
নাজমুল ইসলাম হৃদয়

৯ মাস স্থায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের জীবনের বিনিময়ে এসেছিল জাতির কাঙ্ক্ষিত বিজয়। বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন দেশের মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। তারপর কেটে গেছে ৫৪ বছর। প্রায় সাড়ে পাঁচ দশকের এই যাত্রা পেরিয়েও এখনো স্বাধীনতার পক্ষ আর বিপক্ষ শক্তি নিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেমে নেই।
টানা ১৬ বছরের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্বকে দলীয়ভাবে কুক্ষিগত করার অভিযোগ ছিল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল, নিজেদের এককভাবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে প্রচার করে বাকি সবাইকে বিরোধী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করার রাজনীতিই দলটি করে গেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনে তারা গত বছর থেকেই বিজয় দিবসের মূল দৃশ্যপট থেকে কার্যত অনুপস্থিত। তাতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ শক্তির রাজনীতির অবসান ঘটেনি, কেবল সমীকরণে এসেছে পরিবর্তন।
‘মুক্তিযুদ্ধ বনাম স্বাধীনতাবিরোধী’— এই দ্বিমুখী মেরুকরণ আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে শূন্য থাকেনি। বিভাজনের রেখা নতুন করে টানা হচ্ছে রাজপথের একসময়ের কৌশলগত মিত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে। এবারের বিজয় দিবসের আবহ, রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য ও মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের স্লোগান ও আচরণে স্পষ্ট, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে গড়ে ওঠা ঐক্য এখন ভেঙে গিয়ে আদর্শিক অবস্থান ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের তীব্র দ্বন্দ্বে রূপ নিয়েছে।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একটি ‘কমন এনিমি’ বা সাধারণ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে জোটবদ্ধ ছিল। তখন সরকার পতনের বৃহত্তর লক্ষ্য সামনে রেখে দুই দলের মধ্যকার আদর্শিক পার্থক্য অনেকটাই আড়ালে ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের পর সেই সাধারণ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিকভাবে মাঠছাড়া হলে দুই দলের সুপ্ত দ্বন্দ্বগুলো স্বাভাবিকভাবেই প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের বিজয় দিবসে বিএনপি নিজেকে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ধারক’ এবং রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে তৎপরতা জোরদার করেছে। বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণের চেয়ে ‘জুলাই বিপ্লব’কে সামনে এনে নিজেদের রাজনৈতিক বৈধতা নির্মাণের চেষ্টা করছে। এই দুই ভিন্ন রাজনৈতিক বয়ানের সংঘাতের মধ্য দিয়েই পালিত হচ্ছে এবারের ৫৪তম বিজয় দিবস।
আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপি তাদের ‘মুক্তিযোদ্ধার দল’ পরিচয়কেই প্রধান রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে সামনে আনছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাধিক বক্তব্যে বলেছেন, ‘স্বৈরাচার পতন হলেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কোনো আপস হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং তার নেতৃত্বেই যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল।’
লক্ষ্মীপুরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমান যদি সেদিন ঐতিহাসিক ঘোষণা না দিতেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযোদ্ধাদের যদি নেতৃত্ব না দিতেন, রণাঙ্গনে অস্ত্র হাতে যদি যুদ্ধ না করতেন তাহলে স্বাধীন বাংলাদেশ আজকে পর্যন্ত হয়তো প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যেত।
‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি’ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টার পাশাপাশি বিএনপি এখন জামায়াতের একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী অবস্থানকেও প্রকাশ্যে আনছে। রোববার শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের এক অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যে শক্তি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, আজ সেই শক্তি ভোল পালটে এমন ভাব দেখাচ্ছে যে তারাই নতুন বাংলাদেশ করতে পারবে। বাংলাদেশের মানুষ এ কথা বিশ্বাস করতে পারে না।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও সম্প্রতি নিজেদের এ অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির উদ্যোগে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’তে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ইদানীং বলতে শুনেছি, অমুককে দেখলাম তমুককে দেখলাম, এবার অমুককে দেখুন। যাদের কথা বলে অমুককে দেখুন, তাদের তো দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে। তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে, ঠিক যেভাবে পতিত স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার আগে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য।’
মঙ্গলবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও জামায়াত নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের প্রয়াত নেতাদের ‘সূর্যসন্তান’ হিসেবে অভিহিত করার তীব্র সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যারা দেশ স্বাধীন করেছেন, তারাই সূর্যসন্তান। এখন কেউ যদি বলেন, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন তারা সূর্যসন্তান, তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান কোথায় থাকে?’
