
বিবিসি বাংলা

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘ভোটব্যাংক’ বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন মাঠ পর্যায়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের বাইরে থাকার সম্ভাবনায় তাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন দলের মাঠপর্যায়ে জোর তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে নৌকা সমর্থকদের নিরাপত্তার আশ্বাস, মামলা, হামলা বা হয়রানি থেকে রক্ষার নানা প্রতিশ্রুতি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না— এটি বারবার বলেছে নির্বাচন কমিশন। জাতীয় নির্বাচনে তাই সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ভোটের দিকে নজর সব রাজনৈতিক দলেরই। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ নিয়ে জামায়াত ও বিএনপি নেতাদের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় এসেছে।
জনসমর্থন ও ভোটারের দিক থেকে বাংলাদেশে গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের একটা শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। জাতীয় নির্বাচনের পরিসংখ্যান বলছে, এখানে তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়। নৌকার বিপরীতের প্রার্থীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
এই গোপালগঞ্জে তিন আসনে এবার প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গোপালগঞ্জ-২ সদর আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন আজমল হোসেন সরদার। পেশায় আইনজীবী এই প্রার্থী ১৯৯৬ সালে গোপালগঞ্জ-২ থেকে সবশেষ নির্বাচন করেছিলেন।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকবে না ধরে নিয়েই গোপালগঞ্জে নৌকার সমর্থকদের ভোট নিজের পক্ষে নিতে কাজ করছেন জামায়াতে ইসলামীর এই প্রার্থী। তিনি বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক সম্পর্ককে তিনি কাজে লাগাতে চাইছেন।
আজমল হোসেন সরদার বলেন, তাদেরকে বলি, এটা আওয়ামী লীগের জায়গা। যদি আওয়ামী লীগ আবার নির্বাচনের সুযোগ পায় তাহলে আপনারা আবারও আওয়ামী লীগে ভোট দিতে পারেন। কিন্তু তারা না এলে আমাদের ভোট দেবেন।
গোপালগঞ্জে জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে এবং অজ্ঞাত মামলার নিরীহ কেউ আসামি হলে ছাড়াতে সহায়তা করছেন জামায়াত নেতারা। মামলা থেকে আওয়ামী লীগের শতাধিক ব্যক্তির নাম প্রত্যাহারের বিষয়ে তৎপরতার কথা জানান আজমল হোসেন সরদার।
গোপালগঞ্জে ৫ আগস্টের পর ও এনসিপির সঙ্গে সংঘর্ষকে ঘিরে ২০-২৫টি মামলায় নামে-বেনামে ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে আসামি করা রয়েছে। আজমল হোসেন বলেন, ‘আমাদের কৌশল তো আমরা কথার মাধ্যমে দিচ্ছি। তারপরও এই যে মিথ্যা মামলায় হয়রানি যে আছে, আমরা মানুষকে হয়রানি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি। পক্ষান্তরে কেউ কেউ হয়রানি করার জন্য মিথ্যাভাবে তাদেরকে নাম দেয়, টাকা-পয়সা নেয়, আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তাতে সাধারণ ভোটাররা আমাদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকে নজর আছে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও। এবার গোপালগঞ্জের তিনটি আসনই ধানের শীষের প্রার্থীরা জয়ী হবেন— এমন আত্মবিশ্বাস তাদের আছে।
বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়নে গোপালগঞ্জ-২ সদর আসনের প্রার্থী কে এম বাবর। গোপালগঞ্জের মানুষের কাছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে ধানের শীষকে নিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবার আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নির্বাচনে থাকবে না। নির্বাচনে না থাকার কারণে এবার সাধারণ মানুষ একাত্তর সালের পক্ষের শক্তি ধানের শীষকে ভোট দেবে।’
এ ছাড়া দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা তুলে ধরে বাবর বলেন, ভবিষ্যতে প্রতিশোধের রাজনীতি করবে না বিএনপি, এমন প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন গোপালগঞ্জের ভোটারদের। তার ভাষায়, ‘যদি গোপালগঞ্জ-২ আসনের মানুষ আমাদের ভোট দেয়, আমরা কোনো প্রতিশোধ, কোনো মিথ্যা মামলা, হয়রানি করব না। কারণ আমাদের নেতা তারেক রহমান বলে দিয়েছেন, ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে হবে।’
জামায়াতের প্রার্থীর বক্তব্যে বিএনপির দিকে অভিযোগের ইঙ্গিত থাকার বিষয়টি নিয়ে কে এম বাবর জামায়াতের রাজনীতির সমালোচনা করেন। বলেন, জামায়াত একটি গুপ্ত সংগঠন। জামায়াত তো প্রকাশ্য সংগঠন না। তারা এ সব আকাম করছে। ওরা সবসময় অন্য দলের ঘাড়ে দায় চাপায়। এ সবের (মিথ্যা মামলা, হয়রানি) সঙ্গে আমাদের বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এইগুলো এনসিপি-জামায়াত তাদের সঙ্গে ঘটনা ঘটছে, তারাই এগুলো করছে।
গোপালগঞ্জ-২ সদর আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীর তৎপরতা দেখা গেলেও এনসিপির কোনো প্রার্থী এখনো সেভাবে তৎপর নেই। তবে গোপালগঞ্জের অন্য দুটি আসনে এনসিপির প্রার্থীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রার্থীদের তৎপরতার খবর জানা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নিয়ে জামায়াত ও বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন ইতিবাচক বক্তব্য ভোটের রাজনীতির কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে নৌকার সমর্থক ও ভোটব্যাংক নিয়ে আলাদা মূল্যায়ন রয়েছে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব বিবিসি বাংলাকে বলেন, নৌকার ‘ভোটব্যাংক’ সেভাবে নেই। বর্তমানে এটি কমবেশি ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে জামায়াত ও বিএনপি নেতারা এরই মধ্যে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, এনসিপির নেতাদের সে রকম কোনো বক্তব্য নেই।
আদিব বলেন, ‘আওয়ামী ভোটব্যাংক এককভাবে কোনো একটা দল বা কোনো একটা কৌশলগত জায়গা থেকে যাবে, সেটা আমরা এখন আর মনে করি না। এটা প্রার্থী, স্থান এবং ওই এলাকায় বিএনপি, জামায়াত বা এনসিপির যে প্রার্থীরা থাকবেন তাদের ওপর ডিপেন্ড করবে।’
জুলাই আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগের, বিশেষ করে ছাত্র তরুণদের মধ্যে একটা বড় ‘রূপান্তর’ হয়েছে বলে মনে করে এনসিপি। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ছাত্রলীগ করতেন তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অমান্য করে সরাসরি আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। সেই জায়গা থেকে এনসিপি মনে করেন, ভোটারদের মধ্যেও এমন রূপান্তর ঘটবে।
