বিবিসি বাংলা
বাংলাদেশে গণভোট, জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধের মধ্যেই সারাদেশে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে বিএনপি।
দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগেই তিনি দেশে ফিরছেন এবং নির্বাচনেও অংশ নেবেন।
বিএনপি দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে দলীয় প্রার্থী বাছাই, তৃণমূলে সভা-সমাবেশ এবং ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ শুরু করেছে মাসখানেক আগে।
তবে এবার বিএনপি এমন এক সময়ে নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করেছে যখন মাঠে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেই। দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় নির্বাচনে অংশ নেওয়াও অনিশ্চিত।
এমন অবস্থায় বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে সামনে চলে এসেছে বিএনপিরই একসময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামী। দলটি নির্বাচনের প্রার্থী নির্দিষ্ট করে প্রস্তুতি শুরু করেছে আরও প্রায় বছরখানেক আগে।
যদিও অতীতে নির্বাচনে দলটির যে ভোট তাতে করে জামায়াত বিএনপিকে আদৌ কোনো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারবে কি-না, সে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
তবে মাঠপর্যায়ে জামায়াতকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপের ফলে জামায়াতের সমর্থন বিএনপির কাছাকাছি উঠে আসায় জামায়াতের নেতারাও বিভিন্ন সময় আগামী নির্বাচনে জয়ের আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।
জামায়াত বিভিন্ন দলকে নিয়ে বিএনপি বিরোধী আলাদা একটি জোট তৈরির চেষ্টাও করছে।
তবে এর বাইরেও নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকরা ভোট দিতে যাবেন কি-না কিংবা গেলে কোন দলকে সমর্থন করবেন, সেটাও নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলবে বলে অনেকে মনে করছেন।
জামায়াতের নৌকাবাইচ, বিএনপির উঠান বৈঠক; সরেজমিন সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ঝিকিরা মধ্যপাড়া গ্রাম। গত সোমবার সেই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট এক মাঠে বিএনপির জনা পঞ্চাশেক কর্মী জড়ো হয়েছেন। বৈঠকটির আয়োজক ছিলেন উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের কয়েকজন নেতা।
উঠান বৈঠকে বিএনপির একত্রিশ দফা সম্বলিত লিফলেট তুলে দেওয়া হয় কর্মী-সমর্থকদের হাতে।
দলের পক্ষে এবং ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার আহ্বানও জানানো হয়।
যদিও উল্লাপড়ার আসনটিতে দলের প্রার্থী নির্দিষ্ট করা হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে অন্তত: ছয়জন সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে আছেন দলীয় সমর্থন পাওয়ার আশায়।
নির্বাচনের প্রস্তুতি কেমন, এমন প্রশ্নে উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক বিবিসি বাংলাকে বলেন, তৃণমূলে সব গ্রামে তারা ছোট ছোট সভা ও গণসংযোগের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে পৌছানোর চেষ্টা করছেন।
"আমরা সব ইউনিয়নে ও গ্রামে উঠান বৈঠক এবং প্রচারণা করছি। আমরা প্রচারণা একটু পরে শুরু করেছি এটা ঠিক। এর একটা কারণ হচ্ছে আমাদে বিএনপিতে পাঁচ থেকে ছয়জন ক্যান্ডিডেট। এখন আমরা যার যার মতো ধানের শীষ প্রতীকে প্রচারণা চালাচ্ছি।" বলেন আব্দুর রাজ্জাক।
বিএনপি যখন উঠান বৈঠকে ব্যস্ত সেই একইদিনে জামায়াতকেও দেখা যায় উল্লাপাড়ার করতোয়া নদীর পাড়ে নিজস্ব কর্মসূচিতে। তাদের আয়োজন অবশ্য নৌকাবাইচ।
নদীর পাড়ে বড় মঞ্চ বানিয়ে সেখানে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা যায় উল্লাপাড়ায় জামায়াতের প্রার্থী এবং দলটির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম খানকে।
মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে নেতা-কর্মীরা দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট চেয়ে শ্লোগান দিচ্ছিলেন।
আর নদীতে চলছিলো নৌকাবাইচ।
দলটির উল্লাপাড়া উপজেলা আমীর শাহজাহান আলী বিবিসি বাংলাকে বলেন, তারা প্রচারণা শুরু করেছেন একবছর আগে।
"আমরা বলা যায় প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়েছি। কোনখানে বাদ রাখি নাই। সামাজিক কাজ, দলীয় প্রোগ্রাম, সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সবকিছুর মাধ্যমে দলের প্রার্থী মানুষের কাছে গেছেন। ভোটের জন্য এজেন্ট নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের কাজও আমাদের শেষের পথে।" বলেন শাহজাহান আলী।
জামায়াত কি বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে?
