গাজাবাসীর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের দরজা বন্ধ

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
গাজার এক শিশু। ইউনিসেফ ফাইল ছবি

গাজার বাসিন্দাদের জন্য সব ধরনের ভ্রমণ ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, এ ভিসা প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি পর্যালোচনা করতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনের মানবাধিকার সংগঠনগুলো এ সিদ্ধান্তের নিন্দা জানিয়েছে।

বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজার অধিবাসীরা সাধারণত চিকিৎসা নিতে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে থাকেন। সাম্প্রতিক সময়ে এ তালিকায় শিশুদের সংখ্যা বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের নতুন সিদ্ধান্তের ফলে গাজার শিশুসহ সব বয়সী মানুষই এবার সেই চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হতে যাচ্ছেন।

গাজাবাসীদের ভিসা স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বলেছে, সাম্প্রতিক দিনগুলোতে অল্পসংখ্যক অস্থায়ী চিকিৎসা-মানবিক ভিসা দেওয়ার জন্য যে প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে, তা পূর্ণ ও বিস্তারিত পর্যালোচনা করে দেখার জন্য গাজার নাগরিকদের সবরকম ভ্রমণ ভিসা দেওয়া বন্ধ রাখা হচ্ছে।

এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে প্যালেস্টাইন চিলড্রেন্স রিলিফ ফান্ড এক বিবৃতিতে বলেছে, গাজা থেকে আহত ও গুরুতর অসুস্থ শিশুদের জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে নেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের সক্ষমতায় এ সিদ্ধান্ত বিপর্যয়কর ও অপরিবর্তনীয় প্রভাব ফেলবে।

ফিলিস্তিনি শিশুদের নিয়ে কাজ করা এই।মানবাধিকার সংগঠন বলছে, বিদেশে চিকিৎসা প্রকল্পের আওতায় তারা ২০২৪ সালে গাজা থেকে ১৬৯ জন শিশুকে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিয়েছে পরিচর্যার জন্য।

বিবিসির খবরে আরও বলা হয়েছে, গাজাবাসীর জন্য মার্কিন ভিসানীতির সমালোচনা করে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে কট্টর ডানপন্থি ইনফ্লুয়েন্সার ও ট্রাম্পের সক্রিয় সমর্থক লরা লুমারের একের পর এক পোস্ট করছিলেন।

লুমারের দাবি, অসুস্থদের নিয়ে গাজা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়া বিমানগুলো জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকিস্বরূপ। চিকিৎসা ভিসা নিয়ে গাজা থেকে যারা যুক্তরাষ্ট্রে যান তারা হামাসপন্থি ও মুসলিম ব্রাদারহুডের সঙ্গে যুক্ত বলেও অভিযোগ তোলেন তিনি।

গত কয়েকদিন ধরেই লুমার এ বিষয়ে অব্যাহতভাবে প্রচারণা চালিয়ে আসছিলেন। এর মধ্যেই গাজাবাসীর জন্য ভ্রমণ ভিসা স্থগিতের ঘোষণা এলো মার্কিন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলো প্রতিবাদ জানালেও ভিসা বন্ধের ঘোষণার পর লরা শনিবার এক্সে আরেক পোস্টে এই সিদ্ধান্তের জন্য কৃতিত্ব নেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে ধন্যবাদ জানান।

গাজায় ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলের শুরু করা যুদ্ধে এ পর্যন্ত ভূখণ্ডটিতে বেশির ভাগ চিকিৎসা অবকাঠামোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। চরম খাদ্য সংকটের মধ্যে সেখানে দিন কাটাতে হচ্ছে নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধসহ সবাইকে। এমনকি ত্রাণ সংগ্রহ করতে গিয়ে প্রতিদিন প্রাণ হারাচ্ছে গাজাবাসী।

ad
ad

বিশ্ব রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন