বিবিসি বাংলা
বাংলাদেশে নতুন করে জঙ্গি তৎপরতার প্রসঙ্গ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া ও পাকিস্তান জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সামনে আনার পর আবারও আলোচনায় এসেছে এই ইস্যু।
গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একদিকে যেমন জঙ্গিবাদের মামলায় অভিযুক্ত বহু আসামির জামিন হয়েছে, অন্যদিকে সেই একই জঙ্গিবাদ ইস্যুতে নতুন করে মামলা-গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে।
দেশের ইসলামপন্থি দল ও সংগঠনগুলোর নেতাদের কেউ কেউ একে নতুন 'নাটক' হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নিয়ে পুলিশ প্রশাসন ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে চিন্তা-ভাবনায় একটা বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের অস্তিত্বই অস্বীকার করেছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনেক কিছুতেই 'জঙ্গি' তকমা দেওয়ার একটা প্রবণতা দেখা গেছে বলে সমালোচনা রয়েছে। এখন আবার রাষ্ট্রীয় বয়ানে দেশে 'জঙ্গিবাদের কোনো অবস্থান নেই' এবং 'অতীতের সবকিছুই ছিল নাটক' এ রকম ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা লক্ষ্যণীয়।
বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে হলি আর্টিজানে হামলা হয়েছে। বিদেশি নাগরিক, ব্লগার, প্রকাশকদের হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা, আদালতে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ রকম বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলায় আন্তর্জাতিক সংগঠনকে দায় স্বীকার করতেও দেখা গেছে। আবার জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নাম করে বেশকিছু ঘটনায় নাটকীয়তা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করছেন নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল।
তার ভাষায়, বাংলাদেশে 'জিহাদি সন্ত্রাসবাদ' ছিল – এটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই, যদিও অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় 'জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নামে গুম ও হত্যা হয়েছে।'
তিনি বলেন, হোলি আর্টিজানে হামলার যে দায়িত্ব স্বীকার, সেটা একেবারে আইসিসের হেডকোয়ার্টার রাক্কা থেকে হয়েছে।
"তখন ভিডিও রিলিজ করেছে, যেটাকে আমরা বলি প্রুফ অব প্রেজেন্স। মানে এই দলটা ওই জায়গায় উপস্থিত ছিল, তারাই ঘটনাটা ঘটিয়েছে। সকল প্রুফ আইসিসের কাছেই আমরা দেখেছি। অস্তিত্ব নেই এটা তো বলা যাবে না।"
"আরেকটা গ্রুপ হলো আল কায়েদা। আল কায়েদার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি যে, বাংলাদেশে অনেক লেখক, ব্লগার বা পাবলিশার – তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং সেটারও দায়িত্ব স্বীকার করা হয়েছে কিন্তু আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ তাদের অফিসিয়াল চ্যানেল থেকে," বলেন তাসনিম খলিল।
যারা জিহাদের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে বা জিহাদের মাধ্যমে শরিয়া আইন কায়েম করতে চায়, তারা অবস্থানগতভাবে এখন ভালো আছে বলে মনে করেন তাসনিম খলিল। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, "এক সময় যে ধরনের প্রেশারের মধ্যে তারা ছিল সেই প্রেশারটা এখন নেই।"