আদিব বলেন, দলের জায়গা থেকে আমাদের যে সেন্ট্রাল নেতৃত্ব আছে, সেখানে সাবেক ছাত্রলীগ বলেন, সাবেক ছাত্র শিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ কিংবা ছাত্র ইউনিয়ন— এই যে একটা কম্বিনেশন আমাদের এখানে হয়েছে, সে জায়গা থেকে আমাদের এখানে অধিকাংশ সাবেক সংগঠনেরই মূল নেতৃত্ব আছে। ফলে এই নেতৃত্বের মূল্যায়ন বা তাদের কাজের মাধ্যমে অন্যান্য ভোটার বা যারা সিদ্ধান্ত এখনো নেননি তারা কাজ কিংবা নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রভাবিত হবেন।
এনসিপির কেন্দ্রীয় এই নেতা আরও বলেন, আমরা মনে করি, যারা সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল না কিংবা স্থানীয় অপরাধ সংঘটিত করার ক্ষেত্রে জড়িত ছিল না বাধ্য হয়ে বা কোনো কারণে একটা সময়ে আওয়ামী লীগ করেছে সে ভোটাররা হয়তো চাইলে এখন নিজেদের পছন্দমতো এনসিপি কিংবা বিএনপি বা জামায়াতকে বেছে নিতে পারে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত ধরে নিয়ে নৌকার ভোটারদের নিজেদের পক্ষে নিতে বিশেষভাবে সোচ্চার দেখা যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীকে। জামায়াতের নেতাদের আওয়ামী লীগের সমর্থকদের নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দিতেও দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবিসি বাংলাকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তে বা আইনি কারণে তারা নির্বাচনে আসতে পারছে না। কিন্তু তাদের ভোটাররা তো রয়ে গেছে। আমরা বলেছি যারা বড় বড় অপরাধে অপরাধী নয়, দাগী আসামি নয়, যাদের নামে কোনো মামলা নাই, যাদের মানুষ সন্ত্রাসী-দাগী আসামি হিসেবে চেনে না, সিম্পল মানুষ একটা দল করে, তার তো করার অধিকার আছে। আওয়ামী লীগের শাসনের কেন্দ্রে থাকা, ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা নেতাদের যত অপরাধ তার জন্য সাধারণ আওয়ামী লীগের যারা ভোটার ছিলেন তারা সে অপরাধে অপরাধী নন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে তার মধ্যে একটা বড় অংশ আছে সাধারণ ভোটার। এখন যেহেতু তারা নেই, তাদের এখন আমরা আওয়ামী লীগ ভাবি না। তারা এখন দেখবে কোন রাজনৈতিক দল ইশতেহারে কী বলছে। কার কাছে আমরা নিরাপদ। কাদের চরিত্র সৎ, কারা দুর্নীতিবাজ না, চাঁদাবাজ না। কার কাছে তাদের জানমাল সম্মত ইজ্জত নিরাপদ।
বাংলাদেশে অতীতে অংশগ্রহণমূলক সব জাতীয় নির্বাচনেই দেখা গেছে সারা দেশে নৌকা তথা আওয়ামী লীগের একটা নির্দিষ্ট ভোটব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে হিন্দু ভোটারদের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। এবার নির্বাচনে হিন্দু ভোট নিয়েও জামায়াতে ইসলামীর তৎপরতা দৃশ্যমান হয়েছে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল তার নিজের নির্বাচনি এলাকাতেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে বিশাল সমাবেশ করেছেন। গোলাম পরওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ নেই মানে তাদের ভোটাররা আছে। কিন্তু সেই ভোটারদের মতামত কিন্তু বদলে যাবে। আমরা কাউকে জোর করব না। আমরা খুব সিনসিয়ারলি মানুষকে ভালোবেসে আমাদের আদর্শ উদ্দেশ্য-লক্ষ্য প্রচার করব।
বাংলাদেশে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আগামী নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাদেরও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্য আলোচনায় এসেছে।
সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব একটি বক্তব্য নিয়েও নানা আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিএনপির প্রার্থীদের পক্ষ থেকেও নৌকার ভোট নিজেদের দখলে নেওয়ার একটা প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। যদিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলছেন, দলের আত্মবিশ্বাসের জায়গা হলো তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দলীয় প্রতিশ্রুতি দলমত নির্বিশেষে ভোটারদের ধানের শীষে আকৃষ্ট করবে।
আমীর খসরু বলেন, কোন ভোটব্যাংক কাদের কী, এটা একটা সাইড। আমাদের কথা হচ্ছে, আমাদের আগামীর বাংলাদেশটা কেমন হবে? আমার প্রোগ্রামটা কী হবে? এর মধ্যে দেশের জন্য কী আছে, জনগণের জন্য কী আছে? আমাদের ফোকাস সেই জায়গা।
তিনি বলেন, কারা কোন দলের কোন গ্রুপের আমরা সেটা আমরা ওইভাবে ভাবছি না। আমাদের প্রোগ্রাম সবার জন্য, সব বাংলাদেশিদের জন্য। আগামীর বাংলাদেশে তাদের কী ভূমিকা, সরকার কী করবে তাদের জীবনমান উন্নয়নে, আমরা কী করব— আমরা এই প্রোগ্রামগুলো নিচ্ছি। প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের ভোটারদের আকৃষ্ট করার বিষয়ে দলীয় কোনো অবস্থান নেই বলে বলছেন। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে নেতারা নৌকার ভোট গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই দেখছেন। বিএনপির প্রার্থীদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টাও দেখা যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয়ভাবেও বিএনপির কর্মসূচিতেও সংখ্যালঘুরা গুরুত্ব পাচ্ছে। সম্প্রতি দলীয় শীর্ষ নেতার ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলছেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাইকে সঙ্গে নিয়েই তাদের রাজনীতি। তার ভাষায়, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ হচ্ছে সবাইকে নিয়ে।
আমীর খসরু বলেন, আমাদের বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য তো দরকার নেই। আমাদের প্রোগ্রাম যেটা থাকবে, সবাইকে নিয়ে এবং সবার জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন। রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সবার অংশীজন হওয়া। সুতরাং আমরা কোনো পার্টিকুলার ধর্ম বা গোষ্ঠীর জন্য রাজনীতি করছি না। আমরা সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করছি। কোনো গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে তো কোনো রাজনীতি হইতে পারে না। এটা তো ডিভিশন হবে। আমরা তো বলছি, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে চাই।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘ভোটব্যাংক’ বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন মাঠ পর্যায়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের অনেকেই। দল হিসেবে আওয়ামী লীগ নির্বাচনের বাইরে থাকার সম্ভাবনায় তাদের আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন দলের মাঠপর্যায়ে জোর তৎপরতা দৃশ্যমান হচ্ছে। স্থানীয় পর্যায়ে নৌকা সমর্থকদের নিরাপত্তার আশ্বাস, মামলা, হামলা বা হয়রানি থেকে রক্ষার নানা প্রতিশ্রুতি পর্যন্ত দেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ থাকা আওয়ামী লীগ আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে পারছে না— এটি বারবার বলেছে নির্বাচন কমিশন। জাতীয় নির্বাচনে তাই সারা দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ভোটের দিকে নজর সব রাজনৈতিক দলেরই। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগ নিয়ে জামায়াত ও বিএনপি নেতাদের বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনায় এসেছে।