উল্লাপাড়ায় এর আগে জামায়াতের কারও সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ইতিহাস নেই। আসনটিতে এতোদিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে মূলত: আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে।
কিন্তু পাঁচই অগাস্ট পরবর্তী সময়ে মাঠে কার্যত: আওয়ামী লীগ নেই।
অন্যদিকে একক প্রার্থী ঠিক করে আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করায় জামায়াত মনে করছে তাদের অবস্থান এমনকি নির্বাচনে জেতার মতো পর্যায়ে চলে গেছে।
"আমরা এখানে শুধু জিতবো না বরং দুই-তৃতীয়াংশ আসনে ইনশাআল্লাহ জয়ী হবো" বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথা বলছিলেন উপজেলা জামায়াত আমীর শাহজাহান আলী।
কিন্তু এতো আত্মবিশ্বাসের কারণ কী? এমন প্রশ্নে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করছে জামায়াত।
এক. জামায়াত তাদের প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছে। অন্যদিকে বিএনপি এখনও প্রার্থী নির্দিষ্ট করতে পারেনি। তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী আবার একাধিক।
দুই. বিএনপি'র 'চাঁদাবাজি ও দখলের কারণে' মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
তিন. ভোটাররা 'পরিবর্তন চায়'।
তবে বিএনপি আবার এসব কারণ নাকচ করছে। দলটির উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আহ্বায়ক বিবিসিকে বলেন, 'উল্লাপাড়া বিএনপির ঘাঁটি। ফলে এখানে জামায়াত কখনই বিএনপির ভোট কাটতে পারবে না।'
এর কারণগুলোও তুলে ধরেন তিনি।
প্রথমত: দলে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও তারা মূলত: ধানের শীষের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। এতে দলের লাভ হচ্ছে। তাছাড়া দলে কোনো কোন্দলও নেই।
দ্বিতীয়ত: পাঁচই অগাস্টের পরে কিছু চাঁদাবাজি ও দখলের ঘটনা ঘটলেও এখন সেটা বন্ধ হয়েছে। বরং 'জামায়াত এখন চাঁদাবাজি ও দখল করছে'।
সবমিলিয়ে বিএনপি মনে করে জামায়াত তাদের জন্য বড় কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। অন্যদিকে জামায়াত মনে করছে, তারা জেতার মতো অবস্থায় আছে।
কিন্তু সাধারণ ভোটাররা কী মনে করছেন?
