বিশেষ প্রতিনিধি, রাজনীতি ডটকম
তিন ধাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে সে সনদের কপি পাঠানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোকে। এই সনদে সইয়ের জন্য নির্ধারিত সময়ের বাকিও আছে আর মাত্র ১৮ ঘণ্টা। এই শেষ সময়ে এসে জুলাই সনদ নিয়ে ‘সংকট’ নতুন রূপ ধারণ করেছে।
জুলাই সনদের জন্য দলগুলো বিভিন্ন ইস্যুতে ছাড় দিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছালেও এখনো ভিন্নমতও রয়ে গেছে। সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে যে গণভোটের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার সময়রেখা নিয়েও রয়েছে তীব্র মতপার্থক্য। এর মধ্যে অন্তত ছয়টি দল সুস্পষ্টভাবেই বলে দিয়েছে, তারা জুলাই সনদে সই করবে না। আরও কয়েকটি দলও নানা শর্ত আরোপ করেছে রেখেছে জুলাই সনদ সইয়ের জন্য।
এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জুলাই সনদ সইয়ের যে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সরকার, সেখানে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে ছয় মাস ধরে ঐকমত্য কমিশন ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যে দীর্ঘ আলোচনা চালিয়ে গেছে, তা চূড়ান্তভাবে কতটুকু সফল হলো, সে প্রশ্নও করছেন অনেকেই।
জুলাই সনদে উল্লেখ করা বিভিন্ন প্রস্তাবের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ভিন্নমত ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নিয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না থাকায় বেশ কিছু দলই এ সনদে সই করা নিয়ে সংশয় জানিয়েছিল মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সনদ হাতে পেয়ে।
রাজনৈতিক দলগুলোর এমন অবস্থান প্রকাশ পেলে বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দলগুলোকে ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে ডাকে ঐকমত্য কমিশন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনপ্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই ছিলেন প্রধান অতিথি। সে বৈঠকেই বেশকিছু দল জুলাই সনদে সই নিয়ে শঙ্কার কথা জানায়। পরে এসব দল নিজেদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছে।
সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই সোচ্চার জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই সনদে সই করবে না বলে জানিয়েছে। বুধবারের বৈঠকের পর দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়গুলো জাতির কাছে অস্পষ্ট থাকে, তাহলে জুলাই সনদ সইয়ের মাধ্যমে আমরা যেটা অর্জন করতে চাই সেটাকে অর্জন হিসেবে সামনের দিকে প্রাপ্ত হওয়া অনিশ্চিত থেকে যাবে। এ কারণেই আমরা জুলাই সনদে সই করব কি না— সে বিষয়গুলো বিবেচনাধীন রেখেছি।
পরে বৃহস্পতিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, এই সনদে সই করতে হলে তাদের দুটি শর্ত— জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি ও এ সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি— পূরণ করতে হবে। তা না হলে তারা সনদে সই করবেন না।
নাহিদ বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া এবং সনদ বাস্তবায়নে আদেশের ব্যাপারে নিশ্চয়তা ছাড়া যদি সনদে সই করি, সেটা মূল্যহীন হবে। পরের সরকার এলে সনদ নিয়ে কী করবে, সে নিশ্চয়তা আমরা চাই। সে বিষয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা জুলাই সনদের সইয়ের যে অনুষ্ঠান বা যে আয়োজন চলছে, সেখানে আমরা নিজেরা অংশীদার হব না।
বামপন্থি চার রাজনৈতিক দলের জোটও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা জুলাই সনদে সই করবে না। দলগুলো হলো— বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ)।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন করে এই জোটের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জুলাই সনদে সই না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, শুক্রবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানে আমাদের দলগুলোর কাউকেই বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমরা মনে করি, ইচ্ছাকৃতভাবেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ভিন্নমতের কণ্ঠ বন্ধ করতে এই আচরণ করেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগণতান্ত্রিক।