"এটাও বলতে হবে যে, এই প্রেশারটা না থাকার কারণে বাংলাদেশে একেবারে জিহাদি গ্রুপগুলোর আবার নতুন করে উত্থান ঘটেছে, এটাও না। প্রবণতাটা আমি যেটা দেখছি যে, আগে আল কায়েদার সাথে জড়িত ছিল বা আগে আইসিসের সাথে জড়িত ছিল, এই ধরনের মানুষগুলো এখন চেষ্টা করছে মেইনস্ট্রিম পলিটিক্সে চলে আসতে। যেটার কিছু নমুনা আমরা সাম্প্রতিককালে দেখেছিও।"
৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মামলায় শত শত আসামি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে হত্যা মামলার কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিও রয়েছেন।
জামিনে মুক্ত আলোচিত একজন মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী। তিনি আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে একটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে অভিযুক্ত ছিলেন। যদিও ওই সংগঠনের অস্তিত্ব নেই বলে দাবি তার।
জসীম উদ্দিন আরও দাবি করেন, "অতীতে জঙ্গিবাদের তকমা দিয়ে নাটক সাজানো হয়েছে।"
তবে কারাগারে থাকাকালীন "কিছু উগ্র সংগঠনের অস্তিত্বের প্রমাণও" পেয়েছেন বলে জানান তিনি
"আজ খুঁজে দেখা দরকার যেই লোকগুলো মৌলভীবাজারে গিয়ে হিজরত করেছিল, ইমাম মাহমুদের কাফেলা, এসব লোকেরা কিন্তু সশস্ত্র যুদ্ধ করার জন্য অলরেডি তৈরি হয়ে চলে গেছে। এই লোকগুলো কোথায়, এদের বর্তমান কর্মকাণ্ড কী সেগুলো নিয়ে আলোচনা নাই।"
"আলোচনা হচ্ছে কী? যারা প্রকাশ্যে বক্তব্য দিচ্ছে, মিছিল মিটিং করছে (তাদের নিয়ে)। যদি আমি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাজ করছে তো সেই লোকগুলোকে জঙ্গি তকমা দেওয়া হচ্ছে" বলেন জসীম উদ্দিন।
সম্প্রতি জঙ্গিবাদ মামলায় নতুন করে আসামি করা প্রসঙ্গে জসীম উদ্দিন রাহমানী বলেন, "দেখেন, এখন যাদের নামে জঙ্গি মামলা হয়েছে, এতে প্রকৃত অপরাধীদের পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। যারা সত্যিকারে উগ্রপন্থি, সশস্ত্র জিহাদের চিন্তায় আছেন, তারা অগোচরে থেকে যাচ্ছে।"
"যারা বিভিন্ন রকমের যুবকদের বিভ্রান্ত করছে, ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে, গোমরা করছে, পথভ্রষ্ট করছে- এই লোকগুলো কিন্তু পার পেয়ে যাচ্ছে। আমার কথা হচ্ছে সরকারের উচিত এই ধরনের যারা খুচরা খুচরা দল করে, গরিব-অসহায় মানুষকে অশিক্ষিত মানুষদেরকে নিয়ে হিজরত করতে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে আস্তানা গাড়ে – এই লোকগুলো ধরো", যোগ করেন তিনি।
গত ৫ জুলাই, সাভার থানায় জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে একটি মামলা হয় ও দুইজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে জঙ্গিবাদ ইস্যুতে এটি প্রথম মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা।
ওই মামলায় ছয়জন আসামির মধ্যে একজন ইসলামী আন্দোলনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, "অতীতে বিদেশিদের খুশি করার জন্য জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছিল। ইদানিংকালে এরকম একটা আভাস আমরা পাচ্ছি।"
