গাজা দখল নিয়ে ইসরায়েলের সমালোচনা করল জাতিসংঘ

ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম

জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস ইসরায়েলের গাজা দখলের সিদ্ধান্তকে আঞ্চলিক উত্তেজনা বৃদ্ধির একটি ঝুঁকিপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে তীব্র সমালোচনা করেছেন।

তার মুখপাত্র শুক্রবার (৮ আগস্ট) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে জানান, এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে ফিলিস্তিনিদের উচ্ছেদ আরও বাড়বে। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর প্রকাশ করেছে।

গুতেরেসের মতে, এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক আইন ও মানবিক নীতিমালার লঙ্ঘন। তিনি ইসরায়েলের প্রতি অবিলম্বে এই পরিকল্পনা বাতিল করার আহ্বান জানিয়েছেন এবং গাজায় একটি টেকসই সমাধানের জন্য আলোচনায় বসার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত একটি বিপজ্জনক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে যাচ্ছে। এতে ইতোমধ্যে গুরুতর পরিস্থিতিতে থাকা ফিলিস্তিনিদের পরিণতি আরও মারাত্মক পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে। এর ফলে, বাকি জিম্মিসহ অনেক মানুষের প্রাণের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে জোরপূর্বক উচ্ছেদ, হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে। এতে ফিলিস্তিনিদের ভোগান্তির পরিমাণ কয়েকগুণ বেড়ে যাবে।

গাজা যুদ্ধের প্রায় দুবছর হওয়ার সময় এসে নতুন এক সিদ্ধান্ত নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি করেছে ইসরায়েল। গাজা উপত্যকার গাজা সিটির পুরো দখল নেওয়ার জন্য সামরিক অভিযানের আওতা বৃদ্ধির পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে ইসরায়েলি মন্ত্রিসভা।

এই সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদিত হওয়ার আগে বৃহস্পতিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর কাছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজের বিল হ্যামারের প্রশ্ন ছিল, তারা পুরো উপত্যকার দখল নিতে চান কিনা। জবাবে তাদের সে রকম ইচ্ছা থাকার কথা জানিয়েছেন নেতানিয়াহু। তবে দখল নিলেও তা শাসনের পরিকল্পনা নেই দাবি করে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিন শেষে গাজার শাসন আরবের হাতে তুলে দিতেই তারা আগ্রহী।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি সামরিক অভিযানে ইতোমধ্যে ৬১ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। প্রায় দুবছর ধরে চলমান আগ্রাসনে গাজার প্রায় পুরো জনপদ উদ্বাস্তুতে পরিণত হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে তীব্র খাদ্যসংকট।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগ এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে মামলা দায়ের হলেও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছে তেল আবিব।

২০২৩ সালের অক্টোবরে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জন নিহত এবং প্রায় ২৫০ জনকে জিম্মি করা হয়েছিল বলে ইসরায়েলি পরিসংখ্যানে দাবি করা হয়। ওই হামলার পর থেকেই কয়েক দশকের পুরোনো ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সর্বশেষ রক্তক্ষয়ী অধ্যায় শুরু হয়।

ad
ad

বিশ্ব রাজনীতি থেকে আরও পড়ুন