এই জোট বলছে, প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, সব দল যেসব বিষয়ে একমত হবে, শুধুমাত্র সেগুলোকেই ঐকমত্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। কিন্তু ১৪ অক্টোবর আমাদের কাছে পাঠানো চূড়ান্ত সনদে দেখা যায়, সর্বসম্মত নয় এমন প্রস্তাবগুলোও যুক্ত করা হয়েছে এবং আমাদের দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস এবং দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাস সঠিকভাবে উপস্থাপন না হওয়া, জুলাই সনদ নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার সুযোগ রুদ্ধ করা, সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদে থাকা স্বাধীনতার ঘোষণা ও প্রক্লেমেশন অব ইনডিপেন্ডেন্স বাদ দেওয়ার সুপারিশ এবং অভ্যুত্থান-পরবর্তী ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্সে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত সনদে বাদ দেওয়াকে এই চার বাম দল জুলাই সনদে সই না করার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত বক্তব্যে।
জুলাই সনদে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস উপেক্ষা করার অভিযোগ তুলে এই সনদে সই করবে না বলে জানিয়েছে গণফোরামও। দলটি বলেছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সংক্রান্ত টেলিগ্রাম এবং ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত থাকবে— এটি নিশ্চিত করা না হলে তারা সই করবে না।
কিছু দলের সুস্পষ্ট বিরোধিতা থাকলেও অন্য কিছু দল আবার জুলাই সনদে সই করবে বলে এরই মধ্যে নিশ্চিত করেছে। তাদের ভাষ্য, দেশ ও জাতির ভবিষ্যতের কথা ভেবে বৃহত্তর স্বার্থে তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপস করে হলেও জুলাই সনদে সই করছে। এসব দলের মধ্যে রয়েছে— বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, কিছু প্রশ্নে আমাদের ভিন্নমত আছে, ভিন্ন চিন্তা আছে, কিছু প্রশ্নে আপত্তিও রয়েছে। কিন্তু আমরা একটি কেন্দ্রীয় বোঝাপড়া ও রাজনৈতিক সমঝোতা তৈরি করার লক্ষ্যে অনেক প্রশ্নে ছাড় দিয়েছি। সেই জায়গা থেকে, বহু প্রশ্নে আমরা মতের ভিত্তিতে একমত হয়েছি।
সাইফুল হক আরও বলেন, কিছু বিষয়ে আপত্তি ও মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি যে যতদূর সম্ভব আলোচনা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আগামীকাল (শুক্রবার) বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদীয় প্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিকভাবে এ অঙ্গীকারনামায় সই করবেন। আমরা আগামীকাল সনদ সই অনুষ্ঠানে অংশ নেব, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে স্বাক্ষর করব।
গণঅধিকার পরিষদও জুলাই সনদে সই করবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। এর পেছনে তারা গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখাকে কারণ হিসেবে তুলে ধরছে।
রাশেদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, আমরা মনে করি, যদি এখন সনদে সই না করি তাহলে নতুন কোনো পক্ষ সুযোগ নিয়ে ওয়ান-ইলেভেনের মতো আরেকটি অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে আমরা জুলাই সনদে সইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
জুলাই সনদে সই করবেন জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বুধবারের বৈঠকে বলেন, কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। এগুলো গণভোটের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। আমাদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী দুজনেই বলেন, তাদের দল শুক্রবারের অনুষ্ঠানে জুলাই জাতীয় সনদে সই করবে।
দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের মতো প্রতিষ্ঠিত ও বড় রাজনৈতিক দলগুলোই এখনো জুলাই সনদে সই করা নিয়ে নিজেদের অবস্থান সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেনি। এসব দল জুলাই সনদ নিয়ে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করলেও নিজেদের অবস্থান এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছে।