"কয়েকদিন আগে এরকম একটা জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছে। সেখানে কয়েকজনকে আসামিও করা হয়েছে। তার মধ্যে আমাদেরই সহযোগী সংগঠন, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ কালিমা পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল, তার নামটাও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।"
"হঠাৎ করে এই জঙ্গি নাটক আবার শুরু হলো। এজন্য আমরা শঙ্কিত, আতঙ্কিত। যদি সেই পূর্বের ধারায় আবার চলতে থাকে দেশ, আবার দেশ অস্বস্তিতে ভরে যেতে পারে। অনেক নিরপরাধ লোক হয়রানির শিকার হবে। এটা আমরা চাই না", বলেন ইউনুছ আহমাদ।
দলীয় অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, "যদি কেউ আসলে দোষী থাকে, যেটা দেশের জন্য, স্বার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি, এগুলো আবিষ্কার হোক। কিন্তু অযথা হয়রানি করার জন্য কিছু না হোক, এটা আমাদের কথা। প্রকৃত দোষী হলে তার বিচার হতে পারে।"
ইউনুছ আহমাদ আরও বলেন, "কিছুদিন আগেও আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় বলেছেন আমাদের দেশে জঙ্গি নাই। স্পষ্ট বলেছেন জনসমক্ষে, মিডিয়ার সামনে বলেছেন। তাহলে সাংঘর্ষিক হয়ে গেল। তিনি বলেন যে জঙ্গি নাই, এরপর আবার জঙ্গি নাটক সাজানো হয়, জঙ্গি মামলা দেওয়া হয় – এই সাংঘর্ষিক অবস্থান নেওয়া হলে দেশে আবার অস্বস্তির পরিবেশ তৈরি হবে, আমরা এটা চাই না।"
বাংলাদেশ জিহাদী তৎপরতার জায়গা নয় বলে মনে করে ইসলামি দলগুলো এবং নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি ও ভোটের মাধ্যমেই ইসলাম কায়েমের স্বপ্ন দেখে বলে জানান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।
তিনি বলছেন, "জিহাদের নামে বিশৃঙ্খলা অনেকে তৈরি করে। আমাদের অ্যানালাইসিস হলো – যতটা না স্বতপ্রণোদিত হয়ে মুসলমান ইয়াং-আবেগি তরুণরা এটা করে, তার চেয়ে অনেক বেশি এটা করে যারা মুসলিম জাগরণকে রুখে দিতে চায়। তাদের পক্ষ থেকে একটা স্যাবোটাজ হয়ে থাকে।"
অতীতে হামলার ঘটনা সম্পর্কে মূল্যায়ন তুলে ধরে মামুনুল হক বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী যারা ইসলামের মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন, সেই ধরনের কিছু কার্যক্রম তারা বিশ্বব্যাপী পরিচালনা করেছে। সেই কার্যক্রমের "ছিঁটেফোটা অংশ, যারা ইসলামের মূল ধারা বা আলেম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন, বিশেষ করে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থী, তারা এইক্ষেত্রে সংযুক্ত হয়েছে, এমন ঘটনা আছে।"
"আমরা মনে করি, ওয়ার অন টেররের যে ঘোষণা ছিল, এই সবগুলোই একটার সাথে আরেকটা নাটকীয়ভাবে জড়িত," বলেন তিনি।
সাম্প্রতিক মামলার প্রসঙ্গ এনে মামুনুল হক বলেন, "সর্বশেষ ঘটনায় আমরা একটু সন্দেহ যে, এই ঘটনাটা সরকার কী উদ্দেশ্যে বা কোন প্রমাণ বা দলিলের ভিত্তিতে করলেন। মামলা পর্যন্ত গড়ালো, অথচ এখানে সর্বজনস্বীকৃত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গকে এইটার সাথে জড়িত করা হয়েছে। এটাকে আমরা কোনোভাবেই ভালো চোখে দেখছি না।"
মামুনুল হক জানান, জিহাদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কেউ যেন কাউকে কোনোভাবেই সন্ত্রাসবাদে জড়াতে না পারে সে ব্যাপারে ইসলামী সংগঠনগুলো তৎপর আছে।