জনসমর্থন ও ভোটারের দিক থেকে বাংলাদেশে গোপালগঞ্জ আওয়ামী লীগের একটা শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। জাতীয় নির্বাচনের পরিসংখ্যান বলছে, এখানে তিনটি আসনেই আওয়ামী লীগের নৌকা মার্কা বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়। নৌকার বিপরীতের প্রার্থীদের অধিকাংশ ক্ষেত্রেই জামানত বাজেয়াপ্ত হয়েছে।
এই গোপালগঞ্জে তিন আসনে এবার প্রার্থী মনোনয়ন চূড়ান্ত করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। গোপালগঞ্জ-২ সদর আসনে জামায়াতে ইসলামীর সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন আজমল হোসেন সরদার। পেশায় আইনজীবী এই প্রার্থী ১৯৯৬ সালে গোপালগঞ্জ-২ থেকে সবশেষ নির্বাচন করেছিলেন।
আওয়ামী লীগ নির্বাচনে থাকবে না ধরে নিয়েই গোপালগঞ্জে নৌকার সমর্থকদের ভোট নিজের পক্ষে নিতে কাজ করছেন জামায়াতে ইসলামীর এই প্রার্থী। তিনি বলেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগের সমর্থকদের সঙ্গে পারিবারিক, সামাজিক সম্পর্ককে তিনি কাজে লাগাতে চাইছেন।
আজমল হোসেন সরদার বলেন, তাদেরকে বলি, এটা আওয়ামী লীগের জায়গা। যদি আওয়ামী লীগ আবার নির্বাচনের সুযোগ পায় তাহলে আপনারা আবারও আওয়ামী লীগে ভোট দিতে পারেন। কিন্তু তারা না এলে আমাদের ভোট দেবেন।
গোপালগঞ্জে জামায়াতের প্রার্থীর পক্ষ থেকে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের নিরাপত্তার আশ্বাস দেওয়া হচ্ছে এবং অজ্ঞাত মামলার নিরীহ কেউ আসামি হলে ছাড়াতে সহায়তা করছেন জামায়াত নেতারা। মামলা থেকে আওয়ামী লীগের শতাধিক ব্যক্তির নাম প্রত্যাহারের বিষয়ে তৎপরতার কথা জানান আজমল হোসেন সরদার।
গোপালগঞ্জে ৫ আগস্টের পর ও এনসিপির সঙ্গে সংঘর্ষকে ঘিরে ২০-২৫টি মামলায় নামে-বেনামে ৩০ হাজারের বেশি মানুষকে আসামি করা রয়েছে। আজমল হোসেন বলেন, ‘আমাদের কৌশল তো আমরা কথার মাধ্যমে দিচ্ছি। তারপরও এই যে মিথ্যা মামলায় হয়রানি যে আছে, আমরা মানুষকে হয়রানি থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করছি। পক্ষান্তরে কেউ কেউ হয়রানি করার জন্য মিথ্যাভাবে তাদেরকে নাম দেয়, টাকা-পয়সা নেয়, আমরা এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। তাতে সাধারণ ভোটাররা আমাদের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে।
গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগের ভোটব্যাংকে নজর আছে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীদেরও। এবার গোপালগঞ্জের তিনটি আসনই ধানের শীষের প্রার্থীরা জয়ী হবেন— এমন আত্মবিশ্বাস তাদের আছে।
বিএনপির প্রাথমিক মনোনয়নে গোপালগঞ্জ-২ সদর আসনের প্রার্থী কে এম বাবর। গোপালগঞ্জের মানুষের কাছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি হিসেবে ধানের শীষকে নিয়ে যাচ্ছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এবার আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীক নির্বাচনে থাকবে না। নির্বাচনে না থাকার কারণে এবার সাধারণ মানুষ একাত্তর সালের পক্ষের শক্তি ধানের শীষকে ভোট দেবে।’
