
জামাল হোসেন, বেনাপোল (যশোর)

প্রতিবেশী দেশ ভারতে যাতায়াতের অন্যতম গেটওয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট এলাকা এখন কোলাহলমুক্ত। এই বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রতিদিন যাতায়াতকারী যাত্রীর সংখ্যা কয়েক মাসের মধ্যে নেমে এসেছে ২৫ থেকে ২০ শতাংশে। আগের যেখানে যাত্রীর চাপে নিঃশ্বাস ফেলার সময় পেতেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, এখন সেখানে তারা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করে দেয় ভারত। ভারতীয় ভিসায় এই বিধিনিষেধের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বেনাপোলে। আগে যেখানে এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন সাত থেকে ৯ হাজার যাত্রী পারপার হতেন, এখন সেই সংখ্যা নেমে এসেছে দেড় থেকে দুই হাজারে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রী কমে যাওয়ায় রাজস্বের গ্রাফ খাড়া নিম্নমুখী হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, যাত্রীসেবার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন খাতেও পড়েছে এর নেতিবাচক প্রভাব। ভুগছে পরিবহণ ও পর্যটন খাত। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দুই দেশের মধ্যেকার ব্যবসা।
বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের কলকাতা শহরের দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। ভ্রমণ, ব্যবসা, চিকিৎসা বা অন্য কাজে বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে যান, তাদের বড় একটি অংশই বেনাপোল-পেট্রাপোল রুট ব্যবহার করে থাকেন। স্বাভাবিক সময়ে তাই এই স্থলবন্দরে পাসপোর্ট যাত্রীর ব্যাপক চাপ ছিল নিয়মিত চিত্র।
ইমিগ্রেশন সূত্র জানিয়েছে, গত ২০ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন মাত্র ১০ হাজার ৯৮৯ জন। একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ১০ হাজার ৪৬০ জন পাসপোর্ট যাত্রী। সব মিলিয়ে ১১ দিনে পারাপার হয়েছেন ২১ হাজার ৪৪৯ জন যাত্রী।
সূত্র বলছে, ৫ আগস্টের পর বেনাপোল দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কমে গিয়েছিল। গত কয়েক দিনে এই সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ২০ জানুয়ারি থেকে ১১ দিনের হিসাব যেমন বলছে, এই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন চার হাজার ৭৬৪ জন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন পাঁচ হাজার ৩৮২ জন। তবে এই সংখ্যাও স্বাভাবিক সময়ে তুলনায় পাঁচ বা ছয় ভাগের একভাগ।
কাস্টমসের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যাত্রী পারাপার কমে যাওয়ায় ‘ভ্রমণ কর’ বাবদ রাজস্ব আদায়ও ব্যাপক পরিমাণে কমেছে। ৫ আগস্টের আগে এই বন্দর থেকে গড়ে প্রতি মাসে ভ্রমণ করবাবদ রাজস্ব আদায় হতো ১৫ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতি মাসে গড় রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ নেমে এসেছে তিন কোটি টাকায়।

যাত্রীর চাপ না থাকায় বেনাপোল বন্দর হারাচ্ছে রাজস্ব। ছবি: রাজনীতি ডটকম
ইমিগ্রেশন সূত্র জানিয়েছে, বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ২০ জানুয়ারি ১৭৮০ জন যাত্রী পারাপার হয়েছেন; এর মধ্যে ভারতে গেছেন ১০৬৭ জন, এসেছেন ৭১৩ জন। ২১ জানুয়ারি যাত্রী পারাপার হয়েছেন ৩০৩২ জন; এর মধ্যে ভারতে গেছেন ১৫৭০ জন, এসেছেন ১৪৬২ জন। পরদিন ২২ জানুয়ারি পারাপার হয়েছেন ১৮২৪ জন; এর মধ্যে ভারতে গেছে ৯৭৩ জন, দেশে এসেছেন ৮৫১ জন। ২৩ জানুয়ারি পারাপার হওয়া ১৮২৮ জনের মধ্যে ভারতে গেছেন ৯৩৭ জন, দেশে এসেছেন ৮৯১ জন। ২৪ জানুয়ারি পারাপার হওয়া ১৮৪৭ জনের মধ্যে ভারতে গেছেন ৯৫৪ জন, দেশে এসেছেন ৮৯৩ জন।