উল্লাপাড়ার সোনতলা ব্রিজের কাছে কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। এদের মধ্যে জামান মিয়া নামে একজন মুদি দোকান ব্যবসায়ী বলেন, নির্বাচনে লড়াই হবে।
"আওয়ামী লীগ তো এখন নাই। কিন্তু বিএনপি আর জামায়াত টক্কর হবে।"
আব্দুল হাকিম নামে আরেকজন জানাচ্ছেন, দুই দলের লোকেরাই ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের ভোটে নজর দুই দলের
সিরাজগঞ্জে সংসদীয় আসন আছে ৬টি। এর সবগুলোতেই জেতার কথা বলছে বিএনপি এবং জামায়াত উভয় দলই।
এর বাইরে অবশ্য সিরাজগঞ্জে অন্য কোনো দলের প্রচারণা সেভাবে চোখে পড়েনি। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় জামায়াত এবং বিএনপির যে সমীকরণ, সেখানে আলোচনায় আছে আওয়ামী লীগও। বিশেষত: আওয়ামী লীগের ভোটাররা কাকে সমর্থন করবেন তার উপরও নির্ভর করছে অনেক কিছু।
তবে সিরাজগঞ্জের জামায়াত কিংবা বিএনপি উভয় দলের নেতারাই মনে করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকদের ভোট তারাই পাবেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি অমর কৃষ্ণ দাস বিবিসি বাংলাকে বলেন, গণতন্ত্রের প্রয়োজনেই আওয়ামী লীগের সাধারণ ভোটাররা বিএনপিকে সাপোর্ট করবে।
তিনি বলেন, "বিএনপি একটা গণতান্ত্রিক দল। যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে দেশে পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে সকল দল রাজনীতি করার সুযোগ পাবে। সেক্ষেত্রে বিএনপিকে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।"
তবে জামায়াত অবশ্য সেটা মনে করে না। কিন্তু যে দলের সঙ্গে জামায়াতের প্রবল আদর্শিক বিরোধীতা আছে সে দলের সমর্থকরা কেন জামায়াতকে ভোট দেবে?
এমন প্রশ্নে নিরাপত্তা ইস্যুকে সামনে আনছেন জামায়াত নেতারা।
দলটির উল্লাপাড়া উপজেলা আমীর বলেন, "কিছু সংখ্যক আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থক হয়তো ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ লোক ভোটটা তাদেরকে দেবে যাদের কাছে তারা নিরাপদ। পাঁচই অগাস্টের পরে তাদের এরকম অনেকেই বিভিন্নভাবে হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছে। তবে সেটা জামায়াতের মাধ্যমে হয়নি। ফলে আওয়ামী লীগের সাধারণ ভোটরাদের সমর্থন আমরাই পাবো বলে আশা করি।"
জামায়াত ও আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তারেক রহমান যা বললেন
জামায়াত নানাভাবেই ভোটের মাঠে সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এবং সেটা শুধু সিরাজগঞ্জ নয়, বরং দেশের সবগুলো জেলাতেই আগাম প্রচারণাও শুরু করেছে তারা।
একইসঙ্গে বিভিন্ন দলকে নিয়ে বিএনপি বিরোধী আলাদা একটি জোট করারও চেষ্টা করছে।
এছাড়া কয়েকটি জনমত জরিপেও দলটির অবস্থান বিএনপির কাছাকাছি দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু বিএনপি কি নির্বাচনের মাঠে জামায়াতকে নিয়ে আদৌ চিন্তিত?
চলতি সপ্তাহেই বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমান এমন প্রশ্নের খোলামেলা উত্তর দেন। বলেন জামায়াত নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।
তিনি বলেন, "ইলেকশন হলে তো প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে। এতে উদ্বেগের কী আছে? বিএনপি তো আগেও নির্বাচন করেছে। প্রতিযোগিতা করেই নির্বাচন করেছে। উদ্বেগের কিছু নেই তো!"