"রাষ্ট্র এবং সরকারকে আমাদের এই উদাত্ত আহ্বান যে, তারাও যেন এইভাবে কোনো পাতা ফাঁদে পা না দেয়। জঙ্গি নাটকের যে কার্ড, এটা বিগত সরকারের একটা কার্ড ছিল। এর মাধ্যমে ইসলামি আন্দোলনকে, ইসলামি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ঘায়েল করার অপচেষ্টা তারা অব্যাহতভাবে চালিয়েছে। সেই ধরনের কোনো কিছু যদি বর্তমান সরকারও করে তাহলে এটা তাদের জন্য বুমেরাং হবে বলে আমি মনে করি।"
জামায়াতে ইসলামী বলছে, অতীতে জঙ্গিবাদী হামলায় তাদের কর্মীরা ভিকটিম হয়েছে।
দলটির অবস্থান হলো, অতীতে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গিবাদের নামে কিছু সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছে, যাতে করে ইসলাম, ইসলামি আদর্শ এবং ইসলামি আন্দোলনকে বিতর্কিত করা যায়।
দলের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, "জামায়াতে ইসলামীর একজন আইনজীবী, একজন সাংবাদিকসহ ছয়জন লোক জীবন দিয়েছে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে। সুতরাং জামায়াতের অবস্থান হলো জঙ্গিবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে।"
"এই প্রেসক্রিপশনটা মূলত একটা বিশেষ দলের, যারা দীর্ঘ সাড়ে পনের বছর দেশ শাসন করেছে এবং আরেকটি দেশের, যারা ওই সরকারকে সমর্থন দিয়েছেন তাদের। তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে বার বার জঙ্গিবাদের নাটক হয়েছে বাংলাদেশে।"
মতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। "বর্তমানে একটা নরমাল পরিবেশ, ইতোমধ্যে কিন্তু কোনো জঙ্গিবাদের ঘটনা ঘটে নাই।"
ইসলামপন্থি দলগুলো এবং সরকারের নীতি নির্ধারকেরা বর্তমানে জঙ্গিবাদ ইস্যুতে "কোনো উদ্বেগ নেই" বলে মনে করেন। এর পেছনে কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গত এক বছরে তাদের দৃষ্টিতে "জঙ্গিবাদী বড় কোনো হামলা হয়নি"।
অবশ্য এ পরিস্থিতিকে ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে বিশ্লেষণ করেন তাসনীম খলিল।
"ফর এগজাম্পল, একটা হলো যে, নারীরা এখন ঘর থেকে বের হতে বিব্রতবোধ করেন বা আতঙ্ক বোধ করেন। এটা তো সন্ত্রাসবাদীরা করছেন না। এখন তো এটা মব হয়েছে।"
তিনি বলেন, "এখন জিহাদি-সন্ত্রাসবাদীদের খুব একটা অ্যাকটিভ হওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না।"
"ঢাকা শহরে প্রকাশ্যে সমাবেশ করে নারীদের গালি দেওয়া হয়। সেখানে রাজনৈতিক দলের নেতারা যান, পত্রিকার সম্পাদকরা সেখানে যান, গিয়ে এসবের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।"
"এখন তো মেইনস্ট্রিমেই এই ধরনের কদর্য ধারণাগুলো চলে এসেছে, তখন তো সন্ত্রাসবাদীদের আসলে ওইভাবে আলাদা করে অপারেশন করার প্রয়োজন পড়ে না। তবে হ্যাঁ, ওনারা আছেন। এখনো আমার মনে হয় অ্যাকটিভ আছেন। সামনে কী হয় এটা আসলে বলার এখনো সময় আসেনি" বলে মনে করেন তাসনীম খলিল।
বাংলাদেশে নতুন করে জঙ্গি তৎপরতার প্রসঙ্গ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সম্প্রতি বাংলাদেশি নাগরিকদের বিরুদ্ধে মালয়েশিয়া ও পাকিস্তান জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ সামনে আনার পর আবারও আলোচনায় এসেছে এই ইস্যু।
গত বছর শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর একদিকে যেমন জঙ্গিবাদের মামলায় অভিযুক্ত বহু আসামির জামিন হয়েছে, অন্যদিকে সেই একই জঙ্গিবাদ ইস্যুতে নতুন করে মামলা-গ্রেপ্তারের ঘটনাও ঘটেছে।