২৫ জানুয়ারি এই বন্দর দিয়ে পারাপার হয়েছেন ১৫১৩ জন; ভারতে গেছেন ৬৬৮ জন, দেশে এসেছেন ৮৪৫ জন। পরদিন ২৬ জানুয়ারি পারাপার হয়েছেন ১৮১১ জন; এর মধ্যে ভারতে গেছেন ৮৭০ জন, দেশে এসেছেন ৯৪১ জন। ২৭ জানুয়ারি পারাপার হওয়া ১৯৭১ জনের মধ্যে ভারতে গেছেন ১০৭৪ জন, দেশে এসেছেন ৮৯৭ জন।
এ ছাড়া ২৮ জানুয়ারি পারাপার হওয়া ১৯৪৩ জনের মধ্যে ভারতে গেছেন ৯৮২ জন, দেশে এসেছেন ৯৬১ জন। ২৯ জানুয়ারি পারাপার হয়েছেন ২২৮১ জন; এর মধ্যে ভারতে গেছেন ১১২১ জন, দেশে এসেছেন ১০৬০ জন। আর ৩০ জানুয়ারি মোট পারাপার হন ১৬১৯ জন। এর মধ্যে ভারতে যান ৭৭৩ জন, দেশে আসেন ৮৪৬ জন।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূইয়া বলেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার যাত্রী বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে যেতেন। এসব যাত্রীর কাছ থেকে ভ্রমণ কর ১০০০ টাকা ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ফি ৫৫ টাকা আদায় করা হতো। এখন এমন যাত্রীর সংখ্যা ৮০০ থেকে এক হাজারে নেমেছে। স্বাভাবিকভাবেই এই কর আদায়ের পরিমাণও চার-পাঁচ ভাগের একভাগ হয়ে গেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসতে থাকায় ভারত ঘুরে এসেছেন নড়াউলের গনেশ সাহা ও ঢাকার সোমেন শীল। শনিবার বেনাপোল দিয়ে ফিরছিলেন গনেশ সাহা। তিনি বলেন, ‘ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তাই তড়িঘড়ি করে ভারতে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে একটু দেখা করে আসলাম। বেড়ানোও হলো।’ সোমেন আবার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় ডাক্তার দেখিয়ে এসেছেন।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে বাংলাদেশে এসেছেন ভারতীয় নাগরিক আবুল কালাম। বেনাপোল চেকপোস্টে তিনি বলেন, বেনাপোল চেকপোস্টে সবসময় খুব ভিড় থাকত দেখতাম-শুনতাম। এবার কোনো যাত্রীর ভিড় নেই। আল্লাহর রাস্তায় যাচ্ছি, খুব ভালো লাগছে।
যাত্রী না থাকায় স্থানীয় পরিবহণগুলোর উপার্জন কমে গেছে। যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের সেবায় নিয়োজিত অন্যান্য পেশার মানুষজনের আয়ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।
বেনাপোলের ফাইভ স্টার পরিবহণের ব্যবস্থাপক আশাদুজ্জামান আশা বলেন, ‘ভিসা বন্ধ। তাই পরিবহণ ব্যবসায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। জানি না এ রকম আর কত দিন থাকবে।’
বেনাপোল গ্রিন লাইন পরিবহনের ব্যবস্থাপক রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘আমাদের এসি গাড়ি। এখন যাত্রী এত কমে গেছে যে গাড়ির তেল-খরচও উঠছে না।’ রবীন্দ্রনাথ ও আশা দুজনেই বললেন, সব পরিবহণ কোম্পানিরই একই বেহাল দশা। বেতন-ভাতা দিতে না পারায় অনেক স্টাফকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে।
মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবায়ী আলম মানিচেঞ্জারের স্বত্বাধিকারী মশিয়ার রহমানও হিমশিম খাচ্ছেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে। তিনি বলেন, আগে দিনে প্রায় ১০ হাজার যাত্রী যেত। তাদের কাছে ডলার বেচাকেনা করে ভালোই চলত। এখন যে অবস্থা তাতে অফিস চালানোই কঠিন।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রফিউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশিদের বিদেশ ভ্রমণ কমে গেছে মূলত ভিসাপ্রাপ্তি জটিল হওয়ার কারণে। এখন তো ভারত ভিসা দিচ্ছে না। আগে থেকেই যাদের ভিসা রয়েছে, তারাই কেবল যাতায়াত করছেন। ভারতের ভিসা সীমিত থাকায় সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশি পর্যটকের বিদেশযাত্রা আরও কমবে।
ব্যবসায় খাতে প্রভাব তুলে ধরে বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি যমুনা ট্রেডিং করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী আমিনুল হক বলেন, ভারত ভিসা বন্ধ রাখায় আমাদের ব্যবসায়িক কাজে সংকট দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক (ল্যান্ডপোর্ট) মতিয়ার রহমান বলেন, ভিসাকেন্দ্রগুলো এখন কেবল জরুরি মেডিকেল ও স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সীমিত পরিসরে স্লট দিচ্ছে। ব্যবসা ও ভ্রমণ ভিসার যাত্রী নেই বললেই চলে। ভারত ভিসা সেবা বন্ধ রাখায় ভ্রমণ, চিকিৎসা, শিক্ষা কিংবা অন্যান্য কাজে বাংলাদেশিরা যেমন যেতে পারছেন না, তেমনি ক্ষতির মুখে পড়ছেন ভারতীয়রাও।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ভিসা জটিলতা না কাটলে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই যাত্রী পারাপার শূন্যের কোটায় এসে দাঁড়াবে। কারণ এখন যারা যাতায়াত করছে, তাদের অধিকাংশের ভিসার মেয়াদও শেষের দিকে।

প্রতিবেশী দেশ ভারতে যাতায়াতের অন্যতম গেটওয়ে বেনাপোল স্থলবন্দরের আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট এলাকা এখন কোলাহলমুক্ত। এই বন্দর দিয়ে দুই দেশের মধ্যে প্রতিদিন যাতায়াতকারী যাত্রীর সংখ্যা কয়েক মাসের মধ্যে নেমে এসেছে ২৫ থেকে ২০ শতাংশে। আগের যেখানে যাত্রীর চাপে নিঃশ্বাস ফেলার সময় পেতেন না সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা, এখন সেখানে তারা অলস সময় কাটাচ্ছেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর নিরাপত্তার অজুহাতে বাংলাদেশিদের ভিসা বন্ধ করে দেয় ভারত। ভারতীয় ভিসায় এই বিধিনিষেধের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে বেনাপোলে। আগে যেখানে এই বন্দর দিয়ে প্রতিদিন সাত থেকে ৯ হাজার যাত্রী পারপার হতেন, এখন সেই সংখ্যা নেমে এসেছে দেড় থেকে দুই হাজারে।
কাস্টমস কর্মকর্তারা বলছেন, যাত্রী কমে যাওয়ায় রাজস্বের গ্রাফ খাড়া নিম্নমুখী হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয়, যাত্রীসেবার সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন খাতেও পড়েছে এর নেতিবাচক প্রভাব। ভুগছে পরিবহণ ও পর্যটন খাত। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দুই দেশের মধ্যেকার ব্যবসা।
বেনাপোল বন্দর থেকে ভারতের কলকাতা শহরের দূরত্ব মাত্র ৮৪ কিলোমিটার। ভ্রমণ, ব্যবসা, চিকিৎসা বা অন্য কাজে বাংলাদেশ থেকে যারা ভারতে যান, তাদের বড় একটি অংশই বেনাপোল-পেট্রাপোল রুট ব্যবহার করে থাকেন। স্বাভাবিক সময়ে তাই এই স্থলবন্দরে পাসপোর্ট যাত্রীর ব্যাপক চাপ ছিল নিয়মিত চিত্র।
ইমিগ্রেশন সূত্র জানিয়েছে, গত ২০ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন মাত্র ১০ হাজার ৯৮৯ জন। একই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন ১০ হাজার ৪৬০ জন পাসপোর্ট যাত্রী। সব মিলিয়ে ১১ দিনে পারাপার হয়েছেন ২১ হাজার ৪৪৯ জন যাত্রী।
সূত্র বলছে, ৫ আগস্টের পর বেনাপোল দিয়ে ভারতীয় পাসপোর্ট যাত্রীর সংখ্যা একেবারেই কমে গিয়েছিল। গত কয়েক দিনে এই সংখ্যা কিছুটা বেড়েছে। ২০ জানুয়ারি থেকে ১১ দিনের হিসাব যেমন বলছে, এই সময়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে এসেছেন চার হাজার ৭৬৪ জন, বাংলাদেশ থেকে ভারতে গেছেন পাঁচ হাজার ৩৮২ জন। তবে এই সংখ্যাও স্বাভাবিক সময়ে তুলনায় পাঁচ বা ছয় ভাগের একভাগ।