সাক্ষাতকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এটাও বলেন, নির্বাচনে অংশ নিতে খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন তিনি।
"রাজনীতি যখন করি, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এটা স্বাভাবিক, নির্বাচনের সাথে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক কর্মীর একটি সম্পর্ক থাকে। কাজেই যেখানে জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকবো? আমি তো আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, ইচ্ছা থাকবে, আগ্রহ থাকবে সেই প্রত্যাশিত যেটা জনগণ চাইছে, সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে, (আমি) জনগণের সাথে জনগণের মাঝেই থাকবো ইনশাআল্লাহ।"
কিন্তু দেশে যখন নির্বাচনের আবহ তৈরি হচ্ছে, তখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত বাংলাদেশের রাজনীতিতে কী হবে- সেই প্রশ্নও উঠছে।
সাক্ষাতকারে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধি হবে কি-না এমন প্রশ্নেরও উত্তর দেন তারেক রহমান।
"যারা জুলুম করেছে তাদের তো বিচার হতে হবে। সেটি ব্যক্তিও হতে পারে। সেটি দলও হতে পারে।" বলেন তারেক রহমান।
তবে ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থাকা না থাকা নিয়ে তিনি কী মনে করেন এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, এটা জনগনের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
"আমরা বিশ্বাস করি.... আমাদের রাজনৈতিক সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাস করতে চাই- যে দলের ব্যক্তিরা বা যে দল মানুষ হত্যা করে, মানুষ গুম করে, মানুষ খুন করে, দেশের মানুষের অর্থসম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে- জনগণ তাদেরকে সমর্থন করতে পারে বলে আমি মনে করি না।"
"জনগণ যদি সমর্থন না করে কোনো রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক সংগঠনকে, তাদের টিকে থাকার তো কোনো কারণ আমি দেখি না। জনগণের সিদ্ধান্তের উপরে আমরা আস্থা রাখতে চাই। এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় বিচারক আমি মনে করি জনগণ।"
বিএনপি মনে করছে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকবে কি-না কিংবা জামায়াত কতটা প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে উঠলো তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া।
ফলে বিএনপি এখন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে মনযোগী। তারেক রহমানের নেতৃত্বে প্রার্থী বাছাই এবং নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
এমন অবস্থায় তারেক রহমান দেশে ফিরলে সেটা দলটির প্রস্তুতি এবং গণসংযোগে নতুন মাত্রা এনে নির্বাচনে জয়ের রাস্তা সহজ করবে বলেই বিশ্বাস দলটির নেতা-কর্মীদের।
অন্যদিকে ইতিহাসের সবচেয়ে সুসময়ে থাকা জামায়াতও কর্মসূচিতে নানা পরিবর্তন এনে আত্মবিশ্বাসী বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাইছে।
বাংলাদেশে গণভোট, জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ বিভিন্ন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতবিরোধের মধ্যেই সারাদেশে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করেছে বিএনপি।
দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বিবিসি বাংলাকে দেওয়া সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, নির্বাচনের আগেই তিনি দেশে ফিরছেন এবং নির্বাচনেও অংশ নেবেন।
বিএনপি দেশের বিভিন্ন সংসদীয় আসনে দলীয় প্রার্থী বাছাই, তৃণমূলে সভা-সমাবেশ এবং ধানের শীষের পক্ষে গণসংযোগ শুরু করেছে মাসখানেক আগে।
তবে এবার বিএনপি এমন এক সময়ে নির্বাচনি প্রস্তুতি শুরু করেছে যখন মাঠে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ নেই। দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকায় নির্বাচনে অংশ নেওয়াও অনিশ্চিত।
