্র প্যানেল। ‘ডাকসু ফর চেঞ্জ’ স্লোগান নিয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা লড়বেন আরেকটি প্যানেল নিয়ে। রয়েছে আরও কিছু স্বতন্ত্র প্যানেল, যেগুলো এখনো চূড়ান্ত হয়নি।

২১ ঘণ্টা আগে