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী বিজয় দিবসে ভিন্ন রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছে। দলটি সচেতনভাবে ১৯৭১ সালের বিতর্কিত অধ্যায় এড়িয়ে গিয়ে ‘জুলাই বিপ্লবের চেতনা’ ও ‘ইসলামী মূল্যবোধে’র এর ওপর জোর দিচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়েও ‘নতুন বয়ান’ এসেছে জামায়াত নেতাদের কাছ থেকে, যেখানে টেনে আনা হচ্ছে ‘ভারতবিরোধিতা’র প্রসঙ্গ।
জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বিভিন্ন সময় বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী একাত্তরে স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল না। গত ২৮ নভেম্বর মোহাম্মদপুর টাউন হল শহিদ পার্ক মাঠে এক সমাবেশে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা জামায়াতকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি আখ্যা দিলেও প্রকৃতপক্ষে জামায়াতই স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি।
রোববার বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল সুপ্রিম কোর্ট শাখার উদ্যোগে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. মাসুদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী কারও তাঁবেদারির স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিল না বলেই তারা (আওয়ামী লীগ) স্বাধীনতাবিরোধী বলে অপপ্রচার চালিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতাবিরোধী নয়, জামায়াতে ইসলামী মর্যাদাশীল স্বাধীনতার পক্ষে।
মঙ্গলবার বিজয় দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় জামায়াত আয়োজিত বিজয় র্যালিতে অংশ নিয়ে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী আমির হামজা বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ওই সময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, তারা ছিল ভারতের বিরুদ্ধে। আজকের এই বিজয়ের র্যালি এই কারণে যে আমরা ১৯৭১ সালে এই দেশের স্বাধীনতার পক্ষে। ভারতের যে আগ্রাসন, এর বিরুদ্ধে ছিলাম।’
রোববার শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আরেক অনুষ্ঠানে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এ দেশের দিল্লির তাঁবেদাররা বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা নিয়ে প্রথাগতভাবে সমস্ত দায় দায়িত্ব ঘৃণিতভাবে জামায়াতে ইসলামীর ওপরে চাপাবার চেষ্টা করেছেন। ইতিহাসের অনেক তথ্য আবিষ্কার হচ্ছে যে দিল্লির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ভিত্তিতে ভারতীয়রাই আমাদের এই সেরা সন্তানদের হত্যা করছে।
জামায়াত নেতাদের বক্তব্যে বারবার উঠে আসছে, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলো দেশকে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বাইরে নিতে পারেনি। ফলে এখন ‘সৎ ও নৈতিক নেতৃত্ব’ দরকার। বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে দলটি তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে চায়, যাদের কাছে ২০২৪ সালের আন্দোলনের স্মৃতি তুলনামূলকভাবে বেশি জীবন্ত।
মঙ্গলবার বিজয় দিবসে যুব র্যালি ম্যারাথন ‘রাজপথে বিজয়ে’ অংশ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘অতীতের বস্তাপচা সব রাজনীতিকে পায়ের তলে ফেলে দিতে চাই। এই রাজনীতি বাংলাদেশে অচল। এখন বাংলাদেশে নতুন রাজনীতি করতে হবে, যেই রাজনীতি হবে দেশ জাতি স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের পক্ষে।’
এই বিভাজনের প্রভাব তৃণমূল পর্যায়েও স্পষ্ট। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস ঘিরে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধ্যে পালটাপালটি স্লোগান ও উত্তেজনা দেখা গেছে।
পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি হাসান আল মামুন শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত দুই আমির গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামীকে ‘দেশপ্রেমিক’ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের ‘বীর সূর্যসন্তান’ উল্লেখ করে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একে ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা উল্লেখ করে তীব্র প্রতিবাদ করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মানুষের আবেগের যে জায়গা, সেটি মাথায় রেখেই বিএনপি ও জামায়াত নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করে তুলছে। আওয়ামী লীগ কার্যত মাঠে না থাকায় এই দুটি দলই ভোটের মাঠে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় দুই দলের মধ্যে বিরোধও ক্রমেই বাড়ছে, যার কেন্দ্রে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা।
বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নিজেদের অবস্থান প্রমাণ ও জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে প্রচারের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ভোটারদের নিজেদের দিকে টানার চিন্তা কাজ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নতুন ধরনের বক্তব্য সামনে আনার মাধ্যমে ভোটারদের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে তাদের অভিমত। চব্বিশের অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি আর অন্যায়-দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান প্রচারের মাধ্যমে তরুণদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে বলেও বিশ্লেষকরা মনে করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ উর রহমানের অভিমত, আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে ঐক্যের ভিত্তি টিকে থাকা কঠিন। তার মতে, ভোটের রাজনীতিতে এই দুই দল এখন প্রত্যক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি বলেন, বিএনপি যদি জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখে, তবে তাদের ওপর পুনরায় ‘স্বাধীনতাবিরোধীদের দোসর’ তকমা বসার ঝুঁকি তৈরি হবে, যা দলটি এড়াতে চায়। বিজয় দিবসের দিন বিএনপি নেতাদের বক্তব্য ও অবস্থান এই বিশ্লেষণের সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
রাজনৈতিক ইতিহাসবিদ মহিউদ্দিন আহমদের পর্যবেক্ষণ, জামায়াতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক বিএনপির জন্য এক ধরনের রাজনৈতিক বোঝা। ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মধ্যপন্থি ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেতে হলে বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে নিজেদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, জামায়াত ধীরগতিতে একটি নতুন রাজনৈতিক বয়ান নির্মাণ করছে, যা বিজয় দিবসের মতো সংবেদনশীল সময়ে বিএনপির জন্য অস্তিত্বগত সংকট তৈরি করছে।

৯ মাস স্থায়ী মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষের জীবনের বিনিময়ে এসেছিল জাতির কাঙ্ক্ষিত বিজয়। বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন দেশের মর্যাদা নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছিল বাংলাদেশ। তারপর কেটে গেছে ৫৪ বছর। প্রায় সাড়ে পাঁচ দশকের এই যাত্রা পেরিয়েও এখনো স্বাধীনতার পক্ষ আর বিপক্ষ শক্তি নিয়ে রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব থেমে নেই।
টানা ১৬ বছরের শাসনামলে মুক্তিযুদ্ধের কৃতিত্বকে দলীয়ভাবে কুক্ষিগত করার অভিযোগ ছিল আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। অভিযোগ ছিল, নিজেদের এককভাবে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি হিসেবে প্রচার করে বাকি সবাইকে বিরোধী শক্তি হিসেবে চিহ্নিত করার রাজনীতিই দলটি করে গেছে। ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনে তারা গত বছর থেকেই বিজয় দিবসের মূল দৃশ্যপট থেকে কার্যত অনুপস্থিত। তাতে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ শক্তির রাজনীতির অবসান ঘটেনি, কেবল সমীকরণে এসেছে পরিবর্তন।
‘মুক্তিযুদ্ধ বনাম স্বাধীনতাবিরোধী’— এই দ্বিমুখী মেরুকরণ আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে শূন্য থাকেনি। বিভাজনের রেখা নতুন করে টানা হচ্ছে রাজপথের একসময়ের কৌশলগত মিত্র বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে। এবারের বিজয় দিবসের আবহ, রাজনৈতিক দলগুলোর শীর্ষ নেতাদের বক্তব্য ও মাঠপর্যায়ের নেতাকর্মীদের স্লোগান ও আচরণে স্পষ্ট, স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে গড়ে ওঠা ঐক্য এখন ভেঙে গিয়ে আদর্শিক অবস্থান ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তারের তীব্র দ্বন্দ্বে রূপ নিয়েছে।