কাস্টমসের সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, যাত্রী পারাপার কমে যাওয়ায় ‘ভ্রমণ কর’ বাবদ রাজস্ব আদায়ও ব্যাপক পরিমাণে কমেছে। ৫ আগস্টের আগে এই বন্দর থেকে গড়ে প্রতি মাসে ভ্রমণ করবাবদ রাজস্ব আদায় হতো ১৫ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রতি মাসে গড় রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ নেমে এসেছে তিন কোটি টাকায়।

যাত্রীর চাপ না থাকায় বেনাপোল বন্দর হারাচ্ছে রাজস্ব। ছবি: রাজনীতি ডটকম
ইমিগ্রেশন সূত্র জানিয়েছে, বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে ২০ জানুয়ারি ১৭৮০ জন যাত্রী পারাপার হয়েছেন; এর মধ্যে ভারতে গেছেন ১০৬৭ জন, এসেছেন ৭১৩ জন। ২১ জানুয়ারি যাত্রী পারাপার হয়েছেন ৩০৩২ জন; এর মধ্যে ভারতে গেছেন ১৫৭০ জন, এসেছেন ১৪৬২ জন। পরদিন ২২ জানুয়ারি পারাপার হয়েছেন ১৮২৪ জন; এর মধ্যে ভারতে গেছে ৯৭৩ জন, দেশে এসেছেন ৮৫১ জন। ২৩ জানুয়ারি পারাপার হওয়া ১৮২৮ জনের মধ্যে ভারতে গেছেন ৯৩৭ জন, দেশে এসেছেন ৮৯১ জন। ২৪ জানুয়ারি পারাপার হওয়া ১৮৪৭ জনের মধ্যে ভারতে গেছেন ৯৫৪ জন, দেশে এসেছেন ৮৯৩ জন।
২৫ জানুয়ারি এই বন্দর দিয়ে পারাপার হয়েছেন ১৫১৩ জন; ভারতে গেছেন ৬৬৮ জন, দেশে এসেছেন ৮৪৫ জন। পরদিন ২৬ জানুয়ারি পারাপার হয়েছেন ১৮১১ জন; এর মধ্যে ভারতে গেছেন ৮৭০ জন, দেশে এসেছেন ৯৪১ জন। ২৭ জানুয়ারি পারাপার হওয়া ১৯৭১ জনের মধ্যে ভারতে গেছেন ১০৭৪ জন, দেশে এসেছেন ৮৯৭ জন।
এ ছাড়া ২৮ জানুয়ারি পারাপার হওয়া ১৯৪৩ জনের মধ্যে ভারতে গেছেন ৯৮২ জন, দেশে এসেছেন ৯৬১ জন। ২৯ জানুয়ারি পারাপার হয়েছেন ২২৮১ জন; এর মধ্যে ভারতে গেছেন ১১২১ জন, দেশে এসেছেন ১০৬০ জন। আর ৩০ জানুয়ারি মোট পারাপার হন ১৬১৯ জন। এর মধ্যে ভারতে যান ৭৭৩ জন, দেশে আসেন ৮৪৬ জন।
বেনাপোল আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ মো. আহসানুল কাদের ভূইয়া বলেন, স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন গড়ে সাড়ে চার হাজার থেকে পাঁচ হাজার যাত্রী বেনাপোল বন্দর দিয়ে ভারতে যেতেন। এসব যাত্রীর কাছ থেকে ভ্রমণ কর ১০০০ টাকা ও প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল ফি ৫৫ টাকা আদায় করা হতো। এখন এমন যাত্রীর সংখ্যা ৮০০ থেকে এক হাজারে নেমেছে। স্বাভাবিকভাবেই এই কর আদায়ের পরিমাণও চার-পাঁচ ভাগের একভাগ হয়ে গেছে।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসতে থাকায় ভারত ঘুরে এসেছেন নড়াউলের গনেশ সাহা ও ঢাকার সোমেন শীল। শনিবার বেনাপোল দিয়ে ফিরছিলেন গনেশ সাহা। তিনি বলেন, ‘ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছিল। তাই তড়িঘড়ি করে ভারতে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে একটু দেখা করে আসলাম। বেড়ানোও হলো।’ সোমেন আবার ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসায় ডাক্তার দেখিয়ে এসেছেন।
এদিকে বিশ্ব ইজতেমায় যোগ দিতে বাংলাদেশে এসেছেন ভারতীয় নাগরিক আবুল কালাম। বেনাপোল চেকপোস্টে তিনি বলেন, বেনাপোল চেকপোস্টে সবসময় খুব ভিড় থাকত দেখতাম-শুনতাম। এবার কোনো যাত্রীর ভিড় নেই। আল্লাহর রাস্তায় যাচ্ছি, খুব ভালো লাগছে।
যাত্রী না থাকায় স্থানীয় পরিবহণগুলোর উপার্জন কমে গেছে। যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের সেবায় নিয়োজিত অন্যান্য পেশার মানুষজনের আয়ও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে গেছে।
বেনাপোলের ফাইভ স্টার পরিবহণের ব্যবস্থাপক আশাদুজ্জামান আশা বলেন, ‘ভিসা বন্ধ। তাই পরিবহণ ব্যবসায় লোকসান গুনতে হচ্ছে। জানি না এ রকম আর কত দিন থাকবে।’