দেশের ইসলামপন্থি দল ও সংগঠনগুলোর নেতাদের কেউ কেউ একে নতুন 'নাটক' হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন।
গত বছরের ৫ আগস্টের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ নিয়ে পুলিশ প্রশাসন ও নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে চিন্তা-ভাবনায় একটা বড় পরিবর্তন দেখা গেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের অস্তিত্বই অস্বীকার করেছেন।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে অনেক কিছুতেই 'জঙ্গি' তকমা দেওয়ার একটা প্রবণতা দেখা গেছে বলে সমালোচনা রয়েছে। এখন আবার রাষ্ট্রীয় বয়ানে দেশে 'জঙ্গিবাদের কোনো অবস্থান নেই' এবং 'অতীতের সবকিছুই ছিল নাটক' এ রকম ব্যাখ্যা দেয়ার চেষ্টা লক্ষ্যণীয়।
বাস্তবতা হলো, বাংলাদেশে হলি আর্টিজানে হামলা হয়েছে। বিদেশি নাগরিক, ব্লগার, প্রকাশকদের হত্যার ঘটনা ঘটেছে। সারাদেশে একযোগে বোমা হামলা, আদালতে বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ রকম বিভিন্ন সন্ত্রাসী হামলায় আন্তর্জাতিক সংগঠনকে দায় স্বীকার করতেও দেখা গেছে। আবার জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নাম করে বেশকিছু ঘটনায় নাটকীয়তা নিয়েও জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ ইস্যু দীর্ঘদিন ধরে পর্যবেক্ষণ করছেন নেত্র নিউজের এডিটর ইন চিফ তাসনিম খলিল।
তার ভাষায়, বাংলাদেশে 'জিহাদি সন্ত্রাসবাদ' ছিল – এটি অস্বীকার করার সুযোগ নেই, যদিও অতীতে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় 'জঙ্গিবিরোধী অভিযানের নামে গুম ও হত্যা হয়েছে।'
তিনি বলেন, হোলি আর্টিজানে হামলার যে দায়িত্ব স্বীকার, সেটা একেবারে আইসিসের হেডকোয়ার্টার রাক্কা থেকে হয়েছে।
"তখন ভিডিও রিলিজ করেছে, যেটাকে আমরা বলি প্রুফ অব প্রেজেন্স। মানে এই দলটা ওই জায়গায় উপস্থিত ছিল, তারাই ঘটনাটা ঘটিয়েছে। সকল প্রুফ আইসিসের কাছেই আমরা দেখেছি। অস্তিত্ব নেই এটা তো বলা যাবে না।"
"আরেকটা গ্রুপ হলো আল কায়েদা। আল কায়েদার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি যে, বাংলাদেশে অনেক লেখক, ব্লগার বা পাবলিশার – তাদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে এবং সেটারও দায়িত্ব স্বীকার করা হয়েছে কিন্তু আল কায়েদার ভারতীয় উপমহাদেশ তাদের অফিসিয়াল চ্যানেল থেকে," বলেন তাসনিম খলিল।
যারা জিহাদের মাধ্যমে ইসলাম প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে বা জিহাদের মাধ্যমে শরিয়া আইন কায়েম করতে চায়, তারা অবস্থানগতভাবে এখন ভালো আছে বলে মনে করেন তাসনিম খলিল। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, "এক সময় যে ধরনের প্রেশারের মধ্যে তারা ছিল সেই প্রেশারটা এখন নেই।"
"এটাও বলতে হবে যে, এই প্রেশারটা না থাকার কারণে বাংলাদেশে একেবারে জিহাদি গ্রুপগুলোর আবার নতুন করে উত্থান ঘটেছে, এটাও না। প্রবণতাটা আমি যেটা দেখছি যে, আগে আল কায়েদার সাথে জড়িত ছিল বা আগে আইসিসের সাথে জড়িত ছিল, এই ধরনের মানুষগুলো এখন চেষ্টা করছে মেইনস্ট্রিম পলিটিক্সে চলে আসতে। যেটার কিছু নমুনা আমরা সাম্প্রতিককালে দেখেছিও।"
