প্রশাসন বিএনপির পক্ষে কাজ করছে, এ অবস্থায় নির্বাচন সম্ভব নয় : নাহিদ

প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
প্রকাশ: ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ১৮: ৩৭

মাঠ প্রশাসনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। বলেছেন, প্রশাসন অনেক জায়গাতেই বিএনপির পক্ষে কাজ করছে। এ ধরনের পরিস্থিতি বহাল থাকলে এই প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন করা সম্ভব হবে না।

বুধবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে ঢাকায় সফররত মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন তিনি।

নাহিদ ইসলাম আরো বলেন, বর্তমান সময়ে যে মাঠ প্রশাসন রয়েছে, সেই মাঠ প্রশাসন মনে হচ্ছে নিরপেক্ষ আচরণ করছে না। বিভিন্ন জায়গায় জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চলছে। সেসব জায়গায় প্রশাসন নীরব ভূমিকা পালন করছে।

এনসিপি আহ্বায়ক আরও বলেন, আমরা দেখছি, প্রশাসন অনেক জায়গায় বিএনপির পক্ষ অবলম্বন করছে। মাঠপর্যায়ে যেসব জায়গায় চাঁদাবাজি চলছে, সেই জায়গাতেও প্রশাসন আসলে নীরব ভূমিকা পালন করছে।

‘তাই আমরা বলেছি, এ ধরনের প্রশাসন যদি থাকে, তাহলে এর অধীনে নির্বাচন করাটা সম্ভব নয়। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের জন্য নিরপেক্ষ প্রশাসন, আমলাতন্ত্র ও পুলিশ নিশ্চিত করতে হবে,’— বলেন নাহিদ ইসলাম।

মার্কিন কূটনীতিকদের সঙ্গে বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে— জানতে চাইলে নাহিদ বলেন, ‘সংস্কার বিষয়ে আমরা যে প্রস্তাবনাগুলো সংস্কার কমিশনে দিয়েছি, সেগুলোর কথা আমরা তুলে ধরেছি। আমরা আমাদের তিনটি দাবির কথা বলেছি— সংস্কার, বিচার ও গণপরিষদ নির্বাচন।’

এনসিপির আহ্বায়ক আরও বলেন, ‘আমরা বলেছি যে এখানে ন্যূনতম সংস্কার নয়, বরং রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কারের জন্য আমরা কাজ করছি। এই পরিবর্তনগুলো ছাড়া নির্বাচন হলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না। সে রকম নির্বাচন হলে জাতীয় নাগরিক পার্টি অংশগ্রহণ করবে কি না, সেটাও বিবেচনাধীন থাকবে।’

সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে এনসিপির বিপরীতে অবস্থান রাজনৈতিক দল বিএনপির। দলটি আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দাবি করে আসছে। সংস্কার ইস্যুতে ইতিবাচক জানিয়ে দলটি বলছে, সংস্কার ও নির্বাচন পাশাপাশিই চলতে পারে। সব রাজনৈতিক দল যেসব সংস্কার প্রস্তাবে রাজি হবে সেগুলো জুলাই চার্টার আকারে গ্রহণ করে তার ভিত্তিতেই নির্বাচন হতে পারে। বাকি সংস্কারগুলো হবে নির্বাচিত রাজনৈতিক নেতৃত্বের মাধ্যমে।

নির্বাচনি রোডম্যাপ চেয়ে বুধবার দুপুরে মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। তবে সেই সাক্ষাতে বিএনপি সন্তুষ্ট হতে পারেনি।

সাক্ষাৎ শেষে বিএনপি মহাসচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা কোনো নির্বাচনি রোডম্যাপ তুলে ধরেননি। ফলে তারা নির্বাচন নিয়ে সরকারের অবস্থানে মোটেও সন্তুষ্ট নন। তারা ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চান।

ওই বৈঠকের পর গণমাধ্যমকে ব্রিফ করেছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলও। বিএনপির দাবি থাকলেও তিনি নির্বাচন নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা তথা সরকারের আগের অবস্থানেরই পুনরাবৃত্তি করেন।

আসিফ নজরুল বলেন, নির্বাচন আগামী ডিসেম্বর থেকে পরবর্তী জুনের মধ্যেই হবে। জুলাই চার্টারের সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের ওপর এর সময় নির্ভর করবে। তবে যে যাই বলুক, নির্বাচন (২০২৫ সালের) জুনের পরে যাবে না।

আইন উপদেষ্টা আরও বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে এই সময়ের মধ্যে যত দ্রুতসম্ভব নির্বাচন আয়োজনের চেষ্টা করা হবে। ডিসেম্বরে সম্ভব হলে ডিসেম্বরেই হতে পারে নির্বাচন। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাবে নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে আয়োজনের কোনো প্রবণতা সরকারের কারও মধ্যে নেই।

ad
ad

ঘরের রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

৩ আগস্ট ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করা হবে: নাহিদ ইসলাম

জুলাই ঘোষণাপত্র সরকার যেটি দেওয়ার কথা ছিল, ৩০ কার্যদিবসের কথা বলা হয়েছিল। ৩০ কার্যদিবস পেরিয়ে গেছে, কিন্তু সরকারের কোনো ধরনের উদ্যোগ আমরা দেখিনি। জুলাইয়ের ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট, সংবিধানের স্বীকৃতি এবং শহীদদের মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য জুলাই ঘোষণাপত্র আমাদের প্রয়োজন। সরকার বলেছিল, সকলের সঙ্গে আলোচনা কর

৮ ঘণ্টা আগে

মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করল এনসিপি

তিনি বলেন, ১৬ জুলাই আবু সাঈদের মৃত্যুর মাধ্যমে শহীদ হওয়া শুরু হয়। তাই আমরা ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী শহীদ দিবস হিসেবে সারা দেশে পালন করব। এ ছাড়া ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে জুলাই ঘোষণাপত্র এবং ইশতেহার পাঠ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হবে। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। এই দিনক

৯ ঘণ্টা আগে

দ্বিতীয় দফায় ৭ম দিনের মতো বৈঠকে ঐকমত্য কমিশন

কমিশন সূত্র জানিয়েছে, এ দিনের আলোচনায় সংস্কার প্রস্তাবের অমীমাংসিত বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে। এর মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হিসেবে রয়েছে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ ও জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংখ্যানুপাতিক ভোট। জাতীয় নাগরিক পার্টিসহ (এনসিপি) কয়েকটি দল সংসদ নির্বাচনে এ ধরনের ভোটের পক্ষে থাকলেও বিএনপিসহ আরও ক

১২ ঘণ্টা আগে

বিএনপি নেতাদের কয়েক দফায় চীন সফর কী বার্তা দিচ্ছে?

সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের চীন সফর করেছে। শুক্রবার রাতে চীন সফর শেষে দেশে ফিরে তিনি বলেছেন, চীন সফরের মধ্য দিয়ে দেশটির কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে বিএনপির সম্পর্ক আরও শক্তিশালী হয়েছে।

১২ ঘণ্টা আগে