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পর্যালোচনায় দেখা যায়, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকাকালীন বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী একটি ‘কমন এনিমি’ বা সাধারণ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে লড়াই করতে গিয়ে জোটবদ্ধ ছিল। তখন সরকার পতনের বৃহত্তর লক্ষ্য সামনে রেখে দুই দলের মধ্যকার আদর্শিক পার্থক্য অনেকটাই আড়ালে ছিল। জুলাই অভ্যুত্থানের পর সেই সাধারণ প্রতিপক্ষ রাজনৈতিকভাবে মাঠছাড়া হলে দুই দলের সুপ্ত দ্বন্দ্বগুলো স্বাভাবিকভাবেই প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে।
এরই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালের বিজয় দিবসে বিএনপি নিজেকে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত ধারক’ এবং রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমানের দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে তৎপরতা জোরদার করেছে। বিপরীতে জামায়াতে ইসলামী ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণের চেয়ে ‘জুলাই বিপ্লব’কে সামনে এনে নিজেদের রাজনৈতিক বৈধতা নির্মাণের চেষ্টা করছে। এই দুই ভিন্ন রাজনৈতিক বয়ানের সংঘাতের মধ্য দিয়েই পালিত হচ্ছে এবারের ৫৪তম বিজয় দিবস।
আওয়ামী লীগের অনুপস্থিতিতে বিএনপি তাদের ‘মুক্তিযোদ্ধার দল’ পরিচয়কেই প্রধান রাজনৈতিক পুঁজি হিসেবে সামনে আনছে। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একাধিক বক্তব্যে বলেছেন, ‘স্বৈরাচার পতন হলেও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে কোনো আপস হবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানই স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং তার নেতৃত্বেই যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল।’
লক্ষ্মীপুরে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি বলেন, কালুরঘাট বেতারকেন্দ্র থেকে জিয়াউর রহমান যদি সেদিন ঐতিহাসিক ঘোষণা না দিতেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ বা মুক্তিযোদ্ধাদের যদি নেতৃত্ব না দিতেন, রণাঙ্গনে অস্ত্র হাতে যদি যুদ্ধ না করতেন তাহলে স্বাধীন বাংলাদেশ আজকে পর্যন্ত হয়তো প্রশ্নবিদ্ধই থেকে যেত।
‘মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি’ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টার পাশাপাশি বিএনপি এখন জামায়াতের একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী অবস্থানকেও প্রকাশ্যে আনছে। রোববার শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের এক অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘যে শক্তি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, আজ সেই শক্তি ভোল পালটে এমন ভাব দেখাচ্ছে যে তারাই নতুন বাংলাদেশ করতে পারবে। বাংলাদেশের মানুষ এ কথা বিশ্বাস করতে পারে না।’
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও সম্প্রতি নিজেদের এ অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। গত ৭ ডিসেম্বর বিএনপির উদ্যোগে ‘দেশ গড়ার পরিকল্পনার কর্মসূচি’তে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ইদানীং বলতে শুনেছি, অমুককে দেখলাম তমুককে দেখলাম, এবার অমুককে দেখুন। যাদের কথা বলে অমুককে দেখুন, তাদের তো দেশের মানুষ ১৯৭১ সালেই দেখেছে। তারা নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় লক্ষ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে, ঠিক যেভাবে পতিত স্বৈরাচার পালিয়ে যাওয়ার আগে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা করেছিল ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য।’
মঙ্গলবার সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসও জামায়াত নেতাদের সাম্প্রতিক বক্তব্যের বিরোধিতা করেন। একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের প্রয়াত নেতাদের ‘সূর্যসন্তান’ হিসেবে অভিহিত করার তীব্র সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যারা দেশ স্বাধীন করেছেন, তারাই সূর্যসন্তান। এখন কেউ যদি বলেন, যারা স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছেন তারা সূর্যসন্তান, তাহলে মুক্তিযোদ্ধাদের অবস্থান কোথায় থাকে?’
অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী বিজয় দিবসে ভিন্ন রাজনৈতিক কৌশল গ্রহণ করেছে। দলটি সচেতনভাবে ১৯৭১ সালের বিতর্কিত অধ্যায় এড়িয়ে গিয়ে ‘জুলাই বিপ্লবের চেতনা’ ও ‘ইসলামী মূল্যবোধে’র এর ওপর জোর দিচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়েও ‘নতুন বয়ান’ এসেছে জামায়াত নেতাদের কাছ থেকে, যেখানে টেনে আনা হচ্ছে ‘ভারতবিরোধিতা’র প্রসঙ্গ।
জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের অনেকেই বিভিন্ন সময় বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী একাত্তরে স্বাধীনতার বিপক্ষে ছিল না। গত ২৮ নভেম্বর মোহাম্মদপুর টাউন হল শহিদ পার্ক মাঠে এক সমাবেশে দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য এ টি এম আজহারুল ইসলাম বলেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা জামায়াতকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের বিপক্ষ শক্তি আখ্যা দিলেও প্রকৃতপক্ষে জামায়াতই স্বাধীনতার স্বপক্ষ শক্তি।
রোববার বাংলাদেশ ল’ইয়ার্স কাউন্সিল সুপ্রিম কোর্ট শাখার উদ্যোগে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ জামায়াতের সেক্রেটারি ড. মাসুদ বলেন, জামায়াতে ইসলামী কারও তাঁবেদারির স্বাধীনতায় বিশ্বাসী ছিল না বলেই তারা (আওয়ামী লীগ) স্বাধীনতাবিরোধী বলে অপপ্রচার চালিয়েছে। জামায়াতে ইসলামী স্বাধীনতাবিরোধী নয়, জামায়াতে ইসলামী মর্যাদাশীল স্বাধীনতার পক্ষে।
মঙ্গলবার বিজয় দিবস উপলক্ষে কুষ্টিয়ায় জামায়াত আয়োজিত বিজয় র্যালিতে অংশ নিয়ে কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনে দলটির মনোনীত প্রার্থী আমির হামজা বলেন, ‘জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশ ওই সময় যুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল না, তারা ছিল ভারতের বিরুদ্ধে। আজকের এই বিজয়ের র্যালি এই কারণে যে আমরা ১৯৭১ সালে এই দেশের স্বাধীনতার পক্ষে। ভারতের যে আগ্রাসন, এর বিরুদ্ধে ছিলাম।’
রোববার শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আরেক অনুষ্ঠানে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, এ দেশের দিল্লির তাঁবেদাররা বুদ্ধিজীবী হত্যার ঘটনা নিয়ে প্রথাগতভাবে সমস্ত দায় দায়িত্ব ঘৃণিতভাবে জামায়াতে ইসলামীর ওপরে চাপাবার চেষ্টা করেছেন। ইতিহাসের অনেক তথ্য আবিষ্কার হচ্ছে যে দিল্লির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ভিত্তিতে ভারতীয়রাই আমাদের এই সেরা সন্তানদের হত্যা করছে।
জামায়াত নেতাদের বক্তব্যে বারবার উঠে আসছে, স্বাধীনতার ৫৪ বছরে প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলো দেশকে দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বাইরে নিতে পারেনি। ফলে এখন ‘সৎ ও নৈতিক নেতৃত্ব’ দরকার। বিশ্লেষকদের মতে, এর মাধ্যমে দলটি তরুণ প্রজন্মকে আকৃষ্ট করতে চায়, যাদের কাছে ২০২৪ সালের আন্দোলনের স্মৃতি তুলনামূলকভাবে বেশি জীবন্ত।
মঙ্গলবার বিজয় দিবসে যুব র্যালি ম্যারাথন ‘রাজপথে বিজয়ে’ অংশ নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘অতীতের বস্তাপচা সব রাজনীতিকে পায়ের তলে ফেলে দিতে চাই। এই রাজনীতি বাংলাদেশে অচল। এখন বাংলাদেশে নতুন রাজনীতি করতে হবে, যেই রাজনীতি হবে দেশ জাতি স্বাধীনতা এবং সার্বভৌমত্বের পক্ষে।’
এই বিভাজনের প্রভাব তৃণমূল পর্যায়েও স্পষ্ট। ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন ক্যাম্পাসে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ও বিজয় দিবস ঘিরে ছাত্রদল ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের মধ্যে পালটাপালটি স্লোগান ও উত্তেজনা দেখা গেছে।