এমন অবস্থায় বিএনপির প্রধান প্রতিপক্ষ হিসেবে সামনে চলে এসেছে বিএনপিরই একসময়ের মিত্র জামায়াতে ইসলামী। দলটি নির্বাচনের প্রার্থী নির্দিষ্ট করে প্রস্তুতি শুরু করেছে আরও প্রায় বছরখানেক আগে।
যদিও অতীতে নির্বাচনে দলটির যে ভোট তাতে করে জামায়াত বিএনপিকে আদৌ কোনো চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে পারবে কি-না, সে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
তবে মাঠপর্যায়ে জামায়াতকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছে। সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপের ফলে জামায়াতের সমর্থন বিএনপির কাছাকাছি উঠে আসায় জামায়াতের নেতারাও বিভিন্ন সময় আগামী নির্বাচনে জয়ের আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।
জামায়াত বিভিন্ন দলকে নিয়ে বিএনপি বিরোধী আলাদা একটি জোট তৈরির চেষ্টাও করছে।
তবে এর বাইরেও নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকরা ভোট দিতে যাবেন কি-না কিংবা গেলে কোন দলকে সমর্থন করবেন, সেটাও নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলবে বলে অনেকে মনে করছেন।
জামায়াতের নৌকাবাইচ, বিএনপির উঠান বৈঠক; সরেজমিন সিরাজগঞ্জ
সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় ঝিকিরা মধ্যপাড়া গ্রাম। গত সোমবার সেই গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্ট এক মাঠে বিএনপির জনা পঞ্চাশেক কর্মী জড়ো হয়েছেন। বৈঠকটির আয়োজক ছিলেন উল্লাপাড়া উপজেলা বিএনপি ও যুবদলের কয়েকজন নেতা।
উঠান বৈঠকে বিএনপির একত্রিশ দফা সম্বলিত লিফলেট তুলে দেওয়া হয় কর্মী-সমর্থকদের হাতে।
দলের পক্ষে এবং ধানের শীষের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করার আহ্বানও জানানো হয়।
যদিও উল্লাপড়ার আসনটিতে দলের প্রার্থী নির্দিষ্ট করা হয়নি। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেখানে অন্তত: ছয়জন সম্ভাব্য প্রার্থী মাঠে আছেন দলীয় সমর্থন পাওয়ার আশায়।
নির্বাচনের প্রস্তুতি কেমন, এমন প্রশ্নে উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুর রাজ্জাক বিবিসি বাংলাকে বলেন, তৃণমূলে সব গ্রামে তারা ছোট ছোট সভা ও গণসংযোগের মাধ্যমে ভোটারদের কাছে পৌছানোর চেষ্টা করছেন।
"আমরা সব ইউনিয়নে ও গ্রামে উঠান বৈঠক এবং প্রচারণা করছি। আমরা প্রচারণা একটু পরে শুরু করেছি এটা ঠিক। এর একটা কারণ হচ্ছে আমাদে বিএনপিতে পাঁচ থেকে ছয়জন ক্যান্ডিডেট। এখন আমরা যার যার মতো ধানের শীষ প্রতীকে প্রচারণা চালাচ্ছি।" বলেন আব্দুর রাজ্জাক।
বিএনপি যখন উঠান বৈঠকে ব্যস্ত সেই একইদিনে জামায়াতকেও দেখা যায় উল্লাপাড়ার করতোয়া নদীর পাড়ে নিজস্ব কর্মসূচিতে। তাদের আয়োজন অবশ্য নৌকাবাইচ।
নদীর পাড়ে বড় মঞ্চ বানিয়ে সেখানে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা যায় উল্লাপাড়ায় জামায়াতের প্রার্থী এবং দলটির কেন্দ্রীয় নেতা রফিকুল ইসলাম খানকে।
মঞ্চের পাশে দাঁড়িয়ে নেতা-কর্মীরা দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট চেয়ে শ্লোগান দিচ্ছিলেন।
আর নদীতে চলছিলো নৌকাবাইচ।
দলটির উল্লাপাড়া উপজেলা আমীর শাহজাহান আলী বিবিসি বাংলাকে বলেন, তারা প্রচারণা শুরু করেছেন একবছর আগে।
"আমরা বলা যায় প্রতিটি ঘরে ঘরে গিয়েছি। কোনখানে বাদ রাখি নাই। সামাজিক কাজ, দলীয় প্রোগ্রাম, সংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড সবকিছুর মাধ্যমে দলের প্রার্থী মানুষের কাছে গেছেন। ভোটের জন্য এজেন্ট নিয়োগ এবং প্রশিক্ষণের কাজও আমাদের শেষের পথে।" বলেন শাহজাহান আলী।
জামায়াত কি বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে?