বিএনপি জুলাই সনদে সই করতে প্রস্তুত আছে জানিয়ে বুধবারের বৈঠকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গণভোট আগে না পরে— এটি জাতীয় সনদের কোনো বিষয় নয়। বাস্তবায়নের জন্য ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে সুপারিশ দেবে। আপনারা যদি আমাদের এ আলাপ-আলোচনায় সন্তুষ্ট না হন, প্রধান উপদেষ্টা আপনি বলতে পারেন যে আপনার সিদ্ধান্ত কী। আমরা সবসময় আপনার সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থানরত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবশ্য বিএনপির সিদ্ধান্ত জানতে আরও অপেক্ষা করতে বলেন। একটি গণমাধ্যমকে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, বিএনপি যেগুলো বলেছে, যেসব নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সেগুলো সনদে লিপিবদ্ধ করা হলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। কালকের (শুক্রবার) দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, সনদে বিএনপি স্বাক্ষর করবে কি না জানতে পারবেন।
জামায়াতে ইসলামীও জুলাই সনদে সইয়ের ক্ষেত্রে শর্ত আরোপ করে রেখেছে। তাদের শর্তটি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের তারিখ নিয়ে। বুধবারের বৈঠকে দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বৈঠকে বলেন, নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করতে হবে। এর মাধ্যমে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাপ পরওয়ারও এক অনুষ্ঠানে একই শর্তের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে (সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) নির্বাচনের জন্য জুলাই সনদে আগামী নভেম্বরে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত না করলে জামায়াতে ইসলামী সনদে সই করবে না।
জুলাই সনদে ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও। সনদে সইয়ের বিষয়েও তারা ইতিবাচক। তবে তারাও নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজনে বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করেছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমেদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, এ গণভোট নির্বাচনের আগে হওয়া উচিত। এ জন্য আমাদের প্রস্তাব, নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটটি সম্পন্ন হওয়া ভালো। পাশাপাশি নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি অনুসরণের বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট সম্মতি থাকতে হবে।
শুক্রবারের জুলাই সনদ সইয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন জানিয়ে অধ্যক্ষ ইউনুস বলেন, আমরা সনদ সইয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবো। আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে আমাদের মধ্যে এ নিয়ে মতবিনিময় ও খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। মূলত আমরা সনদ সইকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। কিছু বিষয় এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে, সেগুলো যদি পরিষ্কার করে নির্ধারণ করা যায়, তাহলে সেটা সবার জন্যই সুবিধাজনক হবে এবং দেশের জন্যও উপকারী হবে।
নিজেরা জুলাই সনদে সই করবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা না দিলেও ইসলামী আন্দোলনের এই মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট— সনদে সই হওয়া দরকার এবং এর পথে থাকা বাধা দূর করা জরুরি। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন, উপদেষ্টামণ্ডলী ও প্রধান উপদেষ্টা যদি এতে সম্মতি দেন, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো অস্পষ্টতা থাকবে না। আমরা চাই জনগণ স্পষ্টভাবে বুঝতে পারুক, এই প্রক্রিয়া কোথায় যাচ্ছে এবং উদ্দেশ্য কী।
তিন ধাপে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর ‘জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫’ চূড়ান্ত করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এরই মধ্যে সে সনদের কপি পাঠানো হয়েছে রাজনৈতিক দলগুলোকে। এই সনদে সইয়ের জন্য নির্ধারিত সময়ের বাকিও আছে আর মাত্র ১৮ ঘণ্টা। এই শেষ সময়ে এসে জুলাই সনদ নিয়ে ‘সংকট’ নতুন রূপ ধারণ করেছে।
জুলাই সনদের জন্য দলগুলো বিভিন্ন ইস্যুতে ছাড় দিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছালেও এখনো ভিন্নমতও রয়ে গেছে। সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে যে গণভোটের সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তার সময়রেখা নিয়েও রয়েছে তীব্র মতপার্থক্য। এর মধ্যে অন্তত ছয়টি দল সুস্পষ্টভাবেই বলে দিয়েছে, তারা জুলাই সনদে সই করবে না। আরও কয়েকটি দলও নানা শর্ত আরোপ করেছে রেখেছে জুলাই সনদ সইয়ের জন্য।
