ডেস্ক, রাজনীতি ডটকম
আজারবাইজানে সম্প্রতি একটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২৫ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে—পাখির সঙ্গে বিমানের সংঘর্ষ। শুনে অবাক লাগতেই পারে। এত বড় একটি যন্ত্র, যার ওজন শত শত টন, সেটি কি করে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সামান্য এক পাখির ধাক্কায়? আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে একটি বিদ্রুপাত্মক প্রবাদ—“হাতির সঙ্গে পিঁপড়ার সংঘর্ষ।” বাস্তবেও কি এমন কিছু ঘটে?
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের একটু বিমান ও পাখির সংঘর্ষের বাস্তব চিত্র বুঝতে হবে। যখন কোনো বিমান উড্ডয়ন করে কিংবা অবতরণ করে, তখন সেটি ভূমির খুব কাছাকাছি অবস্থানে থাকে। এই সময় অনেক পাখি ওই উচ্চতায় উড়ে বেড়ায়, বিশেষ করে যদি বিমানবন্দরের আশপাশে জলাধার বা গাছগাছালি থাকে। খাবার বা আশ্রয়ের খোঁজে তারা ওদিকেই ভিড় করে। আর এই অবস্থায় যদি কোনো পাখি হঠাৎ করে বিমানের সামনে এসে পড়ে, তাহলে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। কখনো কখনো একাধিক পাখিও একসঙ্গে বিমানের দিকে চলে আসে।
এই সংঘর্ষ অনেক সময় সরাসরি বিমানের ইঞ্জিনের সঙ্গে হয়। বিমানের ইঞ্জিনে পাখি ঢুকে গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে বিকল হয়ে যেতে পারে। ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে উড়ন্ত অবস্থায় বিমান নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে। কখনো আবার ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। শুধু ইঞ্জিন নয়, অনেক সময় পাখি বিমানের সামনে কাচের অংশ, অর্থাৎ ককপিটের উইন্ডশিল্ডে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে ভেতরে থাকা পাইলটদের জন্য হঠাৎ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হয়। আবার যদি পাখি বিমানের ডানায় বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশে আঘাত করে, তাহলে উড্ডয়নক্ষমতা কমে যেতে পারে। এটি বিমানের ভারসাম্য ও নিয়ন্ত্রণে সমস্যা তৈরি করে, যার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।
বলা হয়, একটি মাত্র ১ কেজি ওজনের পাখি যদি ঘণ্টায় ৩২০ কিমি বেগে উড়তে থাকা বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খায়, তাহলে সেটি একটি ছোটখাটো বিস্ফোরণের মতো শক্তি তৈরি করে। পাখি হালকা হলেও বিমান যখন দুরন্ত গতিতে ছুটে চলে, তখন সেই ধাক্কার প্রভাব হয় প্রচণ্ড। যদি একসঙ্গে অনেক পাখি বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খায়, তাহলে বিমানের একাধিক অংশে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এমনকি উভয় ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
একটা বাস্তব উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। ২০০৯ সালে নিউ ইয়র্ক শহরের ‘লা গার্ডিয়া’ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করা একটি যাত্রীবাহী বিমান কিছুদূর যাওয়ার পরই বেশ কিছু পাখির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে বিমানটির দুটো ইঞ্জিনই সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তবে পাইলট ক্যাপ্টেন সুলি স্ক্যালেনবার্গ আশ্চর্য দক্ষতায় বিমানটি হাডসন নদীতে নামিয়ে দেন। এতে সব যাত্রী অক্ষত থাকেন। এই ঘটনা ইতিহাসে ‘মিরাকল অন দ্য হাডসন’ নামে পরিচিত হয়ে আছে।
বিমান ও পাখির সংঘর্ষ ঠেকাতে আজকাল বিমানবন্দরগুলো নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। পাখি তাড়ানোর জন্য শব্দ সৃষ্টি করে এমন যন্ত্র, লেজার লাইট, এমনকি রাডার ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে পাখির গতিবিধি বুঝে পাইলটকে আগে থেকেই সতর্ক করা যায়। বিমানবন্দরের আশপাশে জলাধার বা পাখির খাবার পাওয়া যায় এমন জায়গা সরিয়ে ফেলা হয়। কারণ পাখি সাধারণত খাবারের টানে বেশি আসে। পাশাপাশি, পাইলটদেরও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যাতে এ ধরনের বিপদে তারা দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