৫ আগস্টের পর বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ মামলায় শত শত আসামি জামিনে মুক্ত হয়েছেন। এর মধ্যে হত্যা মামলার কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিও রয়েছেন।
জামিনে মুক্ত আলোচিত একজন মুফতি জসীম উদ্দিন রাহমানী। তিনি আনসারুল্লাহ বাংলা টিম নামে একটি সংগঠনের প্রধান হিসেবে অভিযুক্ত ছিলেন। যদিও ওই সংগঠনের অস্তিত্ব নেই বলে দাবি তার।
জসীম উদ্দিন আরও দাবি করেন, "অতীতে জঙ্গিবাদের তকমা দিয়ে নাটক সাজানো হয়েছে।"
তবে কারাগারে থাকাকালীন "কিছু উগ্র সংগঠনের অস্তিত্বের প্রমাণও" পেয়েছেন বলে জানান তিনি
"আজ খুঁজে দেখা দরকার যেই লোকগুলো মৌলভীবাজারে গিয়ে হিজরত করেছিল, ইমাম মাহমুদের কাফেলা, এসব লোকেরা কিন্তু সশস্ত্র যুদ্ধ করার জন্য অলরেডি তৈরি হয়ে চলে গেছে। এই লোকগুলো কোথায়, এদের বর্তমান কর্মকাণ্ড কী সেগুলো নিয়ে আলোচনা নাই।"
"আলোচনা হচ্ছে কী? যারা প্রকাশ্যে বক্তব্য দিচ্ছে, মিছিল মিটিং করছে (তাদের নিয়ে)। যদি আমি বলি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কাজ করছে তো সেই লোকগুলোকে জঙ্গি তকমা দেওয়া হচ্ছে" বলেন জসীম উদ্দিন।
সম্প্রতি জঙ্গিবাদ মামলায় নতুন করে আসামি করা প্রসঙ্গে জসীম উদ্দিন রাহমানী বলেন, "দেখেন, এখন যাদের নামে জঙ্গি মামলা হয়েছে, এতে প্রকৃত অপরাধীদের পার পেয়ে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। যারা সত্যিকারে উগ্রপন্থি, সশস্ত্র জিহাদের চিন্তায় আছেন, তারা অগোচরে থেকে যাচ্ছে।"
"যারা বিভিন্ন রকমের যুবকদের বিভ্রান্ত করছে, ভুল পথে নিয়ে যাচ্ছে, গোমরা করছে, পথভ্রষ্ট করছে- এই লোকগুলো কিন্তু পার পেয়ে যাচ্ছে। আমার কথা হচ্ছে সরকারের উচিত এই ধরনের যারা খুচরা খুচরা দল করে, গরিব-অসহায় মানুষকে অশিক্ষিত মানুষদেরকে নিয়ে হিজরত করতে বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে আস্তানা গাড়ে – এই লোকগুলো ধরো", যোগ করেন তিনি।
গত ৫ জুলাই, সাভার থানায় জঙ্গি সম্পৃক্ততার অভিযোগে একটি মামলা হয় ও দুইজনকে গ্রেপ্তারও করা হয়। অন্তবর্তীকালীন সরকারের সময়ে জঙ্গিবাদ ইস্যুতে এটি প্রথম মামলা ও গ্রেপ্তারের ঘটনা।
ওই মামলায় ছয়জন আসামির মধ্যে একজন ইসলামী আন্দোলনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, "অতীতে বিদেশিদের খুশি করার জন্য জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছিল। ইদানিংকালে এরকম একটা আভাস আমরা পাচ্ছি।"
"কয়েকদিন আগে এরকম একটা জঙ্গি নাটক সাজানো হয়েছে। সেখানে কয়েকজনকে আসামিও করা হয়েছে। তার মধ্যে আমাদেরই সহযোগী সংগঠন, জাতীয় ওলামা মাশায়েখ কালিমা পরিষদের সেক্রেটারি জেনারেল, তার নামটাও ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছে।"
"হঠাৎ করে এই জঙ্গি নাটক আবার শুরু হলো। এজন্য আমরা শঙ্কিত, আতঙ্কিত। যদি সেই পূর্বের ধারায় আবার চলতে থাকে দেশ, আবার দেশ অস্বস্তিতে ভরে যেতে পারে। অনেক নিরপরাধ লোক হয়রানির শিকার হবে। এটা আমরা চাই না", বলেন ইউনুছ আহমাদ।
দলীয় অবস্থান তুলে ধরে তিনি বলেন, "যদি কেউ আসলে দোষী থাকে, যেটা দেশের জন্য, স্বার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি, এগুলো আবিষ্কার হোক। কিন্তু অযথা হয়রানি করার জন্য কিছু না হোক, এটা আমাদের কথা। প্রকৃত দোষী হলে তার বিচার হতে পারে।"
