বর্ষবরণ শোভাযাত্রা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক কি আরও বাড়ল?

বিবিসি বাংলা
প্রকাশ: ১৪ এপ্রিল ২০২৫, ২২: ৩৩
আনন্দ শোভাযাত্রায় নেমেছিল মানুষের ঢল। ছবি: রাজনীতি ডটকম

বাংলাদেশে এবার বর্ষবরণের অন্যতম বিশেষ আয়োজন শোভাযাত্রাকে ঘিরে বিভাজন ও বিতর্ক বেড়েছে। এতে করে এই আয়োজনটি চূড়ান্তভাবে রাজনৈতিক বিষয়বস্তুতে পরিণত হলো কি না, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকদের অনেকে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদ থেকে বের হওয়া এবারের শোভাযাত্রাটির নাম দেয়া হয়েছে 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা।' যদিও আগে এটি 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' নামে পরিচিত ছিল। এই নাম পরিবর্তন ঘিরে ব্যাপক বিতর্কের জন্ম হয়।

এবার সেখানে ফ্যাসিবাদের প্রতিকৃতি হিসাবে একটি মোটিফ তৈরি করা হয়, যার সাথে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মুখাবয়বের মিল রয়েছে বলে অনেকে অভিযোগ তোলেন। এ নিয়েও পক্ষ-বিপক্ষে ব্যাপক আলোচনা হচ্ছে সামাজিক মাধ্যমে।

শোভাযাত্রায় অংশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী অবশ্য বলেছেন, বর্ষবরণের এবারের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়।

এর আগে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও এই শোভাযাত্রাটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছিলো বিভিন্ন মহল থেকে।

তখন খালেদা জিয়ার মুখাবয়ব সম্বলিত মোটিফের একটি ছবি একটি শোভাযাত্রায় ব্যবহৃত হয়েছিলো বলে সামাজিক মাধ্যমে তার সমর্থকরা অভিযোগ করে আসছেন।

তবে সেই সময়ে চারুকলার আয়োজকদের সাথে কথা বলে এ ধরনের কোনো মোটিফ বানানোর বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, বর্ষবরণের আয়োজনটি ঘিরে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল তাদের পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহারের চেষ্টা করেছে এবং দিনে দিনে সেই প্রবণতা আরো প্রকট হয়েছে।

বিতর্ক ও বিভাজন প্রকট হওয়ার আলোচনা

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. নাদিম মাহমুদ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তার ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, "একটি ঘৃণা আর একটি ঘৃণার জন্ম দেয়, ঘৃণার বাইনারিতে বন্দি আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম। তবুও ঘৃণাহীন হোক প্রতিটি মস্তিষ্ক। সমাজের বিভাজন রেখা গলে একাকার হোক আমাদের ঐক্য। শক্তিশালী হোক আমাদের ভিন্নতার মত। ভালোবাসায় পূর্ণ হোক সকল স্তরের শত্রু কিংবা মিত্র"।

আর এবার এই ঘৃণা ও পাল্টা ঘৃণার কথা আসছে মূলত শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার মুখাবয়ব ব্যবহার নিয়ে।

এবারের শোভাযাত্রায় নানা ধরনের মোটিফ ছিল। সব মিলিয়ে ২১টি মোটিফ ছিল বলে জানা গেছে।

তবে সেই সময়ে চারুকলার আয়োজকদের সাথে কথা বলে এ ধরনের কোনো মোটিফ বানানোর বিষয়ে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের কেউ কেউ মনে করেন, বর্ষবরণের আয়োজনটি ঘিরে বাংলাদেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল তাদের পছন্দ অনুযায়ী ব্যবহারের চেষ্টা করেছে এবং দিনে দিনে সেই প্রবণতা আরো প্রকট হয়েছে।

