অরুণাভ বিশ্বাস
মহমায়ুর যুদ্ধ, যা 'মোমোরিয়া বিদ্রোহ' নামে পরিচিত, ১৮শ শতকের অসমের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই বিদ্রোহটি ১৭৬৯ সালে শুরু হয় এবং ১৮০৫ সালে শেষ হয়। এটি ছিল এক বৃহৎ কৃষক বিদ্রোহ, যা আঞ্চলিক ধর্মীয় আন্দোলন এবং সামাজিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত হয়েছিল।
অসমের আহোম রাজবংশের শাসনামলে, রাজা লক্ষ্মী সিংহের অধীনে মোমোরিয়া বিদ্রোহের সূচনা হয়। এই বিদ্রোহের মূল কারণ ছিল রাজ্যের শাসনব্যবস্থা, ধর্মীয় বৈষম্য, এবং সাধারণ মানুষের প্রতি শোষণ। মোমোরিয়া, বা মায়ামারা, ছিল এক ধর্মীয় সম্প্রদায় যারা বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারী ছিল। এই সম্প্রদায়ের সদস্যরা রাজ্যের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করে।
বিদ্রোহের প্রথম পর্যায়ে, ১৭৬৯ সালে, মোরান সম্প্রদায়ের নেতা রঘা নেঙ এবং নাহারখোরা শইকিয়া আহোম সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাদের নেতৃত্বে, বিদ্রোহীরা রংপুর, আহোম রাজ্যের রাজধানী, দখল করে। যদিও রাজকীয় বাহিনী বিদ্রোহীদের পরাস্ত করে রাজধানী পুনরুদ্ধার করে, তবে বিদ্রোহের আগুন নিভে যায়নি।
দ্বিতীয় পর্যায়ে, ১৭৮২ সালে, মোমোরিয়া বিদ্রোহ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। এই সময়ে, বিদ্রোহীরা আবারও রংপুর দখল করে এবং রাজকীয় কর্মকর্তাদের বন্দী করে। এই বিদ্রোহের ফলে আহোম রাজবংশের শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রাজ্যের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়।
বিদ্রোহের তৃতীয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে, ১৮০৫ সালে, মোমোরিয়া বিদ্রোহের নেতৃত্বে আসেন মহন্ত গগনী। তিনি রাজা রামকান্তকে সমর্থন দিয়ে মোমোরিয়া রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। এই সময়ে, বিদ্রোহীরা আহোম রাজবংশের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
বিদ্রোহের এই তিনটি পর্যায়ে, মোমোরিয়া বিদ্রোহীরা বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সমর্থন লাভ করে এবং রাজ্যের বিভিন্ন অংশে তাদের প্রভাব বিস্তার করে। তাদের এই সংগ্রাম ছিল শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, বরং ধর্মীয় এবং সামাজিক মুক্তির জন্যও।
বিদ্রোহের পরিণামে, আহোম রাজবংশের শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রাজ্যটি বার্মিজ আক্রমণের শিকার হয়। ১৮২৬ সালে ইয়ানডাবো চুক্তির মাধ্যমে রাজ্যটি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে চলে আসে।
বিদ্রোহের এই ইতিহাসে বিদেশি গবেষকদের মন্তব্যও গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাসবিদ ই.এ. গেইট তাঁর 'A History of Assam' গ্রন্থে মোরান সম্প্রদায়ের ভূমিকা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, "মোরানরা অসমের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, বিশেষ করে মোমোরিয়া বিদ্রোহে তাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য।"(IOSR Journals)