ইউনুছ আহমাদ আরও বলেন, "কিছুদিন আগেও আমাদের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা মহোদয় বলেছেন আমাদের দেশে জঙ্গি নাই। স্পষ্ট বলেছেন জনসমক্ষে, মিডিয়ার সামনে বলেছেন। তাহলে সাংঘর্ষিক হয়ে গেল। তিনি বলেন যে জঙ্গি নাই, এরপর আবার জঙ্গি নাটক সাজানো হয়, জঙ্গি মামলা দেওয়া হয় – এই সাংঘর্ষিক অবস্থান নেওয়া হলে দেশে আবার অস্বস্তির পরিবেশ তৈরি হবে, আমরা এটা চাই না।"
বাংলাদেশ জিহাদী তৎপরতার জায়গা নয় বলে মনে করে ইসলামি দলগুলো এবং নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতি ও ভোটের মাধ্যমেই ইসলাম কায়েমের স্বপ্ন দেখে বলে জানান বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।
তিনি বলছেন, "জিহাদের নামে বিশৃঙ্খলা অনেকে তৈরি করে। আমাদের অ্যানালাইসিস হলো – যতটা না স্বতপ্রণোদিত হয়ে মুসলমান ইয়াং-আবেগি তরুণরা এটা করে, তার চেয়ে অনেক বেশি এটা করে যারা মুসলিম জাগরণকে রুখে দিতে চায়। তাদের পক্ষ থেকে একটা স্যাবোটাজ হয়ে থাকে।"
অতীতে হামলার ঘটনা সম্পর্কে মূল্যায়ন তুলে ধরে মামুনুল হক বলেন, শুধু বাংলাদেশে নয়, বিশ্বব্যাপী কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী যারা ইসলামের মূল ধারা থেকে বিচ্ছিন্ন, সেই ধরনের কিছু কার্যক্রম তারা বিশ্বব্যাপী পরিচালনা করেছে। সেই কার্যক্রমের "ছিঁটেফোটা অংশ, যারা ইসলামের মূল ধারা বা আলেম সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন, বিশেষ করে প্রাইভেট ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থী, তারা এইক্ষেত্রে সংযুক্ত হয়েছে, এমন ঘটনা আছে।"
"আমরা মনে করি, ওয়ার অন টেররের যে ঘোষণা ছিল, এই সবগুলোই একটার সাথে আরেকটা নাটকীয়ভাবে জড়িত," বলেন তিনি।
সাম্প্রতিক মামলার প্রসঙ্গ এনে মামুনুল হক বলেন, "সর্বশেষ ঘটনায় আমরা একটু সন্দেহ যে, এই ঘটনাটা সরকার কী উদ্দেশ্যে বা কোন প্রমাণ বা দলিলের ভিত্তিতে করলেন। মামলা পর্যন্ত গড়ালো, অথচ এখানে সর্বজনস্বীকৃত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিনিধিত্বশীল ব্যক্তিবর্গকে এইটার সাথে জড়িত করা হয়েছে। এটাকে আমরা কোনোভাবেই ভালো চোখে দেখছি না।"
মামুনুল হক জানান, জিহাদের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে কেউ যেন কাউকে কোনোভাবেই সন্ত্রাসবাদে জড়াতে না পারে সে ব্যাপারে ইসলামী সংগঠনগুলো তৎপর আছে।
"রাষ্ট্র এবং সরকারকে আমাদের এই উদাত্ত আহ্বান যে, তারাও যেন এইভাবে কোনো পাতা ফাঁদে পা না দেয়। জঙ্গি নাটকের যে কার্ড, এটা বিগত সরকারের একটা কার্ড ছিল। এর মাধ্যমে ইসলামি আন্দোলনকে, ইসলামি রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে ঘায়েল করার অপচেষ্টা তারা অব্যাহতভাবে চালিয়েছে। সেই ধরনের কোনো কিছু যদি বর্তমান সরকারও করে তাহলে এটা তাদের জন্য বুমেরাং হবে বলে আমি মনে করি।"
জামায়াতে ইসলামী বলছে, অতীতে জঙ্গিবাদী হামলায় তাদের কর্মীরা ভিকটিম হয়েছে।
দলটির অবস্থান হলো, অতীতে রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় জঙ্গিবাদের নামে কিছু সহিংস ঘটনা ঘটানো হয়েছে, যাতে করে ইসলাম, ইসলামি আদর্শ এবং ইসলামি আন্দোলনকে বিতর্কিত করা যায়।
দলের কেন্দ্রীয় প্রচার ও মিডিয়া বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, "জামায়াতে ইসলামীর একজন আইনজীবী, একজন সাংবাদিকসহ ছয়জন লোক জীবন দিয়েছে জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার কারণে। সুতরাং জামায়াতের অবস্থান হলো জঙ্গিবাদ ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে।"
"এই প্রেসক্রিপশনটা মূলত একটা বিশেষ দলের, যারা দীর্ঘ সাড়ে পনের বছর দেশ শাসন করেছে এবং আরেকটি দেশের, যারা ওই সরকারকে সমর্থন দিয়েছেন তাদের। তাদের সম্মিলিত প্রয়াসে বার বার জঙ্গিবাদের নাটক হয়েছে বাংলাদেশে।"
মতিউর রহমান বলেন, বাংলাদেশের মানুষ জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে। "বর্তমানে একটা নরমাল পরিবেশ, ইতোমধ্যে কিন্তু কোনো জঙ্গিবাদের ঘটনা ঘটে নাই।"
ইসলামপন্থি দলগুলো এবং সরকারের নীতি নির্ধারকেরা বর্তমানে জঙ্গিবাদ ইস্যুতে "কোনো উদ্বেগ নেই" বলে মনে করেন। এর পেছনে কারণ হিসেবে তারা বলছেন, গত এক বছরে তাদের দৃষ্টিতে "জঙ্গিবাদী বড় কোনো হামলা হয়নি"।
অবশ্য এ পরিস্থিতিকে ভিন্ন দৃষ্টিকোন থেকে বিশ্লেষণ করেন তাসনীম খলিল।
"ফর এগজাম্পল, একটা হলো যে, নারীরা এখন ঘর থেকে বের হতে বিব্রতবোধ করেন বা আতঙ্ক বোধ করেন। এটা তো সন্ত্রাসবাদীরা করছেন না। এখন তো এটা মব হয়েছে।"
তিনি বলেন, "এখন জিহাদি-সন্ত্রাসবাদীদের খুব একটা অ্যাকটিভ হওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না।"
"ঢাকা শহরে প্রকাশ্যে সমাবেশ করে নারীদের গালি দেওয়া হয়। সেখানে রাজনৈতিক দলের নেতারা যান, পত্রিকার সম্পাদকরা সেখানে যান, গিয়ে এসবের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।"
"এখন তো মেইনস্ট্রিমেই এই ধরনের কদর্য ধারণাগুলো চলে এসেছে, তখন তো সন্ত্রাসবাদীদের আসলে ওইভাবে আলাদা করে অপারেশন করার প্রয়োজন পড়ে না। তবে হ্যাঁ, ওনারা আছেন। এখনো আমার মনে হয় অ্যাকটিভ আছেন। সামনে কী হয় এটা আসলে বলার এখনো সময় আসেনি" বলে মনে করেন তাসনীম খলিল।
সৈয়দ তাহের বলেন, সংসদে উচ্চ কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে ভোটের ব্যাপারে আমরা একমত হয়েছি। কিন্তু আমাদের দাবি, পিআর হতে হবে উচ্চকক্ষ ও নিম্নকক্ষ— উভয় কক্ষেই। সেই ইস্যুতে আমরা আন্দোলন করব।
১ দিন আগেমানবাধিকার সংস্থার তথ্য তুলে ধরে সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ২০০৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা, পুলিশি নির্যাতনসহ নানা প্রতিহিংসামূলক হামলায় ৭,১৮৮ জন ভুক্তভোগী হয়েছেন। এর মধ্যে ৭০৯ জন গুমের শিকার, তার মধ্যে অনেকে এখনো ফিরে আসেননি, তারা আমার মতো সৌভাগ্যবান নয়। ২,৬৯৩ জন বিচারবহির্ভূত
১ দিন আগেএরশাদবিরোধী আন্দোলনের প্রসঙ্গ টেনে নুর বলেন, ‘সেই সময় রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হতে পারেনি। যখন ছাত্রসংগঠনগুলো সর্বদলীয় ছাত্রঐক্য গঠন করেছিল, তখন রাজনৈতিক দলগুলো ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানেও রাজনৈতিক দলগুলো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। এখন যদি আসল কথা বলি, অনেকের সাংগঠনিক শক্তি, জনশক্তি আমার বি
১ দিন আগেআজ রোববার বিকেলে রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রায় আধাঘণ্টার বক্তব্যে তিনি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ঐক্যের গুরুত্ব ও রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।
১ দিন আগে