এ ছাড়া দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশনা তুলে ধরে বাবর বলেন, ভবিষ্যতে প্রতিশোধের রাজনীতি করবে না বিএনপি, এমন প্রতিশ্রুতিও দিচ্ছেন গোপালগঞ্জের ভোটারদের। তার ভাষায়, ‘যদি গোপালগঞ্জ-২ আসনের মানুষ আমাদের ভোট দেয়, আমরা কোনো প্রতিশোধ, কোনো মিথ্যা মামলা, হয়রানি করব না। কারণ আমাদের নেতা তারেক রহমান বলে দিয়েছেন, ভালোবাসা দিয়ে মানুষের মন জয় করতে হবে।’
জামায়াতের প্রার্থীর বক্তব্যে বিএনপির দিকে অভিযোগের ইঙ্গিত থাকার বিষয়টি নিয়ে কে এম বাবর জামায়াতের রাজনীতির সমালোচনা করেন। বলেন, জামায়াত একটি গুপ্ত সংগঠন। জামায়াত তো প্রকাশ্য সংগঠন না। তারা এ সব আকাম করছে। ওরা সবসময় অন্য দলের ঘাড়ে দায় চাপায়। এ সবের (মিথ্যা মামলা, হয়রানি) সঙ্গে আমাদের বিএনপির কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এইগুলো এনসিপি-জামায়াত তাদের সঙ্গে ঘটনা ঘটছে, তারাই এগুলো করছে।
গোপালগঞ্জ-২ সদর আসনে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীর তৎপরতা দেখা গেলেও এনসিপির কোনো প্রার্থী এখনো সেভাবে তৎপর নেই। তবে গোপালগঞ্জের অন্য দুটি আসনে এনসিপির প্রার্থীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি ও প্রার্থীদের তৎপরতার খবর জানা যাচ্ছে।
আওয়ামী লীগ সমর্থকদের নিয়ে জামায়াত ও বিএনপি নেতাদের বিভিন্ন ইতিবাচক বক্তব্য ভোটের রাজনীতির কৌশল হিসেবেই দেখা হচ্ছে।
জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া তরুণদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) পক্ষ থেকে নৌকার সমর্থক ও ভোটব্যাংক নিয়ে আলাদা মূল্যায়ন রয়েছে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদিব বিবিসি বাংলাকে বলেন, নৌকার ‘ভোটব্যাংক’ সেভাবে নেই। বর্তমানে এটি কমবেশি ১০ শতাংশের নিচে নেমে এসেছে। আওয়ামী লীগকে নিয়ে জামায়াত ও বিএনপি নেতারা এরই মধ্যে যেসব বক্তব্য দিয়েছেন, এনসিপির নেতাদের সে রকম কোনো বক্তব্য নেই।
আদিব বলেন, ‘আওয়ামী ভোটব্যাংক এককভাবে কোনো একটা দল বা কোনো একটা কৌশলগত জায়গা থেকে যাবে, সেটা আমরা এখন আর মনে করি না। এটা প্রার্থী, স্থান এবং ওই এলাকায় বিএনপি, জামায়াত বা এনসিপির যে প্রার্থীরা থাকবেন তাদের ওপর ডিপেন্ড করবে।’
জুলাই আন্দোলন চলাকালে আওয়ামী লীগের, বিশেষ করে ছাত্র তরুণদের মধ্যে একটা বড় ‘রূপান্তর’ হয়েছে বলে মনে করে এনসিপি। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা ছাত্রলীগ করতেন তাদের অনেকেই আওয়ামী লীগের নির্দেশনা অমান্য করে সরাসরি আন্দোলনে অংশ নিয়েছিলেন। সেই জায়গা থেকে এনসিপি মনে করেন, ভোটারদের মধ্যেও এমন রূপান্তর ঘটবে।
আদিব বলেন, দলের জায়গা থেকে আমাদের যে সেন্ট্রাল নেতৃত্ব আছে, সেখানে সাবেক ছাত্রলীগ বলেন, সাবেক ছাত্র শিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদ কিংবা ছাত্র ইউনিয়ন— এই যে একটা কম্বিনেশন আমাদের এখানে হয়েছে, সে জায়গা থেকে আমাদের এখানে অধিকাংশ সাবেক সংগঠনেরই মূল নেতৃত্ব আছে। ফলে এই নেতৃত্বের মূল্যায়ন বা তাদের কাজের মাধ্যমে অন্যান্য ভোটার বা যারা সিদ্ধান্ত এখনো নেননি তারা কাজ কিংবা নেতৃত্বের মাধ্যমে প্রভাবিত হবেন।