তবে শুধু প্রযুক্তি দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হয় না। আমাদেরও সচেতন হতে হবে। বিমানবন্দরের চারপাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না, যাতে পাখিরা আকৃষ্ট না হয়। স্থানীয় প্রশাসন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ মানুষের একসঙ্গে কাজ করা জরুরি।
বিমান চলাচলকে নিরাপদ রাখতে গিয়ে আমরা যেন প্রকৃতির প্রতিও দয়াহীন হয়ে না উঠি। পাখি আমাদের পরিবেশেরই অংশ। তাই এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে মানুষ ও প্রকৃতি—উভয়েই নিরাপদে থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা এখন এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যা ভবিষ্যতে এই সমস্যা প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনবে। হয়তো একদিন আমরা এমন একটি সময় দেখতে পারব, যখন পাখি আর বিমান—দু’জনেই স্বাধীনভাবে, বিপদহীনভাবে আকাশে উড়তে পারবে।
সূত্র: হাউ ইটস ওয়ার্কস
আজারবাইজানে সম্প্রতি একটি ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনায় ২৫ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। এই দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে—পাখির সঙ্গে বিমানের সংঘর্ষ। শুনে অবাক লাগতেই পারে। এত বড় একটি যন্ত্র, যার ওজন শত শত টন, সেটি কি করে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সামান্য এক পাখির ধাক্কায়? আমাদের সমাজে প্রচলিত আছে একটি বিদ্রুপাত্মক প্রবাদ—“হাতির সঙ্গে পিঁপড়ার সংঘর্ষ।” বাস্তবেও কি এমন কিছু ঘটে?
এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে আমাদের একটু বিমান ও পাখির সংঘর্ষের বাস্তব চিত্র বুঝতে হবে। যখন কোনো বিমান উড্ডয়ন করে কিংবা অবতরণ করে, তখন সেটি ভূমির খুব কাছাকাছি অবস্থানে থাকে। এই সময় অনেক পাখি ওই উচ্চতায় উড়ে বেড়ায়, বিশেষ করে যদি বিমানবন্দরের আশপাশে জলাধার বা গাছগাছালি থাকে। খাবার বা আশ্রয়ের খোঁজে তারা ওদিকেই ভিড় করে। আর এই অবস্থায় যদি কোনো পাখি হঠাৎ করে বিমানের সামনে এসে পড়ে, তাহলে সংঘর্ষ অনিবার্য হয়ে ওঠে। কখনো কখনো একাধিক পাখিও একসঙ্গে বিমানের দিকে চলে আসে।
এই সংঘর্ষ অনেক সময় সরাসরি বিমানের ইঞ্জিনের সঙ্গে হয়। বিমানের ইঞ্জিনে পাখি ঢুকে গেলে তা সঙ্গে সঙ্গে বিকল হয়ে যেতে পারে। ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেলে উড়ন্ত অবস্থায় বিমান নিয়ন্ত্রণ হারাতে পারে। কখনো আবার ইঞ্জিনে আগুন ধরে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। শুধু ইঞ্জিন নয়, অনেক সময় পাখি বিমানের সামনে কাচের অংশ, অর্থাৎ ককপিটের উইন্ডশিল্ডে সজোরে ধাক্কা খায়। এতে ভেতরে থাকা পাইলটদের জন্য হঠাৎ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থা তৈরি হয়। আবার যদি পাখি বিমানের ডানায় বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশে আঘাত করে, তাহলে উড্ডয়নক্ষমতা কমে যেতে পারে। এটি বিমানের ভারসাম্য ও নিয়ন্ত্রণে সমস্যা তৈরি করে, যার পরিণতি হতে পারে ভয়াবহ।
বলা হয়, একটি মাত্র ১ কেজি ওজনের পাখি যদি ঘণ্টায় ৩২০ কিমি বেগে উড়তে থাকা বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খায়, তাহলে সেটি একটি ছোটখাটো বিস্ফোরণের মতো শক্তি তৈরি করে। পাখি হালকা হলেও বিমান যখন দুরন্ত গতিতে ছুটে চলে, তখন সেই ধাক্কার প্রভাব হয় প্রচণ্ড। যদি একসঙ্গে অনেক পাখি বিমানের সঙ্গে ধাক্কা খায়, তাহলে বিমানের একাধিক অংশে মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। এমনকি উভয় ইঞ্জিনই বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