বেনাপোল গ্রিন লাইন পরিবহনের ব্যবস্থাপক রবীন্দ্রনাথ বলেন, ‘আমাদের এসি গাড়ি। এখন যাত্রী এত কমে গেছে যে গাড়ির তেল-খরচও উঠছে না।’ রবীন্দ্রনাথ ও আশা দুজনেই বললেন, সব পরিবহণ কোম্পানিরই একই বেহাল দশা। বেতন-ভাতা দিতে না পারায় অনেক স্টাফকে ছেড়ে দিতে হচ্ছে।
মানি এক্সচেঞ্জ ব্যবায়ী আলম মানিচেঞ্জারের স্বত্বাধিকারী মশিয়ার রহমানও হিমশিম খাচ্ছেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে। তিনি বলেন, আগে দিনে প্রায় ১০ হাজার যাত্রী যেত। তাদের কাছে ডলার বেচাকেনা করে ভালোই চলত। এখন যে অবস্থা তাতে অফিস চালানোই কঠিন।
ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (টোয়াব) সভাপতি মো. রফিউজ্জামান বলেন, বাংলাদেশিদের বিদেশ ভ্রমণ কমে গেছে মূলত ভিসাপ্রাপ্তি জটিল হওয়ার কারণে। এখন তো ভারত ভিসা দিচ্ছে না। আগে থেকেই যাদের ভিসা রয়েছে, তারাই কেবল যাতায়াত করছেন। ভারতের ভিসা সীমিত থাকায় সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশি পর্যটকের বিদেশযাত্রা আরও কমবে।
ব্যবসায় খাতে প্রভাব তুলে ধরে বেনাপোল আমদানি-রপ্তানি সমিতির সহসভাপতি যমুনা ট্রেডিং করপোরেশনের স্বত্বাধিকারী আমিনুল হক বলেন, ভারত ভিসা বন্ধ রাখায় আমাদের ব্যবসায়িক কাজে সংকট দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশ-ভারত চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক (ল্যান্ডপোর্ট) মতিয়ার রহমান বলেন, ভিসাকেন্দ্রগুলো এখন কেবল জরুরি মেডিকেল ও স্টুডেন্ট ভিসার জন্য সীমিত পরিসরে স্লট দিচ্ছে। ব্যবসা ও ভ্রমণ ভিসার যাত্রী নেই বললেই চলে। ভারত ভিসা সেবা বন্ধ রাখায় ভ্রমণ, চিকিৎসা, শিক্ষা কিংবা অন্যান্য কাজে বাংলাদেশিরা যেমন যেতে পারছেন না, তেমনি ক্ষতির মুখে পড়ছেন ভারতীয়রাও।
চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বন্দরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার বলেন, ভিসা জটিলতা না কাটলে ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই যাত্রী পারাপার শূন্যের কোটায় এসে দাঁড়াবে। কারণ এখন যারা যাতায়াত করছে, তাদের অধিকাংশের ভিসার মেয়াদও শেষের দিকে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কাজলা গেট সংলগ্ন একটি খাবার হোটেল থেকে প্রকাশ্যে অস্ত্রের মুখে দুই শিক্ষার্থীকে অপহরণ করে মুখোশধারী একদল হামলাকারী। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে সংঘটিত এ ঘটনা ক্যাম্পাসজুড়ে চাঞ্চল্য ও সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। এ ঘটনায় তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
১ দিন আগেবাংলাদেশে গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান। তিনি বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া গণতন্ত্র টিকবে না—২০০৮ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা তার প্রমাণ দেখেছি। তত্ত্বাবধায়ক সরকার না থাকলে ক্ষমতাসীনরা দানবে পরিণত
১ দিন আগে
রাজশাহীতে মহানগর দায়রা জজ মোহাম্মদ আব্দুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমন (১৮) হত্যা মামলার প্রধান আসামি লিমন মিয়ার আরও ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজশাহী মহানগর আদালত-৫ এর বিচারক আশিকুর রহমান এই রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
১ দিন আগে
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা ও দুজনকে মারধরের প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে রাজশাহী-নাটোর মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটে তারা মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে এবং আন্দোলন চালান।
১ দিন আগে