প্রতিবেদক, রাজনীতি ডটকম
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে বাড়ছে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব। ক্যান্সারের ধরন থেকে রোগীর সংখ্যা— সবকিছুর গ্রাফই ঊর্ধ্বমুখী। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসার সুযোগ কি বেড়েছে? ক্যান্সার শনাক্তের জন্য স্ক্রিনিং সেবা কি পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে প্রান্তিক এলাকায়? সরকারি হাসপাতালগুলোতে কি সুলভে মিলছে সেবা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে রাজনীতি ডটকমের চার পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন এখানে—
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও প্রতি বছর বাড়ছে ক্যান্সারের রোগী। সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য বলছে, দেশের মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশের জন্যই দায়ী বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার। বছরে প্রতি লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন ৫৩ জন। শুধু তাই নয়, দেশের রোগীদের মধ্যে শনাক্ত হওয়া ক্যান্সারের ধরনও আগের তুলনায় বেড়েছে।
ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব যখন এভাবে দিন দিন বেড়েই চলেছে, সেখানে আগে থেকেই দেশে ক্যান্সার রোগীর তুলনায় চিকিৎসা অপ্রতুল, যা দিন দিন আরও কমছে। ক্যানসার শনাক্ত করার জন্য স্ক্রিনিংয়ের সুবিধা যেমন নেই সবখানে, তেমনি ক্যান্সারের চিকিৎসায় সার্জারি থেকে থেরাপি পর্যন্ত সব ধরনের চিকিৎসা সেবাও কমে আসছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ক্যান্সারের ধরন বেড়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) একদল গবেষক ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলায় এক জরিপ পরিচালনা করেন। ওই জরিপের তথ্য বলছে, দেশে ৩৮ ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন, যা গবেষণার আগের সময়ের তুলনায় পাঁচটি বেশি। বলা যায়, এক বছরের ব্যবধানেই নতুন পাঁচ ধরনের ক্যান্সার ছড়িয়েছে দেশে।
এ গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান। ওই জরিপের ফলাফল বলছে, দেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ১০৬ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত। প্রতি লাখে বছরে নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন ৫৩ জন। অন্যদিকে দেশে মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশের পেছনেই কারণ ক্যান্সার।
জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে যে পাঁচটিতে আক্রান্তের হার বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সেগুলো হলো— স্তন ক্যান্সার, ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার, পাকস্থলির ক্যান্সার, স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার এবং জরায়ুমুখ ক্যান্সার। পুরুষদের মধ্যে স্বরযন্ত্র, পাকস্থলী ও ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্তের প্রবণতা বেশি। নারীদের মধ্যে বেশি স্তন, জরায়ুমুখ এবং ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্তের প্রবণতা। একই সঙ্গে ক্যান্সার রোগীদের অনেকেরই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতাসহ আরও নানা জটিলতায় আক্রান্তের ইতিহাস পাওয়া গেছে।
ক্যান্সার চিকিৎসা নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব—
এদিকে একক পদ্ধতিতে ক্যান্সারের মতো জটিল একটি রোগের চিকিৎসা প্রকৃতপক্ষে রোগীর জন্য সুফল বয়ে আনতে সক্ষম নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এ ক্ষেত্রে ক্যান্সারের চিকিৎসায় প্রচলিত যে তিন পদ্ধতি— সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি— তার সংমিশ্রণে থাকা প্রয়োজন ‘কম্বাইন্ড ট্রিটমেন্ট’ বা সমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে চিকিৎসক দলের মধ্যে যেমন থাকবেন অনকোলজিস্ট, তেমনি থাকবেন সার্জন কিংবা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ কিংবা অন্যসব রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও।
দেশে এমন ধরনের চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে?— জানতে চাইলে ক্যান্সার এপিডেমিওলজিস্ট হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন জানালেন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কথা। দীর্ঘ দিন ধরে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে কাজ করা এই চিকিৎসক বললেন, ‘সরকারিভাবে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সারের চিকিৎসা পাওয়া যায় শুধু এই হাসপাতালেই। এর বাইরে আরও প্রায় ২০টি সরকারি হাসপাতালে ক্যান্সারের চিকিৎসা পাওয়া গেলেও তা পূর্ণাঙ্গ নয়।’
বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক জানাচ্ছেন, দেশে ক্যান্সারের স্ক্রিনিং তথা ক্যান্সার শনাক্ত করার সুযোগ অপ্রতুল। এর জন্য ছুটতে হয় বিভিন্ন জায়গায়। এদিকে ক্যান্সার শনাক্ত হলে সমন্বিত চিকিৎসাব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের ছুটতে হয় বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে, তার জন্য বাড়তি ভোগান্তিরও শিকার হতে হয়। এ ক্ষেত্রে ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কোনো কর্মকৌশলও নেই।
ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, ক্যানসার চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত সমন্বিত পদ্ধতির পাশাপাশি ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কোনো কর্মসূচিও নেই। অথচ দেশে যে পরিমাণ ক্যান্সার রোগী, তার জন্য একটি জাতীয় ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ কৌশল থাকা জরুরি। সেই কৌশলের অধীনে ক্যান্সার শনাক্ত করা থেকে শুরু করে চিকিৎসা পদ্ধতি ও এর প্রসার এবং ক্যানসার নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিস্তারিত পরিকল্পনা থাকতে হবে। সবকিছু এক ছাতার নিচে আনতে হবে। সেটি আনতে না পারলে ক্যান্সার রোগ নিয়ন্ত্রণে খুব একটা অগ্রগতি সম্ভব হবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারের চিকিৎসায় নানা ধরনের অগ্রগতি হলেও দেশে এমন কোনো বড় অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি যেখানে দেশের বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠীকে ক্যান্সার সংশ্লিষ্ট সব ধরনের সেবা দেওয়া সম্ভব। রয়েছে দক্ষ জনবলের ঘাটতি। পর্যাপ্ত রেডিওথেরাপি নেই, যেগুলো আছে তার একাংশ আবার অচল। চিকিৎসা তো দূরের কথা, দেশে সব ধরনের ক্যান্সার শনাক্তের সেবাই সহজলভ্য নয়।
ক্যান্সার চিকিৎসায় কেন এ দুরবস্থা— এ প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. গুলজার হোসেন কারণ হিসেবে দায়ী করছেন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা না থাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সম্পর্কের ঘাটতিকেও।
রাজনীতি ডটকমকে ডা. গুলজার বলেন, ‘সুষ্ঠু ও সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অভাব রয়েছে আমাদের। দক্ষ জনবল ও জনশক্তি ঘাটতি রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের নিজেদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের ঘাটতি রয়েছে। একে অন্যের প্রতি সহযোগিতার মনোভাবও এখানে গড়ে ওঠেনি।’
দেশের ক্যান্সারের চিকিৎসার দুরবস্থা সহজেই অনুমান করা যায় ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণের জাতীয় পরিষদের কার্যক্রমের চিত্র থেকেও। ক্যান্সার শনাক্ত করা থেকে শুরু করে চিকিৎসাব্যবস্থা নির্ধারণ, অন্যদিকে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমের সবই হওয়ার কথা এই ন্যাশনাল ক্যান্সার কন্ট্রোল কাউন্সিলের মাধ্যমে। কিন্তু গত ১২ বছরে এই কাউন্সিল বৈঠক করেছে মাত্র একটি।
পদাধিকারবলে এই কাউন্সিলের সভাপতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সদস্য সচিব জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক। কিন্তু হাসপাতালের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত পরিচালকসহ সাবেক একাধিক পরিচালকও জানিয়েছেন, তারা এই কাউন্সিলের নামই শোনেননি। এ পরিস্থিতিতে কাউন্সিল দ্রুত পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্ট।
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে বাড়ছে ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব। ক্যান্সারের ধরন থেকে রোগীর সংখ্যা— সবকিছুর গ্রাফই ঊর্ধ্বমুখী। এর সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্যান্সারের চিকিৎসার সুযোগ কি বেড়েছে? ক্যান্সার শনাক্তের জন্য স্ক্রিনিং সেবা কি পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে প্রান্তিক এলাকায়? সরকারি হাসপাতালগুলোতে কি সুলভে মিলছে সেবা? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে রাজনীতি ডটকমের চার পর্বের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন এখানে—