পাবনা এডওয়ার্ড কলেজ শাখা ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি হাসান আল মামুন শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনায় জামায়াতে ইসলামীর প্রয়াত দুই আমির গোলাম আযম ও মতিউর রহমান নিজামীকে ‘দেশপ্রেমিক’ ও স্বাধীনতা যুদ্ধের ‘বীর সূর্যসন্তান’ উল্লেখ করে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একে ইতিহাস বিকৃতির প্রচেষ্টা উল্লেখ করে তীব্র প্রতিবাদ করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে মানুষের আবেগের যে জায়গা, সেটি মাথায় রেখেই বিএনপি ও জামায়াত নিজেদের রাজনৈতিক অবস্থান স্পষ্ট করে তুলছে। আওয়ামী লীগ কার্যত মাঠে না থাকায় এই দুটি দলই ভোটের মাঠে প্রধান রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হওয়ায় দুই দলের মধ্যে বিরোধও ক্রমেই বাড়ছে, যার কেন্দ্রে উঠে এসেছে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা।
বিএনপির মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে নিজেদের অবস্থান প্রমাণ ও জামায়াতকে স্বাধীনতাবিরোধী হিসেবে প্রচারের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ভোটারদের নিজেদের দিকে টানার চিন্তা কাজ করতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীও মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে নতুন ধরনের বক্তব্য সামনে আনার মাধ্যমে ভোটারদের সহানুভূতি পাওয়ার চেষ্টা করছে বলে তাদের অভিমত। চব্বিশের অভ্যুত্থানের পক্ষের শক্তি আর অন্যায়-দুর্নীতিবিরোধী অবস্থান প্রচারের মাধ্যমে তরুণদের মনোযোগ আকর্ষণের চেষ্টা করছে বলেও বিশ্লেষকরা মনে করেন।
রাজনৈতিক বিশ্লেষক ড. জাহেদ উর রহমানের অভিমত, আওয়ামী লীগের পতনের পর বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে ঐক্যের ভিত্তি টিকে থাকা কঠিন। তার মতে, ভোটের রাজনীতিতে এই দুই দল এখন প্রত্যক্ষ প্রতিদ্বন্দ্বী। তিনি বলেন, বিএনপি যদি জামায়াতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখে, তবে তাদের ওপর পুনরায় ‘স্বাধীনতাবিরোধীদের দোসর’ তকমা বসার ঝুঁকি তৈরি হবে, যা দলটি এড়াতে চায়। বিজয় দিবসের দিন বিএনপি নেতাদের বক্তব্য ও অবস্থান এই বিশ্লেষণের সঙ্গেই সামঞ্জস্যপূর্ণ।
রাজনৈতিক ইতিহাসবিদ মহিউদ্দিন আহমদের পর্যবেক্ষণ, জামায়াতের সঙ্গে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক বিএনপির জন্য এক ধরনের রাজনৈতিক বোঝা। ফলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও মধ্যপন্থি ভোটারদের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেতে হলে বিএনপিকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে নিজেদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করতে হবে।
জামায়াতে ইসলামী প্রসঙ্গে মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, জামায়াত ধীরগতিতে একটি নতুন রাজনৈতিক বয়ান নির্মাণ করছে, যা বিজয় দিবসের মতো সংবেদনশীল সময়ে বিএনপির জন্য অস্তিত্বগত সংকট তৈরি করছে।

আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ করে জামায়াত আমির বলেন, স্বাধীনতার পর একটি পরিবার, একটি গোষ্ঠী এবং একটি দলকে সুবিধা দিতে সব রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনা গড়ে উঠেছিল। দলটি সোনার বাংলা গড়ার ওয়াদা করে শ্মশান বাংলা তৈরি করেছিল।
১০ ঘণ্টা আগে
রাশেদ খান বলেন, আমরা দেখেছি, আমাদের একজন বিপ্লবী যোদ্ধা ও সাহসী কণ্ঠস্বর আওয়ামী ফ্যাসিবাদ ও ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে যিনি সোচ্চার ছিলেন ওসমান হাদি ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মাথায় গুলি করা হয়েছে। অথচ এখন পর্যন্ত হামলার সঙ্গে জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি।
১০ ঘণ্টা আগে
নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর বিষয়ে দুইটি কারণ উল্লেখ করেন মাসুদুজ্জামান মাসুদ। প্রথমত নিরাপত্তাহীনতার শঙ্কা প্রকাশ করেন, দ্বিতীয়ত তার পরিবারও চায় না, তিনি ভোটের মাঠে থাকুক।
১১ ঘণ্টা আগে
ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরীফ ওসমান ওপর হামলার ঘটনায় ক্ষুব্ধ এই জুলাই যোদ্ধা তার সহযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, এই সরকার আমাদেরকে আমাদের নিরাপত্তা দিতে পারবে না। নিজেদের নিরাপত্তার নিজেদেরকেই নিশ্চিত করতে হবে।
১১ ঘণ্টা আগে