ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের বাইরে আর কোনো পথ নেই: আমীর খসরু

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৯ জুলাই ২০২৫, ২০: ৫৪

আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। এর বাইরে আর কোনো পথ নেই।

যারা নির্বাচন চান না তাদের রাজনৈতিক দল করার দরকার কী- এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, আপনারা যারা গণতন্ত্র চান না, তাদের তো কেউ রাজনীতি করতে বলেনি। আপনারা যারা ভোট চান না, তাদের রাজনৈতিক দল করার দরকার কী! নির্বাচন করবেন না, আবার বলবেন আমি রাজনৈতিক দল। জনগণের কাছে যেতে চাইবেন না, আবার বলবেন আমি রাজনৈতিক দল। তো আপনি রাজনৈতিক দল হলে তো জনগণের কাছে যেতে হবে।

শনিবার (১৯ জুলাই) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরীর লালখান বাজার সংলগ্ন লেডিস ক্লাবে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতি চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার তো রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্বশীল সরকার নয়, এটা তাদের সীমাবদ্ধতা। সুতরাং তাদের দ্রুত নির্বাচন দিয়ে দেশটাকে তার মালিক জনগণের হাতে তুলে দেওয়া দরকার।

তিনি বলেন, সংস্কারের কথা বলা হচ্ছে, ঐকমত্যের কথা বলা হচ্ছে, সব ঠিক আছে, সেখানে যতটুকু ঐকমত্য হবে তার বাইরে সময় নষ্ট করার দরকার নেই। লন্ডনে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের যে বৈঠক হয়েছে, ওই বৈঠক অনুযায়ী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের জনগণের মালিকানা তাদের ফিরিয়ে দিতে হবে। এর বাইরে আর কোনো পথ নেই। বাংলাদেশের মানুষ একটি স্থিতিশীল বাংলাদেশ চায়, একটি সহনশীল বাংলাদেশ চায়, পরস্পর সম্মানবোধের জায়গায় যেতে চায়। একটা গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ চায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, এখনো আমি মনে করি আমরা ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। ঐক্যবদ্ধভাবে সেই নির্বাচনকে সফল করার জন্য, একটি নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য আমাদের সবাইকে মিলে কাজ করতে হবে। আসুন, সবাই মিলে আমরা আগামীদিনের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেই।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পরে বাংলাদেশের মানুষের মনোজগতে বিশাল পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের প্রত্যাশা বদলে গেছে, আকাঙ্ক্ষা বদলে গেছে। সেটা ধারণ যদি কোনো রাজনৈতিক দল করতে না পারে, কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব করতে না পারে- তাদের কোনো রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে নেই, আমি বলে দিলাম। ওটা ধারণ করে মানুষের প্রত্যাশা, মানুষের আকাঙ্ক্ষা পূরণে নতুন রাজনীতি করতে হবে।

নির্বাচিত সরকার ছাড়া মানুষের কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন আসবে না জানিয়ে আমীর খসরু বলেন, সেই পরিবর্তনের জন্য একটা নির্বাচিত সরকার তো লাগবে। ইন্টেরিম সরকার তো আর এগুলো করার জন্য আসেনি, আসার কথাও না, আমি তাদের দোষও দেবো না। এটা একটা অন্তর্বর্তী সরকার, তাদের কাজ হচ্ছে কিছু নির্বাচনী সংস্কার করে একটা নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক দেশে পরিণত করা।

তিনি আরও বলেন, যারা গণতন্ত্র চান না, তাদের তো কেউ রাজনীতি করতে বলেনি। নির্বাচনের প্রক্রিয়া থেকে কেউ যদি সরে দাঁড়াতে চায়, তাদের মেসেজ দিতে হবে বাংলাদেশের মানুষ গণতন্ত্র চায়, বাংলাদেশের মানুষ তার দেশের মালিকানা ফিরে পেতে চায়। আর আপনারা যারা গণতন্ত্র চান না, তাদের তো কেউ রাজনীতি করতে বলেনি। আপনারা যারা ভোট চান না, তাদের রাজনৈতিক দল করার দরকার কী!

