দেশের মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে : তারেক রহমান

রাজশাহী ব্যুরো

দেশের মানুষ বিএনপির দিকে তাকিয়ে আছে জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, 'সামনে অনেক কাজ, অনেক চ্যালেঞ্জ। সেক্ষেত্রে বিএনপির পক্ষেই এখন দেশকে ধীরে ধীরে গড়ে তোলা সম্ভব। কারণ, আমরা দেখেছি, স্বাধীনতার পর ১৯৭৪ ও ১৯৭৫ সালে দেশ কীভাবে দুর্ভিক্ষে ছেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমরা পরবর্তীতে দেখেছি- শহীদ জিয়ার আমলে কীভাবে আবার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করার মাধ্যমে দুর্ভিক্ষকে দূর কর খাদ্য রপ্তানি করা হয়েছে। এই কাজটি কিন্তু বিএনপি অতীতেই করেছে। তাই দেশকে কীভাবে পুনর্গঠন করতে হবে তা বিএনপি ভালোভাবেই জানে। বিএনপি দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনা করবে এটিই জনগণ মনে করে। তাই আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে এবং রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।'

আজ রোববার বিকেলে রাজশাহী মহানগর বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। প্রায় আধাঘণ্টার বক্তব্যে তিনি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ঐক্যের গুরুত্ব ও রাষ্ট্র সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

তারেক রহমান বলেন, আমরা অনেক আগেই ৩১ দফা রাষ্ট্র সংস্কারের রূপরেখা দিয়েছি। আজকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যে সংস্কার প্রস্তাব করছে, তার অধিকাংশই বিএনপির পূর্ববর্তী প্রস্তাবের সঙ্গে মিলে যায়। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, আমরা বাস্তবভিত্তিক ও জনমানুষকেন্দ্রিক চিন্তা করি।

তিনি আরও বলেন, দেশের অধিকাংশ জনগণ বিএনপির ওপর আস্থা রাখে। তাই আগামী নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সেই প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।

বেকার সমস্যা ও শিক্ষা-স্বাস্থ্য খাতের দুরবস্থার কথা তুলে ধরে বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, দেশের বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাত ঢেলে সাজাতে হবে যাতে দেশের জনগণ দেশে থেকেই সেবা নিতে পারে। আমাদের হাসপাতালগুলোকে এমনভাবে উন্নত করতে হবে যাতে ধনী-গরিব সবার জন্য সমান চিকিৎসার সুযোগ থাকে।

ফারাক্কা চুক্তির বিষয়ে তারেক রহমান বলেন, ফারাক্কার কারণে পদ্মা নদী আজ শুকিয়ে যাচ্ছে। আমরা এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালত ও জাতিসংঘে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছি। দেশের পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ে আমরা দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।

তিনি বলেন, ‘আগামী বছর রমজানের আগে নির্বাচনে মানুষের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রথম ধাপ বাস্তবায়িত হবে, এর পরও অনেক চ্যালেঞ্জ আছে।’

জুলাই গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার সরকারের পতনের প্রসঙ্গ টেনে তারেক রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষের সর্বাত্মক চেষ্টা ও সহযোগিতায় আমরা এ দেশ থেকে স্বৈরাচারকে বিতাড়িত করতে সফল হয়েছি।’

স্বৈরাচার সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘স্বৈরাচার এ দেশের অর্থনীতি, স্বাস্থ্য, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীকে ধ্বংস করে দিয়েছে। তা আবার পুনর্গঠন করবে বিএনপি। সে লক্ষ্যের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি আমরা। ’

বিএনপির জ্যেষ্ঠ এই নেতা বলেন, ‘ক্ষমতায় এসে দেশ-বিদেশে দক্ষ কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। শিক্ষার আলো শিক্ষার্থীদের মাঝে পৌঁছে দিতে হবে। তাদের ভবিষ্যতের জন্য গড়ে তুলতে হবে। ’

দ্বি-বার্ষিক এই সম্মেলনের প্রথম অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশা এবং সঞ্চালনা করেন সদস্য সচিব মামুন অর রশিদ। এসময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- বিএনপির চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা মিজানুর রহমান মিনু, রাজশাহী বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ শাহীন শওকত খালেন, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আলিমুজ্জামান আলিম, বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ত্রাণ ও পূর্ণবাসন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল ইসলাম মিলন, সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক নজরুল হুদা, যুগ্ম আহ্বায়ক ওয়ালিউল হক রানা, মতিউর রহমান মন্টু, আসলাম সরকার, মহানগর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ সুইট, বর্তমান আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান রিটন প্রমুখ।

উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১০ ডিসেম্বরে বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট এরশাদ আলী ঈশাকে আহ্বায়ক ও মামুন অর রশিদ মামুনকে সদস্যসচিব করে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় সাড়ে তিন মাস পর আহ্বায়ক কমিটির পরিধি বাড়িয়ে ৬১ সদস্যের করা হয়। তারপর থেকে প্রায় সাড়ে তিন বছর ধরে আহ্বায়ক কমিটিতেই চলছে রাজশাহী মহানগর বিএনপি।

দেড়যুগ পর এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়া এই সম্মেলনে সকাল থেকেই নেতাকর্মীদের ঢল নামে। উপস্থিতির ভিড়ে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেকেই পদ্মা নদীর পাড় ও আশপাশের এলাকায় অবস্থান নেন।

ad
ad

রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন

বুধবার সংসদ ভবন প্রাঙ্গণে খালেদা জিয়ার জানাজা, দাফন স্বামীর কবরের পাশে

৩ ঘণ্টা আগে

গৃহবধূ থেকে আপসহীন নেত্রী— খালেদা জিয়ার একজীবন

দেশের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি থেকে যাবেন ইতিহাসের পাতায়। দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামে নিজেকে যেভাবে তিনি ‘আপসহীন নেত্রী’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন, সেই তকমাটিও ইতিহাসের পাতায় তার নামের পাশে রয়ে যাবে।

৩ ঘণ্টা আগে

‘খালেদা জিয়ার মৃত্যু রাজনীতিতে বিশাল শূন্যতা সৃষ্টি হলো’

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সংবাদটি নিয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়াতে হবে, এটা আমরা কখনো ভাবিনি। আমরা এবারও আশা করছিলাম ঠিক আগের মতোই আবারও তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন। আমরা মহা ভারাক্রান্ত হৃদয়ে। ইতোমধ্যে আপনারা শুনেছেন ডক্টর শাহাবুদ্দিনের ঘোষণা।

৪ ঘণ্টা আগে

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে বিএনপির ৭ দিনের শোক কর্মসূচি ঘোষণা

কর্মসূচি ঘোষণার প্রাক্কালে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘এগুলো আমাদের প্রাথমিক কর্মসূচি। পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে পরবর্তীতে আরও কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।’

৪ ঘণ্টা আগে