এনসিপির কেন্দ্রীয় এই নেতা আরও বলেন, আমরা মনে করি, যারা সরাসরি হত্যাকাণ্ডে জড়িত ছিল না কিংবা স্থানীয় অপরাধ সংঘটিত করার ক্ষেত্রে জড়িত ছিল না বাধ্য হয়ে বা কোনো কারণে একটা সময়ে আওয়ামী লীগ করেছে সে ভোটাররা হয়তো চাইলে এখন নিজেদের পছন্দমতো এনসিপি কিংবা বিএনপি বা জামায়াতকে বেছে নিতে পারে।
আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বাইরে থাকার বিষয়টি নিশ্চিত ধরে নিয়ে নৌকার ভোটারদের নিজেদের পক্ষে নিতে বিশেষভাবে সোচ্চার দেখা যাচ্ছে জামায়াতে ইসলামীকে। জামায়াতের নেতাদের আওয়ামী লীগের সমর্থকদের নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্য দিতেও দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বিবিসি বাংলাকে বলেন, সরকারের সিদ্ধান্তে বা আইনি কারণে তারা নির্বাচনে আসতে পারছে না। কিন্তু তাদের ভোটাররা তো রয়ে গেছে। আমরা বলেছি যারা বড় বড় অপরাধে অপরাধী নয়, দাগী আসামি নয়, যাদের নামে কোনো মামলা নাই, যাদের মানুষ সন্ত্রাসী-দাগী আসামি হিসেবে চেনে না, সিম্পল মানুষ একটা দল করে, তার তো করার অধিকার আছে। আওয়ামী লীগের শাসনের কেন্দ্রে থাকা, ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা নেতাদের যত অপরাধ তার জন্য সাধারণ আওয়ামী লীগের যারা ভোটার ছিলেন তারা সে অপরাধে অপরাধী নন।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, যারা আওয়ামী লীগকে ভোট দিতে তার মধ্যে একটা বড় অংশ আছে সাধারণ ভোটার। এখন যেহেতু তারা নেই, তাদের এখন আমরা আওয়ামী লীগ ভাবি না। তারা এখন দেখবে কোন রাজনৈতিক দল ইশতেহারে কী বলছে। কার কাছে আমরা নিরাপদ। কাদের চরিত্র সৎ, কারা দুর্নীতিবাজ না, চাঁদাবাজ না। কার কাছে তাদের জানমাল সম্মত ইজ্জত নিরাপদ।
বাংলাদেশে অতীতে অংশগ্রহণমূলক সব জাতীয় নির্বাচনেই দেখা গেছে সারা দেশে নৌকা তথা আওয়ামী লীগের একটা নির্দিষ্ট ভোটব্যাংক রয়েছে। এর মধ্যে হিন্দু ভোটারদের বিষয়টিও গুরুত্বপূর্ণ। এবার নির্বাচনে হিন্দু ভোট নিয়েও জামায়াতে ইসলামীর তৎপরতা দৃশ্যমান হয়েছে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল তার নিজের নির্বাচনি এলাকাতেও সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নিয়ে বিশাল সমাবেশ করেছেন। গোলাম পরওয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ নেই মানে তাদের ভোটাররা আছে। কিন্তু সেই ভোটারদের মতামত কিন্তু বদলে যাবে। আমরা কাউকে জোর করব না। আমরা খুব সিনসিয়ারলি মানুষকে ভালোবেসে আমাদের আদর্শ উদ্দেশ্য-লক্ষ্য প্রচার করব।
বাংলাদেশে বড় রাজনৈতিক দল হিসেবে বিএনপি আগামী নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। বিভিন্ন এলাকায় বিএনপি নেতাদেরও আওয়ামী লীগের সমর্থকদের নিয়ে ইতিবাচক বক্তব্য আলোচনায় এসেছে।
সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপি মহাসচিব একটি বক্তব্য নিয়েও নানা আলোচনা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে বিএনপির প্রার্থীদের পক্ষ থেকেও নৌকার ভোট নিজেদের দখলে নেওয়ার একটা প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। যদিও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলছেন, দলের আত্মবিশ্বাসের জায়গা হলো তাদের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও দলীয় প্রতিশ্রুতি দলমত নির্বিশেষে ভোটারদের ধানের শীষে আকৃষ্ট করবে।
