তানভীর হোসেন
মানব সভ্যতার ইতিহাস জুড়েই রয়েছে শক্তিকে বশে আনার ইতিবৃত্ত। প্রাচীন গুহামানব যখন পাথর ঘষে প্রথম আগুন জ্বালিয়েছিল, তখন থেকে শুরু করে আজকের যুগের পারমাণবিক চুল্লি, সবই সেই একই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। যার মূলে রয়েছে মানুষের অফুরন্ত কৌতূহল আর অদম্য চেষ্টা। কিন্তু এবার মানুষের কৌতূহলী হাত যেন সূর্যকে ছুঁতে চলেছে ।
ভাবছেন এ আবার কী আজগুবি কথা? আসল কথা হলো, চীনে তৈরি করা হয়েছে এমন এক পারমাণবিক চুল্লি, যার নাম হচ্ছে ‘কৃত্রিম সূর্য’। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এই চুল্লির ভেতরে ঘটছে সূর্যের মতো করেই শক্তি উৎপাদনের পারমাণবিক প্রক্রিয়া।
সূর্য মূলত হাইড্রোজেন গ্যাস দিয়ে তৈরি। সৌরশক্তির উৎস হলো হাইড্রোজেনের পরমাণু। সূর্যের অভ্যন্তরে হাইড্রোজেন পরমাণু ক্রমাগত হিলিয়াম পরমাণুতে রূপান্তরিত হচ্ছে। একে বলা হয়, পারমাণবিক ফিউশন (Fusion) প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় যে বিপুল পরিমান শক্তি উৎপন্ন হয় সেটাই হলো সৌরশক্তির উৎস। সূর্যকে এত উজ্জ্বল এবং এত উত্তপ্ত করে রেখেছে এই ফিউশন প্রক্রিয়া। সূর্যের এই শক্তির সামান্য একটা অংশ পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়, তার উপর নির্ভর করেই পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণী এবং উদ্ভিদকুল বেঁচে আছে।
বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই এই ফিউশন প্রক্রিয়াকে রপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কারণ, এই নিউক্লিয়ার ফিউশন যদি আয়ত্ত করা যায়, তাহলে শক্তির সমস্যা থেকে মানবজাতি চিরতরে মুক্তি পেতে পারে। আর সেটাই করে দেখিয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি চীনে ইস্ট (EAST - Experimental Advanced Superconducting Tokamak) নামের একটি পরীক্ষামূলক ফিউশন রিয়্যাক্টরে প্রায় ১০০০ সেকেন্ড বা ১৭ মিনিট ধরে সফলভাবে ফিউশন বিক্রিয়া ঘটানো হয়েছে। এত দীর্ঘ সময় ধরে স্থিতিশীল প্লাজমা তৈরি করা এখন পর্যন্ত ফিউশন গবেষণার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা।
সাধারণত, ফিউশন বিক্রিয়া এত বেশি তাপমাত্রায় ঘটে যে, একে স্থিতিশীল করে ধরে রাখা খুবই কঠিন। আর এখানেই রয়েছে EAST রিয়্যাক্টরের অসাধারণ সাফল্য। এটি প্রায় ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল, যেটা ছিল সূর্যের কেন্দ্রের চেয়েও প্রায় ছয় গুণ বেশি উত্তপ্ত!