অন্যদিকে, ইতিহাসবিদ বি. গগৈ তাঁর গবেষণায় উল্লেখ করেছেন, "মোমোরিয়া বিদ্রোহ ছিল এক বৃহৎ কৃষক বিদ্রোহ, যা সমাজের নিম্নবর্গের মানুষের রাজনৈতিক সচেতনতার প্রতিফলন।"
এই বিদ্রোহের মাধ্যমে অসমের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। মোমোরিয়া বিদ্রোহ ছিল একটি ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলন, যা সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছিল। এটি শুধুমাত্র অসমের ইতিহাসে নয়, বরং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
মহমায়ুর যুদ্ধ বা মোমোরিয়া বিদ্রোহের ইতিহাস আমাদের শেখায় যে, সাধারণ মানুষ যখন তাদের অধিকার ও ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম করে, তখন তা একটি বৃহৎ সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়। এই বিদ্রোহের মাধ্যমে অসমের সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক সচেতনতা এবং সংগ্রামের ইতিহাস চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
মহমায়ুর যুদ্ধ, যা 'মোমোরিয়া বিদ্রোহ' নামে পরিচিত, ১৮শ শতকের অসমের ইতিহাসে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। এই বিদ্রোহটি ১৭৬৯ সালে শুরু হয় এবং ১৮০৫ সালে শেষ হয়। এটি ছিল এক বৃহৎ কৃষক বিদ্রোহ, যা আঞ্চলিক ধর্মীয় আন্দোলন এবং সামাজিক অস্থিরতার প্রেক্ষাপটে উদ্ভূত হয়েছিল।
অসমের আহোম রাজবংশের শাসনামলে, রাজা লক্ষ্মী সিংহের অধীনে মোমোরিয়া বিদ্রোহের সূচনা হয়। এই বিদ্রোহের মূল কারণ ছিল রাজ্যের শাসনব্যবস্থা, ধর্মীয় বৈষম্য, এবং সাধারণ মানুষের প্রতি শোষণ। মোমোরিয়া, বা মায়ামারা, ছিল এক ধর্মীয় সম্প্রদায় যারা বৈষ্ণব ধর্মের অনুসারী ছিল। এই সম্প্রদায়ের সদস্যরা রাজ্যের শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়ে বিদ্রোহে অংশগ্রহণ করে।
বিদ্রোহের প্রথম পর্যায়ে, ১৭৬৯ সালে, মোরান সম্প্রদায়ের নেতা রঘা নেঙ এবং নাহারখোরা শইকিয়া আহোম সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। তাদের নেতৃত্বে, বিদ্রোহীরা রংপুর, আহোম রাজ্যের রাজধানী, দখল করে। যদিও রাজকীয় বাহিনী বিদ্রোহীদের পরাস্ত করে রাজধানী পুনরুদ্ধার করে, তবে বিদ্রোহের আগুন নিভে যায়নি।
দ্বিতীয় পর্যায়ে, ১৭৮২ সালে, মোমোরিয়া বিদ্রোহ আরও তীব্র হয়ে ওঠে। এই সময়ে, বিদ্রোহীরা আবারও রংপুর দখল করে এবং রাজকীয় কর্মকর্তাদের বন্দী করে। এই বিদ্রোহের ফলে আহোম রাজবংশের শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রাজ্যের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা বৃদ্ধি পায়।
বিদ্রোহের তৃতীয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে, ১৮০৫ সালে, মোমোরিয়া বিদ্রোহের নেতৃত্বে আসেন মহন্ত গগনী। তিনি রাজা রামকান্তকে সমর্থন দিয়ে মোমোরিয়া রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। এই সময়ে, বিদ্রোহীরা আহোম রাজবংশের বিরুদ্ধে এক শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
বিদ্রোহের এই তিনটি পর্যায়ে, মোমোরিয়া বিদ্রোহীরা বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সমর্থন লাভ করে এবং রাজ্যের বিভিন্ন অংশে তাদের প্রভাব বিস্তার করে। তাদের এই সংগ্রাম ছিল শুধুমাত্র রাজনৈতিক নয়, বরং ধর্মীয় এবং সামাজিক মুক্তির জন্যও।