আমীর খসরু বলেন, কোন ভোটব্যাংক কাদের কী, এটা একটা সাইড। আমাদের কথা হচ্ছে, আমাদের আগামীর বাংলাদেশটা কেমন হবে? আমার প্রোগ্রামটা কী হবে? এর মধ্যে দেশের জন্য কী আছে, জনগণের জন্য কী আছে? আমাদের ফোকাস সেই জায়গা।
তিনি বলেন, কারা কোন দলের কোন গ্রুপের আমরা সেটা আমরা ওইভাবে ভাবছি না। আমাদের প্রোগ্রাম সবার জন্য, সব বাংলাদেশিদের জন্য। আগামীর বাংলাদেশে তাদের কী ভূমিকা, সরকার কী করবে তাদের জীবনমান উন্নয়নে, আমরা কী করব— আমরা এই প্রোগ্রামগুলো নিচ্ছি। প্রতিনিয়ত বলে যাচ্ছি।
আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী আওয়ামী লীগের ভোটারদের আকৃষ্ট করার বিষয়ে দলীয় কোনো অবস্থান নেই বলে বলছেন। কিন্তু স্থানীয় পর্যায়ে নেতারা নৌকার ভোট গুরুত্বপূর্ণ হিসেবেই দেখছেন। বিএনপির প্রার্থীদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সমর্থন আদায়ের চেষ্টাও দেখা যাচ্ছে।
কেন্দ্রীয়ভাবেও বিএনপির কর্মসূচিতেও সংখ্যালঘুরা গুরুত্ব পাচ্ছে। সম্প্রতি দলীয় শীর্ষ নেতার ভার্চুয়াল উপস্থিতিতে হিন্দু প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলছেন, হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান সবাইকে সঙ্গে নিয়েই তাদের রাজনীতি। তার ভাষায়, বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ হচ্ছে সবাইকে নিয়ে।
আমীর খসরু বলেন, আমাদের বিশেষ গোষ্ঠীর জন্য তো দরকার নেই। আমাদের প্রোগ্রাম যেটা থাকবে, সবাইকে নিয়ে এবং সবার জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন। রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ড ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সবার অংশীজন হওয়া। সুতরাং আমরা কোনো পার্টিকুলার ধর্ম বা গোষ্ঠীর জন্য রাজনীতি করছি না। আমরা সমগ্র বাংলাদেশের মানুষের জন্য কাজ করছি। কোনো গোষ্ঠীকে পৃষ্ঠপোষকতার মাধ্যমে তো কোনো রাজনীতি হইতে পারে না। এটা তো ডিভিশন হবে। আমরা তো বলছি, রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনতে চাই।

তিনি বলেন, বিএনপি সবসময় ইসলামবিরোধী অপতৎপরতার বিরুদ্ধে সোচ্চার আছে। ইসলামের মৌলিক বিষয় নিয়ে বিএনপি কখনো আপোষ করেনি।
১৬ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে কোরআন ও সুন্নাহর বিপরীতে কোনো কাজ করা হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ।
১৭ ঘণ্টা আগে
দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে তারেক রহমানের যে ভাবনা, তা জনগণের কাছে পৌঁছানো ও বাস্তবায়ন করা জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতিপক্ষের সঙ্গে তারেক রহমানের কাজের ধরন ও রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিতে সুস্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। তারেক রহমান কোনোভাবেই সাংঘর্ষিক রাজনীতিতে বিশ্বাসী নন।
১৭ ঘণ্টা আগে
নাহিদ ইসলাম বলেন, 'আমরা দেখছি যে বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে প্রশাসনকে কিভাবে দখল করতে হবে, প্রশাসনকে কিভাবে হাতে রাখতে হবে। সেটার জন্য যে নিরপেক্ষ, সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন, সরকার এবং প্রশাসনকে শক্ত অবস্থানে থাকা প্রয়োজন—সেটা আমরা দেখতে পাচ্ছি না।'
১৯ ঘণ্টা আগে