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও প্রতি বছর বাড়ছে ক্যান্সারের রোগী। সাম্প্রতিক এক গবেষণার তথ্য বলছে, দেশের মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশের জন্যই দায়ী বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার। বছরে প্রতি লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন ৫৩ জন। শুধু তাই নয়, দেশের রোগীদের মধ্যে শনাক্ত হওয়া ক্যান্সারের ধরনও আগের তুলনায় বেড়েছে।
ক্যান্সারের প্রাদুর্ভাব যখন এভাবে দিন দিন বেড়েই চলেছে, সেখানে আগে থেকেই দেশে ক্যান্সার রোগীর তুলনায় চিকিৎসা অপ্রতুল, যা দিন দিন আরও কমছে। ক্যানসার শনাক্ত করার জন্য স্ক্রিনিংয়ের সুবিধা যেমন নেই সবখানে, তেমনি ক্যান্সারের চিকিৎসায় সার্জারি থেকে থেরাপি পর্যন্ত সব ধরনের চিকিৎসা সেবাও কমে আসছে।
সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে ক্যান্সারের ধরন বেড়েছে। বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (সাবেক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়) একদল গবেষক ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত কিশোরগঞ্জ জেলায় এক জরিপ পরিচালনা করেন। ওই জরিপের তথ্য বলছে, দেশে ৩৮ ধরনের ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন মানুষজন, যা গবেষণার আগের সময়ের তুলনায় পাঁচটি বেশি। বলা যায়, এক বছরের ব্যবধানেই নতুন পাঁচ ধরনের ক্যান্সার ছড়িয়েছে দেশে।
এ গবেষণার নেতৃত্বে ছিলেন বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পাবলিক হেলথ অ্যান্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মো. খালেকুজ্জামান। ওই জরিপের ফলাফল বলছে, দেশে প্রতি লাখ মানুষের মধ্যে ১০৬ জন ক্যান্সারে আক্রান্ত। প্রতি লাখে বছরে নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন ৫৩ জন। অন্যদিকে দেশে মোট মৃত্যুর ১২ শতাংশের পেছনেই কারণ ক্যান্সার।
জরিপ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের মধ্যে যে পাঁচটিতে আক্রান্তের হার বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি সেগুলো হলো— স্তন ক্যান্সার, ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যান্সার, পাকস্থলির ক্যান্সার, স্বরযন্ত্রের ক্যান্সার এবং জরায়ুমুখ ক্যান্সার। পুরুষদের মধ্যে স্বরযন্ত্র, পাকস্থলী ও ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্তের প্রবণতা বেশি। নারীদের মধ্যে বেশি স্তন, জরায়ুমুখ এবং ঠোঁট ও মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্তের প্রবণতা। একই সঙ্গে ক্যান্সার রোগীদের অনেকেরই উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ ও কিডনি জটিলতাসহ আরও নানা জটিলতায় আক্রান্তের ইতিহাস পাওয়া গেছে।
ক্যান্সার চিকিৎসা নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব—
এদিকে একক পদ্ধতিতে ক্যান্সারের মতো জটিল একটি রোগের চিকিৎসা প্রকৃতপক্ষে রোগীর জন্য সুফল বয়ে আনতে সক্ষম নয় বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এ ক্ষেত্রে ক্যান্সারের চিকিৎসায় প্রচলিত যে তিন পদ্ধতি— সার্জারি, কেমোথেরাপি ও রেডিওথেরাপি— তার সংমিশ্রণে থাকা প্রয়োজন ‘কম্বাইন্ড ট্রিটমেন্ট’ বা সমন্বিত চিকিৎসা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে চিকিৎসক দলের মধ্যে যেমন থাকবেন অনকোলজিস্ট, তেমনি থাকবেন সার্জন কিংবা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ কিংবা অন্যসব রোগের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকও।
দেশে এমন ধরনের চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে?— জানতে চাইলে ক্যান্সার এপিডেমিওলজিস্ট হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন জানালেন জাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের কথা। দীর্ঘ দিন ধরে ক্যান্সারের চিকিৎসা নিয়ে কাজ করা এই চিকিৎসক বললেন, ‘সরকারিভাবে পূর্ণাঙ্গ ক্যান্সারের চিকিৎসা পাওয়া যায় শুধু এই হাসপাতালেই। এর বাইরে আরও প্রায় ২০টি সরকারি হাসপাতালে ক্যান্সারের চিকিৎসা পাওয়া গেলেও তা পূর্ণাঙ্গ নয়।’
বিশেষজ্ঞ এই চিকিৎসক জানাচ্ছেন, দেশে ক্যান্সারের স্ক্রিনিং তথা ক্যান্সার শনাক্ত করার সুযোগ অপ্রতুল। এর জন্য ছুটতে হয় বিভিন্ন জায়গায়। এদিকে ক্যান্সার শনাক্ত হলে সমন্বিত চিকিৎসাব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের ছুটতে হয় বিভিন্ন চিকিৎসাকেন্দ্রে, তার জন্য বাড়তি ভোগান্তিরও শিকার হতে হয়। এ ক্ষেত্রে ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কোনো কর্মকৌশলও নেই।