এ পরিস্থিতিতে শুক্রবার (১৭ অক্টোবর) জুলাই সনদ সইয়ের যে অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে সরকার, সেখানে সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতে ছয় মাস ধরে ঐকমত্য কমিশন ৩০টিরও বেশি রাজনৈতিক দলকে নিয়ে যে দীর্ঘ আলোচনা চালিয়ে গেছে, তা চূড়ান্তভাবে কতটুকু সফল হলো, সে প্রশ্নও করছেন অনেকেই।
জুলাই সনদে উল্লেখ করা বিভিন্ন প্রস্তাবের সঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ‘নোট অব ডিসেন্ট’ বা ভিন্নমত ও জুলাই সনদ বাস্তবায়নে গণভোট নিয়ে সুনির্দিষ্ট সিদ্ধান্ত না থাকায় বেশ কিছু দলই এ সনদে সই করা নিয়ে সংশয় জানিয়েছিল মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) সনদ হাতে পেয়ে।
রাজনৈতিক দলগুলোর এমন অবস্থান প্রকাশ পেলে বুধবার (১৫ অক্টোবর) সন্ধ্যায় দলগুলোকে ‘অতি জরুরি’ বৈঠকে ডাকে ঐকমত্য কমিশন। সেখানে প্রধান উপদেষ্টা ও কমিশনপ্রধান অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই ছিলেন প্রধান অতিথি। সে বৈঠকেই বেশকিছু দল জুলাই সনদে সই নিয়ে শঙ্কার কথা জানায়। পরে এসব দল নিজেদের অবস্থান আরও স্পষ্ট করেছে।
সংস্কার প্রক্রিয়া নিয়ে শুরু থেকেই সোচ্চার জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই সনদে সই করবে না বলে জানিয়েছে। বুধবারের বৈঠকের পর দলটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, যদি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের বিষয়গুলো জাতির কাছে অস্পষ্ট থাকে, তাহলে জুলাই সনদ সইয়ের মাধ্যমে আমরা যেটা অর্জন করতে চাই সেটাকে অর্জন হিসেবে সামনের দিকে প্রাপ্ত হওয়া অনিশ্চিত থেকে যাবে। এ কারণেই আমরা জুলাই সনদে সই করব কি না— সে বিষয়গুলো বিবেচনাধীন রেখেছি।
পরে বৃহস্পতিবার দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানান, এই সনদে সই করতে হলে তাদের দুটি শর্ত— জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি ও এ সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি— পূরণ করতে হবে। তা না হলে তারা সনদে সই করবেন না।
নাহিদ বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ছাড়া এবং সনদ বাস্তবায়নে আদেশের ব্যাপারে নিশ্চয়তা ছাড়া যদি সনদে সই করি, সেটা মূল্যহীন হবে। পরের সরকার এলে সনদ নিয়ে কী করবে, সে নিশ্চয়তা আমরা চাই। সে বিষয় নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত আমরা জুলাই সনদের সইয়ের যে অনুষ্ঠান বা যে আয়োজন চলছে, সেখানে আমরা নিজেরা অংশীদার হব না।
বামপন্থি চার রাজনৈতিক দলের জোটও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, তারা জুলাই সনদে সই করবে না। দলগুলো হলো— বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী) ও বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (বাংলাদেশ জাসদ)।
বৃহস্পতিবার এক সংবাদ সম্মেলন করে এই জোটের পক্ষ থেকে লিখিতভাবে জুলাই সনদে সই না করার বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, শুক্রবার জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে সেখানে আমাদের দলগুলোর কাউকেই বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। আমরা মনে করি, ইচ্ছাকৃতভাবেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ভিন্নমতের কণ্ঠ বন্ধ করতে এই আচরণ করেছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অগণতান্ত্রিক।
এই জোট বলছে, প্রধান উপদেষ্টা বলেছিলেন, সব দল যেসব বিষয়ে একমত হবে, শুধুমাত্র সেগুলোকেই ঐকমত্য হিসেবে বিবেচনা করা হবে। কিন্তু ১৪ অক্টোবর আমাদের কাছে পাঠানো চূড়ান্ত সনদে দেখা যায়, সর্বসম্মত নয় এমন প্রস্তাবগুলোও যুক্ত করা হয়েছে এবং আমাদের দেওয়া নোট অব ডিসেন্ট যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।
এ ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস এবং দেশের রাজনৈতিক আন্দোলনের ইতিহাস সঠিকভাবে উপস্থাপন না হওয়া, জুলাই সনদ নিয়ে আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার সুযোগ রুদ্ধ করা, সংবিধানের ১৫০(২) অনুচ্ছেদে থাকা স্বাধীনতার ঘোষণা ও প্রক্লেমেশন অব ইনডিপেন্ডেন্স বাদ দেওয়ার সুপারিশ এবং অভ্যুত্থান-পরবর্তী ১০৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সুপ্রিম কোর্টের রেফারেন্সে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের বিষয়টি চূড়ান্ত সনদে বাদ দেওয়াকে এই চার বাম দল জুলাই সনদে সই না করার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে লিখিত বক্তব্যে।