উল্লাপাড়ায় এর আগে জামায়াতের কারও সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার ইতিহাস নেই। আসনটিতে এতোদিন প্রতিদ্বন্দ্বিতা হয়েছে মূলত: আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে।
কিন্তু পাঁচই অগাস্ট পরবর্তী সময়ে মাঠে কার্যত: আওয়ামী লীগ নেই।
অন্যদিকে একক প্রার্থী ঠিক করে আগেভাগেই প্রস্তুতি শুরু করায় জামায়াত মনে করছে তাদের অবস্থান এমনকি নির্বাচনে জেতার মতো পর্যায়ে চলে গেছে।
"আমরা এখানে শুধু জিতবো না বরং দুই-তৃতীয়াংশ আসনে ইনশাআল্লাহ জয়ী হবো" বেশ আত্মবিশ্বাস নিয়ে কথা বলছিলেন উপজেলা জামায়াত আমীর শাহজাহান আলী।
কিন্তু এতো আত্মবিশ্বাসের কারণ কী? এমন প্রশ্নে কয়েকটি কারণ উল্লেখ করছে জামায়াত।
এক. জামায়াত তাদের প্রার্থী ঠিক করে ফেলেছে। অন্যদিকে বিএনপি এখনও প্রার্থী নির্দিষ্ট করতে পারেনি। তাদের সম্ভাব্য প্রার্থী আবার একাধিক।
দুই. বিএনপি'র 'চাঁদাবাজি ও দখলের কারণে' মানুষ তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
তিন. ভোটাররা 'পরিবর্তন চায়'।
তবে বিএনপি আবার এসব কারণ নাকচ করছে। দলটির উল্লাপাড়া পৌর বিএনপির আহ্বায়ক আহ্বায়ক বিবিসিকে বলেন, 'উল্লাপাড়া বিএনপির ঘাঁটি। ফলে এখানে জামায়াত কখনই বিএনপির ভোট কাটতে পারবে না।'
এর কারণগুলোও তুলে ধরেন তিনি।
প্রথমত: দলে একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী থাকলেও তারা মূলত: ধানের শীষের পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন। এতে দলের লাভ হচ্ছে। তাছাড়া দলে কোনো কোন্দলও নেই।
দ্বিতীয়ত: পাঁচই অগাস্টের পরে কিছু চাঁদাবাজি ও দখলের ঘটনা ঘটলেও এখন সেটা বন্ধ হয়েছে। বরং 'জামায়াত এখন চাঁদাবাজি ও দখল করছে'।
সবমিলিয়ে বিএনপি মনে করে জামায়াত তাদের জন্য বড় কোনো চ্যালেঞ্জ নয়। অন্যদিকে জামায়াত মনে করছে, তারা জেতার মতো অবস্থায় আছে।
কিন্তু সাধারণ ভোটাররা কী মনে করছেন?
উল্লাপাড়ার সোনতলা ব্রিজের কাছে কথা হয় কয়েকজনের সঙ্গে। এদের মধ্যে জামান মিয়া নামে একজন মুদি দোকান ব্যবসায়ী বলেন, নির্বাচনে লড়াই হবে।
"আওয়ামী লীগ তো এখন নাই। কিন্তু বিএনপি আর জামায়াত টক্কর হবে।"
আব্দুল হাকিম নামে আরেকজন জানাচ্ছেন, দুই দলের লোকেরাই ভোটারদের কাছে যাচ্ছেন।
আওয়ামী লীগের ভোটে নজর দুই দলের
সিরাজগঞ্জে সংসদীয় আসন আছে ৬টি। এর সবগুলোতেই জেতার কথা বলছে বিএনপি এবং জামায়াত উভয় দলই।
এর বাইরে অবশ্য সিরাজগঞ্জে অন্য কোনো দলের প্রচারণা সেভাবে চোখে পড়েনি। কিন্তু নির্বাচন নিয়ে স্থানীয় জামায়াত এবং বিএনপির যে সমীকরণ, সেখানে আলোচনায় আছে আওয়ামী লীগও। বিশেষত: আওয়ামী লীগের ভোটাররা কাকে সমর্থন করবেন তার উপরও নির্ভর করছে অনেক কিছু।
তবে সিরাজগঞ্জের জামায়াত কিংবা বিএনপি উভয় দলের নেতারাই মনে করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থকদের ভোট তারাই পাবেন।
সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সহসভাপতি অমর কৃষ্ণ দাস বিবিসি বাংলাকে বলেন, গণতন্ত্রের প্রয়োজনেই আওয়ামী লীগের সাধারণ ভোটাররা বিএনপিকে সাপোর্ট করবে।
তিনি বলেন, "বিএনপি একটা গণতান্ত্রিক দল। যারা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে দেশে পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হবে। পূর্ণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে সকল দল রাজনীতি করার সুযোগ পাবে। সেক্ষেত্রে বিএনপিকে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।"
তবে জামায়াত অবশ্য সেটা মনে করে না। কিন্তু যে দলের সঙ্গে জামায়াতের প্রবল আদর্শিক বিরোধীতা আছে সে দলের সমর্থকরা কেন জামায়াতকে ভোট দেবে?