বিতর্ক ও বিভাজন প্রকট হওয়ার আলোচনা

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক ড. নাদিম মাহমুদ নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে তার ফেসবুক পাতায় লিখেছেন, "একটি ঘৃণা আর একটি ঘৃণার জন্ম দেয়, ঘৃণার বাইনারিতে বন্দি আমাদের প্রজন্মের পর প্রজন্ম। তবুও ঘৃণাহীন হোক প্রতিটি মস্তিষ্ক। সমাজের বিভাজন রেখা গলে একাকার হোক আমাদের ঐক্য। শক্তিশালী হোক আমাদের ভিন্নতার মত। ভালোবাসায় পূর্ণ হোক সকল স্তরের শত্রু কিংবা মিত্র"।

আর এবার এই ঘৃণা ও পাল্টা ঘৃণার কথা আসছে মূলত শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার মুখাবয়ব ব্যবহার নিয়ে।

এবারের শোভাযাত্রায় নানা ধরনের মোটিফ ছিল। সব মিলিয়ে ২১টি মোটিফ ছিল বলে জানা গেছে।

শোভাযাত্রায় আছে, টাইপোগ্রাফিতে ৩৬ জুলাই, জাতীয় মাছ ইলিশ, ঘোড়া, বাঘ ও জুলাই আন্দোলনে নিহত মুগ্ধর পানির বোতলের প্রতিকৃতি।

তবে এবারের নববর্ষকে ঘিরে বিভাজন, অনৈক্য কিংবা বিতর্ক শুরু হয়েছিল চারুকলা বর্ষবরণ শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন কেন্দ্র করে। অতীতেও 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' নিয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিল কিছু ধর্মভিত্তিক দল।

বিতর্ক সত্ত্বেও 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' নাম বাদ দিয়ে এর নাম দেন 'বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা' নাম দেন সংশ্লিষ্টরা। যদিও তাদের দাবি, শুরুর দিকে এই শোভাযাত্রার নাম ছিল আনন্দ শোভাযাত্রা, যা পরিবর্তন করা হয়েছিল।

এরপর দ্বিতীয় বিতর্ক শুরু হয় শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার মুখাবয়ব বিকৃত করে তৈরি করা মোটিফ ব্যবহার নিয়ে। একপর্যায়ে সেই মোটিফে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।

পরে নতুন করে তৈরি করা মোটিফ নিয়েই শোভাযাত্রা হয়েছে এবং তাতেই অংশ নিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী দাবি করেছেন, এবারের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়। 'শোভাযাত্রায় ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব' ব্যবহার করা হয়েছে।

"ফ্যাসিস্ট কোন রাজনীতির অংশ নয়, ফ্যাসিস্ট সবচেয়ে বড় অশুভশক্তি। তাই আমরা শুধু ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব ব্যবহার করেছি," বলেছেন তিনি।

এর পাল্টা প্রচার হিসেবে শেখ হাসিনা সমর্থকরা প্রধান উপদেষ্টাসহ আওয়ামী লীগ বিরোধী হিসেবে পরিচিত অনেকের মোটিফের ডিজাইন করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ বলছেন, সংস্কৃতি কখনোই রাজনীতি থেকে আলাদা নয় এবং সে কারণে রাজনীতিকে আলাদা করাও যাচ্ছে না।

"এগুলো নিয়ে হৈ হুল্লোড় করছে কিছু রাজনৈতিক দল। চারুকলার আয়োজন তাদের। দলগুলো বা সরকার তাতে না জড়ালে কোন সমস্যা হতো না। যারা পছন্দ করবে না তারা সেখানেই না গিয়ে নিজেদের মতো উদযাপন করতে পারে। কিন্তু এটা হয়নি বলেই বিভাজন প্রকট হয়েছে," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, বাংলা নববর্ষের বড় আয়োজনগুলোর একটি হলো চারুকলার বর্ষবরণ শোভাযাত্রা। সাধারণত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে চারুকলা অনুষদ এটি আয়োজন করে।

ফলে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে এসব আয়োজনে সেই সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটে বলে অনেকে মনে করেন।