বিদ্রোহের পরিণামে, আহোম রাজবংশের শাসনব্যবস্থা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং রাজ্যটি বার্মিজ আক্রমণের শিকার হয়। ১৮২৬ সালে ইয়ানডাবো চুক্তির মাধ্যমে রাজ্যটি ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধীনে চলে আসে।
বিদ্রোহের এই ইতিহাসে বিদেশি গবেষকদের মন্তব্যও গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাসবিদ ই.এ. গেইট তাঁর 'A History of Assam' গ্রন্থে মোরান সম্প্রদায়ের ভূমিকা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, "মোরানরা অসমের ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, বিশেষ করে মোমোরিয়া বিদ্রোহে তাদের অংশগ্রহণ উল্লেখযোগ্য।"(IOSR Journals)
অন্যদিকে, ইতিহাসবিদ বি. গগৈ তাঁর গবেষণায় উল্লেখ করেছেন, "মোমোরিয়া বিদ্রোহ ছিল এক বৃহৎ কৃষক বিদ্রোহ, যা সমাজের নিম্নবর্গের মানুষের রাজনৈতিক সচেতনতার প্রতিফলন।"
এই বিদ্রোহের মাধ্যমে অসমের ইতিহাসে এক নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। মোমোরিয়া বিদ্রোহ ছিল একটি ধর্মীয়, সামাজিক এবং রাজনৈতিক আন্দোলন, যা সাধারণ মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করেছিল। এটি শুধুমাত্র অসমের ইতিহাসে নয়, বরং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
মহমায়ুর যুদ্ধ বা মোমোরিয়া বিদ্রোহের ইতিহাস আমাদের শেখায় যে, সাধারণ মানুষ যখন তাদের অধিকার ও ন্যায়ের জন্য সংগ্রাম করে, তখন তা একটি বৃহৎ সামাজিক আন্দোলনে পরিণত হয়। এই বিদ্রোহের মাধ্যমে অসমের সাধারণ মানুষের রাজনৈতিক সচেতনতা এবং সংগ্রামের ইতিহাস চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভীর বরাবর পাঠানো লিখিত জবাবে ফজলুর রহমান বলেন, ২৪ আগস্ট রাত ৯টায় আপনার স্বাক্ষরিত একটি কারণ দর্শানোর নোটিশ আমি হাতে পাই। এরপর যথাসময়ে নোটিশের জবাব দেওয়ার সময় বাড়ানোর জন্য আমি আবেদন করি। আপনি আমাকে ২৪ ঘণ্টা সময় বৃদ্ধি করেছেন, এজন্য ধন্যবাদ।
৪ ঘণ্টা আগেসোমপুর বিহারের মূল স্থাপনাটি আয়তাকার, যার মাঝখানে আছে একটি বিশাল স্তূপ। চারপাশে ঘিরে রয়েছে ১৭৭টি কক্ষ, যেগুলোতে ভিক্ষুরা থাকতেন। অনেকেই এটিকে প্রাচীন বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন। এখানে শুধু ধর্মগ্রন্থ পাঠ নয়, চিকিৎসা, জ্যোতির্বিদ্যা, দর্শন, গণিত ও শিল্পকলার শিক্ষা হতো। অর্থাৎ এটি ছিল এক ধরনের
৬ ঘণ্টা আগেসালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, কোনো দল নির্বাচনে অংশ নিতে না চাইলে সেটি তাদের সিদ্ধান্ত, তাদের রাজনৈতিক স্বাধীনতা। কিন্তু যারা বাহানা দিয়ে নির্বাচন বয়কট করবে তারা ভবিষ্যৎ রাজনীতি থেকে নিজেরাই মাইনাস হয়ে যাবে।
৬ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের দিনে সেনাবাহিনী স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে দায়িত্ব পালন করবে। ক্যাম্পাসের ৭ পয়েন্টে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সেনাবাহিনী উপস্থিত থাকবে। এ ছাড়া ফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত ব্যালট বাক্স সেনা তত্ত্বাবধানে থাকবে।
৯ ঘণ্টা আগে