এমন প্রশ্নে নিরাপত্তা ইস্যুকে সামনে আনছেন জামায়াত নেতারা।
দলটির উল্লাপাড়া উপজেলা আমীর বলেন, "কিছু সংখ্যক আওয়ামী লীগের সাধারণ সমর্থক হয়তো ভোট দেওয়া থেকে বিরত থাকতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ লোক ভোটটা তাদেরকে দেবে যাদের কাছে তারা নিরাপদ। পাঁচই অগাস্টের পরে তাদের এরকম অনেকেই বিভিন্নভাবে হ্যারাসমেন্টের শিকার হয়েছে। তবে সেটা জামায়াতের মাধ্যমে হয়নি। ফলে আওয়ামী লীগের সাধারণ ভোটরাদের সমর্থন আমরাই পাবো বলে আশা করি।"
জামায়াত ও আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তারেক রহমান যা বললেন
জামায়াত নানাভাবেই ভোটের মাঠে সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করছে। এবং সেটা শুধু সিরাজগঞ্জ নয়, বরং দেশের সবগুলো জেলাতেই আগাম প্রচারণাও শুরু করেছে তারা।
একইসঙ্গে বিভিন্ন দলকে নিয়ে বিএনপি বিরোধী আলাদা একটি জোট করারও চেষ্টা করছে।
এছাড়া কয়েকটি জনমত জরিপেও দলটির অবস্থান বিএনপির কাছাকাছি দেখা যাচ্ছে।
কিন্তু বিএনপি কি নির্বাচনের মাঠে জামায়াতকে নিয়ে আদৌ চিন্তিত?
চলতি সপ্তাহেই বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাতকারে বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমান এমন প্রশ্নের খোলামেলা উত্তর দেন। বলেন জামায়াত নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই।
তিনি বলেন, "ইলেকশন হলে তো প্রতিযোগিতা থাকতেই পারে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতেই পারে। এতে উদ্বেগের কী আছে? বিএনপি তো আগেও নির্বাচন করেছে। প্রতিযোগিতা করেই নির্বাচন করেছে। উদ্বেগের কিছু নেই তো!"