এই অতি উচ্চ তাপমাত্রার প্লাজমাকে ধরে রাখতে বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন অত্যন্ত শক্তিশালী চুম্বক। টোকামাক নামের এক বিশেষ ধরনের চেম্বারের ভেতরে প্লাজমা ঘুরতে থাকে, যেটাকে চৌম্বক ক্ষেত্র দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। শুনতে যতই সহজ লাগুক, বাস্তবে এটি ছিল এক মহাকঠিন কাজ। এতদিন বিভিন্ন পরীক্ষাগারে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্যই স্থায়ী ছিল এমন ফিউশন বিক্রিয়া। কিন্তু চীনের এই সাফল্য সেই পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ফিউশন প্রযুক্তিকে আরো বাস্তবসম্মত করে তুলেছে।
এখন প্রশ্ন হলো, কেন এই ফিউশন বিক্রিয়া নিয়ে এত মাতামাতি? আসলে প্রচলিত পারমাণবিক শক্তি আসে নিউক্লিয়ার ফিশন (Fission) থেকে, যেখানে ইউরেনিয়ামের মতো ভারী পরমাণুকে ভেঙে শক্তি উৎপাদন করা হয়। কিন্তু ফিশনের অন্যতম বড় সমস্যা হলো তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থ। কিন্তু ফিউশন প্রক্রিয়ায় কোনো দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর বর্জ্য উৎপাদিত হয় না। এ ছাড়াও ফিউশনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় হাইড্রোজেনের আইসোটোপ, যেটা সহজেই পাওয়া যায় সমুদ্রের পানিতে। অর্থাৎ জ্বালানি শেষ হওয়ার ভয়ও নেই।
চীনের এই কৃত্রিম সূর্য প্রকল্প এখন বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। এই প্রযুক্তি একদিন সত্যিই মানব সভ্যতার ভাগ্য বদলে দিতে পারে। হয়তো একদিন পৃথিবীর মানুষ নিজেরাই তৈরি করবে নিজেদের অমিত শক্তির উৎস, যেটা হবে সূর্যের মতোই সীমাহীন আর অফুরন্ত। আর সেই প্রমিথিউসের অপেক্ষাতেই এখন সারা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে পারমাণবিক ফিউশন প্রযুক্তির দিকে।
মানব সভ্যতার ইতিহাস জুড়েই রয়েছে শক্তিকে বশে আনার ইতিবৃত্ত। প্রাচীন গুহামানব যখন পাথর ঘষে প্রথম আগুন জ্বালিয়েছিল, তখন থেকে শুরু করে আজকের যুগের পারমাণবিক চুল্লি, সবই সেই একই ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি। যার মূলে রয়েছে মানুষের অফুরন্ত কৌতূহল আর অদম্য চেষ্টা। কিন্তু এবার মানুষের কৌতূহলী হাত যেন সূর্যকে ছুঁতে চলেছে ।
ভাবছেন এ আবার কী আজগুবি কথা? আসল কথা হলো, চীনে তৈরি করা হয়েছে এমন এক পারমাণবিক চুল্লি, যার নাম হচ্ছে ‘কৃত্রিম সূর্য’। নাম শুনেই বোঝা যাচ্ছে, এই চুল্লির ভেতরে ঘটছে সূর্যের মতো করেই শক্তি উৎপাদনের পারমাণবিক প্রক্রিয়া।
সূর্য মূলত হাইড্রোজেন গ্যাস দিয়ে তৈরি। সৌরশক্তির উৎস হলো হাইড্রোজেনের পরমাণু। সূর্যের অভ্যন্তরে হাইড্রোজেন পরমাণু ক্রমাগত হিলিয়াম পরমাণুতে রূপান্তরিত হচ্ছে। একে বলা হয়, পারমাণবিক ফিউশন (Fusion) প্রক্রিয়া। এই প্রক্রিয়ায় যে বিপুল পরিমান শক্তি উৎপন্ন হয় সেটাই হলো সৌরশক্তির উৎস। সূর্যকে এত উজ্জ্বল এবং এত উত্তপ্ত করে রেখেছে এই ফিউশন প্রক্রিয়া। সূর্যের এই শক্তির সামান্য একটা অংশ পৃথিবীতে এসে পৌঁছায়, তার উপর নির্ভর করেই পৃথিবীর যাবতীয় প্রাণী এবং উদ্ভিদকুল বেঁচে আছে।
বিজ্ঞানীরা বহুদিন ধরেই এই ফিউশন প্রক্রিয়াকে রপ্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। কারণ, এই নিউক্লিয়ার ফিউশন যদি আয়ত্ত করা যায়, তাহলে শক্তির সমস্যা থেকে মানবজাতি চিরতরে মুক্তি পেতে পারে। আর সেটাই করে দেখিয়েছেন চীনের বিজ্ঞানীরা।
সম্প্রতি চীনে ইস্ট (EAST - Experimental Advanced Superconducting Tokamak) নামের একটি পরীক্ষামূলক ফিউশন রিয়্যাক্টরে প্রায় ১০০০ সেকেন্ড বা ১৭ মিনিট ধরে সফলভাবে ফিউশন বিক্রিয়া ঘটানো হয়েছে। এত দীর্ঘ সময় ধরে স্থিতিশীল প্লাজমা তৈরি করা এখন পর্যন্ত ফিউশন গবেষণার ইতিহাসে একটি যুগান্তকারী ঘটনা।
সাধারণত, ফিউশন বিক্রিয়া এত বেশি তাপমাত্রায় ঘটে যে, একে স্থিতিশীল করে ধরে রাখা খুবই কঠিন। আর এখানেই রয়েছে EAST রিয়্যাক্টরের অসাধারণ সাফল্য। এটি প্রায় ১০ কোটি ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় পৌঁছে গিয়েছিল, যেটা ছিল সূর্যের কেন্দ্রের চেয়েও প্রায় ছয় গুণ বেশি উত্তপ্ত!