'মঙ্গল শোভাযাত্রায়' পেঁচাসহ নানা ধরনের প্রাণীর প্রতিকৃতির ব্যবহারের বিরুদ্ধে গত আওয়ামী লীগ আমলের শেষ কয়েক বছরে যে প্রচারণা শুরু হয়েছিলো সেটিকেও অনেকে রাজনৈতিক বিরোধিতার একটি কৌশল ছিলো মনে করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক এ কে এম শাহনেওয়াজ অবশ্য মনে করেন, রাজনৈতিক ব্যবহার ও বিভাজন যে প্রকট সেটা এবারের আয়োজন নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায়।

"এখন যা হচ্ছে তা ইতিহাস বিচ্ছিন্নতার ফল। নববর্ষ, বর্ষবরণ ও শোভাযাত্রা সম্পর্কে না জানার প্রতিফল। এর পেছনে প্রতিবাদ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যে উপাদান তার চর্চা নেই বলেই যখন যে শক্তি আসে তারা এগুলো নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে চায়। সেটিই হচ্ছে এখন," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক আয়োজনগুলো নিয়ে এখন যা হচ্ছে তাতে এগুলো আরও রাজনৈতিক রূপ পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত ভাঙ্গাগড়ার মধ্য দিয়ে এগুলো সুন্দর রূপে ফিরে আসবে।

"যা হচ্ছে এভাবে তা চলতে পারে না। তবে এগুলোতে আসলে পাল্টা প্রতিক্রিয়া যে হয় সেটা রমনা বটমূলে বোমা হামলার পরের বছরগুলোতে দেখেছি। মানুষ আরও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাতে সম্পৃক্ত হয়েছে। তাই এখন কিছুকাল সংকট হলেও ঠিকই আপন মহিমায় এগুলো যথাযথভাবে ফিরে আসবে," বলছিলেন মি. শাহনেওয়াজ।

কিন্তু তারপরেও রাজনীতিকরণের কারণেই পহেলা বৈশাখের মূল চেতনা নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। এটি সামাল দিতে না পারলে সামনে তা আরও প্রকট হয়ে ওঠার আশঙ্কাও আছে তাদের মধ্যে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. তাসমিন সিদ্দিকী ঢাকার একটি সংবাদপত্রে 'পহেলা বৈশাখ থাকুক রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে' শীর্ষক লেখায় লিখেছেন, ".... হঠাৎ খেয়াল করলাম, পহেলা বৈশাখ ঘিরে কিছু বিতর্ক। আনন্দ শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' হিসেবে ইউনেস্কোতে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। ঘুড়ি, বাঁশি, একতারার মতো আবহমান বাংলার মোটিফগুলো প্রতিস্থাপিত হয়ে যাচ্ছে এমন কিছু মোটিফ দ্বারা, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। এখানেই শেষ নয়; যুক্ত হচ্ছে শিংওয়ালা গোলাপি শাড়ির খালেদা বা রাজাকারের বিভিন্ন ট্যাগ। অর্থাৎ শোভাযাত্রাটি আর অরাজনৈতিক থাকল না"।

তিনি লিখেছেন, "...পহেলা বৈশাখের এই রাজনীতিকীকরণের উল্টো প্রতিক্রিয়াও আসতে শুরু করে রক্ষণশীল রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর থেকে। শোভাযাত্রার রাজনীতিকীকরণের বয়ান সরাসরি পহেলা বৈশাখ উদযাপনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে বসে। এ দুইয়ের টানাপড়েনে হারিয়ে যেতে থাকে পহেলা বৈশাখের মূল আদর্শ"।

ফলে এই রাজনৈতিক ব্যবহার সামনে কোন পর্যায়ে উপনীত হয় ভবিষ্যতই হয়তো তা বলে দেবে।

এরপর দ্বিতীয় বিতর্ক শুরু হয় শোভাযাত্রায় শেখ হাসিনার মুখাবয়ব বিকৃত করে তৈরি করা মোটিফ ব্যবহার নিয়ে। একপর্যায়ে সেই মোটিফে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটে।