জুলাই সনদে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস উপেক্ষা করার অভিযোগ তুলে এই সনদে সই করবে না বলে জানিয়েছে গণফোরামও। দলটি বলেছে, ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সংক্রান্ত টেলিগ্রাম এবং ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র জুলাই সনদে অন্তর্ভুক্ত থাকবে— এটি নিশ্চিত করা না হলে তারা সই করবে না।
কিছু দলের সুস্পষ্ট বিরোধিতা থাকলেও অন্য কিছু দল আবার জুলাই সনদে সই করবে বলে এরই মধ্যে নিশ্চিত করেছে। তাদের ভাষ্য, দেশ ও জাতির ভবিষ্যতের কথা ভেবে বৃহত্তর স্বার্থে তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপস করে হলেও জুলাই সনদে সই করছে। এসব দলের মধ্যে রয়েছে— বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক রাজনীতি ডটকমকে বলেন, কিছু প্রশ্নে আমাদের ভিন্নমত আছে, ভিন্ন চিন্তা আছে, কিছু প্রশ্নে আপত্তিও রয়েছে। কিন্তু আমরা একটি কেন্দ্রীয় বোঝাপড়া ও রাজনৈতিক সমঝোতা তৈরি করার লক্ষ্যে অনেক প্রশ্নে ছাড় দিয়েছি। সেই জায়গা থেকে, বহু প্রশ্নে আমরা মতের ভিত্তিতে একমত হয়েছি।
সাইফুল হক আরও বলেন, কিছু বিষয়ে আপত্তি ও মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও আমরা ঐকমত্যে পৌঁছেছি যে যতদূর সম্ভব আলোচনা ও বোঝাপড়ার ভিত্তিতে এগিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। আগামীকাল (শুক্রবার) বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সংসদীয় প্রতিনিধিরা আনুষ্ঠানিকভাবে এ অঙ্গীকারনামায় সই করবেন। আমরা আগামীকাল সনদ সই অনুষ্ঠানে অংশ নেব, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে স্বাক্ষর করব।
গণঅধিকার পরিষদও জুলাই সনদে সই করবে বলে জানান দলটির সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান। এর পেছনে তারা গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষার পাশাপাশি রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখাকে কারণ হিসেবে তুলে ধরছে।
রাশেদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, আমরা মনে করি, যদি এখন সনদে সই না করি তাহলে নতুন কোনো পক্ষ সুযোগ নিয়ে ওয়ান-ইলেভেনের মতো আরেকটি অগণতান্ত্রিক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে। গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা রক্ষা ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখার স্বার্থে আমরা জুলাই সনদে সইয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
জুলাই সনদে সই করবেন জানিয়ে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বুধবারের বৈঠকে বলেন, কিছু বিষয়ে ঐকমত্য হয়েছে, কিছু বিষয়ে নোট অব ডিসেন্ট রয়েছে। এগুলো গণভোটের মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। আমাদের ঐকমত্যের ভিত্তিতে এগিয়ে যেতে হবে।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী দুজনেই বলেন, তাদের দল শুক্রবারের অনুষ্ঠানে জুলাই জাতীয় সনদে সই করবে।
দেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল বিএনপি ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনের মতো প্রতিষ্ঠিত ও বড় রাজনৈতিক দলগুলোই এখনো জুলাই সনদে সই করা নিয়ে নিজেদের অবস্থান সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরেনি। এসব দল জুলাই সনদ নিয়ে ইতিবাচক ধারণা পোষণ করলেও নিজেদের অবস্থান এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে রেখেছে।
বিএনপি জুলাই সনদে সই করতে প্রস্তুত আছে জানিয়ে বুধবারের বৈঠকে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গণভোট আগে না পরে— এটি জাতীয় সনদের কোনো বিষয় নয়। বাস্তবায়নের জন্য ঐকমত্য কমিশন সরকারের কাছে সুপারিশ দেবে। আপনারা যদি আমাদের এ আলাপ-আলোচনায় সন্তুষ্ট না হন, প্রধান উপদেষ্টা আপনি বলতে পারেন যে আপনার সিদ্ধান্ত কী। আমরা সবসময় আপনার সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধাশীল।
বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁওয়ে অবস্থানরত বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর অবশ্য বিএনপির সিদ্ধান্ত জানতে আরও অপেক্ষা করতে বলেন। একটি গণমাধ্যমকে মোবাইল ফোনে তিনি বলেন, বিএনপি যেগুলো বলেছে, যেসব নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছে, সেগুলো সনদে লিপিবদ্ধ করা হলে আমরা সিদ্ধান্ত নেব। কালকের (শুক্রবার) দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করুন, সনদে বিএনপি স্বাক্ষর করবে কি না জানতে পারবেন।
জামায়াতে ইসলামীও জুলাই সনদে সইয়ের ক্ষেত্রে শর্ত আরোপ করে রেখেছে। তাদের শর্তটি জুলাই সনদ বাস্তবায়নের গণভোটের তারিখ নিয়ে। বুধবারের বৈঠকে দলটির কেন্দ্রীয় প্রচার বিভাগের সেক্রেটারি মতিউর রহমান আকন্দ বৈঠকে বলেন, নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করতে হবে। এর মাধ্যমে জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে।
বৃহস্পতিবার জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাপ পরওয়ারও এক অনুষ্ঠানে একই শর্তের কথা উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদের উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতিতে (সংখ্যানুপাতিক বা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) নির্বাচনের জন্য জুলাই সনদে আগামী নভেম্বরে গণভোট আয়োজনের প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত না করলে জামায়াতে ইসলামী সনদে সই করবে না।
জুলাই সনদে ইতিবাচক অবস্থানের কথা জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশও। সনদে সইয়ের বিষয়েও তারা ইতিবাচক। তবে তারাও নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজনে বাধ্যবাধকতার কথা উল্লেখ করেছে।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ ইউনুস আহমেদ রাজনীতি ডটকমকে বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, এ গণভোট নির্বাচনের আগে হওয়া উচিত। এ জন্য আমাদের প্রস্তাব, নভেম্বরের মধ্যেই গণভোটটি সম্পন্ন হওয়া ভালো। পাশাপাশি নির্বাচনে পিআর পদ্ধতি অনুসরণের বিষয়ে একটি সুস্পষ্ট সম্মতি থাকতে হবে।
শুক্রবারের জুলাই সনদ সইয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন জানিয়ে অধ্যক্ষ ইউনুস বলেন, আমরা সনদ সইয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেবো। আজ (বৃহস্পতিবার) রাতে আমাদের মধ্যে এ নিয়ে মতবিনিময় ও খসড়া চূড়ান্ত করা হবে। মূলত আমরা সনদ সইকে ইতিবাচকভাবে দেখছি। কিছু বিষয় এখনো অস্পষ্ট রয়ে গেছে, সেগুলো যদি পরিষ্কার করে নির্ধারণ করা যায়, তাহলে সেটা সবার জন্যই সুবিধাজনক হবে এবং দেশের জন্যও উপকারী হবে।
নিজেরা জুলাই সনদে সই করবেন কি না, সে বিষয়ে নিশ্চয়তা না দিলেও ইসলামী আন্দোলনের এই মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের অবস্থান স্পষ্ট— সনদে সই হওয়া দরকার এবং এর পথে থাকা বাধা দূর করা জরুরি। জাতীয় ঐক্যমত্য কমিশন, উপদেষ্টামণ্ডলী ও প্রধান উপদেষ্টা যদি এতে সম্মতি দেন, তাহলে ভবিষ্যতে কোনো অস্পষ্টতা থাকবে না। আমরা চাই জনগণ স্পষ্টভাবে বুঝতে পারুক, এই প্রক্রিয়া কোথায় যাচ্ছে এবং উদ্দেশ্য কী।
জুলাই জাতীয় সনদকে আইনি ভিত্তি ও এ সনদ বাস্তবায়নে আদেশ জারি— জুলাই জাতীয় সনদে সইয়ের জন্য এ দুই শর্ত দিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। দলটির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, এ দুই শর্ত না মানলে তারা জুলাই সনদে সই করবেন না।
১৫ ঘণ্টা আগেভোটগ্রহণ হবে ৯টি একাডেমিক ভবনে স্থাপিত ১৭টি কেন্দ্রে। ভোট পরিচালনায় থাকবেন ২১২ জন শিক্ষক। এর মধ্যে ১৭ জন প্রিসাইডিং অফিসার এবং বাকিরা সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ৯১ জন পোলিং অফিসার দায়িত্বে আছেন।
১৮ ঘণ্টা আগেএ নির্বাচনে ভিপি ভিপি নির্বাচিত হয়েছেন শিবির সমর্থিত ‘সম্প্রীতির শিক্ষার্থী জোট’ প্যানেলের ইব্রাহিম হোসেন রনি, জিএস হয়েছেন একই প্যানেলের সাঈদ বিন হাবিব৷ শীর্ষ তিন পদের তৃতীয়টি গেছে ছাত্রদলের ঘরে, জয় পেয়েছেন আইয়ুবুর রহমান তৌফিক।
১৯ ঘণ্টা আগেসোহরাওয়ার্দী হল সংসদ নির্বাচনের ঘোষিত ফলে দেখা যায়, ছাত্রশিবির সমর্থিত প্রার্থী নেয়ামত উল্লাহ এক হাজার ২০৬ ভোট পেয়ে ভিপি পদে জয়ী হয়েছেন। তার চেয়ে মাত্র ৩ ভোট কম পেয়েছেন ছাত্রদলের প্রার্থী জমাদিউল আওয়াল, তার ভোট এক হাজার ২০৩টি।
১ দিন আগে