এই অতি উচ্চ তাপমাত্রার প্লাজমাকে ধরে রাখতে বিজ্ঞানীরা ব্যবহার করেছেন অত্যন্ত শক্তিশালী চুম্বক। টোকামাক নামের এক বিশেষ ধরনের চেম্বারের ভেতরে প্লাজমা ঘুরতে থাকে, যেটাকে চৌম্বক ক্ষেত্র দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। শুনতে যতই সহজ লাগুক, বাস্তবে এটি ছিল এক মহাকঠিন কাজ। এতদিন বিভিন্ন পরীক্ষাগারে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের জন্যই স্থায়ী ছিল এমন ফিউশন বিক্রিয়া। কিন্তু চীনের এই সাফল্য সেই পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিয়ে ফিউশন প্রযুক্তিকে আরো বাস্তবসম্মত করে তুলেছে।
এখন প্রশ্ন হলো, কেন এই ফিউশন বিক্রিয়া নিয়ে এত মাতামাতি? আসলে প্রচলিত পারমাণবিক শক্তি আসে নিউক্লিয়ার ফিশন (Fission) থেকে, যেখানে ইউরেনিয়ামের মতো ভারী পরমাণুকে ভেঙে শক্তি উৎপাদন করা হয়। কিন্তু ফিশনের অন্যতম বড় সমস্যা হলো তেজস্ক্রিয় বর্জ্য পদার্থ। কিন্তু ফিউশন প্রক্রিয়ায় কোনো দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতিকর বর্জ্য উৎপাদিত হয় না। এ ছাড়াও ফিউশনের জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয় হাইড্রোজেনের আইসোটোপ, যেটা সহজেই পাওয়া যায় সমুদ্রের পানিতে। অর্থাৎ জ্বালানি শেষ হওয়ার ভয়ও নেই।
চীনের এই কৃত্রিম সূর্য প্রকল্প এখন বিশ্বব্যাপী বিজ্ঞানীদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ তৈরি করেছে। এই প্রযুক্তি একদিন সত্যিই মানব সভ্যতার ভাগ্য বদলে দিতে পারে। হয়তো একদিন পৃথিবীর মানুষ নিজেরাই তৈরি করবে নিজেদের অমিত শক্তির উৎস, যেটা হবে সূর্যের মতোই সীমাহীন আর অফুরন্ত। আর সেই প্রমিথিউসের অপেক্ষাতেই এখন সারা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে পারমাণবিক ফিউশন প্রযুক্তির দিকে।
বাংলাদেশ সরকার মানবপাচার নির্মূলের সর্বনিম্ন মান সম্পূর্ণরূপে পূরণ না করলেও আগের তুলনায় এখন উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা চলছে। বর্তমান সরকার পূর্ববর্তী প্রতিবেদনের সময়ের তুলনায় সামগ্রিকভাবে ক্রমবর্ধমান প্রচেষ্টা প্রদর্শন করেছে। সে কারণে বাংলাদেশের অবস্থান এই তালিকায় দ্বিতীয় স্তরে।
৬ ঘণ্টা আগেএহছানুল হক মিলন বলেন, আদর্শ শিক্ষকরা সমাজের শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাই তাদের প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। জনগণের সমর্থনে যদি সরকার গঠন করা যায়, তাহলে শিক্ষা ক্ষেত্রে সব ধরনের বৈষম্য ও অব্যবস্থা দূর করা হবে।
১৪ ঘণ্টা আগেফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি অব্যাহত নির্যাতনের প্রতিবাদে বৈশ্বিক উদ্যোগ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলায় অংশ নেওয়া খ্যাতিমান আলোকচিত্রী ও অধিকার কর্মী শহিদুল আলমের পক্ষে সংহতি জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। একই সঙ্গে ইসরায়েলি ধ্বংসযজ্ঞের শিকার গাজার প্রতিও সমর্থন জানিয়েছেন তিনি।
১৪ ঘণ্টা আগে