ডা. হাবিবুল্লাহ তালুকদার রাসকিন বলেন, ক্যানসার চিকিৎসায় এখন পর্যন্ত সমন্বিত পদ্ধতির পাশাপাশি ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে জাতীয় কোনো কর্মসূচিও নেই। অথচ দেশে যে পরিমাণ ক্যান্সার রোগী, তার জন্য একটি জাতীয় ক্যানসার নিয়ন্ত্রণ কৌশল থাকা জরুরি। সেই কৌশলের অধীনে ক্যান্সার শনাক্ত করা থেকে শুরু করে চিকিৎসা পদ্ধতি ও এর প্রসার এবং ক্যানসার নিয়ে সচেতনতামূলক কর্মকাণ্ডের বিস্তারিত বিস্তারিত পরিকল্পনা থাকতে হবে। সবকিছু এক ছাতার নিচে আনতে হবে। সেটি আনতে না পারলে ক্যান্সার রোগ নিয়ন্ত্রণে খুব একটা অগ্রগতি সম্ভব হবে না।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বব্যাপী ক্যান্সারের চিকিৎসায় নানা ধরনের অগ্রগতি হলেও দেশে এমন কোনো বড় অবকাঠামো গড়ে তোলা সম্ভব হয়নি যেখানে দেশের বিপুল পরিমাণ জনগোষ্ঠীকে ক্যান্সার সংশ্লিষ্ট সব ধরনের সেবা দেওয়া সম্ভব। রয়েছে দক্ষ জনবলের ঘাটতি। পর্যাপ্ত রেডিওথেরাপি নেই, যেগুলো আছে তার একাংশ আবার অচল। চিকিৎসা তো দূরের কথা, দেশে সব ধরনের ক্যান্সার শনাক্তের সেবাই সহজলভ্য নয়।
ক্যান্সার চিকিৎসায় কেন এ দুরবস্থা— এ প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের হেমাটোলজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. গুলজার হোসেন কারণ হিসেবে দায়ী করছেন সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা না থাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সম্পর্কের ঘাটতিকেও।
রাজনীতি ডটকমকে ডা. গুলজার বলেন, ‘সুষ্ঠু ও সুদুরপ্রসারী পরিকল্পনার অভাব রয়েছে আমাদের। দক্ষ জনবল ও জনশক্তি ঘাটতি রয়েছে। বিভিন্ন বিভাগের নিজেদের মধ্যে আন্তঃসম্পর্কের ঘাটতি রয়েছে। একে অন্যের প্রতি সহযোগিতার মনোভাবও এখানে গড়ে ওঠেনি।’
দেশের ক্যান্সারের চিকিৎসার দুরবস্থা সহজেই অনুমান করা যায় ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণের জাতীয় পরিষদের কার্যক্রমের চিত্র থেকেও। ক্যান্সার শনাক্ত করা থেকে শুরু করে চিকিৎসাব্যবস্থা নির্ধারণ, অন্যদিকে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও সচেতনতামূলক কার্যক্রমের সবই হওয়ার কথা এই ন্যাশনাল ক্যান্সার কন্ট্রোল কাউন্সিলের মাধ্যমে। কিন্তু গত ১২ বছরে এই কাউন্সিল বৈঠক করেছে মাত্র একটি।
পদাধিকারবলে এই কাউন্সিলের সভাপতি স্বাস্থ্যমন্ত্রী, সদস্য সচিব জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক। কিন্তু হাসপাতালের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত পরিচালকসহ সাবেক একাধিক পরিচালকও জানিয়েছেন, তারা এই কাউন্সিলের নামই শোনেননি। এ পরিস্থিতিতে কাউন্সিল দ্রুত পুনর্গঠনের দাবি জানিয়েছে কমিউনিটি অনকোলজি সেন্টার ট্রাস্ট।
আসিফ নজরুল বলেন, যেসব মামলায় গ্রেপ্তার-বাণিজ্য হচ্ছে, মামলা-বাণিজ্য হচ্ছে, সেসবের ক্ষেত্রে আশা করছি, পুলিশ প্রশাসন ও আদালত যাঁদের বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে কোনো রকম প্রমাণ পাবে না, তাঁদের বিচার শুরুর আগেই মামলার তালিকা থেকে বাদ দিতে পারবে। পরে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়ার সময় পুলিশ যদি দেখে যে যাঁদের বাদ
২ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশের বাজেট ব্যবস্থাপনায় উন্নয়নমুখী কার্যক্রম পরিচালনার সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো দুর্বল রাজস্ব সংগ্রহ ব্যবস্থা। রাষ্ট্রের প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের রাজস্ব সংগ্রহ অনেক কম। এর মূল কারণ হলো আমাদের রাজস্ব আহরণ ব্যবস্থাপনার নানা দুর্বলতা, অনিয়ম ও দুর্নীতি।
৪ ঘণ্টা আগে৮ আগস্ট ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছিল তা উদযাপন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। তবে আগামী ৫ আগস্ট ‘গণঅভ্যুত্থান’ দিবস উদযাপন এবং ১৬ জুলাই ‘জুলাই শহীদ’ দিবস পালন করা হবে। রবিবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
৪ ঘণ্টা আগেঅধ্যাপক ড. আলী রীয়াজ বলেছেন, আলোচনায় বিভিন্ন বিষয়ে অগ্রগতি হলেও আশাব্যঞ্জক অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমরা খানিকটা পিছিয়ে আছি। তাই এই অগ্রগতির জায়গাটা অর্জন করা দরকার। কারণ আমরা কেউই চাই না আগের জায়গাটায় ফিরে যেতে। এটা আগামীকাল, আগামী দিনের বিষয় না। এটা দীর্ঘদিনের বিষয়।
৬ ঘণ্টা আগে