দেশে বর্তমানে শিক্ষকরা আর্থিকভাবে অবহেলিত উল্লেখ করে আমীর খসরু বলেন, রাষ্ট্রের অন্য কর্মচারীরা নানান রকম সুযোগ সুবিধা পেলেও শিক্ষকদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য হয় না। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের মধ্যে যে বৈষম্য রয়েছে, তা অযৌক্তিক। একই সিলেবাস, একই উদ্দেশ্যে যদি দুই পক্ষই পড়ায়, তবে আর্থিক বৈষম্য কেন থাকবে? বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা রাজনীতিকরণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গত ১৫-১৬ বছরে শিক্ষা একজন ব্যক্তি, একটি পরিবার, একটি দল এবং তাদের আদর্শের মধ্যে সীমাবদ্ধ হয়ে গেছে। এটি ভয়াবহ। শিক্ষা কখনো কোনো দলের হয়ে কাজ করে না। শিক্ষা হবে জাতি গঠনের প্রধান হাতিয়ার।

সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক ও বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম টিপু। সংগঠনটির সদস্য সচিব মোহাম্মদ মোবারক আলী এবং খন্দকিয়া চিকনদন্ডী স্কুলের প্রধান শিক্ষক শাহিদা আক্তারের পরিচালনায় এতে প্রধান বক্তা ছিলেন শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ মোহাম্মদ সেলিম ভূইয়া।

এর আগে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন শিক্ষক সমিতির মহাসচিব ও শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোটের অতিরিক্ত মহাসচিব মো. জাকির হোসেন, দৈনিক আমার দেশের আবাসিক সম্পাদক জাহিদুল করিম কচি, শিক্ষক সমিতির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঐক্যজোটের চট্টগ্রাম শাখার সভাপতি এম এ ছফা চৌধুরী, শিক্ষক সমিতির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ঐক্যজোটের কক্সবাজার শাখার সভাপতি হোসাইনুল ইসলাম মাতব্বর, রাঙ্গুনিয়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক কুতুবউদ্দিন বাহার, শিক্ষক নেতা মো. হাবিব উল্লাহ, সিটি করপোরেশন কলেজ সমিতির আহ্বায়ক আবদুল হক, চট্টগ্রাম জেলা কলেজ শিক্ষক সমিতির সভাপতি নুরুল আলম রাজু, সাধারণ সম্পাদক নাজিম উদ্দীন প্রমুখ।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

মঞ্চে পড়ে গেলেন জামায়াত আমির, বসে শেষ করলেন বক্তব্য

সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের মহাসমাবেশে বক্তৃতা করতে করতেই মঞ্চে ঢলে পড়েছেন জামআয়াতে ইসালামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। পরে একাধিকবার দাঁড়িয়ে বকতৃতা করার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন। শেষ পর্যন্ত বসেই বক্তৃতা শেষ করেন তিনি।

১২ ঘণ্টা আগে

ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন ছাড়া অন্য কোনো পথ নেই : আমীর খসরু

আমীর খসরু বলেন, জনগণের ভোটে, জনগণের মালিকানায় নির্বাচিত সংসদ-সরকার; এর বিকল্প নেই। বাংলাদেশের মানুষ দীর্ঘদিন এজন্য ভোটের প্রতীক্ষায় রয়েছে। যারা নির্বাচন চান না, তাদের দল করার কোনো প্র‍য়োজনীয়তা আছে কিনা, সেটা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

১২ ঘণ্টা আগে

জামায়াতের সমাবেশে আমন্ত্রণ পায়নি বিএনপি: সালাহউদ্দিন আহমদ

জামায়াতে ইসলামীর জাতীয় সমাবেশে বিএনপিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি বলে জানিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।

১৩ ঘণ্টা আগে

২০০ ভোটারের শর্ত পূরণ হয়নি ২৫ উপজেলায়

দেশের ২৫টি উপজেলা বা থানায় ন্যূনতম ২০০ জন ভোটার সদস্যের যে শর্ত রয়েছে সেটি পূরণ করতে পারেনি এনসিপি। এ ছাড়া দলটির আবেদনে রয়েছে বেশ কিছু ত্রুটি, যা চিহ্নিত করে সংশোধনের জন্য ১৫ দিনের সময় দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

১৩ ঘণ্টা আগে