পরে নতুন করে তৈরি করা মোটিফ নিয়েই শোভাযাত্রা হয়েছে এবং তাতেই অংশ নিয়ে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী দাবি করেছেন, এবারের শোভাযাত্রা রাজনৈতিক নয়। 'শোভাযাত্রায় ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব' ব্যবহার করা হয়েছে।

"ফ্যাসিস্ট কোন রাজনীতির অংশ নয়, ফ্যাসিস্ট সবচেয়ে বড় অশুভশক্তি। তাই আমরা শুধু ফ্যাসিস্টের মুখাবয়ব ব্যবহার করেছি," বলেছেন তিনি।

এর পাল্টা প্রচার হিসেবে শেখ হাসিনা সমর্থকরা প্রধান উপদেষ্টাসহ আওয়ামী লীগ বিরোধী হিসেবে পরিচিত অনেকের মোটিফের ডিজাইন করে তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়েছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও লেখক মহিউদ্দিন আহমেদ বলছেন, সংস্কৃতি কখনোই রাজনীতি থেকে আলাদা নয় এবং সে কারণে রাজনীতিকে আলাদা করাও যাচ্ছে না।

"এগুলো নিয়ে হৈ হুল্লোড় করছে কিছু রাজনৈতিক দল। চারুকলার আয়োজন তাদের। দলগুলো বা সরকার তাতে না জড়ালে কোন সমস্যা হতো না। যারা পছন্দ করবে না তারা সেখানেই না গিয়ে নিজেদের মতো উদযাপন করতে পারে। কিন্তু এটা হয়নি বলেই বিভাজন প্রকট হয়েছে," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

উল্লেখ্য, বাংলা নববর্ষের বড় আয়োজনগুলোর একটি হলো চারুকলার বর্ষবরণ শোভাযাত্রা। সাধারণত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তত্ত্বাবধানে চারুকলা অনুষদ এটি আয়োজন করে।

ফলে যখন যে সরকার ক্ষমতায় থাকে এসব আয়োজনে সেই সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটে বলে অনেকে মনে করেন।

'মঙ্গল শোভাযাত্রায়' পেঁচাসহ নানা ধরনের প্রাণীর প্রতিকৃতির ব্যবহারের বিরুদ্ধে গত আওয়ামী লীগ আমলের শেষ কয়েক বছরে যে প্রচারণা শুরু হয়েছিলো সেটিকেও অনেকে রাজনৈতিক বিরোধিতার একটি কৌশল ছিলো মনে করেন।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও গবেষক অধ্যাপক এ কে এম শাহনেওয়াজ অবশ্য মনে করেন, রাজনৈতিক ব্যবহার ও বিভাজন যে প্রকট সেটা এবারের আয়োজন নিয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য থেকেই পরিষ্কার বোঝা যায়।

"এখন যা হচ্ছে তা ইতিহাস বিচ্ছিন্নতার ফল। নববর্ষ, বর্ষবরণ ও শোভাযাত্রা সম্পর্কে না জানার প্রতিফল। এর পেছনে প্রতিবাদ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক যে উপাদান তার চর্চা নেই বলেই যখন যে শক্তি আসে তারা এগুলো নিজেদের সুবিধার জন্য ব্যবহার করতে চায়। সেটিই হচ্ছে এখন," বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনি।

তিনি বলেন, সাংস্কৃতিক আয়োজনগুলো নিয়ে এখন যা হচ্ছে তাতে এগুলো আরও রাজনৈতিক রূপ পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হলেও শেষ পর্যন্ত ভাঙ্গাগড়ার মধ্য দিয়ে এগুলো সুন্দর রূপে ফিরে আসবে।

"যা হচ্ছে এভাবে তা চলতে পারে না। তবে এগুলোতে আসলে পাল্টা প্রতিক্রিয়া যে হয় সেটা রমনা বটমূলে বোমা হামলার পরের বছরগুলোতে দেখেছি। মানুষ আরও স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাতে সম্পৃক্ত হয়েছে। তাই এখন কিছুকাল সংকট হলেও ঠিকই আপন মহিমায় এগুলো যথাযথভাবে ফিরে আসবে," বলছিলেন মি. শাহনেওয়াজ।

কিন্তু তারপরেও রাজনীতিকরণের কারণেই পহেলা বৈশাখের মূল চেতনা নষ্ট হয়েছে বলে মনে করেন অনেকে। এটি সামাল দিতে না পারলে সামনে তা আরও প্রকট হয়ে ওঠার আশঙ্কাও আছে তাদের মধ্যে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. তাসমিন সিদ্দিকী ঢাকার একটি সংবাদপত্রে 'পহেলা বৈশাখ থাকুক রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে' শীর্ষক লেখায় লিখেছেন, ".... হঠাৎ খেয়াল করলাম, পহেলা বৈশাখ ঘিরে কিছু বিতর্ক। আনন্দ শোভাযাত্রার নাম পরিবর্তন করে 'মঙ্গল শোভাযাত্রা' হিসেবে ইউনেস্কোতে বিধিবদ্ধ করা হয়েছে। ঘুড়ি, বাঁশি, একতারার মতো আবহমান বাংলার মোটিফগুলো প্রতিস্থাপিত হয়ে যাচ্ছে এমন কিছু মোটিফ দ্বারা, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। এখানেই শেষ নয়; যুক্ত হচ্ছে শিংওয়ালা গোলাপি শাড়ির খালেদা বা রাজাকারের বিভিন্ন ট্যাগ। অর্থাৎ শোভাযাত্রাটি আর অরাজনৈতিক থাকল না"।

তিনি লিখেছেন, "...পহেলা বৈশাখের এই রাজনীতিকীকরণের উল্টো প্রতিক্রিয়াও আসতে শুরু করে রক্ষণশীল রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতর থেকে। শোভাযাত্রার রাজনীতিকীকরণের বয়ান সরাসরি পহেলা বৈশাখ উদযাপনকেই প্রশ্নবিদ্ধ করে বসে। এ দুইয়ের টানাপড়েনে হারিয়ে যেতে থাকে পহেলা বৈশাখের মূল আদর্শ"।

ফলে এই রাজনৈতিক ব্যবহার সামনে কোন পর্যায়ে উপনীত হয় ভবিষ্যতই হয়তো তা বলে দেবে।

ad
ad

খবরাখবর থেকে আরও পড়ুন

রাতে ১৮ জেলায় হতে পারে ৬০ কিমি বেগে ঝড়

এতে বলা হয়, রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, মাদারীপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার জেলার ওপর দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম অথবা দক্ষিণ দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যে

৬ ঘণ্টা আগে

দেশের পরিস্থিতি নিয়ে সাবেক সেনাপ্রধানের স্ট্যাটাস

স্ট্যাটাসে স্ট্যাটাসে তিনি লেখেন, ১/১১-এর পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না, দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। এরূপ অসাংবিধানিক কর্মকাণ্ডে সেনাবাহিনী অতীতে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। নতুন করে আরও ভোগান্তি ডেকে আনা ঠিক হবে না।

৭ ঘণ্টা আগে

গুজবে বিভ্রান্ত হবেন না : সেনাবাহিনী

জনগণকে গুজবে কান না দেওয়ার অনুরোধ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। শুক্রবার (২৩ মে) দুপুরে ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে সচেতনতামূলক বিজ্ঞপ্তি দিয়ে লেখা এক পোস্টে এ আহ্বান জানায় সেনাবাহিনী।

১৪ ঘণ্টা আগে

ঢামেকে প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া দিবস পালন

বিশ্ব প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া দিবস ২০২৫ উপলক্ষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক)-এ বর্ণাঢ্য আয়োজনে দিবসটি পালন করা হয়। এবারের মূল বার্তা ছিল- Ask me about PE অর্থাৎ প্রি-এক্ল্যাম্পসিয়া সম্পর্কে জিজ্ঞেস করুন, জানুন।

১৪ ঘণ্টা আগে