সাক্ষাতকারে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান এটাও বলেন, নির্বাচনে অংশ নিতে খুব শিগগিরই দেশে ফিরবেন তিনি।
"রাজনীতি যখন করি, আমি একজন রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এটা স্বাভাবিক, নির্বাচনের সাথে রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক কর্মীর একটি সম্পর্ক থাকে। কাজেই যেখানে জনগণের প্রত্যাশিত নির্বাচন হবে, সেই নির্বাচনের সময় কেমন করে দূরে থাকবো? আমি তো আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা থাকবে, ইচ্ছা থাকবে, আগ্রহ থাকবে সেই প্রত্যাশিত যেটা জনগণ চাইছে, সেই প্রত্যাশিত নির্বাচন যখন অনুষ্ঠিত হবে, (আমি) জনগণের সাথে জনগণের মাঝেই থাকবো ইনশাআল্লাহ।"
কিন্তু দেশে যখন নির্বাচনের আবহ তৈরি হচ্ছে, তখন কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ভবিষ্যত বাংলাদেশের রাজনীতিতে কী হবে- সেই প্রশ্নও উঠছে।
সাক্ষাতকারে আওয়ামী লীগের রাজনীতি নিষিদ্ধি হবে কি-না এমন প্রশ্নেরও উত্তর দেন তারেক রহমান।
"যারা জুলুম করেছে তাদের তো বিচার হতে হবে। সেটি ব্যক্তিও হতে পারে। সেটি দলও হতে পারে।" বলেন তারেক রহমান।
তবে ব্যক্তিগতভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতি থাকা না থাকা নিয়ে তিনি কী মনে করেন এমন প্রশ্নে তারেক রহমান বলেন, এটা জনগনের সিদ্ধান্তের ব্যাপার।
"আমরা বিশ্বাস করি.... আমাদের রাজনৈতিক সকল ক্ষমতার উৎস জনগণ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এবং বিশ্বাস করতে চাই- যে দলের ব্যক্তিরা বা যে দল মানুষ হত্যা করে, মানুষ গুম করে, মানুষ খুন করে, দেশের মানুষের অর্থসম্পদ লুটপাট করে বিদেশে পাচার করে- জনগণ তাদেরকে সমর্থন করতে পারে বলে আমি মনে করি না।"
"জনগণ যদি সমর্থন না করে কোনো রাজনৈতিক দল বা রাজনৈতিক সংগঠনকে, তাদের টিকে থাকার তো কোনো কারণ আমি দেখি না। জনগণের সিদ্ধান্তের উপরে আমরা আস্থা রাখতে চাই। এ বিষয়ে সবচেয়ে বড় বিচারক আমি মনে করি জনগণ।"
বিএনপি মনে করছে, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থাকবে কি-না কিংবা জামায়াত কতটা প্রতিদ্বন্দ্বি হয়ে উঠলো তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়া।
ফলে বিএনপি এখন নির্বাচনের প্রস্তুতিতে মনযোগী। তারেক রহমানের নেতৃত্বে প্রার্থী বাছাই এবং নির্বাচনী কর্মকাণ্ডের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
এমন অবস্থায় তারেক রহমান দেশে ফিরলে সেটা দলটির প্রস্তুতি এবং গণসংযোগে নতুন মাত্রা এনে নির্বাচনে জয়ের রাস্তা সহজ করবে বলেই বিশ্বাস দলটির নেতা-কর্মীদের।
অন্যদিকে ইতিহাসের সবচেয়ে সুসময়ে থাকা জামায়াতও কর্মসূচিতে নানা পরিবর্তন এনে আত্মবিশ্বাসী বিএনপিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিতে চাইছে।
বিএনপি আগামী ১৫ অক্টোবর জুলাই সনদ সইয়ের সিদ্ধান্তকে ইতিবাচক হিসেবে দেখছে বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
১ দিন আগেসবাইকে বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা জানিয়ে এমরান সালেহ প্রিন্স বলেন, ‘সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বাংলাদেশে জনগণ একে অপরের ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবে অংশ নেয়- এটাই বাংলাদেশি জাতির ঐতিহ্য।’ তিনি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাইকে এই ঐতিহ্য ধরে রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী দর্শন।’
২ দিন আগেবৈঠক শেষে পাটওয়ারী বলেন, তারা (ইসি) যেহেতু ব্যাখ্যা দিতে পারেনি, এখন আমরা প্রতীক প্রশ্নে নেই। আমরা মনে করেছি প্রতীক প্রশ্নে তাদের ওপর অন্য কিছু বিরাজ করছে। অথবা প্রতীক সামনে রেখে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র করছে। আমরা মনে করি এই মাসের মধ্যেই এটা জাতির সামনে স্পষ্ট হবে।
২ দিন আগেঅন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যেসব কাজের সমালোচনা করার আছে, আমরা তা করব। তবে তাদের ভালো দিকও তুলে ধরব। আমরা চাই না সরকার ব্যর্থ হোক, বরং দায়িত্বশীলভাবে দেশ পরিচালনা করুক। কেউ যদি দুর্নীতি বা অপরাধে জড়িত থাকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া উচিত।’
২ দিন আগে