একটা বাস্তব উদাহরণ দিলে বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে। ২০০৯ সালে নিউ ইয়র্ক শহরের ‘লা গার্ডিয়া’ বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করা একটি যাত্রীবাহী বিমান কিছুদূর যাওয়ার পরই বেশ কিছু পাখির সঙ্গে ধাক্কা খায়। এতে বিমানটির দুটো ইঞ্জিনই সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। তবে পাইলট ক্যাপ্টেন সুলি স্ক্যালেনবার্গ আশ্চর্য দক্ষতায় বিমানটি হাডসন নদীতে নামিয়ে দেন। এতে সব যাত্রী অক্ষত থাকেন। এই ঘটনা ইতিহাসে ‘মিরাকল অন দ্য হাডসন’ নামে পরিচিত হয়ে আছে।
বিমান ও পাখির সংঘর্ষ ঠেকাতে আজকাল বিমানবন্দরগুলো নানা ধরনের প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। পাখি তাড়ানোর জন্য শব্দ সৃষ্টি করে এমন যন্ত্র, লেজার লাইট, এমনকি রাডার ব্যবহার করা হচ্ছে, যাতে পাখির গতিবিধি বুঝে পাইলটকে আগে থেকেই সতর্ক করা যায়। বিমানবন্দরের আশপাশে জলাধার বা পাখির খাবার পাওয়া যায় এমন জায়গা সরিয়ে ফেলা হয়। কারণ পাখি সাধারণত খাবারের টানে বেশি আসে। পাশাপাশি, পাইলটদেরও বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যাতে এ ধরনের বিপদে তারা দ্রুত ও সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
তবে শুধু প্রযুক্তি দিয়ে সব সমস্যার সমাধান হয় না। আমাদেরও সচেতন হতে হবে। বিমানবন্দরের চারপাশে ময়লা-আবর্জনা ফেলা যাবে না, যাতে পাখিরা আকৃষ্ট না হয়। স্থানীয় প্রশাসন, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং সাধারণ মানুষের একসঙ্গে কাজ করা জরুরি।
বিমান চলাচলকে নিরাপদ রাখতে গিয়ে আমরা যেন প্রকৃতির প্রতিও দয়াহীন হয়ে না উঠি। পাখি আমাদের পরিবেশেরই অংশ। তাই এমন ব্যবস্থা নিতে হবে, যাতে মানুষ ও প্রকৃতি—উভয়েই নিরাপদে থাকতে পারে। বিজ্ঞানীরা এখন এমন প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চেষ্টা করছেন, যা ভবিষ্যতে এই সমস্যা প্রায় শূন্যে নামিয়ে আনবে। হয়তো একদিন আমরা এমন একটি সময় দেখতে পারব, যখন পাখি আর বিমান—দু’জনেই স্বাধীনভাবে, বিপদহীনভাবে আকাশে উড়তে পারবে।
সূত্র: হাউ ইটস ওয়ার্কস
বাংলাদেশ সরকার মানবপাচার নির্মূলের সর্বনিম্ন মান সম্পূর্ণরূপে পূরণ না করলেও আগের তুলনায় এখন উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমান সরকার পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের সময়ের তুলনায় সামগ্রিকভাবে ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা প্রদর্শন করেছে। সে কারণে বাংলাদেশের অবস্থান এই তালিকায় দ্বিতীয় স্তরে।
৬ ঘণ্টা আগেএহছানুল হক মিলন বলেন, আদর্শ শিক্ষকরা সমাজের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাই তাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের সমর্থনে যদি সরকার গঠন করা যায়, তাহলে শিক্ষা ক্ষেত্রে সব ধরনের বৈষম্য ও অব্যবস্থা দূর করা হবে।
১৪ ঘণ্টা আগেফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি অব্যাহত নির্যাতনের প্রতিবাদে বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও অধিকার কর্মী শহিদুল আলমের পক্ষে সংহতি জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের শিকার গাজার প্রতিও সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।
১৪ ঘণ্টা আগেচীনা প্রেসিডেন্ট বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীন এবং বাংলাদেশ পারস্পরিক আস্থা সুসংহত করে চলেছে। বেল্ট অ্যান্ড রোড সহযোগিতার পাশাপাশি বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারিক সহযোগিতা প্রসারিত করেছে এবং তাদের ব্যাপক কৌশলগত সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব আরও গভীর করেছে।
১৯ ঘণ্টা আগে